বৌদিকে সাজুগুজু করানোর গল্প || ১০% বেনিফিট @shy-fox এর জন্য
নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন। আমিও ভগবানের আশীর্বাদে ভালো আছি। কিন্তু মাঝেমধ্যে আবহাওয়ার খেল দেখে একেবারে অবাক হয়ে যাই। কাল রাত থেকে অতিরিক্ত গরম লাগছিল। মনে হল লেপ-কম্বল টাঙে তুলতে হবে ।কিন্তু হঠাৎ করে সকালের রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়া দুপুরে এসে মেঘলা হল।
ঝমঝম করে বৃষ্টি পড়তে শুরু করল ।আর সাথে ঝোড়ো হাওয়া ঠান্ডা টাকে আবার এনে দিল। ঠান্ডা নিয়ে আমার কোনো চাপ নেই , গরমই পছন্দ করি না আমি ।যাই হোক আজকে আপনাদের সকলের সাথে আমি শেয়ার করতে চলেছি সাজুগুজুর গল্প।
আপনারা যারা আমার প্রতিনিয়ত পোস্ট পড়ে থাকেন, তারা হয়তো জানবেন আমার পাশের বাড়ির এক বৌদি আছে, যাকে সাথে করেই আমি মাঝেমধ্যে এদিক-সেদিক যাই। কেনাকাটা থেকে শুরু করে আমার কোন কাজের জন্য যাওয়া মানে আমার কোথাও যেতে হলে আমি বৌদিকে সাথে করে নিয়ে নিই। আর বৌদি ভীষণ ফ্রেন্ডলি ।
তাই দুজন মিলে এখানে ওখানে যেতেও ভালো লাগে ।কিছুদিন আগে বৌদির মামার বিয়ে ছিল। তাও আবার আমার পরীক্ষার মধ্যে পড়েছিল। তবে ভগবানের কৃপায় বৌভাত পরীক্ষাটা শেষ হয়ে যাওয়ার পরেই ছিল ,বলেই আমি বৌদির সাজুগুজুর দায়িত্ব নিয়ে নিতে পেরেছি।
বৌদি প্রথমে সরস্বতী পুজোর দিন এসে সন্ধ্যেবেলায় হাতে মেহেন্দি করে নিয়ে গেছে আমার কাছ থেকে। আমি মেহেন্দি করতে খুব একটা ভালো পারিনা ।তবে যেটুকু পারি কাজ চলে যাওয়ার মতন। বেশিরভাগ সময় নিজের হাতের মেহেন্দি গুলো আমি নিজেই করে থাকি ।
বৌদি সবই জানে ,তাই বৌদির আবদারে মেহেন্দি করে দিতে হলো দুই হাতে। কিভাবে কিভাবে মেহেন্দি করেছি পুরো ছবি আমি তুলে রেখেছিলাম আপনাদের দেখাবো বলে। সে অনুযায়ী সেগুলো শেয়ার করলাম ।
মেহেন্দি হয়ে যাবার পর ,পরের দিন সকালবেলায় হাতের দুর্দান্ত রং আমাকে বেশ খুশি করে দিল। যাইহোক বৌভাতের দিন আমার সেদিন পরীক্ষা নেই ।পরীক্ষা শেষ হয়ে গেছে। তাই বৌদিকে সময়টাও দিতে পারলাম ।বৌদি এসেছিল সাজুগুজু করতে। সুন্দর করে হালকা হালকা সাজুগুজু করিয়ে দিলাম ।
ওই আজকালকার ব্রাইডাল মেকআপ যেগুলো হয় ,মুখের ওপর একটা পাউডার সাদা ভূতের মত দেখতে লাগে ।ওরকম না ।একেবারেই নিজের মতো করে বৌদির স্কিন কালার অনুযায়ী ফাউন্ডেশন ব্যবহার করে, নরমাল কিন্তু খুব সুন্দর একটা মেকআপ করার চেষ্টা করলাম। যেটা বৌদির খুব পছন্দ হয়েছে।
বিয়ের দিনকে যেহেতু আমার পরীক্ষা ছিল, তাই বৌদি আমার কাছে না এসে, গিয়েছিল একটা পার্লারে। সেখান থেকে আসার পরেই বউদির মুখটা দেখার মত ছিল। সারা মুখ সাদা,বৌদির একেবারেই পছন্দ হয়নি। সেই নিয়ে বৌদির ভীষণ মাথা গরম ছিল সেদিনকে ।
কিন্তু আমার কাছে মেকআপ করার পর খুব ভালো লেগেছে বৌদির।এবার তো মনে হয় না আর আমাকে ছাড়বে , যতবার এদিক ওদিক যেতে হবে অথবা বিয়ে বাড়ি থাকবে আমার কাছে এসেই সাজদে বসে যাবে।
তারপর বৌদির চুলগুলোকে কার্ল করলাম আমার কালার এর সাহায্যে। যদিও বৌদির মাথার চুল কোঁকড়ানো, তবে আরও সুন্দর করতে কার্ল করলাম। আমি সেভাবে চুলও বাঁধতে পারিনা ।নিজের চুল ও, আমাকে কেউ না কেউ বেঁধে দেয়। আমি যেভাবে চুল বাঁধতে পারি, সেভাবেই আমার বিয়ে বাড়ি থেকে শুরু করে সব জায়গায় কেটে যায়।
আর বেশিরভাগ সময় চুল ছেড়ে থাকতে আমার ভালো লাগে। বৌদির মাথার চুলের ওপর কি করব ,তাই বুঝে পেলাম না ।তাই সামনের দিকটা কিছুটা পাফ করে নিয়ে ,পেছনের চুল গুলোকে কার্ল করে দিলাম ।আর সামনের দিক থেকে কিছুটা কার্ল করে দিলাম ।দেখলাম বেশ দেখতে লাগছে। তারপর মাথায় ফুল গুঁজে দিলাম ।মামার বিয়ে বলে কথা। একটু সাজবে নাহ!
তারপর আসলো শাড়ি,বৌদি শাড়ি পরতে পারে ,কিন্তু আটপৌরে করে শাড়ি পরা সেটা পারেনা ।এই কাজ আমি এর আগে কখনো করিনি ।ইউটিউব দেখে দেখে সেই কাজও সেদিন করে ফেললাম। বৌদির পাল্লায় পড়ে আর কত কিছু শিখতে হবে, ভগবান জানে। তার পরে দেখলাম শাড়িটাও দুর্দান্ত করে পড়িয়ে ফেলেছি।
সব মিলিয়ে বৌদির সাজুগুজু হওয়ার পর, খুব মিষ্টি লাগছিল দেখতে বৌদিকে।বৌদি চলে গেল ,তারপর ওই বৌদির মামারবাড়িতে আমাদেরও নিমন্ত্রণ ছিল ।কারণ বৌদির মামার বাড়ি এখানেই। রাতের বেলায় আমিও কোনরকমে রেডি হয়ে চলে গেলাম ওখানে।
তারপর খাওয়া-দাওয়া করে বাড়ি ফিরলাম। সব মিলিয়ে একটা নতুন অভিজ্ঞতা বলা যেতে পারে। তবে বেশ মজা লেগেছে সব কাজ করতে। আশা করছি আমার আজকের পোস্ট আপনাদের সকলের ভাল লেগেছে। সকলে ভাল থাকুন ।সুস্থ থাকুন।
আপনি তো দেখছি সব কাজেই বেস্ট, যাকে বলে অলরাউন্ডার। খুব সুন্দর ভাবে আপনার বৌদিকে সাজিয়েছেন। হাতে খুব সুন্দর ভাবে মেহেদি লাগিয়ে দিয়েছেন দেখছি। একটা কথা ঠিকই বলেছেন, ব্রাইডাল মেকআপ মানে একেবারে সাদা ভুতের মত মেকআপ একদমই পছন্দ না। নরমাল সাজ যে কাউকে অনেক ভালো লাগে দেখতে। বিষয়টা খুবই ভালো লাগলো। আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
আপনাদের এত অনুপ্রেরণা আমাকে অলরাউন্ডার বানিয়ে তুলেছে ।ভবিষ্যতে যে আর কত কি করবো ,তা ভগবান জানে। তবে অবশ্যই ভালো কিছুই করতে থাকব এইভাবে।
আপু বেশ ভালো করে সাজিয়েছেন তো।আর মেহেদীর ডিজাইন টাও অনেক ভালো হয়েছে। আমারো মেহেদী পরতে ভালো লাগে।আমার কাছে ও গর্জিয়াস সাজ তেমন ভালো লাগে না।আর পার্লারে যাওয়া মানেই গর্জিয়াস। তাই বাসায় বসে সিম্পল সাজ অনেক সুন্দর। আপু আপনি সুন্দর করে চুল গুলো সুন্দর করে কাল করেছেন।ফুল দেওয়ায় সুন্দর লাগছে।শাড়ি পরাটাও ভালো হয়েছে। সব মিলিয়ে চমৎকার হয়েছে।ধন্যবাদ
সকলকেই আসলে নর্মাল এবং সাধারন সাজে বেশি মানায়। কিন্তু কেন জানি না আজকালকার মানুষ সমস্ত অনুষ্ঠানে ভূতের মত সাজে ।সে না হয় মানলাম বিয়ের দিনের ব্যাপারটা আলাদা।তবুও যে যা করে শান্তি পায়, তাই করুক।
ওয়াও ইউটিউব দেখে আপনি চমৎকার ভাবে আপনার বৌদিকে শাড়ি পড়িয়ে দিয়েছেন। তা ছাড়াও অনেক সুন্দর ভাবে সাজিয়েছেন ।আপনার বৌদিকে দেখতে বেশ মানাচ্ছে। আসলে সাজুগুজু করানো কিন্তু একটা প্রতিভা যেটি আপনার মধ্যে রয়েছে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দিদি আপনার চমৎকার এই পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ইউটিউব এখন সবকিছুই শিখিয়ে দিচ্ছে। মাঝেমধ্যে নতুন কিছু করতে বেশ ভালোই লাগে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
এটা কিন্তু মোটেও ঠিক করেননি দিদি,পার্লারের টাকাটা লস করলেন। সাজুগুজু করার জন্য পার্লারে হয়তো কিছু টাকা পেত, সেটা আর আপনি হতে দিলেন কই। নিজে সাজুগুজু করিয়ে দিয়েছেন। দিদি অনেক সুন্দর ভাবে বৌদিকে সাজিয়েছেন। আসলে বৌদি কি রকম পুরস্কৃত করেছে জানিনা, তবে আপনার সাজুগুজুটি পুরস্কারের যোগ্য। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, ফ্যামিলির সবাইকে নিয়ে সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন এই কামনা করি।
হাহাহাহা, ওই সাদা ভুতের মত করে দেবে আমার বৌদিকে, এটাতো আমার সহ্য হতো না। ওই কারণেই পার্লারের পথ বন্ধ করেছি। অনেক ধন্যবাদ দাদা। অনেক মজার কমেন্ট ছিল।
আপু, আপনার বৌদি মানে আমারও বৌদি, আর বৌদির উদ্দেশ্যে একটা গান বলতে চাই। গানটি হচ্ছে----দিদি তেরা দেবর দিওয়ানা। থাক বাকি গান টুকু পরে কোন একদিন শুনিয়ে দেব। আপনার ও বৌদির ছবিটি খুবই সুন্দর হয়েছে। আপনাদের দুজনকেই অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
সেরা সেরা! এইবার দেখছি সব বৌদিরা আপনার প্রেমে পড়ে যাবে ,আপনি যদি এরকম গান গাইতে থাকেন।🤣
আমার বোন তো অনেক সুন্দর সাজাতে পারে। ভাবছি আমি একদিন চলে যাবো তোমার কাছে সাজতে।কি দেবে তো আমাকে সাজিয়ে? আমি সাজতে খুব পছন্দ করি। অনেক সুন্দর হয়েছে সাজানো দিদি। হাতের মেহেদী অনেক সুন্দর হয়েছে।আর শাড়ী পড়ানো অনেক সুন্দর হয়েছে।সব মিলিয়ে অনেক সুন্দর হয়েছে দিদি।
তোমার বোন বলেইতো কত কিছু করতে পারে,, যেমন বৌদি তার তেমন বোন ।আর হ্যাঁ অবশ্যই একদিন চলে এসো ।তোমার আসা নিয়ে আমার কত কত প্ল্যান !তুমি কবে আসবে বলতো! আমার কিন্তু আর তর সইছে না।
সাজগোজ খুব একটা ভাল বুঝি না। তবে হাতে মেহেদী দেয়ার ব্যাপার টা অনেক বার দেখেছি। তবে ভেবে পাই না এত সুন্দর ডিজাইন কিভাবে করেন। একটুও কি হাত কাপে না। একেবারে লাইন গুলো একের পর এক । সাথে কত পেচ এবং ফুল তৈরী। অবাক লাগে। দারুন হয়েছে সাজানো। ধন্যবাদ । ভাল থাকবেন।
অনেক অনেক ধন্যবাদ দাদা। হয়ে যায় দাদা ।কিভাবে হয় জানিনা।