বৌদির হাতে মেহেন্দি করে দিলাম

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

বন্ধুরা আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন। আমিও সুস্থ আছি। মেহেন্দি নিয়ে কি শুরু করি,মেহেন্দি করতে এক সময় খুব ভালবাসতাম। হ্যাঁ অবশ্যই করতে এবং নিজের হাতে পড়তে। আমি নিজের হাতে নিজে মেহেন্দি করতে খুব ভালোবাসতাম।অন্য কেউ করে দিলে মজা লাগতো না। আর এখন সময় এমন মেহেন্দি করাই হয় না।

20220827_201117.jpg

আমার পছন্দের মেহেন্দি হলো কাবেরী মেহেন্দি।খুব ভালো রং হয় এই মেহেন্দি র। মাত্র দশ টাকা দাম । আর আমার দুই হাত হয়ে যায়। ছোটো হাত ,তার ওপর আমি ভর্তি করে মেহেন্দি করিনা। এই কারণে একটাতেই আমার হয়ে যায় ।

20220827_194744.jpg

বহু সময় পরে, বলা যেতে পারে এক দেড় বছর পর আমি আবার মেহেন্দি কিনলাম , ভাবলাম নিজে পড়বো। কিন্তু আবার ইচ্ছা করলো না। বৌদি হয়ে গেল বলির পাঠা। পাশের বাড়ির প্রিয় বৌদিকে ডাকলাম। আর জেদ করলাম , যে দাও মেহেন্দি করে দেবো।

20220827_194720.jpg

বৌদির কাজের হাত, হাত বন্ধ করে রাখলে কি করে হবে। সংসারের কাজ। কিন্তু আমার কথা ফেলতে না পেরে। রাজি হয়ে গেল বৌদি। সন্ধ্যা বেলার পর বসে পড়লাম।আর নিজের মন মত বৌদির হাতে মেহেন্দি করতে থাকলাম।

20220827_194955.jpg

বৌদি রোবটের মত বসে ছিল। আর আমি মেহেন্দি করছিলাম। ঈশান এসে জ্বালাতন যেমন করে, তেমন করছিল মাঝে মধ্যেই। আর ওই সময় আমার বৌদি ওর মুখে মেহেন্দি লাগিয়ে দেওয়ার ভয় দেখাচ্ছিল। ব্যাপারটা মজার ছিল।

20220827_195119.jpg

বেশিক্ষণ সময় লাগেনি। হাতের তালুতেই মেহেন্দি করেছি , তাও সাদাসিদে। বেশি জটিল নয় এবং ভর্তি করে নয়। স্টেপ বাই স্টেপ ছবিগুলো তুলেছিলাম ,আপনাদের জন্যই। সেটাই পোস্ট করলাম আজ।

20220827_195453.jpg

কিছু ঘটনা একটু শেয়ার করতে ইচ্ছা করছে।মেহেন্দি নিয়ে ছোটবেলায় খুব ভুগেছি।দাদা দিদিদের বিয়ের সময় আমার খুব মেহেন্দি করতে ইচ্ছা করত ।কিন্তু আমার বাবা কিছুতেই মেহেন্দি পড়তে দিত না। কেমিক্যাল দেওয়া আছে, এটা সেটা বলে আমাকে বার বার ভয় দেখাতো আর নিজেও ভয় পেত।

20220827_195708.jpg

কারণ এরকম অনেক জায়গায় শোনা যেত , মেহেন্দি দিয়ে হাতের স্কিন প্রবলেম এর কথা। স্বাভাবিক ভাবে বাবা চাইতো না আমার কচি হাতে প্রবলেম হোক। একবার আমার বান্ধবীর হাতে লাল রঙের মেহেন্দি দেখে খুব অবাক হয়েছিলাম। আমি তো জানতাম , মেহেন্দি শুধু মেরুন রঙের হয়। কিন্তু লাল রঙের মেহেন্দি কি করে। সে বান্ধবী কিছুতেই আসল কথা বলছিল না।

20220827_200040.jpg

খালি সবাইকে বলছিল, আমার হাতেই এরকম রং এসেছে। বহুদিন পর আমি জানতে পারি যে চাইনা মেহেন্দি বলে একটা মেহেন্দি পাওয়া যায়, যার রং একদম সিঁদুর লালের মত হয়। তখন ঐ বান্ধবীকে খুব ভাবে ধরেছিলাম।

20220827_200329.jpg

আমার মনে আছে, স্কুলে মেহেন্দি পড়ে গেলে কি বোকা দিত। আমাদের স্কুল মিশনারি স্কুল। তাই খুব স্ট্রিক্ট ছিল। হাতে নখ , নেল পলিশ তো একদমই চলত না। তার ওপর মেহেন্দি তো দূরের কথা। স্কুলেই ঢোকা যাবে না ওই নিয়ে।

এই ভয়ে মেহেন্দি করা হতো না বেশি। যখন কলেজে উঠলাম। তখন থেকে মেহেন্দি করার পাগলামি চাপলো। নিজের হাতেও যেমন করতাম। অন্যের হাতেও। পাশের বাড়ির কারোর বিয়ে হচ্ছে, সে বেটাও আমার কাছে মেহেন্দি করতে আসতো। আসলে প্রাকটিসের ওপর সব কিছু নির্ভর করে। আমি এত মেহেন্দি করতাম যে আমার কাছে খুব অল্প সময় লাগতো আর ডিজাইন ভাবতেও হতো না।

আর এই ভাবে বেশি কিছুকাল চললো। সময় পরিবর্তন হলো। এখন আর করা হয় না।আবার কবে যে নিজের হাতে করবো , জানিনা। তবে হয়তো খুব শিগগিরই।

আশা করছি ডিজাইন ভালো লেগেছে আপনাদের। সকলে ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন।

@isha.ish

Sort:  
 2 years ago 

আপনি তো দেখছি খুবই দক্ষতা সহকারে এবং নিখুঁতভাবে অনেক সময় দিয়ে এই মেহেদির ডিজাইন অংকন করেছেন আপনার বৌদির হাতে। খুবই সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে উপস্থাপনা করে শেয়ার করেছেন মেহেদী ডিজাইন। শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 2 years ago 

মেহেদী ডিজাইন টা সিম্পল এর মধ্যে ভালো হয়েছে। আমার কাছে পুরো হাতে মেহেদি ডিজাইন ভালো লাগে না।আমিও আগে ঈদের মধ্যে বা যে কোন উৎসব এ ছোট বড় সবাইকে মেহেদী লাগিয়ে দিতাম। কিন্তু এখন বাহিরে থাকার কারণে একদমই ভুলে গিয়েছিলাম। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি তে আসার পর সবার ডিজাইন দেখে একটু আকটু শুরু করেছি।এখন বেশ ভালো লাগে। আমার কাছেও কাবেরী মেহেদী ভালো লাগে। ধন্যবাদ আপু আপনাকে সুন্দর একটি মেহেদী ডিজাইন শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 
মেহেন্দী দেওয়া মেয়েদের একটা অনেক বড় শখ।বিশেষকরে আমাদের এখানে কোন বিয়ে বা কোন অনুষ্ঠানে মেহেন্দী ব্যবহার বেশি দেখা যায়। আপনার পাশের বাড়ির বৌদিকে আপনি অনেক সুন্দর করে মাহেন্দী দিয়ে দিয়েছেন এবং প্রতিটি ধাপ খুব সুন্দর ভাবে উপস্হাপন করেছেন। আসলে একটা সময় অনেকেই মনে করতো মেহেন্দী দিলে হাতের সমস্যা হবে।যার দরুন আপনার পিতা আপনাকে মেহেন্দী দিতে নিষেধ করতো। অনেক সুন্দর হয়েছে দিদি আপনার মহেন্দী ডিজাইনটি যা আপনার বৌদিকে করে দিয়েছিলেন।এত সুন্দর একটি মেহেন্দী ডিজাইন অংকন করে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
 2 years ago 

সবসময় মেহেদী আর্ট দেখলে ঈদের কথা মনে পড়ে যায়।কারণ সচরাচর আপুদের কাছ থেকে ঈদের আগে মেহেদি দিয়ে থাকি আমি। বৌদির হাতে মেহেন্দি করে দিলাম দেখে অনেক ভালো লাগলো আর আপনি দেখতে অনেক সুন্দর ভাবে ডিজাইন করতে পারেন। ধন্যবাদ অনেক সুন্দর ছিল আপনার ডিজাইনটি।

 2 years ago 

দিদি আপনি অনেক সুন্দর করে মেহেদী আর্ট করতে পারেন। আমাদের একদিন মেহেদী পরিয়ে দিবেন। আপনার দেখে চেষ্টা করেছি তবে আপনার মতো হয়নি। ধন্যবাদ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

দিদি আপনার মেহেদি ডিজাইন টি সিম্পল হলেও অনেক সুন্দর হয়েছে। ডিজাইন গুলো অনেক সুন্দর ফুটে উঠেছে। নিশ্চয়ই আপনার বৌদির হাতের মেহেন্দির কালার অনেক সুন্দর এসেছে। আপনার বহু দিনের অভিজ্ঞতা আছে সেটা দেখেই বোঝা যায় মেহেদি ডিজাইন দেখে বোঝা যাচ্ছে।

 2 years ago 

পাশের বাড়ির কারোর বিয়ে হচ্ছে, সে বেটাও আমার কাছে মেহেন্দি করতে আসতো

তার মানে আপনি বেশ দক্ষ এবং ফেমাস বলাই যায় হি হি। মেহেদী নিজে নেয় না কারোর জন্য কেনাও হয় না তাই এই সম্পর্কে খুব একটা ধারণা নেই। কাবেরী মেহেদী টা আমাদের দিকে পাওয়া যায় না মনে হয়। আজ বৌদি হলো বলির পাঠা কথাটা শুনে বেশ হাসি পেল হি হি।।

 2 years ago 

আপনি মেহেদি টি খুবই সিম্পল ভাবে অঙ্কন করেছেন। সিম্পল মেহেদি ডিজাইন আমার কাছে ভালো লাগে। আমারও মেহেদী লাগাতে অনেক ভালো লাগে। যখনই সময় পাই মেহেদী লাগাতে শুরু করি। কাবেরী মেহেদী দিয়ে মেহেদী অংকন করলে অনেক সুন্দর রং হয়। ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

মেহেদি হাতে পড়তে আমার খুবই ভালো লাগে। কিন্তু আমি ভালোভাবে মেহেদি দিতে পারি না। এরজন্যে অন্যের সাহায্য নিয়ে পড়তে হয়। তাই খুব একটা পড়া হয় না। দেখে ভালো লাগলো যে আপনি এত সুন্দর ভাবে মেহেদী দিতে পারেন। ভাবলাম আপনার মেহেদী ডিজাইন দেখে নিজে একটু চেষ্টা করব। জানিনা কেমন হবে কিন্তু আপনার মত এত সুন্দর হবে না এটা নিশ্চিত। ধন্যবাদ আপনাকে আপু। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 2 years ago 

দিদি খুব ভালো লাগলো বৌদিকে মেহেন্দি দেওয়ার গল্পটা। কাবেরি মেহেন্দি আপনার পছন্দ, পছন্দ হাতে হালকা করে মেহেন্দি লাগানো। আমার ও হালকা মেহেন্দি অনেক পছন্দ। যদি ও খুব একটা মেহেন্দি ব্যবহার করি না। ধন্যবাদ আপু এমন সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.14
JST 0.028
BTC 59401.87
ETH 2615.39
USDT 1.00
SBD 2.40