কাশ্মীর পার্ট - ৯ || কিছু গল্প || ১০% বেনিফিট @shy-fox এর জন্য

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

নমস্কার। আশা করছি সকলে ভালো আছেন। আজ আবার বেশ অনেকদিন পর আপনাদের সাথে শেয়ার করবো, জমে থাকা কাশ্মীরের কিছু গল্প।যদিও তাও গল্প বাকি থেকে যাবে🤪।

কাশ্মীরের পেহেলগাম এ মিনিস্ট্রি অফ ডিফেন্স এর আন্ডারে একটি মাউন্টেনিয়ারিং মিউজিয়াম তৈরী হচ্ছে। যার মূর্তির কাজের দায়িত্ব বাবা পায়। যার কারণেই আমাদের কৃষ্ণনগরে আমার বাবার কারখানায় তৈরি হতে শুরু হয় সেই মূর্তি গুলি। তারই মধ্যে ছিল তেনজিং নৌরে এবং এডমন্ড হিলারি র মূর্তি। আরো কিছু মূর্তি কাশ্মীরি মানুষ দের ধাঁচে।এবং সাথে আরও , যারা ট্রেকিং করে,তাদের কিছু মূর্তি ছিল ।

20211101_144902.jpg

এরই মধ্যে তেনজিং নৌরে এবং এডমন্ড হিলারি র মূর্তি টি সিলিকনের তৈরী করেন বাবা। এবং বাকি গুলি ফাইবার গ্লাসের তৈরি হয়। তো সেই সব মূর্তি তৈরী করার পর বাবা ট্রান্সপোর্টের মাধ্যমে মূর্তি গুলি কাশ্মীরে পেহেলগামের এই মিউজিয়াম এ পাঠিয়ে দিয়েছিলেন।

ভেতরে ঢোকার আগেই মেন গেটের দু পাশে ফলক করে লেখা ছিল পুরো নাম টি , আশা করি ছবিতে বুঝতে পারছেন ,দরজার ওপরেও লেখা আছে।
20211127_103453.jpg

তো, ইনস্টলেশনের সময় বাবা এবং বাবার কিছু স্টাফ কে যেতে হয়। বাবার ইনস্ট্রাকশন ছাড়া এই মূর্তি গুলো যথাযথ ভাবে বসানো সম্ভব নয়, তাই সরকার থেকে পূর্ণ ব্যবস্থা করে দেওয়া হয় । এবং বাবা পৌঁছে যান।

সেখানে গিয়েই তো বরফ পড়ছে দেখে, বাবা আমার,মা ও ভাই এর ফ্লাইটের টিকিট বুক করেন। তাই আমি এই মিউজিয়াম কে শত কোটি প্রণাম জানাই 😜😜😜😜😜🤪 এই কাজের জন্যই আমার যাওয়া সম্ভব হয়েছে। হ্যাঁ, তবে আমাদের অর্থাৎ আমি, মা আর ভাই , খরচা কিন্তু সরকার দেয়নি।
সুতরাং ভালই পকেট ফাঁকা হয়েছে 😁😁😁।

20211127_102147.jpg

যাওয়ার পর থেকেই বাবা এবং বাবার স্টাফ রা কাজে লেগে গেছিলেন , কোথায় কি বসাতে হবে, সেই নিয়ে,আমরা যেদিন পৌঁছলাম, তার ২দিন পর আমি এই মিউজিয়াম এ যাই। সামনে রাশি রাশি পাথর আর দুই ধারের পাথরের মাঝ দিয়ে বয়ে যাচ্ছে লেদার নদী। তার সামনে বেশ একটু বসার জায়গা। এবং তার সামনে রাস্তা, রাস্তার একদম ডান পাশে এই মিউজিয়াম এরিয়া।কি অপরূপ জায়গায় মিউজিয়াম টি তৈরি হচ্ছে, একদম পাহাড় নদীর কোলে।

ছোটো করে পুরো জিম/মিউজিয়াম এরিয়া

20211127_103616.jpg

ভেতরে ঢুকতেই দেখলাম সব অগোছালো। সবাই চারিদিকে কাজে ব্যস্ত। মূর্তি গুলির কিছু কিছু যথ স্থানে বসানো হয়ে গেছে। আবার কোনোটা সেই যেমন করে প্যাক করে পাঠানো হয়েছিলো, তেমনই পড়ে আছে।

20211127_102216.jpg

ওখানে পৌঁছে বাবা কে নতুন আরেকটি কাজ করতে হয়েছে, এই আর্টিফিশিয়াল পাহাড়ের কিছু অংশ তৈরি করতে হয়েছে।
আর এই মূর্তি তো কারখানায় তৈরী হয়েছিল। এই পাহাড় টির পুরো ছবি প্রথমেই দিয়েছি। ফাইবার দিয়ে তৈরী করেছে।

20211101_144531.jpg

বাবা যখন পাহাড়টির অংশ তৈরি করছিলেন। রঙ করছিলেন
20211127_103059.jpg
নিচের কোলাজ করা ছবির চার নম্বর টি দেখুন, আমাদের কারখানার মিঠু কাকা পাহাড়ের ওই পেছনের অংশ টি পেছন দিক দিয়ে ঠিক করছেন ।তার বা সাথে তৃতীয় ছবিতে আমাদের রনি দা, সিলিকন মূর্তিটির মাথার চুল বসাচ্ছে।
20211127_102316.jpg

এই মাউন্টিনেরিং এর সামগ্রী গুলো আসল, এগুলোর দাম শুনে আমি অবাক, ওই সবুজ রঙের জুতটির দামই দুই লক্ষ টাকা।

বন্ধুরা, কমপ্লিট একটা মিউজিয়াম আর , মিউজিয়াম সাজানো হচ্ছে কিভাবে , দুটোর পরিস্থিতি যেমন আলাদা, তেমনই দুই রকম জিনিস দেখার অনুভূতি আলাদা, আমি লাকি যে বাবার কাজের কারণে প্রচুর বড় বড় মিউজিয়াম সাজানো কিভাবে হয়েছিল, তা আমি দেখতে পেয়েছি।

20211127_102558.jpg

যাইহোক, আরও অনেক কিছু আছে,আরো অনেক মূর্তি র ছবি আছে, সেটা পরের পোষ্টে লিখতে হবে, এ পোস্ট নাহলে বহু বড়ো হয়ে যাবে। যদিও আমি কাশ্মীর থেকে ফেরার আগে সব মূর্তির বসে গিয়েছিল। শেষ দিন মিউজিয়াম এ যাব ভেবেছিলাম।কিন্তু হয়ে ওঠেনি।তবুও চেষ্টা করছি জোগাড় করার, আমাদের স্টাফ রা ওখানে আরও কিছুদিন ছিলেন । যাইহোক, আশা করি সকলের ভালো লাগলো। নমস্কার।
@isha.ish

Sort:  
 3 years ago 

আপু অনেক ভালো লাগলো আপনার এ পোস্টটি পড়ে। কাশ্মীরের বিভিন্ন ধরনের ফটোগ্রাফি বলে অত্যন্ত সুন্দর হয়েছে। বিশেষ করে জিম/মিউজিয়াম এর এরিয়া গুলো দেখতে খুবই সুন্দর লাগছে। আপু আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

 3 years ago 

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর করে মন্তব্য করার জন্য।

 3 years ago 

প্রথম ছবি টি দেখে তো ভাবছিলাম সত্যি কেউ উপরে উঠতেছে। যায়গাটা খুব সুন্দর। ইচ্ছা আছে কাশ্মীর এর সৌন্দর্য উপভোগ করার। ভাগ্যে থাকলে একদিন যাওয়া হবে।

 3 years ago 

অবশ্যই একদিন যাওয়া হবে। শুভ কামনা রইলো।

 3 years ago 

দিদি আমি প্রথম ছবি দেখে ভাবছি কেউ উপরে উঠছে। কিন্তু পরে পোস্ট পড়ে বুঝতে পারলাম। আপনার প্রত্যেকটি ফটোগ্রাফি গুলো খুবই সুন্দর হয়েছে।আমার কাছে বেশি ভালো লাগছে মিউজিয়ামের এরিয়াগুলো। আমার খুব ইচ্ছা আছে কাশ্মীর এ ঘুরতে যাওয়ার। জানি না কি হবে।তবে খুব ভালো লাগলো আপনার পোস্ট পড়ে। আপনার জন্য অনেক অনেক ভালোবাসা রইলো দিদি।

 3 years ago 

জেদ করুন দাদার কাছে, অবশ্যই নিয়ে যাবে কাশ্মীর,, 😜

 3 years ago 

খরচা কিন্তু সরকার দেয়নি।
সুতরাং ভালই পকেট ফাঁকা হয়েছে

তা আপনাদের ঘুরাঘুরি দেখে বুঝতেই পেরেছি।আঙ্কেলের পকেট যে একেবারে ফাঁকা করে দিয়েছেন তা অবশ্য একেবারেই মিথ্যা নয়। তবে হ্যাঁ আপনার আঙ্কেলের পকেট ফাঁকা করার জন্যই অন্তত আমি অনেক কিছু দেখতে পেয়েছি। তার জন্য আমি সত্যিই কৃতজ্ঞ।

সবুজ রঙের জুতটির দামই দুই লক্ষ টাকা।

এইটা পড়ে আমি তো একেবারে থমকে গেলা! কি করে সম্ভব! ২ লক্ষ টাকা দিয়ে কি এমন দিয়েছেন তারা আমি আসলেই বুঝতে পারলাম না!! সত্যিই আশ্চর্যজনক।

 3 years ago 

হ্যাঁ,টা ঠিক দিদি

কি জানি দিদি, এই দামের ব্যাপার কেনো যে এরকম,
তা ঠিক আমি জানিনা।

Coin Marketplace

STEEM 0.15
TRX 0.12
JST 0.026
BTC 55030.03
ETH 2337.21
USDT 1.00
SBD 2.32