সাঁতার পর্ব - ১ || ১০% বেনিফিট @shy -fox এর জন্য
নমস্কার বন্ধুরা, আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন আমিও সুস্থ আছি ।আপনাদের সবার মতনই আমিও জীবন সংগ্রামে কখনও হারছি ,কখনও জিতছি , কখনও হাপিয়ে যাচ্ছি আবার কখনও মনকে শক্ত করে যুদ্ধে নামছি।
আজকে আমি একটু আপনাদের সাথে গল্প করতে এসেছি ।বেশ অনেক কিছু আজকে একটু আলোচনা করা যাক। আমি সাঁতার জানিনা ।এই কথাটা হয়তো আপনার অনেকেই জানেন। আমি জানিনা আমার কি হয়, ছোটবেলা থেকেই জল থেকে ভীষণ ভয় পাই। তাই বলে আমার ভয় খাওয়ার জলে নয়।
এই ধরুন পুকুর ,জলাশয় ,নদী এসব জায়গায় আজ অব্দি নেমে স্নান করিনি। নামতে গেলেই আমি হিমশিম খেয়ে যাই। ছোটবেলায় কয়েকবার আমাকে জলে নামানোর চেষ্টা করা হয়েছিল ।আমি মাথা ঘুরে অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছিলাম। তাই তারপর থেকে আর কেউ চেষ্টাও করেনি। তবে সমুদ্রে নামতে কোন অসুবিধা হয় না। সমুদ্রের জলে রীতিমত বেশ আনন্দ সহকারে স্নান করি।
আমি জানিনা আমার কেমন একটা ভয় কাজ করে নদীপুকুর জলাশয় নামতে গিয়ে ।মনে হয় জলের ভেতরে অনেক গভীরতা। আমি নামলে এই কেউ হয়তো পা ধরে ভেতরের দিকে টেনে নিয়ে যাবে। মনে হয় কত জীবজন্তু আছে, আমার ক্ষতি করবে ।জলের কেমন যেন একটা ভারী ভারী ব্যাপার ।আমার মনে হয় আমি ভীষণ ভয় পাই। আমার মাঝে মধ্যে মনে হয় আমি মরে যাব তবুও আচ্ছা জলে আমি নামবো না। এই ভয় নিয়ে আজ এতগুলো বছর পার হয়েছে।
আগের বছর দুর্গাপুজোর দশমীর দিন আমি আমার এক পরিচিত জেঠুর বাড়িতে গিয়েছিলাম ।স্বচক্ষে দেখা একটা ঘটনা আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম। ওই মর্মান্তিক ঘটনার কথা বারবার মনে পড়ে যতবার জলের কথা মাথায় আসে ।ওই বাড়িতে একটা ছোট পুকুর ছিল, ওখানে ওরা ঠাকুর বিসর্জন দিত। বিসর্জন দিয়েছে তার পরেও পুকুরের আশেপাশে অনেক জনকে খেলতে দেখতে পাওয়া গেছে ।তারপর হঠাৎ করে বাড়িতে চেঁচামেচি শুরু ।একটা বাচ্চাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। শোনা যায় জলের আশেপাশে ই খেলা করতে করতে জলের মধ্যে পড়ে গিয়েছে। আর তারপর খোঁজাখুঁজি শুরু হয় ।অবশেষে অনেক জন মিলে বাচ্চাটাকে জলের ভেতর থেকে উদ্ধার করে আনে। সারা শরীর ফুলে গিয়েছে ।তখনও জীবন রয়েছে। ধরাধরি করে হসপিটালেও অব্দি নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল ।কিন্তু মাঝপথেই বাচ্চাটা প্রাণ হারায়। বেশি বয়স ছিল না আমার ভাইয়ের মতো কিংবা তার থেকে একটু বড় ।অর্থাৎ বলতে গেলে ১২ বছর হবে।
সারা বাড়ি দশমীর দিন হাহাকার মেতে গিয়েছিল। সেদিনই হয়তো অজান্তেই আমার বাবা-মা ঠিক করে নিয়েছিল ঈশানকে সাঁতারে ভর্তি করবে ।আজকে আমি খুব আনন্দসহকারে এই পোস্টটা লিখছি। ঈশান ১৫ দিন আগে সাঁতারে ভর্তি হয়। আমাদের কৃষ্ণনগরে জলঙ্গী নদীর সারোদা ঘাটে সাঁতার শেখানো হয়।। আমি ওখান দিয়ে পড়তে যেতাম একসময়।আমার মনে আছে আমি দেখতাম বহু ছেলে-মেয়ে এমনকি বড় মানুষ সাঁতার শিখছে।
ঈশান আজ ওখান থেকেই ১৫ দিন ধরে সাঁতার শিখে এখন ঘাটের এপার থেকে ওপার যেতে পারে ।এমনকি এক দেড় কিলোমিটার আরামসে সাঁতার কাটতে পারে। ওর সাঁতার শেখার পেছনে ওখানকার ট্রেনারদের অবদান অস্বাভাবিক ভাবে রয়েছে ।আমরা ভীষণ খুশি যে ও সাঁতার শিখে গিয়েছে।
বাকি আরো কিছু কথা নিয়ে পরের পোস্টে লিখব।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি ।সকলে ভালো থাকুন ।সুস্থ থাকুন।
আমারও পুকুর কিংবা নদী অনেক ভয় লাগে।আমি এমনকি ডুব ও দিতে পারি না।তবে প্রত্যেক মানুষের সাঁতার শিখাটা জুরুরি। কিন্তু আমি কোন রকমেই পারি না।ভয় পাই,আমার মামা মামী অনেক চেষ্টা করেছে পুকুরে নামানোর জন্য কিন্তু পারেনি।ভালো ছিলো।ধন্যবাদ
আমিও ডুব টাও দিতে পারি না।
দিদি আপনার গল্প শুনে আমি অবাক হয়ে গিয়েছি। নদী পুকুর জলাশয় আপনার এত ভয় ভীতি অথচ আপনি সাগরে নিঃসন্দেহে স্নান করতে পারেন। তবে আপনার জেঠুর বাড়ির দুর্ঘটনাটি আপনার মনে বেশি নাড়া দিয়েছে সেটা বুঝতে পেরেছি। বাচ্চারা জলে পড়ে মারা যায় ভয়ের কারণে এবং কি আঘাত জনিত কারণে পড়ে গিয়ে। আঘাত পেলে উঠতে পারে না, তার কারণে পানির নিচে চলে যায়। এ কারণেই বেশিরভাগ বাচ্চা শিশুদের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অসাধারণ ছিল আপনার গল্পটি, পড়ে খুবই ভালো লাগলো। এবং আপনার ছোট ভাই মাত্র ১৫ দিনের সাঁতার শিখে গেছে জেনে খুবই ভালো লাগছে। আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য শুভেচ্ছা রইল।
আমার ভাই খুব তাড়াতাড়ি সবকিছু ক্যাচ করতে পারে। আমার মনে হয় আজকালকার প্রত্যেকটা বাচ্চাই খুব তাড়াতাড়ি শিখতে পারে ।এটাই তো আজকালকার জেনারেশনের বৈশিষ্ট্য।