সুপ্রিয়,

আমার বাংলা ব্লগের সদস্যগণ। আমার সালাম ও অভিবাদন গ্রহণ করুন। আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার অসীম রহমতে সবাই ভাল আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।*

আজ আমি আপনাদের সাথে আমার অফিসের একটি আনন্দঘন মুহূর্ত শেয়ার করতে যাচ্ছি। আপনারা সবাই অবগত আছেন যে আজ এইস এস সি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। যারা পরীক্ষায় ভাল ফলাফল করেছে তাদের জন্য আজকের দিনটি ছিল বিশেষ
আনন্দের। দীর্ঘদিন যাবৎ করোনাকালীন মহামারীর কারণে শিক্ষাব্যবস্থায় একটা স্থবিরতা বিরাজ করছিল। যাই হোক অবশেষে যারা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পেরেছে তারা তাদের দীর্ঘদিনের আখাংকার ফসল দেখার অপেক্ষায় ছিল। ভাবতে পারেন এইস এস সি পরীক্ষার রেজাল্টের সাথে আমার আনন্দের কিসের সম্পর্ক থাকতে পারে।

বিশেষ কথা হল আমার অফিসের সাহায্যকারী স্টাফ যারা আছে তাদের সবাই তাদের পড়শুনা চালিয়ে যাচ্ছে যেটা আসলেই একটি প্রশংসনীয় ব্যাপার। তারা প্রত্যেকে যার যার কাজে খুবই যত্নবান এবং অত্যন্ত নিষ্ঠার সহিত তাদের কর্মকাণ্ডের দারা আমাদেরকে বিশেষভাবে সহায়তা করে আসছে। আমরাও তাদেরকে তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে বিশেষভাবে উৎসাহ ও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করে আসছি। আজ আমার অফিসের সাহায্যকারী ছোট ভাই মোহাম্মদ রাজন এবার এইসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল। তার কর্মব্যস্ততার মধ্যেও পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছিল এবং আজ তার এস এস সি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হবার পর জানতে পারলাম সে জিপিএ- 4.83 পেয়েছে। যদিও সামান্যের জন্য জিপিএ-5 পায়নি। তবুও তার জন্য আমি মনে করি এটি একটি বিরাট সাফল্য। কেননা সে তার পরিবারের বড় সন্তান হওয়ায় এবং আর্থিক টানাপোড়োনের কারণে এই বয়সেই তার সংসারের হাল ধরার জন্য কর্ম ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। যদিও এই বয়সে তার শুধু পড়াশোনায় ব্যস্ত থাকার কথা ছিল।
কিন্তু সবারতো আর ভাগ্য সমান হয় না।

যাই হোক আজ সপ্তাহের প্রথম দিন হওয়াই আমরা সবাই অফিসে অনেক কর্মব্যস্ত ছিলাম। বিকেলে যখন অফিসের কর্মব্যস্ততা থেমে গেল তখন আমরা অর্থাৎ অফিসের সকল কর্মকর্তাগণ সিদ্ধান্ত নিয়েছি তাকে অভিনন্দন জানানোর জন্য। যেহেতু তার বাড়ি এখান থেকে অনেক দূর আর সে যদি আজ বাড়িতে থাকত নিশ্চয়ই তার পরিবারের সাথে তার আনন্দটা ভাগাভাগি করত।

প্রকৃতপক্ষে আমরা সবাই তার ফলাফলে সত্যিই আনন্দিত হয়েছি এবং তাকে অভিবাদন জানানো ও তার আনন্দে শরিক হওয়াটা আমাদের একান্ত কর্তব্য বলে মনে করেছি। তার সাথে কিছুটা আনন্দপূর্ণ মুহূর্ত আমরা সত্যিই উপভোগ করেছি। আমরা এর জন্য কিছু মিষ্টি ও হালকা নাস্তার ব্যবস্থা করেছিলাম এবং আমার মনে হয়েছে আমাদের এই বিষয়টা সেও ভীষণভাবে এনজয় করেছে। আশা করি তার এই খুশির মুহূর্তের সাথে আমরা কিছুটা হলেও শরিক হতে পেরেছি। তাই আমি মনে করি, আমরা সবাই যার যার অবস্থান থেকে আমাদের অধীনস্থদের প্রতি একটু সহমর্মিতা, সহযোগিতা ও সূদৃষ্টি প্রদান করা উচিত। তাহলে রাজনের মত অসময়ে যারা পরিবারের জীবিকার সন্ধানে বিভিন্ন কর্মে নিয়োজিত থেকেও পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে একসময় তারা কিছুটা হলেও তাদের জীবনের দুঃখ- কষ্টগুলো গুলো কাটিয়ে আলোর মুখ দেখতে পারবে।

তাই আজ তার সাথে কাটানো কিছুটা আনন্দপূর্ণ মুহূর্ত আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।

!

নিশ্চয় এতক্ষণে আপনারা বুঝতে পেরেছেন এবং রাজনকে চিনতে পেরেছেন। ছবিতে দেখুন আমাদের সবার মধ্যে যে ছোট ছেলেটি কিবা তার বয়স হয়েছে যে এই বয়সেই তাকে কর্মব্যস্ত হতে হয়েছে। কিন্তু তার অদম্য ইচ্ছাশক্তির কারণে কর্মের পাশাপাশি সে তার পড়াশোনা ঠিকই চালিয়ে যাচ্ছিল এবং আজ তার জীবনের একটি ধাপ যেন সে অতিক্রম করেছে। আমরা সত্যিই আনন্দিত তার সাথে তার আনন্দ শরিক হতে পেরে। আমি চাই তার সাথে আরও যারা কয়েকজন আমার অফিস সাহায্যকারী আছে তাদের প্রত্যেকের সাথে আমি যেন এমন মুহূর্তগুলোর সাক্ষী হয়ে থাকতে পারি। কেননা তারা সবাই তাদের কর্মের পাশাপাশি তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে।

অবশেষে আমরা সবাই তাকে মিষ্টিমুখ করার পর আমরাও ভোজনে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম।

আমার লেখাগুলো পড়তে পড়তে নিশ্চয়ই আপনারা আমার সাথে আনন্দে ডুবে গিয়েছিলেন। কেমন লাগলো আমার এই আনন্দঘন মুহূর্তটি আপনাদের কাছে অবশ্যই জানাবেন। আর আমার জন্য দোয়া করবেন। সবার সুস্বাস্থ্য ও সুস্থতা কামনায় আজ এ পর্যন্তই। পরবর্তীতে আবারো হাজির হব নতুন কোন বিষয়াদি নিয়ে আপনাদের সামনে ইনশাআল্লাহ।

আল্লাহ হাফেজ

আমি @hsiddiqui79আমার বাংলা ব্লগের' লেভেল ওয়ানের একজন সদস্য। আপনাদের সবার ভালোবাসা, স্নেহ ও দোয়াই আমার একান্ত কাম্য।