আধুনিক বাংলা সাহিত্যের পিছিয়ে পরা।
এখন আর সাহিত্য সেভাবে পড়া হয় না। তবে টুকটাক খবর রাখি। কে ইদানিং ভালো লিখছে, কোন কবি বেশ জনপ্রিয়তা পেল, বইমেলার কার নতুন বই বের হল, কোন বইয়ের কেমন কাটতি ইত্যাদি।
খুব অবাক করার বিষয় হচ্ছে বাংলা সাহিত্যে নতুন তেমন কোনো উদীয়মান সাহিত্যিক তৈরি হচ্ছেন না। আমি 'তৈরি হচ্ছেন না' বলছি কারণ আমি জানি নিশ্চয়ই কেউ না কেউতো আছেন যার লেখার হাত ভাল, যার কবিতা অনেক ভালো, কিন্তু সে হয়তো সেরকম লাইমলাইটে আসতে পারছেন না।
আর একটা বড় কারণ আছে। আমাদের সময়ে যে রকম যুবকেরা কবিতা, সাহিত্য ইত্যাদি নিয়ে পড়ে থাকত ;এখনকার সময়টা অনেক পাল্টে গেছে ।এখনকার খুঁজলেও আপনি কোন কিশোর অথবা যুবকরা কবিতা লিখছে পাবেন না । অথচ চিন্তা করুন, আমাদের সময়ে ঘরে ঘরে সবাই তাদের ডায়েরিতে দু-একটা করে লাইন হলেও লিখতো । এবং সাহিত্য সে তো ঘরে ঘরে চলতো । আমরা কত সাহিত্যের বই পড়ে বড় হয়েছি । আমাদের বাসায় কত পুরনো বই, আমাদের মা-বাবাদের বই, আমাদের তার আগের জেনারেশন এর বই । ছোট থেকে এগুলো পড়েইতো সাহিত্যের প্রতি অনুরাগ জন্মালো। তো যে জেনারেশন কত থেকেই মোবাইল হাতে, ইউটিউব ই জীবন; তারা কি করে সাহিত্য বুঝবে!
আমাদের এই জেনারেশনটা কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছে...নাহ, আমি তাদের দোষারোপ করছি না। দোষ আমাদেরই বেশি।
তো যা বলছিলাম, বাংলা সাহিত্যের পিছিয়ে পড়া ।এখন যেভাবে সবকিছু ফেসবুকেই পাওয়া যায় অথবা কবি-সাহিত্যিকরা সবারই ফেসবুক পেইজ আছে । উনারা কি কাজ করছেন সেগুলো তারা ফেসবুকে অথবা সোশ্যাল মিডিয়াতে আপলোড করেন । সেই সুবাদে কিছু কিছু কাজ দেখার সুযোগ ঘটে । হাতেগোনা কিছু লেখা ছাড়া সেরকম পড়ার মতো অথবা খুব গভীর কোনো লেখা আমি দেখতে পাইনা । আমি জানিনা এটা আমার ব্যর্থতা কিনা অথবা হতে পারে এটাই আসল চিত্র!
এই জেনারেশনের সাথে কম্পেয়ারিজন টা খুব মানসম্মত নয় আমি জানি । কারন এখনকার জীবন-যাপন, এখনকার সময়টা আলাদা । কিন্তু তাই বলে সাহিত্যের পিছিয়ে পড়া টা আমি কেন জানি কোনভাবেই মেনে নিতে পারি না । একজন উদীয়মান লেখক থাকবেন, যার লেখা তরুণ সমাজ পরবে, যাকে অনেকে অনুকরণ করবে; সাহিত্যে এরকম কিছু মানুষ থাকা খুব জরুরী।
ভারতের বাংলা সাহিত্যের কি অবস্থা সম্পর্কে আমার খুব বেশি ধারণা নেই । তবে ওই যে বললাম সোশ্যাল মিডিয়া! সেটার সুবাদে টুকটাক কিছু জানতে পারি। সেখানের অবস্থাও যে খুব ভালো তা নয় । তবে দেখেশুনে মনে হয়, বাংলাদেশ থেকে কিছুটা হলেও ভালো ।
বড় বড় প্রকাশনা সংস্থাগুলো যতদিন না পর্যন্ত এগিয়ে আসছে অথবা আমি বলব কবি- সাহিত্যিক তৈরী করতে পারবে না, ততদিন এই অবস্থার খুব বেশি উন্নতি হবে না। এখন প্রকাশনা হাউসগুলোও টাকার পিছনে ছুটছে, অথবা যার বই প্রকাশে বেশি 'ফেম' তার পিছন। সব সোশ্যাল মিডিয়া সেলেব্রেটি , নায়ক - নায়িকা তাদের বই বের করছেন। আর প্রকৃত সাহিত্যিকতা এই ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছেন।
একবার ভাবুন তো নিজের ভাষায় সাহিত্য পড়ার মতো খুব বেশি বই অথবা উপকরণ আমরা পেলাম না, কি যন্ত্রণাদায়ক হবে সেই পরিস্থিতি। আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম নিশ্চয়ই এরকমই কিছু অনুভব করবে। সে কারণেই আমাদের এই বিষয়টা বোঝা টা খুব জরুরী। আমি আশা করছি যদি আমরা কোন একটা উত্তরণের পথ বের খুব শীঘ্রই করতে পারবো।
--ছবি আমার নিজের তোলা, আমার কিছু বই। বাংলা বানানে ভুল হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইল।
এটা একদম সঠিক যে কালের পরিবর্তনে আমরা অনেক কিছুই হারিয়েছি এবং আমাদের ভিতর থেকে অনেক রকম অভ্যাসের পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে কারণ এখন দিন শেষে সবাই টেকনোলজির কারণে বই পড়তে চায় না যা পড়ার সব এখন ইন্টারনেটে পড়ে এটা একদম বাস্তব সত্য কথা এখনকার কবি-সাহিত্যিকরা চেষ্টা করে তার লেখাগুলো ইন্টারনেটে দেওয়ার জন্য। যেমন সময় তেমন কাজ ।হয়তো এই জন্য কবি সাহিত্যিকরাও সোস্যাল মিডিয়া বেছে নিয়েছে । তবে আপনার কথা গুলো অনেক যুক্তি সঙ্গত ছিল।
ঠিকই বলেছেন । টেকনোলজির দরকার আছে ।কিন্তু বই যে গভীরতাটা দেয় চিন্তাভাবনায় সেটা টেকনোলজির কারণে কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছে ।
ধন্যবাদ আমার লেখাটা পড়ার জন্য দুঃখিত এত দেরি করে রিপ্লাই দেয়ার জন্য।
টেকনোলজির কারণে আমরা যেমন উপকৃত হয়েছি এবং টেকনোলজির কারণে আমরা তেমন অনেক কিছু হারিয়েছি।
একদম ঠিক। বিশেষ করে আমাদের চিন্তা ভাবনার গভীরতাটা আমরা অনেকটাই হারিয়েছি ।
ধন্যবাদ আমার লেখাটা পড়ার জন্য আর দুঃখিত এত দেরি করে রিপ্লাই দেয়ার জন্য।