মামারবাড়ীতে ঝটপট মাংস রান্না|| ১০% বেনিফিট @shy-fox এর জন্য

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

নমস্কার বন্ধুরা ।আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন। আর আমার অবস্থা দুর্বিসহ বলা চলে, এক্সাম কাল থেকে, বিশাল চাপে আছি , তাও আপনাদের সাথে দেখা না হলে মন ভালো লাগে না, তাই তো রোজ পোস্ট লেখার চেষ্টা করি।

অনেকদিন পর আবারও কিছু গল্প নিয়ে হাজির হলাম। গল্পের সাথে সাথে চলবে রেসিপি ।আজকে আমি গল্প করবো আর দেখাতে থাকবো কিভাবে মুরগির মাংস ঝটপট রান্না করে ফেলতে হয়।

20220131_103730.jpg

প্রথমেই বলি বেশ কিছুদিন আগে আমি মামার বাড়িতে গিয়েছিলাম ,আমার মামারবাড়ি একদমই গ্রামে এবং আমার বড় মামি হাঁড়ি করে মাংস রান্না করে, মামার বাড়িতে গিয়ে এই প্রথমবার আমি মাংস রান্না করেছিলাম ।আর সকলের খুব ভাল লেগেছিলো।আমার মনে হয় মুরগির মাংস খুব সহজেই রান্না হয়ে যায়। আর বেশি সময়ও লাগেনা। সেই আন্দাজে স্বাদ টা ও দুর্দান্ত হয়।

মুরগি আমার খুব পছন্দের একটা খাবার, কারণ মুরগি দিয়ে অনেক ধরনের রান্না তৈরি করা যায়। একদিন মামিকে রান্নাঘর থেকে সরিয়ে নিজেই রান্না করতে লেগে ছিলাম ।ভেবেছিলাম ফ্রাই রাইস এবং মুরগির মাংস রান্না করব ।আর আমাকে হেল্প করবে আমার দুই বোন - মামার মেয়ে ।সেইমতো সকাল থেকে মাংস রান্না শুরু হয়েছিল ।মামিকে একদম হাত লাগাতে দিইনি ।বেশ মজা হয়েছিল দুই বোনের সাথে রান্না করতে। সেই রান্নার রেসিপি পোষ্ট করব বলে রেখে দিয়েছিলাম ,আজকে সেটাই আপনাদের সাথে শেয়ার করে নিচ্ছি।

চলুন উপকরণ গুলো দেখে নেওয়া যাক -

উপকরণ

১.মুরগির মাংস - ১কেজি
২.আলু পরিমাণ মতো ( আপনারা চাইলে নাও দিতে পারেন)
৩. পেঁয়াজ কুচি - ১কাপ
৪. কাঁচালঙ্কা - ১৫ টা
৫. গোটা রসুন - ৪ টে
৬.তেজপাতা- ৩ টে
৭. জিরে- ১ চামচ
৮.তেল পরিমাণ মতো
৯. আদা বাটা- ১ চামচ
১০.রসুন বাটা- ১চামচ
১১.জিরে বাটা- ১চামচ
১২.লবণ স্বাদ অনুযায়ী
১৩. টমেটো কুচি - ১ কাপ
১৪.হলুদ - ১ চামচ
১৫. কাশ্মীরি লঙ্কার গুড়ো - ১ চামচ
১৬.জল পরিমাণ মতো

এবারে রান্না শুরু করা যাক -

প্রথম ধাপ

প্রথমে আমি গ্যাসে হাঁড়ি বসিয়ে গরম করে নিয়েছিলাম।তারপর আমার পছন্দসই পরিমাণের আলু গুলোকে নুন আর হলুদ দিয়ে ভেজে নিয়েছিলাম। আপনারা চাইলে এইটা স্কিপ করতে পারেন। আমি কিন্তু একেবারে সহজ সরল গ্রাম্য পদ্ধতিতে রান্না করা দেখাচ্ছি।

20210818_121410.jpg

পেয়াঁজ কুচি

20210818_121350.jpg

দ্বিতীয় ধাপ

সেই তেলেই আমরা রান্না শুরু করবো। প্রথমে তেজ পাতা, জিরে, গোটা রসুন, কেটে রাখা পেঁয়াজ আর লঙ্কা দিয়ে দিলাম। সবকিছু কে কিছুটা ভেজে নিলাম। আমি এই সময় গ্যাসের আঁচ মিডিয়াম হাই রেখেছি। গ্রাম বাংলায় মাংস রান্নাতে গোটা রসুন অনেকেই দেন, আর অনেকেই মাংসে গোটা রসুন খেতে পছন্দ করে, আমি তাই দিয়েছি, আপানারা চাইলে বাদ দিতে পারেন।

20220131_102647.jpg

তৃতীয় ধাপ

এবার একটু নুন দিয়ে দেবো , আমি এখানে এক চামচ নুন দিয়ে দিচ্ছি।আমি আবার কিছুক্ষন ভেজে নেব।

20220131_102809.jpg

চতুর্থ ধাপ

দিয়ে দিচ্ছি আদা ,রসুন, জিরে বাটা।আর মিশিয়ে নিচ্ছি এবং মশলা টা কষাতে শুরু করবো।

20220131_102932.jpg

পঞ্চম ধাপ

দিয়ে দিচ্ছি হলুদ, আবার মিশিয়ে নিয়ে খুন্তি দিয়ে নাড়তে থাকবো এবং মশলা কষাতে থাকবো।

20220131_102956.jpg

ষষ্ঠ ধাপ

কিছুক্ষন মশলা টা কষিয়ে নেওয়ার পর,আমি দিয়ে দিচ্ছি এক কাপ টমেটো কুচি।আর মশলার সাথে মিশিয়ে নিচ্ছি।

20220131_103023.jpg

সপ্তম ধাপ

সব কিছুকে ভালো ভাবে রান্না করার পর মশলা রেডি হয়ে গেছে, এবার দিয়ে দিচ্ছি মুরগির মাংস।আর তারপর মাংস গুলোকে মশলার সাথে মিশিয়ে নিচ্ছি।

20220131_103120.jpg

অষ্টম ধাপ

দিয়ে দিচ্ছি কাশ্মীরি লঙ্কার গুড়ো। আর আবারও মিশিয়ে নিচ্ছি সব কিছু। এবার ঢাকনা দিয়ে দেবো হাঁড়ির ,আর মাংস কষতে দেবো।

20220131_103153.jpg

নবম ধাপ

১০ মিনিট পর ঢাকনা তুললে দেখা যাবে মাংস থেকে তেল ছেড়েছে, তখন দিয়ে দেবো ভেজে রাখা আলু গুলো।আর মিশিয়ে নেব খুন্তির সাহায্যে।

20220131_103253.jpg

দশম ধাপ

এবার দিয়ে দেবো গরম জল পরিমাণ মত। আর মাংস সিদ্ধ হতে দেবো । হাঁড়ির ঢাকনা দিয়ে দেবো।

20220131_103650.jpg

আর এই ভাবেই সিদ্ধ হয়ে গেলে, দিয়ে দেবো গরম মশলার গুড়ো অথমা বাটা , আর মিশিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে মুরগির মাংস। এবার আপনারা ঝোল কতোটা রাখবেন ,সেটা আপনাদের মন মত হবে।

20210818_150216.jpg

মামারবাড়ীতে এই ভাবে হাঁড়িতে মাংস রান্না করে বেশ মজা পেয়েছিলাম। আশা করছি আপনাদের সকলের আমার আজকের পোস্ট ভালো লেগেছে। আমার মামি ভীষণ ভালো রাঁধে, সেই আন্দাজে আমার রান্না কিছুই না, তবুও সেদিন খুব মজা হয়েছিল।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি পোস্ট।ভালো থাকবেন সবাই।
@isha.ish

Sort:  
 2 years ago 

আপনার রান্না সত্যিই ভাল লাগছে, এবং রেসিপিটি তৈরি করা খুব সহজ, সুস্বাদু খাবার ভাগ করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ

 2 years ago 

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

আপনাকে স্বাগতম

 2 years ago 

আপু অনেক সুন্দর রান্না করেছেন মামার বাড়িতে।এমন সুন্দর রান্নার জন্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

ওয়াও আপু আপনি অনেক সুন্দর করে আপনার মামারবাড়ীতে ঝটপট মাংস রান্নার রেসিপি টা বেশ সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে উপস্থাপনা করেছেন। যা দেখে জিভে জল এসে গেল আমার। আর যাই হোক সব মিলিয়ে আপনার পোস্টটি অনেক সুন্দর হয়েছে। আর তাই আপনাকে আমার পক্ষ থেকে জানাই প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন ধন্যবাদ আপনাকে আপু।

 2 years ago 

আপনারজন্যও অনেক শুভেচ্ছা রইল।

 2 years ago 

আলু এবং মাংসের ভুনা রেসিপি দেখে মনে হচ্ছে খুব সুস্বাদু হয়েছে রেসিপিটি দেখে খুব খেতে ইচ্ছে করছে । ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি মামার বাড়ি মধুর হাড়ি আজকে তার প্রমান পেলাম। আপনি খুবই চমৎকার ভাবে রেসিপি পোস্ট টি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন । ধন্যবাদ আপু আপনাকে এমন সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

বাহ্ , দেখিতো ইচ্ছে করছে চট করে এক লোকনা মুখে তুলে নেই। আমারও মুরগির মাংস খুব পছন্দের। সাধারণত বাড়িতে মুরগির মাংস টাই বেশি খাওয়া হয়। আর একদম ঠিক বলেছেন আপু রান্না করতে সময় কম লাগে কিন্তু স্বাদটা বেশ দুর্দান্ত হয়। বোঝাই যাচ্ছে মামা বাড়িতে গিয়ে বেশ মজা করে রান্না করে খেয়ে এসেছেন। ধন্যবাদ আমাদের সাথে এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য। ভালো লাগলো পোস্টটি পড়ে।অনেক ভালোবাসা রইলো আপু আপনার জন্য।

 2 years ago 

হাহাহা, খেয়ে নিন দিদি, হাঁড়ি ভর্তি আপনার জন্য অপেক্ষা করছে। ধন্যবাদ দিদি।

 2 years ago 

এতো সুন্দর রেসিপি আপনি এতোদিন পর শেয়ার করলেন আপু।মামার বাড়ি মধুর হাড়ি আমি ছোট বেলায় মামার বাড়ি যেতে খুবই আনন্দবোধ করতাম। বড় হওয়ার পর থেকে ছোট বেলায় যে ফিলিংস পেতাম এখন আর তা পাই নাহ।যাইহোক, মামার বাড়িতে খুব সুন্দর মুহূর্ত উপভোগ করেছেন পড়ে ভালো লাগলো তার সাথে ঝটপট রেসিপি তৈরি অসম্ভব সুন্দর হয়েছে। অনেক অনেক শুভকামনা আপু।

 2 years ago 

অনেক ধন্যবাদ দাদা নিজের অনুভূতি ভাগ করে নেওয়ার জন্য।

 2 years ago 

মামার বাড়ি কিন্তু ভীষণ আনন্দের একটা জায়গা। আর আপনি যে মামারবাড়িতে গিয়ে দারুণ ভাবে আনন্দ করেছেন তা বোঝাই যাচ্ছে। তিন বোন মিলে যখন এত আনন্দ করে রান্না করেছেন, রান্নাটা খুব ভালো হয়েছিল তা বোঝাই যাচ্ছে।আর হাঁড়িতে মাংস রান্না করার কিন্তু একটা আলাদাই টেস্ট হয়।তার স্বাদ ও কিন্তু দ্বিগুণ বেড়ে যায়।চিকেন আমারও ভীষণ প্রিয়। চিকেন এর রেসিপি খুব সুন্দর ভাবে রান্না করে আমাদের সাথে ভাগ করে নিয়েছেন।আর বোঝাই যাচ্ছে খেতেও যে দারুণ হয়েছিল। ফ্রাইড রাইস আর চিকেন কষা হলে কি চাই এটা আমার ভীষণ প্রিয় 😍।আর খুব ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি পড়ে।

 2 years ago 

খুব সুন্দর করে গুছিয়ে মন্তব্য করেছেন দিদি। ভালো থাকুন।অনেক ভালোবাসা রইলো।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 59238.58
ETH 3176.28
USDT 1.00
SBD 2.45