শেষ বয়সের খুঁটি || প্রথম পর্ব
"হ্যালো",
বন্ধুরা সবাইকে আমার নতুন একটি ব্লগে স্বাগতম। আজকে আমি আপনাদের সামনে আবারো নতুন একটি সত্য ঘটনা নিয়ে হাজির হয়েছি আমি মাঝেমধ্যে চেষ্টা করি আমার আশেপাশের কিছু ঘটে যাওয়া ঘটনা আপনাদের সাথে শেয়ার করার। আজকেও নতুন একটি ঘটনা আপনাদের সাথে শেয়ার করব আশা করছি ভাল লাগবে। আসলে আমরা সন্তানদের মানুষ করি যাতে বয়সকালে তারা আমাদেরকে দেখাশোনা করেন। অন্তত ছেলে সন্তানদের বেশি প্রাধান্য দেই আমরা। কিন্তু বয়সকালে কি আদৌ আমরা তাদেরকে কাছে পাই? আজকের গল্পে আমি সেই বাস্তব চিত্র আপনাদের সামনে তুলে ধরবো।
আনিসুর রহমানের মধ্যবিত্ত সংসার। তিনি একটি বেসরকারি স্কুল প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেন। আনিসুর রহমান চাকরি পাওয়ার পর বিয়ে করেন।আর বিয়ের কয়েক বছর পর তাদের সংসারে একটি মেয়ে সন্তান জন্ম নেয়। প্রথম মেয়ে সন্তান হওয়ায় আনিসুর রহমান তার স্ত্রী অনেক খুশি হয় এবং খুব আনন্দে তাদের সংসার চলতো।বছর খানিক পর তাদের ঘরে আবারো কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। তখন আনিসুর রহমানের মনটা অনেকটাই খারাপ হয়ে যায় কারণ যেহেতু আনিসুর রহমানের প্রথম সন্তান মেয়ে তাই সে মনে প্রাণে চাইছিল তার যেন ছেলে সন্তান হয়। আর সেটা না হওয়াই তার মন অনেকটাই খারাপ।
যাইহোক এভাবে ছেলে সন্তানের আশায় একে একে আনিসুর রহমানের ঘরে তিনটি মেয়ের জন্ম হয়। কিন্তু আনিসুর রহমানের যেন নেশা হয়ে গেছে যে তার একটি ছেলে সন্তান হতেই হবে। তিনি মেয়েদের সঙ্গেও খুব একটা ভালো ব্যবহার করেন না। এদিকে তার স্ত্রীর শরীরের অবস্থা খুব একটা ভালো না। পরপর তিনটি বাচ্চার জন্ম। এরপর তার শরীরটা একদম ভেঙ্গে গিয়েছে। আবারো আনিসুর রহমানের স্ত্রী সন্তান সম্ভাবা। এবার আনিসুর রহমানের স্ত্রী আল্লাহ তাআলার কাছে বেশ কান্নাকাটি করতে লাগলেন। যেন আল্লাহ তায়ালা তাকে এবার অন্তত একটি ছেলের সন্তান দেয়।
আল্লাহ তায়ালা এবার তাদের মুখের পানে চেয়েছেন। তাদের ঘর আলো করে জন্ম হয় একটি ফুটফুটে ছেলে সন্তানের। এবার আনিসুর রহমানের খুশির যেন সীমা থাকে না।তিনি এবার মনে মনে ভাবেন আমার শেষ বয়সে দেখাশোনার জন্য আমার ছেলেই যথেষ্ট। ওই যে বললাম তিনি মেয়েদেরকে খুব একটা দেখতে পারতেন না সবসময় দুর্ব্যবহার করতেন। খাওয়া দাওয়া কাপড় চোপড় কোনদিকে খেয়াল রাখতেন না শুধু ছেলেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন। ছেলে কোন খেলনা কিনবে, কোন ভালো জামা পড়বে, কি খাবে না খাবে সব বিষয়ে তার কড়া নজরদারি। এদিকে মেয়েরাও আস্তে আস্তে বড় হতে লাগলো। আনিসুর রহমানের স্ত্রী অনেক কষ্ট করে মেয়েদের পড়াশোনা খরচ চালান কারণ আনিসুর রহমান তাদেরকে খুব একটা পড়াশোনা করাতে চান না। বলেন একে তো বিয়ে দিতে এত টাকা খরচ হবে তার ওপর এত পড়াশোনা করে টাকা খরচ করার কোন দরকার নেই।
কিন্তু আনিসুর রহমানের তিনটা মেয়েই খুবই মেধাবী ছিল। তাইতো তাদের মা কষ্ট করে সেলাইয়ের কাজ করে তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছিলো। দিন যেতে লাগলো বছর পেরোলো আনিসুর রহমানের দুই মেয়ে এখন পড়াশোনা শেষ করেছে। ছোট মেয়েটা ভার্সিটিতে পড়াশোনা করছে। বড় দুই মেয়ে দেখতে খুব একটা ভালো ছিল না কিন্তু তারা পড়াশুনায় ভালো ছিল তাই তাদের ভালো ঘরে বিয়ে হয়। আল্লাহর কি অশেষ রহমত বিয়ের পর দুই মেয়ে ভালো চাকরি পায়।এভাবে আরো কিছু বছর কেটে যায়। ছোট মেয়েরও চাকরি হয়েছে বিয়ে হয়েছে। আনিসুর রহমানের ছেলেও এখন পড়াশোনা শেষ করে ভালো চাকরি করছে।
(চলবে)
এরপর কি মনে হয় আনিসুর রহমানের ছেলে কি আদৌ শেষ বয়সে আনিসুর রহমানের দায়িত্ব নেবেন নাকি আনিসুর রহমানের কপালে অন্য কিছু লেখা আছে। জানতে হলে অবশ্যই পরের পর্বের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। আর প্রথম পর্বটি কেমন লেগেছে অবশ্যই আপনাদের সুন্দর মতামতের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন না। আজকে পর্যন্তই দেখা হবে পরবর্তী সময় নতুন কোন বিষয় নিয়ে।
আসলে এই গল্পের সাথে বর্তমান পরিস্থিতির বাস্তবতার অনেক মিল রয়েছে কারণ এখনো অনেক পরিবারে এরকম আছে যে মেয়েদেরকে ততটা মূল্য দেয় না কিন্তু ছেলেদের কে সবসময় মাথায় করে রাখে যাই হোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম যেহেতু আনিসুর রহমানের মেয়ে গুলোর চাকরি হয়ে গিয়েছে।
ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
শেষ বয়সে দেখাশোনার জন্য ছেলে সন্তানের জরুরি না। জরুরী হলো সন্তানকে কিভাবে মানুষ করা হয় সেই বিষয়টি। মানুষের মত মানুষ করলে মেয়ে সন্তানও বৃদ্ধ বয়সে বাবা-মার শক্তি হয়ে দাঁড়ায়। আনিসুর রহমান সেই বিষয়টি বুঝতে না পেরে ছেলের জন্য এতগুলো বাচ্চা নিয়ে ফেলেছেন। তারপরও ছেলেকে পেয়ে মেয়েদের প্রতি অবহেলা। দেখা যাক শেষ বয়সে তার কি পরিনতি হয়। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
এটা ঠিক বলেছেন আপু সন্তান ছেলে বা মেয়ে এটা কোন বড় বিষয় নয় বড় বিষয়টি হচ্ছে কিভাবে মানুষ করা হচ্ছে সেটা।দ্রুত দ্বিতীয় পর্বটি শেয়ার করার চেষ্টা করব আপু। ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য।
আসলে সবাই মনে করে ছেলে সন্তান হলে শেষ বয়সে তাদেরকে দেখাশোনা করার জন্য কেউ রয়েছে। কিন্তু আমি তা মনে করি না মেয়ে সন্তানও সব কিছু করতে পারে। এটা কিন্তু অনেক জায়গায় দেখা যায় একটা ছেলের জন্য প্রথমে অনেকগুলো মেয়ে হয়। ছেলে হওয়ার পরে তারা মেয়েগুলোকে অবহেলা করে, বিশেষ করে যারা ছেলে চায় তারা। কিন্তু সব ছেলে সন্তান বাবা-মাকে শেষ বয়সে দেখে না। এখন তো বেশিরভাগ সময় দেখা যায় মেয়েরাই বাবা-মাকে শেষ বয়সে দেখাশোনা করে। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।
এটা ঠিক বলেছেন আপু এখন ছেলে সন্তানরা খুব কমই বাবা মাকে দেখাশোনা করেন। কিন্তু মেয়েরা কখনো বাবা মাকে অবহেলা করে না। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
ছেলে সন্তান যে হতেই হবে এটা কোন বিষয় না। ছেলে মেয়ে যে সন্তানই হোক না কেন, তাকে এমন ভাবে মানুষ করতে হবে যেন সে একজন মানুষের মত মানুষ হয়। আল্লাহর রহমতের কারণেই তো তিনটি মেয়ে ভালো চাকরি পেয়েছে। এখন কি ছেলেটাও চাকরি পেয়েছে এটা জেনে ভালো লাগলো। এখন কি ছেলে বাবা মাকে খাওয়াবে? সবশেষে কি হবে এটা দেখার আগ্রহ হচ্ছে। পরবর্তী পর্ব আশা করছি খুব শীঘ্রই শেয়ার করবেন।
জ্বী ভাইয়া তার তিনটা মেয়েই ভালো চাকরি পেয়েছে এবং ভালো স্বামীও পেয়েছে। এবং ছেলেটাও চাকরি পেয়েছে। এরপর আনিসুর রহমানের জীবনে কি ঘটবে সেটা আমি পরবর্তী পর্বে খুব শীঘ্রই শেয়ার করার চেষ্টা করব।ধন্যবাদ ভাইয়া।
আমার কিন্তু মনে হয় না যে আনিসুর রহমানের ছেলে শেষ বয়সে তার পিতা মাতার দায়িত্ব নিবে। এভাবেই অধিকাংশ পিতামাতা একটি সন্তানের আশায় যে কত কি করে। কিন্তু একদিন সেই সন্তান বড় হয়ে আর বাবা মাকে চিনে না। খুব খারাপ লাগছে আনিসুর রহমানের মেয়েদের জন্য। আগামী পর্ব পড়ার অপেক্ষায় রইলাম। বেশ সুন্দর লিখেছেন। এক কথায় অসাধারন আপু।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপু পুরো গল্পটি পড়ে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।