গ্রাম বাংলার প্রকৃতি আমাদের বাঁচিয়ে রাখার ঔষধ - ট্রাভেল এবং ফটোগ্রাফি।
আমার বেড়ে ওঠা গ্রামে হয়নি। 'গ্রামের বাড়ি' বলতে যেটা বোঝায় সেটা আমাদের নেই। আগের একটা পোস্টে শেয়ার করেছিলাম, আমার দাদা আসলে ভারত থেকে বাংলাদেশে এসেছিলেন চাকরির সুবাদে। তাই দাদা বাসা বলতে আমাদের এই শহরের বাসাটাকেই আমরা বুঝি। এখানেই আমাদের বেড়ে ওঠা। আমাদের কোন গ্রামের বাসা নেই।
শহুরে জীবনের চালচলনের জন্য কি না জানি না মাঝে মাঝে গ্রামের জন্য খুব মন কাঁদে। মনে হয়, ইস! একটা যদি গ্রামের বাড়ি থাকতো। নাহ, শহুরে জীবনে আমি অভ্যস্ত, খুব একটা বিরক্ত বোধ করিনা। তবে মাঝে মাঝে মনে হয়; একটা গ্রামের বাড়ি, একটা সবুজে ঘেরা বাড়ি, যেখানে মাঝে মাঝে বেড়াতে যেতে পারবো এমন হলে মন্দ হতো না।
তাই দুধের স্বাদ ঘোলে মিটাতে যখন আমাদের বাড়িতে যাই তখন চেষ্টা করি আশেপাশের গ্রাম অঞ্চল গুলোতে একটু ঘুরে আসতে। তেমনই একটা জায়গার সাথে আজ আপনাদের পরিচয় করিয়ে দিব।
স্থানের লিংক
এই জায়গাটা তিস্তা নদীর পাড়ে। কাছাকাছি একটা ব্রিজ আছে। শহর থেকে খুব সহজেই বাইকে করে বিশ ত্রিশ মিনিটে পৌঁছে যাওয়া যায়। শহরের অনেক লোক এখানে বেড়াতে আসে, বিকেল বেলায় অথবা ছুটির দিনে। এখানে আশেপাশে খুব বেশি দোকানপাট বা সেরকম কিছুই দেখার নেই। সবার মত আমিও গিয়েছিলাম চোখ ভরে শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখবো বলে।
স্থানের লিংক
স্থানের লিংক
যদিও দিনটা খুব রৌদ্রোজ্জ্বল ছিল তবে গাছের ছায়ায় বসে নদীর হাওয়া গায় লাগাতে একটা প্রশান্তি অনুভূত হচ্ছিল। যেই প্রশান্তি বাড়ির ভেতরে এসি ছেড়ে কখনোই পাওয়া যায় না। গ্রামে বেড়ে ওঠা নয় বলে আমাদের বাড়ির সবার ধারণা, গ্রামে গেলে, মাঠে ঘাটে ঘুরে বেড়ালে আমরা অসুস্থ হয়ে যাবো। এই এত বছর বয়সে এসেও গ্রামের রোদে রোদে ঘুরে বেড়াবো এটা আমার মা এখনো মেনে নিতে পারেন না।
কি জানি কেন, আমার মা-বাবা বা বাড়ির যারা বড় এখনো আছেন তাদেরকে গ্রাম নিয়ে কখনো এতটা মাতামাতি করতে দেখিনা। কিন্তু আমরা কাকাতো ভাইবোনেরা গ্রাম বলতে পাগল। অনেকটা ভেবে বের করেছি হয়তো আমাদের বাবা মারা বুকের ভিতর গ্রামকে অনুভব করেন কিন্তু সে অনুভূতি চেপে রাখতেই তারা নিজেদের অভ্যস্ত করে নিয়েছেন।
আমরা ওখানে সন্ধ্যা পর্যন্ত ছিলাম। ইচ্ছা ছিল ওখানে যেয়ে মাছ ধরবো। কিন্তু ওখানকার জেলেরা বলল নদীর পাড় থেকে কোন মাছ পাওয়া যাবে না, মাছ ধরতে হলে নৌকা নিয়ে নদীতে যেতে হবে। আমরা কজন বন্ধু মিলে বাইক নিয়ে গিয়েছিলাম। বাইক রেখে নৌকা নিয়ে নদীতে যাওয়াটা খুব একটা বুদ্ধিমানের কাজ মনে হয়নি। তারপরও যতটুকু সময় ছিলাম গ্রাম বাংলার প্রকৃতি নিজেদের মধ্যে নিজেদের ভেতর নিংড়ে নিয়েছি।
ওখানকার তিস্তা বাজার খুব বিখ্যাত মাছের জন্য। তিস্তা নদীতে বৈরালি বলে এক প্রকারের মাছ পাওয়া যায় যেটা অন্য কোন নদীতে পাওয়া যায় এবং চাষও করা হয় না। ফেরার সময় বৈরালি মাছ নিয়েছিলাম কিছু বাড়ির সকলের জন্য। প্রায় দুই বছর হতে চলল তিস্তা নদীর পাড়ে যাবার।
সেই কবে থেকে অপেক্ষা করে আছি, কখন করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, আবার বাড়িতে যাব, বন্ধুরা সবাই সহ হয়তো আবার যাওয়া হবে তিস্তার পারে।
সেই অপেক্ষায় দিন গুনছি...
স্থান: তিস্তা নদীর পাড়, রংপুর - বাংলাদেশ
স্থানের লিংক: লিংক
ডিভাইস: শাওমি নোট ৭ প্রো
এডিট করেছি: Snapseed অ্যাপ দিয়ে
আমি জনি, বাংলাদেশ থেকে। একটু ঘরকুনো মানুষ। ভালোবাসি পরিবারের সাথে সময় কাটাতে। সময় পেলে মুভি, ডকুমেন্টারি বা খেলা দেখা হয়। মোবাইলে টুকটাক ছবি তুলি। ক্রিপ্টো নিয়েও আগ্রহ গড়ে উঠছে।
লেখা এবং ছবিগুলি সত্যি অনেক সুন্দর। ধন্যবাদ ভাইয়া।
অনেক ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
অনেক সুন্দর হয়েছে ধন্যবাদ আপনাকে
ধন্যবাদ আপনাকে আমার লেখা এপ্রিশিয়েট করার জন্য।
ধন্যবাদ 💖
চমৎকার লিখেছেন ভাই, সত্যি গ্রামের চির সবুজ সেই দৃশ্যগুলোকে মনে অক্সিজেনের জিবন্ত ফ্যাক্টরি, যেথায় শুধু প্রশান্তি আর সজীবতা।
লেখাগুলোর সাথে সাথে ফটোগ্রাফিগুলো বেশ ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ সুন্দর একটি ব্লগ উপহার দেয়ার জন্য।
ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর কমেন্টের জন্য।
গ্রামে তেমন একটা যাওয়া হয় না, তবে চেষ্টা করি মাঝে মাঝে আসে পাশের এলাকা গুলো ঘুরে আসতে।
তিস্তা নদীর তীরবর্তী অঞ্চল গুলোতে আমার যাওয়া হয়েছিল যাইহোক ভাল লিখেছেন ধন্যবাদ আপনাকে ।
সত্যিই! আপনার বাড়ি কি উত্তরাঞ্চলে?
জেনে ভালো লাগলো।
আপনার উপস্থাপনা টি অনেক সুন্দর লেগেছে। আসলে প্রকৃতি মানুষের প্রকৃত বন্ধু। কিন্তু সেই প্রকৃতিকে আমরা ধীরে ধীরে নষ্ট করে দিচ্ছি। এখনই সচেতন হওয়া উচিত। তাছাড়া এই সুন্দর প্রকৃতি আমরা ধীরে ধীরে হারিয়ে ফেলবো।
১০০% ইউনিক পোস্ট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
খুবই সত্যি কথা। আফসোস লাগে দেখে গ্রামগুলো ও ধীরে ধীরে শহর হয়ে যাচ্ছে।
আপনার এপ্রিসিয়েশন এর জন্য ধন্যবাদ।
গ্রামগুলোর পরিবেশ দেখেই এ বিষয়টি উপলব্ধি করতে পেরেছি।