❤️ভালোবাসার টান❤️ || জেনারেল রাইটিং

in আমার বাংলা ব্লগ10 months ago

1000028638.jpg
সোর্স

"হ্যালো",

আমার বাংলা ব্লগ বাসি, সবাই কেমন আছেন? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়াই এবং আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। সবার সময় ভালো কাটুক এই কামনাই করছি।

সবাইকে আমার নতুন একটি ব্লগে স্বাগতম। আজকে আমি আপনাদের সাথে খুবই সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করতে চলেছি। এটি একটি বাস্তব ঘটনা এবং আমার খুব কাছের বান্ধবীর জীবন কাহিনী আর তার ভালোবাসার গল্প। আশা করছি আজকের গল্পটি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।

রুমি পরিবারের একমাত্র মেয়ে। দুই ভাই এবং মাকে নিয়ে তার পরিবার।অনেক ছোটবেলায় তার বাবা মারা গিয়েছেন। এরপর থেকে বড় ভাই এবং তার মা খুব কষ্ট করে সংসারটা চালিয়েছেন। এভাবে কষ্ট করে রোজগার করে সংসার চালিয়ে তারা বাজারে একটি ছোট্ট দোকান কিনে ফেলেন। আর তারপর থেকে তাদের সংসারে অভাব অনটন একেবারে কেটে গিয়েছিল। আমি এবং আমার বান্ধবী রুমি একই সাথে পড়াশোনা করতাম। এরপর এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার পর রেজাল্ট বের হলে আমি বাহিরে পড়াশুনার জন্য চলে যাই।ছুটিতে এসে তার সঙ্গে গল্প করছিলাম। তখন সে আমার সাথে কিছু কথা শেয়ার করে। অনেক দূরের একটি ছেলের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছে।

এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার পর রুমি গ্রামের কলেজে ভর্তি হয়েছে। তার ভাইয়েরা সবসময় কাজে বাহিরে থাকে এজন্য তার মার সাথে যোগাযোগ করার ছোট্ট একটা বাটন ফোন কিনে দিয়েছিল। সেই ফোনটা রুমিও মাঝে মধ্যে ব্যবহার করত। হঠাৎ একদিন একটা অপরিচিত নাম্বারে ফোন আসে। আর ঘটনা চক্রে ফোনটা রুমিই রিসিভ করে। এরপর যখন দেখল সে এটা অপরিচিত নাম্বার তখন রং নাম্বার বলে কেটে দেয়। কিন্তু তারপরও ছেলেটা বারবার ফোন দিচ্ছিল এবং প্রতিদিন ফোন দিয়ে কথা বলতো। এভাবে কথা বলতে বলতে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়।

প্রায় বছর দুয়েক পর তার বাড়িতে জানাজানি হয়ে যায়। ছেলেকে নিয়ে তাদের কোন সমস্যা ছিল না কিন্তু একটা সমস্যা ছিল সেটা হচ্ছে ছেলের বাড়ি সেই ফরিদপুর। আমাদের এখান থেকে প্রায় 14 থেকে 15 ঘণ্টার পথ। তার ভাইয়েরা এবং মা কিছুতেই রাজি নয় একমাত্র মেয়েকে অত দূরে পাঠাতে। তারা মনে করত যদি আমাদের মেয়েকে নিয়ে গিয়ে মেরে ফেলে তাহলে আমরা মেয়ে পাব কোথায়।এদিকে ছেলেমেয়ে দুজন দুজনকে খুবই ভালবেসে ফেলেছে।তখন রুমির পরিবার থেকে বলা হয় যদি ছেলে রুমির কাছে এসে থাকে তাহলে রুমিকে তার হাতে তুলে দিবে।

যেহেতু ছেলেটা খুবই ভালোবাসে তাই তার পরিবার আত্মীয়-স্বজন নিয়ে এসে ধুমধাম করে অনুষ্ঠান করে রুমিকে বিয়ে করে ফেলে। এরপর ওই ছেলের আত্মীয়-স্বজন চলে গেলেও ছেলেটা থেকে যায় রুমির বাড়িতে।মাঝেমধ্যে এই রুমি তার শ্বশুরবাড়িতেও যায় ঘুরতে।ছেলেটা তার সংসার চালানোর জন্যও তার ভাইদের সঙ্গে বাজারে অনেক বড় একটি দোকান নিয়ে কাপড়ের ব্যবসা করতে শুরু করে। এবং তাদের দিন খুব ভালোভাবে যাচ্ছে। এখন রুমি মা হতে চলেছে প্রায় ছয় মাস চলে। আর তার ভাইয়েরাও বিয়ে করেছে যার যার মত সংসার করছে। রুমি তার বর এবং মাকে নিয়ে আলাদা খায়।

ভালোবাসার সত্যিই অদ্ভুত। সেই সূদুর ফরিদপুর থেকে শুধুমাত্র ভালবাসার টানে অপরিচিত জায়গায় এসে রুমির বর নিজেকে মানিয়ে নিয়েছে। ভালোবাসার টান থাকলে বা ভালবাসা সত্যিকারের হলে সব কিছু করাই সম্ভব। সে যে তার বাবা মার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে এমনটা নয়। মাঝেমধ্যে সে তার বাড়িতে রুমিকে নিয়ে ঘুরতে যায় এবং তার বাবা মা ও আত্মীয়-স্বজনও ঘুরতে আসে। আপনারা সবাই দোয়া করবেন ওদের জন্য যেন ওরা সারা জীবন এভাবে মিলেমিশে একসঙ্গে কাটাতে পারে।

বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। দেখা হবে পরবর্তী সময়ে নতুন কোনো গল্প বা অন্য কোন বিষয় নিয়ে। আশা করছি আজকের গল্পটা আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। ভালো লাগলে অবশ্যই আপনাদের সুন্দর মতামতের মাধ্যমে আমাকে জানাবেন।

সবাই ভালো থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।

1000006402.png

1000006403.gif

1000006401.gif

Sort:  
 10 months ago 

এরকম ভালোবাসাগুলো সত্যি অদ্ভুত হয় এবং এরকম ভালোবাসাগুলো খুবই ভালো লাগে দেখতে। দুজনের প্রতি দুজনের টান থাকার কারণে এখন তারা একসাথে থাকতে পারছে, আর ছেলেটাও বউয়ের কাছে চলে এসেছে। এখানে ছেলেটা তার নিজের বাড়ি থেকে শ্বশুর বাড়িতে এসে গেছে। এখন তারা রুমির রুমির মায়ের কাছ থেকে আলাদা থাকছে এবং খাওয়া-দাওয়া করছে, আর দুজনে একসাথে অনেক আনন্দে রয়েছে নিশ্চয়ই।

 10 months ago 

জ্বি আপু তাদের সংসার নিয়ে ভাইদের থেকে আলাদা হয়ে নিজের মতো করে খুব ভালো আছে তারা। ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 10 months ago 

এটা তো ফরিদপুর তো ওখানে একটা দেশের মধ্যে । কিন্তু ভালোবাসা দেশ বা জাতির খন্ডি অতিবাহিত করতেও দ্বিধা করে না। রুমির এবং ঐ ছেলের ভালোবাসার প্রশংসা করতেই হয়। তারা দুজনেই ছাড় দিয়ে নিজেদের ভালোবাসার জন্য এবং তারা ভালো আছে। অনেক সুন্দর ছিল আপনার পোস্ট টা আপু। পড়ে ভালো লাগল। জীবন এভাবে হলেই তো সুন্দর।।

Posted using SteemPro Mobile

 10 months ago 

তাদের ভালোবাসা সার্থক হয়েছে এবং তারা দুজনেই বিয়ে করার পর খুব ভালো আছে। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 10 months ago 

আসলে ভালোবাসা এমনই। ভালোবাসা যেন বিধাতার দেয় এক উপহার।আর সেই ভালোবাসার টানে ছেলেটি ফরিদপুর থেকে চলে এসেছে। আর মেয়েদের বাড়িতে থাকতেও রাজি হয়েছে। এটা নিতান্তই ভালোবাসার কারণে। আর এটা ভালোবাসার জন্য সেক্রিফাইসও বটে। যাইহোক তাদের জীবন সুন্দর হোক, এই কামনা করছি। ধন্যবাদ আপু আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 10 months ago 

আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া গল্পটি পড়ে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 10 months ago 

ভালোবাসা বলে কথা আপু।এই ভালোবাসার জন্য মানুষ কত কিনা করে। ছেলেটি তো শুধু ফরিদপুর থেকে চলে এসেছে মেয়ের সাথে সংসার করবে বলে।তবে এটা মানিয়ে নেওয়া এবং মেনে নেওয়ার একটা বিষয় রয়েছে। আর এটি বলতে গেলে আসলে ভালোবাসার পাওয়ার।যাইহোক আপু তাদের জন্য শুভকামনা রইল। ধন্যবাদ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 10 months ago 

আমরাও প্রথমে ভেবেছিলাম ছেলেটা হয়তো থাকতে পারবে না কিন্তু বেশ ভালোই আছে এবং তাদের সংসার ও বেশ সুখের। ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 10 months ago 

আপু আপনি আজকে আমাদের মাঝে বেশ দারুন একটি পোস্ট লিখে শেয়ার করেছেন। সত্যিই ভালোবাসা দারুন অদ্ভুত একটা বিষয়। আসলে ভালোবাসা টানে মানুষ পরিবার থেকে ছিন্ন এবং বিচ্ছিন্ন হয়ে ভালোবাসার কাছে ফিরে যায়। কোন মা এবং ভাই চাইবে না তাদের একমাত্র মেয়ে এবং বোনকে এত দূরে বিয়ে দিতে। অবশেষে মেয়ের পরিবার থেকে একটা শর্ত দিয়েছিল ছেলেকে মেয়ের বাড়িতে এসে থাকতে হবে। অবশেষে তারা দুজন ধুমধাম করে পরিবারকে সাথে নিয়েই বিয়ে করে সত্যি বেশ ভালো লেগেছিল গল্পটি পড়ে। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য।

 10 months ago 

অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য।

 10 months ago 

অসাধারণ একটি গল্প শেয়ার করলেন আপনি পড়ে বেশ ভালো লেগেছে। আসলেই ভালবাসার টান থাকলে এমন হয় আপু। অনেক দূর থেকে ছেলেটি রুমির জন্য চলে আসলো। সত্যি বলতে গেলে আপনার বান্ধবী খুবই সুখী একজন মানুষ। এইরকম ভালবাসা পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার আপু। সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করলেন অনেক ধন্যবাদ।

 10 months ago 

আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 10 months ago 

ভালোবাসার টান গল্পটা অনেক সুন্দর করে লিখেছেন। বাস্তবিক গল্প গুলো আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেন, যা পড়তে আমার কাছে অনেক ভালো লাগে সব সময়। আসলে ভালোবাসা কখনো দূরত্ব মানে না। ছেলেটাকে মেয়েটির বাড়িতে এসে থাকতে বলার পরও সে এই শর্তটা মেনে নিয়েছিল এবং তাদের বিয়ে হয়েছিল এটা জেনে ভালো লাগলো। আমার কাছে সব থেকে বেশি ভালো লেগেছে তাদের ভালোবাসাটা পূর্ণতা পেয়েছিল এটা দেখে।

 10 months ago 

অনেক বাধা-বিপত্তি কাটিয়ে অবশেষে তাদের ভালোবাসা পূর্ণতা পেয়েছিল এবং এখন তারা অনেক সুখে আছে। ভালোবাসার এই পূর্ণতা দেখলে আসলেই অনেক ভালো লাগে। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 10 months ago 

আপনার গল্পটি পড়ে বেশ ভালই লাগলো। কিছু কিছু ভালোবাসা আছে যেগুলোর জন্য শত ত্যাগ স্বীকার করতে পারে। আর ছেলেটির মাত্র ফরিদপুর থেকে রুমির গ্রামে আসলো। এখন ছেলেটি রুমে কে বিয়ে করে রুমির বাড়িতে খুব সুখেই আছে। যাইহোক রুমি ছোটকাল থেকে মোটামুটি কষ্ট করে বড় হয়েছে। সুন্দর করে গল্পটি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 10 months ago 

অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য।

 10 months ago 

আজকে আপনার রুমির গল্পটির পড়ে খুব বেশ ভালো লাগলো। রুমি সংসারে একটিমাত্র মেয়ে এবং তার দুটি ভাই আছে। তবে অনেক ফ্যামিলিতে আছে একটি মাত্র মেয়ে থাকে তাকে ভাই-এবং মা সবাই অনেক আদর করে। যদিও রুমির ছোটকালে বাবা মারা গেছে। তবে মোবাইলে এরকম অনেক ছেলে মেয়ে আছে তাদের রং নাম্বারের কথা হয়ে প্রেম হয়ে যায়। যাইহোক লাস্ট পর্যন্ত রুমির সাথে ওই ছেলে বিয়ে হয়েছে এটাই ভালো। তবে পছন্দের মানুষ পাওয়া অনেক ভাগ্যের ব্যাপার। এবং শুনে ভালো লাগলো রুমি এবং রুমির হাসবেন্ড সুখে আছে। ধন্যবাদ আপনাকে বাস্তার একটি গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 10 months ago 

আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59834.01
ETH 2665.66
USDT 1.00
SBD 2.46