চোখের চেক আপ
শনিবার ছিল, বাড়ি যাইনি তবুও। চোখের চেক আপ করবো বলে। আমি যেখানে থাকি, তার খুব কাছেই আছে দিশা আই হসপিটাল। শনি রবি ছাড়া তো ক্লাসের ছুটিও নেই। তাই আগে থেকে অনলাইনে বুকিং করিয়ে নিয়েছিলাম। সেই মত দুই পাগলির সাথে সেদিন আমি দুপুরের দিকে হাঁটতে হাঁটতে বেরিয়ে পড়লাম। হেঁটে মাত্র ১০/১৫ মিনিট সময় লাগে । বেরিয়েই তিন জন মিলে বরফগোলা খেলাম।
আমি ভীষণ ভালোবাসি গোলা খেতে। কলকাতায় এসে একবারও খাওয়া হয়নি। দেখেছি কিন্তু খাইনি। আসলে সবাই মিলে না খেলে জমে না মজা টা। তো সেদিন বেরোতেই গোলা দেখে, তিনজন খুব খুশি হয়ে গেলাম। কাঁচা আমের খাট্টা মিঠা গোলা দারুন মজা দিলো দুপুর রোদে। খেতে খেতে ছবি তুলে নিলাম। ঝিলের পাশেই গোলার গাড়ি নিয়ে কাকু দাঁড়িয়েছিল ।
এবার এই দুই পাগলি, অ্যানি আর হাবু কে সাথে নিয়ে যাওয়ার কারণ টা বলি। শুনছিলাম যে চোখে চেকআপের সময় কিছু ড্রপ দেয় , যার কারণে চোখ বেশ কিছুক্ষণ আবঝা হয়ে থাকে। তাই ফিরে আসতে সমস্যা হতে পারে। নাহলে তো আমি একাই যেতাম। তো ওরা নিজেরাই আমাকে বললো ওরা যাবে। তাই দুই পাগলিকে নিয়ে যেতে হলো। ওরা খুব মজা নিচ্ছিল। বলছিল যদি চোখে না দেখতে পারিস, দুজন দুদিক থেকে ধরে বাড়ি নিয়ে আসবো ।
যাইহোক যাওয়ার পর নেম কল করলো , পেমেন্ট করলাম।মাত্র ২০০ টাকা নিল। তারপর আবার কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হলো, আবার নেম কল করলো। রুমের মধ্যে গেলাম। চোখে ড্রপ দিয়ে দিল একটা, তারপর আবার কিছুক্ষণ বসিয়ে রাখলো। তারপর আমার পুরনো চশমা দিয়ে একবার আর একবার অন্য গ্লাস দিয়ে দূরের লেখা পড়ার কথা বললো।
আমিও পড়তে থাকলাম। নিজের পুরোনো চশমাটা দিয়ে শেষ লাইনের লেখা গুলো আব্ঝা লাগছিল, নতুন লেন্স এ বেশি পরিষ্কার দেখছিলাম। বোঝাই গেলো পাওয়ার বেড়েছে। তারপর ওখান থেকে বেরিয়ে আবার কিছুক্ষণ বসতে হলো।
এবার ডক্টর এর রূম এ যেতে হবে। নেম কল হলো। চেক আপ করলেন। শুধু পাওয়ার চেঞ্জ হয়েছে, বাকি সব ওকে। ভদ্রমহিলা এত মিষ্টি দেখতে , আমার মা এর বয়সী হবেন। খুব ভালো লাগলো ওনার ব্যবহার।
তারপর বেরিয়ে ওদেরই চশমার যে পার্ট আছে, সেখানে গেলাম। কিন্তু পছন্দ হলো না একটাও ফ্রেম। তারপর ওখান থেকে বেরিয়ে কিছুটা হাঁটতেই লেন্স কার্ট এর শো রুম পেলাম। সেখানেই ঢুকলাম। আমার বন্ধু কিছুদিন আগে ওখান থেকেই চশমা কিনেছিল। তাই আমার জানাও ছিল এদের ফ্রেম গুলো বেশ ভালো।
এক এক করে ফ্রেম দেখতে থাকলাম। বেশ যুদ্ধ হলো , আসলে আমি খুব কনফিউজ হয়ে যাই চশমার ক্ষেত্রে। জামা কিনতে আমার এত সময় লাগেনা। ততক্ষণে আমার দুই পাগলি ক্ষেপে গেছে, এত এত দেখছি, আর কনফিউজ হচ্ছি বলে। অবশেষে পছন্দ হলো।
শুনলাম অফার চলছে, মেম্বারশিপ থাকলে বাই ওয়ান , গেট ওয়ান। আমি আমার বন্ধুকে ফোন করলাম। ওর মেম্বারশিপ আছে জেনে বেশ মজা পেলাম। সাথে সাথে আরেকটা ফ্রেম চুস করে ফেললাম। তারপর ৬৮৭০ টাকা বিল হলো। একটা চশমার ফ্রেমের দাম ছিল ৬০০০ এর কাছাকাছি। আর বাকিটা লেন্স। আর এই একটা চশমার সাথে, আরেকটা সম্পূর্ণ ফ্রি।
অর্ডার করে দিলাম। ওরা জানাল চার দিন পরে দেবে। তারপর আমি পে মেন্ট করে বেরিয়ে আসলাম।
ফেরার পথে হেড ফোন কিনালম। আমার হেড ফোন টা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। একটা সময় ছিল আগে থেকে এক্সট্রা হেড ফোন কিনে রাখতাম। হাহাহা, প্রেম টেম করলে যা হয় আর কী।
যাইহোক এখন হেড ফোন নষ্ট হয়ে যায়, তাও আলসেমি করে কিনিনা।
আমার ওয়্যার লেস হেড ফোন টায় গান শুনি, ব্যাস, আর লাগেনা। ফেরার পথে আমরা ঝিল পারে বসে আইসক্রিম খেলাম। আমার চেক আপের সময় এসির ঠাণ্ডা হাওয়া পেয়ে দুই পাগলি খালি ঘুমিয়ে যাচ্ছিল। আমি ছবিগুলো দেখে আজকেও সেদিনকার কথা ভেবে হাসছি।
ডেমো চশমাগুলোর ছবি দিয়েছি প্রথম ছবিটা। একটা চশমা দু দিনের মধ্যে আর আরেকটা চার দিনের মধ্যেই ডেলিভারী দিয়ে দিয়েছিল। খুব পছন্দ হয়েছে দুটো ফ্রেমই।
প্রায় দুই বছর চোখ এর চেক আপ করাইনি। যাক, ডাক্তার বলেছে যেহেতু আমার মাইনাস পাওয়ার।চশমাটা ব্যাবহার করতে , নাহলে পাওয়ার এর আবার সমস্যা হবে। তাই আগের মত বেপরোয়া হয়ে ঘুরছি না। চশমা ব্যবহার করছি এখন। আসলে এবার যে ফ্রেমটাও পছন্দ হয়েছে🤪।
ভালো থাকুন সকলে, সামান্য মূহুর্তটুকু শেয়ার করতে পেরে ভালো লাগলো।
শুনে তো আমারই খেতে ইচ্ছা করছে দিদি। রবফ গোলা আমারও অনেক পছন্দের। তাহলে চশমার পাওয়ার টা বাড়িয়ে ফেলেছেন বাহ। আর একটার সাথে আরেকটা ফ্রী বাহ বেশ। এবং আমি যদিও প্রেম করিনা তবে ইয়ারফোন ছাড়া একদিনও যায় না এক্সট্রা থাকে। ফেরার সময় আবার আইসক্রিম দারুণ ছিল দিদি।।
আপনার বর্ণনায় জাদু আছে দিদি। সাধারণ জিনিসকেও অনেক অসাধারণ ভাবে তুলে ধরতে পারেন আপনি।নিয়মিত চশমা ব্যবহার করুন আর চোখ ভাল রাখুন।
বরফগোলা আমারও খুব পছন্দ। আমাদের ঢাকায় খুব একটা এভেইলএবল না তবে যখনই দেখি মিস করি না। অনেক রেস্টুরেন্টে পাওয়া যায় কিন্তু গোলা টা খোলা আকশের নিচে ভ্যানের টাই মজা লাগে বেশি। চোখ দেখানোর জন্য মাত্র ২০০ টাকা অনেক কম এবং ভাল। আপনার চোখের পাওয়ার বেড়েছে শুনে খারাপ লাগছে তাও চিকিৎসা ত করতেই হবে। আপনার সাথের দুজন অ্যানি আর হাবু অনেক ভাল তারা আপনাকে শেষ পর্যন্ত সময় দিয়েছে। আমার বাসায় সারাদিন হেডফোন কানে রাখি বলে মন খারাপ করে। চশমার ফ্রেম অনেক সুন্দর হয়েছে। ধন্যবাদ দিদি।
দিদি চোখের চেক আপ করাতে গিয়ে যে প্রথমেই নিজের কাঁচা আমের খাট্টা মিঠা গোলা দারুন মজা দিলো দুপুর রোদে।হাহাহা । ঠিক বলেছেন একটা সময় থাকে আগে থেকে এক্সট্রা হেড ফোন কিনে রাখতে হয়। হাহাহা,। তবে দিদি আপনার পাগলি দুটি অনেক ভালো শেষ পর্যন্ত আপনাকে সময় দিয়েছে। আর চশমার পাওয়ারটা বেড়িয়ে ফেলেছেন জেনে ভালো লাগল। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
চোখ চেকাপ করা আমাদের সকলেরই উচিত। অনেকে জানেনা চোখের কি অবস্থা। কিছুদিন আগে আমাদের স্কুলে চক্ষু পরীক্ষা করার জন্য বাইরে থেকে ডাক্তার আনা হয়েছিল। সকল ছাত্র-ছাত্রী অভিভাবকদের চক্ষু পরীক্ষা করা হয়েছিল। দেখলাম অনেকেরই চোখের কম বেশি সমস্যা রয়েছে। যা হোক আলহামদুলিল্লাহ আমার কোন সমস্যা হয়নি এটাই সৃষ্টিকর্তার কাছে হাজার শুকরিয়া। তবে এটাই বলব নিয়ম মেনে চলুন এবং চোখের যত্ন নিন।
আজকে আপনার পোস্টটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো। আসলে চোখের যত্ন করতে হবে চোখের আমাদের খুবই মূল্যবান। আর আপনার চোখের চশমাটা আমার অনেক ভালো লেগেছে। একটি চশমার দাম ৬০০০ টাকা সাথে অন্য আরেকটা সম্পূর্ণ ফ্রি।ফ্রি নিতে সবারই ভালো লাগে, যাই হোক আপনার সুস্থতা কামনা করছি।
অনেকেই হয়তোবা শখ করেও চশমা পড়তে পছন্দ করে। কিন্তু আমার কাছে একদমই আনফরটেবল লাগে চশমা পরতে।তবে বিভিন্ন ফ্রেমের চশমা গুলো আমার বেশ ভালো লাগে দেখতে। দুই বান্ধবীকে নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ টা সেরে আসলেন এটাই তো অনেক কিছু ।একটা সময় এই মুহূর্তগুলো খুব মনে পড়বে, যেমন আমার মনে পড়ছে আপনার পোস্টটি পড়ে।যখন বাইরে বের হতাম ফ্রেন্ড দুইজন অবশ্যই থাকতো ।যাইহোক পুরনো কথা বলে আর লাভ কি ,ভালো থাকবেন দিদি।