পর্দার পেছনের গল্প - পার্ট ১|১০% বেনিফিট @shy-fox এর জন্য
নমস্কার বন্ধুরা ।আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন ।আমিও অনেক ভালো রয়েছি ।বেশ অনেকদিন পর আবার একটু গল্প করতে চলে আসলাম ।এই গল্পটা না করলেই নয় ।কারণ যেটা আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব, তার ফলাফল খুবই সুন্দর ছিল।
অন্ধকার
কিছুদিন আগেই আমাদের কমিউনিটি তে একটি দুর্ধর্ষ প্রতিযোগিতা হয়েছিল ।শীতকালীন প্রাকৃতিক দৃশ্যের ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতা ।আমাদের প্রিয় দাদা এই প্রতিযোগিতা আয়োজন করেছিলেন।
যখন এই প্রতিযোগিতার কথা শুনি, আমার মনে হয়েছিল যে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে গেলে ,প্রথম কথা আমাকে গ্রামের দৃশ্য ক্যাপচার করতে হবে। আমার বাড়ি থেকে গ্রাম বেশ অনেকটাই দূরে হয় । এই কনটেস্ট এর কথা শোনার পর থেকেই মাথার মধ্যে দু চারদিন ধরে অনেক কিছু প্ল্যান বানাতে থাকছিলাম ।সেই প্ল্যান মাফিক কাজগুলো শুরু হয়ে গেল ।
এর মধ্যে ছবি তুলবো কীভাবে
আমি সেদিন প্রতিযোগিতায় লেখার সময় বলেছি, আমি ভাবতে পারিনি আমি এত কিছু করে বসবো ,তবে ভীষণ মজা হয়েছে এই প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ করতে গিয়ে। আগের দিন রাতে আমাদের বাড়ির সকলকে জানানো হয়ে গেছিল, যে আমি পরের দিন ভোর চারটের সময় উঠে আমাদের পাশেই একটি গ্রাম পানিনালার দিকে যাব।
গাড়ীর মধ্যে সেলফি
কিন্তু কেউ সেরকম ভাবে আমার কথার গুরুত্ব দেয়নি, কারণ আমি সকাল সকাল উঠতে পারিনা ।কিন্তু সেদিনকে মনের ভেতরে প্রবল উত্তেজনায় ঘুমটা ভেঙে গেল ভোর চারটার সময়। উঠে মাকে ফোন করলাম আর পাশের বাড়ির বৌদিকেও। আধো আধো ঘুম নিয়ে তারাও আমার জেদাজেদীতে ঘুম থেকে উঠল।
তারপর রেডি হয়ে কোনরকমে রওনা দিলাম আমাদের গাড়ি করে ।গাড়ির কাকু ও খুব সাহায্য করেছে। সেও আমার কথা মত চারটের সময় ঘুম থেকে উঠে আমাদের ফ্যাক্টরি থেকে গাড়ি বার করে আমার বাড়ির কাছে চলে আসলো ।
শিউলি এসেছে
আমি আগের দিন দুপুরবেলায় সমস্ত ব্যবস্থা করে রেখেছিলাম ।আসলে কোথায় যাব এবং কোথায় ভালো দৃশ্য গুলো পাওয়া যাবে ,এই নিয়ে দু তিন দিন ধরে খুব চিন্তিত ছিলাম। একে-ওকে নানানভাবে জিজ্ঞেস করছিলাম। আমি খেজুরের গাছের ফটোগ্রাফি করতে চাই, কিন্তু সেরকম ভাবে কেউই আমাকে নির্দিষ্ট ঠিকানা বলতে পারছিল না ।
দুপুর ১ টা নাগাদ আমাদের বাড়িতে একজন দুধওয়ালা দুধ দিতে আসেন । ওনার বাড়ি ঠিক ওই জায়গায় ।আমার হঠাৎ করে মাথায় আসলো ওনাকে একবার বলে দেখি, সেই মতই ওনাকে বলার পর ,উনি বললেন যে ,হ্যাঁ আমাদের বাড়ির ওদিকে অনেক সুন্দর জায়গা রয়েছে এসব ছবি তোলার জন্য।
মাঠের মাঝে ঈশা ভূত
বন্ধুরা আপনাদের বলে বোঝাতে পারবোনা কতটা সাহায্য করেছেন উনি আমার কাজে ।আমরা সবাই মিলে অর্থাৎ আমি ,মা ,বৌদি আর আমাদের গাড়ির কাকু মিলে রওনা দিলাম ভোর এ।তারপর যখন ওখানে গিয়ে পৌঁছলাম পানিনালা স্কুলের সামনে। ওই দুধওয়ালা কাকু ওখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন কথামতো ।আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিলেন।
অত ভোরে এসে উনি শুধুমাত্র আমাদের জন্য দাঁড়িয়েছিলেন ।এটা ভেবে খুব ভালো লাগছিল। তখন সকাল বললেও যেন ভুল হবে ।ভোর বললেও যেন ভুল হবে। কারণ ঘুটঘুটে অন্ধকার ছিল চারিদিকে ।চারিদিকটা এতটাই অন্ধকার ছিল আমি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম যে এই অন্ধকারে আমি ছবি তুলব কিভাবে।
সবাইকে তো অনেক সকাল সকাল ঘুম থেকে তুলে নিয়ে চলে এসেছি। সকালের সূর্যের জন্য অপেক্ষা করতে হল কিছুক্ষণ ।ততক্ষনে গাড়ির কাকু আর আমাদের দুধ ওয়ালা চা খাচ্ছিলেন পাশের চায়ের দোকানে। তারপর যখন হালকা একটা আলো আসতে শুরু করল ।তখনই দেখি আমাদের দুধওয়ালা একজন কাকুকে ধরে নিয়ে এসেছেন ।উনি খেজুর গাছ থেকে রস ভর্তি হাঁড়ি নামাবেন।ওনাকে নাকি আমার কথামতো বলাই ছিল সবটা।
আমি কি করতে এত সকলে এসেছি সবটাই জানতেন উনি। কনটেস্ট এর জন্য প্রথম ধাপ অতিক্রম করেছিলাম এই ভাবেই। বাড়ির লোকজন , পাশের বাড়ির বৌদি, গাড়ির কাকু সকলের সাথে অনেক জেদ করে তবে অত ভোরে সবাইকে নিয়ে যেতে পেরেছি।
তারপর আমাদের দুধ ওয়ালার কাছেও আবদার করার পড়েই ওখানে সব কিছু পসিবল হয়েছে। অত অন্ধকারে আমাদের দেখে পাশের চায়ের দোকানে র গুটি কয়েক শীতে মোড়ানো মানুষগুলোও হাসাহাসি করছিল। চারিদিকের কুয়াশা হাড় কাঁপানো শীত আর মনের ভেতরে সেই একটা মজা ছিল ওই মুহূর্তে।
আমার ফটোগ্রাফির পিছনে অনেক অনেক গল্প রয়েছে ।সেগুলো একটা পোস্ট এর মধ্যে দিয়ে বলা অসম্ভব ব্যাপার ।তাই আজকের মত এখানেই পোস্ট শেষ করছি। বাকি পরের ঘটনাগুলো পরবর্তী পোস্টে বলতে থাকবো। সকলে ভালো থাকুন।
ওয়াও দিদি আপনার সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি তুলার পিছের গল্প গুলো জানতে পেরে ভালো লাগলো।আসলেই দিদি আপনার মা বৌদি যদি সহযোগিতা না করতো তাহলে অসম্ভব ছিলো। আর আপনি খুব ভোরবেলায় হার কাঁপানো শীতে ফটোগ্রাফি গুলো করেছেন।
আপনার জন্য অনেক অনেক ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা রইলো দিদি❤️
মা বৌদি সত্যি অনেক সাপোর্ট করেছে। ভালো লাগলো মন্তব্য পেয়ে দিদি। ভালো থাকবেন ।
🌹❤️
বুঝতে পেরেছি আপু আপনার এই কন্টেস্টের জন্য অনেক কষ্ট হয়েছে । আমরা এত কষ্ট করি নাই যার কারণে আমরা ফার্স্ট হতে পারি নাই। আপনি কষ্ট করেছেন ফাস্ট হয়েছেন । এর ফল পেয়েছেন ।এভাবেই সামনে এগিয়ে যান আরও উন্নতি করতে পারবেন আপু ।ধন্যবাদ সুন্দর মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য আপু।
আসলেই দাদা বেশ পরিশ্রমের মাধ্যমে এই ফলাফল পাওয়া, কষ্ট টা সার্থক বলা চলে ।