ভয়ঙ্কর জলের অবস্থা|| পাট পঁচা গন্ধ
নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন। আজকের লেখাটা একটু অন্যরকম লিখতে এসেছি। কৃষ্ণনগর শহরের প্রাণ জলঙ্গি নদীকে নিয়ে এ লেখা আমার। এ নদীটি নদীয়া জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে কৃষ্ণনগর শহরের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে মায়াপুরের কাছে ভাগীরথী নদীতে মিলিত হয়েছে । এই নদী গঙ্গার শাখা, প্রথমেই নদীর নাম ছিল খড়ে নদী ।পরবর্তীকালে এই নদী প্রবাহ হুগলি নদী নামে পরিচিত।
বহু বছরের ইতিহাস বহন করছে কৃষ্ণনগর শহরের প্রাণ জলঙ্গি। বর্তমানে নদীটিতে পলি জমে গভীরতা অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে। বর্তমানে এই নদীর অবস্থা ভীষণই খারাপ ।কিছু কিছু জায়গাকে দখল করে চাষাবাস শুরু হওয়াতে এবং নদীর বিভিন্ন জায়গায় কচুরিপানায় ভরে যাওয়াতে জলঙ্গী নদীর এখন শোচনীয় অবস্থা। নদীর গতিশীলতার হ্রাস পেয়েছে বহুল পরিমানে।
এই নদী বাঁচাতে উদ্যোগ নিচ্ছে না কৃষ্ণনগরবাসী, এমনকি সরকার। আর যার ফলস্বরূপ জল দূষণ বেড়েছে ।যে নদী থেকেই সারা কৃষ্ণনগর এর জল সাপ্লাই হয়। তার এই ভয়াবহ দশাতে আর কত দিন সব ঠিক থাকতে পারে!
গত দু-তিন দিন ধরে একটা ঘটনা ঘটছে ।প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তো জলে কোন ওষুধ মেশানো হয়েছে ।কিন্তু আসলে তা নয়। পাট পচা দুর্গন্ধটা সকলের টের পাচ্ছে ।এবার প্রত্যেকটা বাড়িতে টাইম কলের জল দিয়ে একটা অদ্ভুত পাট পচা গন্ধ ।কিছু মানুষ তো এই জল খায়, তা দিয়ে রান্না করে এবং স্নান করে। তাদের কি দুর্দশা একবার ভাবুন তো !
আমার বাড়িতে যখন থেকে টের পাওয়া গেছে। তখন থেকেই টিউকলের জল অর্থাৎ ভূনিম্নস্ত জলের সাথে লাইন করে জলের ট্যাঙ্ক ভর্তি করা হচ্ছে। কিন্তু চারিপাশের অবস্থা ভয়াবহ ।এভাবে চলতে থাকলে তো চর্ম রোগে আক্রান্ত হতে হবে। সাথে পেট খারাপ হবে।
এ সকল মূলে হচ্ছে মানুষ অর্থাৎ জনসমাজ। জনসমাজের কারণেই আজ জলঙ্গি ভয়াবহভাবে বিপর্যস্ত ।আর যার জন্যই এসব শুরু হয়েছে। কৃষ্ণনগরবাসীর উচিত খুব কড়াভাবে পদক্ষেপ নেওয়া। সাথে সরকারেরও। কারণ সরকারের সাহায্য ছাড়া কখনো কোন কিছু সম্ভব নয়। তবে এই অবস্থা দেখে খুবই খারাপ লাগছে।
এর আগে আমি বলেছিলাম আমার ভাই এই নদীতে সাঁতার শিখতে যেত ।সে সাঁতার শিখেও ফেলেছে। এরকমই একদিন সাঁতার শেখার দিন আমার বাবা নদীর পাশ থেকে এই ফটোগ্রাফি টা করেছিলেন। আমি বাবার কাছ থেকে ছবিটা সংগ্রহ করি এবং ছবিটা দেখেই কিছু লাইন লিখে ফেলি। আজ সেটাই আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করে নিলাম।
আমি অপেক্ষা করছি
জনসমাজের সাথে।
তোমার সেরে ওঠার
দিন গুনছি রোজ।
সকাল দুপুর আমার খেলা যেখানে
সেখানেই আজ মৃত্যুর পাচ্ছি খোঁজ।
ওরা অবহেলায় কেড়ে নিয়েছে তোমার দর্পণ।
আগের বছরও তোমার চোখ দিয়েই
শ্রাবণের নীল সাদা মেঘ ভেসে যেতে দেখেছি।
আজ আমার জলঙ্গি পঁচা গন্ধ
ডেকে আনছে ভয়াবহ শরৎ।
ডাঙায় দাঁড়িয়ে আমার সাদা পালকগুলো
তোমার অতীত নিয়েই স্বপ্ন দেখে ।
তোমার শীতল ছোঁয়ায় ডুবতে চায় রোজ।
আশা করছি আমার আজকের পোষ্ট আপনাদের সকলের ভাল লেগেছে। ভালো থাকুন।
@isha.ish
আমার সবচেয়ে বেশি খারাপ লাগে এই জেনে যে, আধুনিক যুগে অনেক মানুষ কুসংস্কার মুক্ত হতে পারে নাই। সমাজের সুস্থতা বজায় রাখতে কখনো সচেতন দৃষ্টিভঙ্গি রাখে না। তবে আপনি খুব সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করে অনেক মানুষকে সচেতন করার সুযোগ করে নিয়েছেন। তাই খুব ভালো লাগলো। আশা করি এই পোস্ট পড়ে অনেকেই এ বিষয়ে অবগত হবে।
হ্যাঁ হতে পারে আমার এই পোস্টটা যারা যারা পড়েছেন তাদের ভেতরে ক্ষণিকের জন্য হলেও ভয়টা কাজ করেছে যে ,আমরা যে নোংরা করছি নদী প্রত্যেকদিন। তার ফলাফল কতটা বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।
জলঙ্গি নদী সম্পর্কে আপনার কথাগুলো পড়ে বুঝতে পারলাম নদীটি আজ তার পূর্বের সৌন্দর্য হারিয়ে ফেলেছে মানুষের অপব্যবহারের কারণে। নদী সংরক্ষণ এর বিষয়ে আমাদের সকলকে সচেতন হওয়া উচিত এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। দারুন এক অনুভূতি শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
শুধু এই নদী কেন এরকম ভাবে অনেক নদী নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ,আসলেই আমাদের সকলকে সচেতনতা অবলম্বন করা উচিত।
এই ব্যাপারটা সত্যিই বেশ খারাপ লাগলো। আমাদের আশেপাশের পরিবেশ আসলে আমরা নিজেরাই জেনে বুঝে নষ্ট করছি। বিশেষ করে জলের ব্যাপারটা তো আরো বেশি স্পেশাল। অনেক বড় বড় রোগ এ জলের মাধ্যমে হয়। সুতরাং এই বিষয়ে গণসচেতনতা বৃদ্ধি করা সত্যিই খুব গুরুত্বপূর্ণ।
জল ব্যাপারটা খুবই সেনসিটিভ ।সভ্যতা নদী কেন্দ্রিক। তাই গণসচেতনতা বৃদ্ধির তো অবশ্যই প্রয়োজন।