কে বললো - একটি ব্যাখ্যাহীন ঘটনা
আমাদের চারিপাশে এমন কিছু ঘটনা ঘটে থাকে, যার কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া সম্ভব হয়না। আর এই ব্যাপারগুলো থেকেই ভেতরে একটা ভয় কাজ করে।আর আমরা বুঝতে পারি আমরা সব কিছু চোখে দেখতে পেলেও এই জগতেই অস্তিত্বশীল কিছু জিনিস চোখে দেখতে পারিনা।তাই তার ব্যাখ্যা কারোর কাছে নেই।
আজ প্রথম বার এই বিষয়ক আলোচনা করছি আমি এই প্লাটফর্মে। তবে আমি বিশ্বাস করি কিছু আছে। যা আছে সেটা হলো শক্তি। আর সেটাই সব কিছুর মূল কারণ। কিন্তু ভয় এখানেই যে তাদেরকে আমরা দেখতে পারিনা।
বৌদির কাছে শোনা এমনই একটা ঘটনা আমি আজ শেয়ার করছি। আশা করছি সকলের ভালো লাগবে।
আমাদের বাড়ির পাশেই ঘূর্ণি শিবতলা বারোয়ারী। বহু বছর ধরে সেখানে সমস্ত রকম পুজো হয়ে আসছে ।বিশেষ করে কৃষ্ণনগরের ঐতিহ্যশীল জগদ্ধাত্রী পুজো ধুমধাম করে এই বারোয়ারিতেও আয়োজিত হয় ।বারোয়ারির চারপাশ ঘিরেই বসতি । হাঁটা পথে মন্দির থেকে আমার বাড়ির দূরত্ব তিন মিনিট হবে।
আমার বৌদির মামার বাড়ি মন্দিরের একদম পাশে। যে রাতের কথা আমি বলছি ,সে রাতে পাড়ায় ভীষণ গন্ডগোল হয়েছিল। জগদ্ধাত্রী পুজোর ঠিক দুদিন পরের ঘটনা ।সাধারণত বারোয়ারী ,ক্লাব ঘরে - এসব জায়গায় পুজো উপলক্ষে যেমন আনন্দ হয়, তেমন নানা মত পার্থক্যের জন্য তর্ক-বিতর্ক এবং ঝগড়া ঝামেলা লেগে থাকে ।এ আমাদের সবারই জানা কথা।
সেদিন সন্ধ্যে থেকেই ঝামেলা হচ্ছে। বৌদির মামার বাড়ি যেহেতু মন্দিরের পাশে তাই ওই বাড়ির সবকটা ছেলেই পুজোর অনুষ্ঠানের সদস্য ছিল। ঝামেলা এতদূর গড়িয়ে যায় যে থানা পুলিশ লেগে যায়। বিসর্জনের দিন অন্য ক্লাবের সাথে তুমুল ঝামেলা হওয়ায় এই ঘটনা বেশি বেড়ে যায়। বৌদির দিদা তার দুই ছেলের জন্য ভীষণ চিন্তায় ছিল ।সন্ধ্যাবেলা থেকেই বাড়ির কোন ছেলে বাড়িতে নেই ।ঝামেলা নিয়ে সবাই এখানে সেখানে পড়ে আছে ।
রাত তখন দুটো বাজে ছেলে আসছে না দেখে বড্ড চিন্তা। এর মাঝে বহুবার বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাস্তায় নেমে কিছুটা দূর এগিয়ে গিয়েছে দিদা ,কেউ আসছে কিনা কারো কাছে খবর পাওয়া যায় কিনা এই মতলবে। প্রতিবারে বিফল হয়ে বয়স্ক মানুষ বাড়ি ফেরে। কিন্তু মায়ের মন যতক্ষণ না ছেলে বাড়ি ঢুকছে ততক্ষণ যে একেবারেই শান্তি নেই ।ফোন কাছে থাকলেও ছেলে ফোন ধরছেনা। আর এই জন্য চিন্তাটা একটু বেশি কাজ করছিল।
ঘুম না আসায় রাত দুটো নাগাদ দিদা রাস্তায় এসে দাঁড়ায় ।চারিদিকে তখন নিস্তব্ধতায় ভরপুর। লোকজন একটা অব্দি দেখতে পাওয়া গিয়েছিল ।আমাদের পাড়া সাধারণত বেশ জাকজমক। একটা অব্দি অন্তত লোক চলাচল ভীষণ করে।
কিন্তু ওই রাতে দুটোর সময় দাঁড়িয়ে আছে যখন, তখন কেও নেই। একটা কুকুরকেও নজরে পড়েনি।অপেক্ষা করছিল ছেলের জন্য। বাড়ির সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে ।কিন্তু এই মানুষটা বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাস্তায় ঠাঁই দাঁড়িয়ে। অত রাতে ওইভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে হালকা ভয় লাগছে দিদার ।কিন্তু মাথায় তখন নানান ধরনের চিন্তাভাবনা। কখন কোথায় কি হয়ে যায় ।
কিছুক্ষণ এরম ভাবে কাটতে থাকে ।দিদা পায়চারি করছিল রাস্তায়। হঠাৎ রাতের নিস্তব্ধতা ভঙ্গ করে কে যেন কথা বলে ওঠে - " তুই রাস্তা থেকে সরে দাঁড়া। ওদের কিছু হবে না।"
ঠিক এই কথাটাই।
অত রাতে এভাবে কে কথা বলল ।কথা শোনা মাত্রই দিদা ভীষণ ভয় পেয়ে যায়।সামনে পিছনে চারিদিকে চোখ ঘুরিয়ে দেখে নেয় কেউ আছে কিনা। কাউকে না দেখে ওখান থেকেই দৌড়ে বাড়ির ভেতরে ঢুকে যায়। সেই রাতে কিছুক্ষণ পরেই বাড়ির ছেলেরা বাড়ি ফেরে।
পরের দিন সকাল বেলায় এই গল্পটা বাড়ির সকলের সাথে শেয়ার করেছিল দিদা। কিন্তু অত রাতে কে এইভাবে কথা বলল তার ব্যাখ্যা আজও পায়নি বৌদির বাড়ির লোকজন।
বারোয়ারি প্রাঙ্গণ নিয়ে বহু কথা লোকমুখে ছড়িয়ে আছে ।কখনো কখনো মাঝরাতে শিব মন্দিরের ঘন্টা বাজতে শোনা যায়। কিন্তু মন্দিরে গেলে সেখানে কোন জনমানবের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না।
বৌদির মুখ থেকে গল্পটা শুনে গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠেছিল।এরকম আরো অনেক গল্প কানে এসেছে ।এক এক করে সব শেয়ার করব। আজকে এখানেই শেষ করছি।
সকলে ভালো থাকুন ।সুস্থ থাকুন।
@isha.ish
আসলেই দিদি কিছু কিছু ঘটনার কোনো ব্যাখ্যা থাকে না বিজ্ঞানও এর কাছে হার মেনে নেয়। আপনার প্রথম অংশটুকু পড়েই ভেবেছিলাম হয়তো ভৌতিক কিছু পড়তে চলেছি। পুরোপুরি না হলেও কাছাকাছি গিয়েছি। ঐ সময়ে ঐ রাস্তায় ঐরকম কথা বলল কে চারপাশে কেউ নেই। সত্যি বেশ রহস্যজনক।। দারুণ লাগল দিদি পড়ে।।
একদম রহস্য দারুন লাগে কিন্তু 🫣
সত্যি বলতে আপু আমি মন্দির আর শ্মশান দেখে অনেক বেশি ভয় পাই, কারণ আমি শুনেছি মন্দির আর শ্মশান এর আশেপাশে নাকি ভূত থাকে। ঘটনাটি অনেক বেশি ভৌতিক ছিল অন্ধকার রাতে এরকম একা একা না থাকাটাই সবথেকে ভালো তবে আমি অন্ধকার রাতে হাঁটাহাঁটি করতে অনেক বেশি ভালোবাসি।
চারিদিকে হট্টগোল আর মারামারির কথা ভেবে মায়ের মন বাড়িতে স্থির থাকে না। চিন্তা তো হবেই সে চিন্তা থেকেই হয়তো সে বাড়ির সামনে গিয়ে দাঁড়িয়েছিল অন্ধকার রাত্রে।
হ্যাঁ, ধন্যবাদ দাদা মন্তব্যের জন্য।
দিদি একটা কথা ঠিক বলেছেন সন্তান বাইরে রেখে কোনো মায়ের চোখেই ঘুম আসেনা।তাও যদি এমন মারামারির ঘটনায় সন্তান যেয়ে থাকে তাহলে তো আরও নয়। প্রথম থেকে ভালোই লাগছিল গল্পটা পড়ে কিন্তু শেষ দিকে ভয় পেয়ে গেলাম। আমি আবার এমন গল্প শুনলে ভয় পাই।যাই হোক এমন একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে নিজের অনুভূতি শেয়ার করার জন্য।
আসল আসলে কিছু গল্প আছে যার কোন ব্যাখ্যা দেওয়া যায় না। যেমনটি আপনার দিদা সকলের সাথে শেয়ার করেছিল কিন্তু আপনার বৌদির বাড়ির লোক এখনো পর্যন্ত সেই কথার কোন ব্যাখ্যা পাইনি ।শুধু এরকম অনেক ঘটনা আছে যার ব্যাখ্যা পাওয়া যায় না। তবে আপনার বাড়ির পাশে বহু বছর ধরে পূজো হওয়ার ঘটনাটি আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ আপনাকে।