রেসিপিঃ সুস্বাদু তালের বড়া

in আমার বাংলা ব্লগlast year

"হ্যালো",

আমার বাংলা ব্লগ বাসি, সবাই কেমন আছেন? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়াই এবং আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। সবার সময় ভালো কাটুক এই কামনাই করছি।

সবাইকে আমার নতুন একটি রেসিপি ব্লগে স্বাগতম।আপনারা সবাই বুঝেই গিয়েছেন আজকে আমি কি রেসিপি শেয়ার করতে চলেছি। হ্যাঁ বন্ধুরা আজকে আমি সুস্বাদু তালের বড়ার রেসিপি শেয়ার করব।এ বছরের প্রথম তালের বড়া খেলাম। আমি বরাবরই বলেছি আমার মা সব সময় নিজে খাওয়ার আগে আমার কথা চিন্তা করেন যেহেতু শহরে থাকি গ্রামের ভেজালমুক্ত খাবার গুলো খুব কম খাওয়া হয়।সেদিন বাজারে গিয়েছিলাম দেখলাম এক লোক ভ্যানে করে তাল বিক্রি করছে। তখন বুঝতে পারলাম যে এখন তাল পাকার সময় হয়ে গেছে। বাসায় এসে মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলাম কথা বলার এক পর্যায়ে মাকে বলেই ফেললাম যে গ্রামে তাল পাকা শুরু করেছে কিনা।মা বললেন হ্যাঁ।এরপর আর কোন কথা হয়নি এ বিষয়ে।

যেহেতু বাবুকে নিয়ে রাত জাগতে হয় তাই সকালে একটু দেরিতে ঘুম ভাঙে।ঘুম থেকে উঠতে প্রায় দশটা বেজে গিয়েছিল। হঠাৎ দরজায় কলিং বেলের শব্দ। ভাবলাম এত সকালে আবার কে আসলো। দরজা খুলে আমি তো পুরাই অবাক। মা বেশ কয়েকটি বাজারের ব্যাগ নিয়ে দরজায় দাঁড়িয়ে আছেন। আমি বললাম তুমি যে আসবে আগে তো বলনি আমাকে। মা বললেন তোকে অবাক করে দেওয়ার জন্য কিছু বলিনি। যাইহোক মা ভিতরে ঢুকে রেস্ট করে সবকিছু ব্যাগ থেকে অনেক কিছু বের করছিল। তার মধ্যে ছিল আমাদের খামারের গরুর দুধ, তাল, চিনি, চালের গুঁড়া, নারকেল ইত্যাদি। এজন্যই তো বলে মাকে মনের কথা বলতে হয় না। মায়েরা মনের কথা এমনি বুঝে যায়। সেদিন যে আমার তালের বড়া খেতে মন চাইছিল এটা মা হয়তো বুঝে গিয়েছিল তাই এই না জানিয়ে আমার বাসায় চলে আসা। মা নিজের হাতে বড়া বানিয়ে খাইয়েছিল আমাকে।

1000025115.jpg

যাইহোক থাক সেসব কথা চলুন রেসিপি শুরু করা যাক।

1000006404.png

উপকরণ
তালের রস
চালের গুঁড়া
চিনি
নারকেল

1000025116.jpg

1000006405.png

ধাপ-১

প্রথমে তাল থেকে রস বের করে নিতে হবে।

1000025021.jpg

ধাপ-২

এরপর রসগুলো ভালোভাবে ছেঁকে একটি বড় কড়াইয়ে নিয়ে চুলায় দিয়ে ভালোভাবে ফুটিয়ে নিতে হবে।

1000025020.jpg

1000025028.jpg

ধাপ-৩

ফুটানো হয়ে গেলে রসগুলো ঠান্ডা করে নিতে হবে।

1000025029.jpg

ধাপ-৪

তালের রস ঠান্ডা হয়ে গেলে দিয়ে দিতে হবে পরিমাণ মতো চিনি। এরপর ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে।

1000025031.jpg

1000025032.jpg

ধাপ-৫

এরপর দিয়ে দিতে হবে পছন্দ অনুযায়ী নারকেল কোরা।এবার নেড়েচেড়ে রসের সঙ্গে মিশিয়ে নিতে হবে।

1000025123.jpg

ধাপ-৬

এবার দিতে হবে পরিমাণ মতো চালের গুঁড়া। এরপর ভালোভাবে রসের সঙ্গে মিশিয়ে ভারি করে বেটার তৈরি করে নিতে হবে।

1000025124.jpg

ধাপ-৭

এবার বড়া ভাজার জন্য চুলায় একটি কড়াই বসিয়ে অনেকটা পরিমাণ তেল দিয়ে তেল গরম হয়ে গেলে বেটার থেকে অল্প অল্প করে নিয়ে তেলের মধ্যে ছেড়ে দিয়ে বড়া গুলো লাল লাল করে ভেজে নিতে হবে।

1000025125.jpg

তো বন্ধুরা এই ছিল আজকে আমার তালের বড়ার রেসিপি। তালের রস দিয়ে বিভিন্ন ধরনের পিঠার রেসিপি তৈরি করা যায় এবং কেক বানানো যায়।আমি পরবর্তীতে তালের রসের বিভিন্ন পিঠা রেসিপি গুলো শেয়ার করার চেষ্টা করব। এ বছরে কে কে তাল রসের পিঠা খেয়েছেন অবশ্যই আমাকে কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন।তো তালের রসের এই পড়া খেতে ভীষণ ভালো লাগে। আর বাবুও এই প্রথম তালের বড়া খেলো এবং ও খুবই পছন্দ করছে এবং কিছুক্ষণ পরপর সে নিজে থেকে চেয়ে নিচ্ছে।এই প্রথম কোন খাবারের প্রতি ওর এত আগ্রহ দেখলাম। এই পুরো রেসিপিটা আমার মায়ের হাতের এবং মায়ের হাতের রান্না সব সময় মজা হয় এটা তো বলার অপেক্ষা রাখে না।

বন্ধুরা আজ এ পর্যন্তই। দেখা হবে পরবর্তীতে নতুন কোন বিষয় নিয়ে। ততক্ষণে সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।

1000006402.png

1000006403.gif

1000006401.gif

Sort:  
 last year 

সুস্বাদু তালের বড়া রেসিপিটি দেখতে চমৎকার লাগছে আপু মনে হচ্ছে খেতেও বেশ সুস্বাদু হয়েছিল। রেসিপি প্রতিটা ধাপ আপনি অনেক সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। আসলে মায়েদের কোন কথা বলা লাগে না তারা এমনিতেই সন্তানের কথা বুঝতে পারে। তা না হলে সকাল সকাল আপনার মা এত কিছু বাজার করে নিয়ে চলে আসতো। আপনার পোস্ট পড়ে খুবই ভালো লাগলো ধন্যবাদ আপু।

 last year 

জ্বি আপু তালের বড়ার এই রেসিপিটা খেতে খুবই সুস্বাদু হয়েছিল। এটা ঠিক বলেছেন আপু মায়েদের কাছে কোনো কথাই বলতে হয় না। তারা মনের কথা এমনিতেই বুঝে যান যেমনটা আমার মা বুঝতে পেরেছিলেন। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য।

 last year 

এই জন্যই বলে মায়ের কোন বিকল্প নেই। আপনি চাওয়ার আগেই সব কিছু নিয়ে হাজির হয়েছেন।যাই হোক মজাদার তালের বড়া রেসিপি তৈরি করেছেন। আমাদের এলাকায় চিনির পরিবর্তে আখের গুড় দেওয়া হয়। অনেক লোভনীয় ছিল আপু, দেখে খেতে ইচ্ছে করছে।

 last year 

কখনো আখের গুড় দিয়ে তালের বড়া খাওয়া হয়নি। তবে আপনার কথা অনুযায়ী একবার আখের গুড় দিয়ে বড়া বানিয়ে খেয়ে দেখব। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 last year 

আসলেই আপু। মায়েরা যেনো সব কিছু বুঝে যায় সহজেই। যাক অবশেষে তালের বড়া খাওয়া হলো। তাও সব ফ্রেশ জিনিশ দিয়ে। নিশ্চিত অনেক স্বাদের হয়েছিলো। তা দেখেই বুঝা যাচ্ছে কিন্তু। আমার এখনো তালের বড়া খাওয়ার সৌভাগ্য হয়ে উঠেনি এই বছর।

 last year 

জ্বী ভাইয়া সব জিনিস ফ্রেশ ছিল এবং মায়ের হাতের ছোঁয়া ছিল তাই খেতে সুস্বাদু হবে না এটা তো হতেই পারে না। খুবই সুস্বাদু হয়েছিল ভাইয়া। ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য।

 last year 

একদম ঠিক বলছেন আপু মায়েরা এমনই কোন কথা মুখ দিয়ে বলতে হয় না। একটু ইঙ্গিত দিলে হয় সব কথা বুঝে নিতে পারে। সকাল সকাল আপনাকে চমকায় দিল। তাদের বড়া পিঠা খাবার জন্য তাল নিয়ে আসলো। তালের বড়া গুলো দেখে মনে হচ্ছে বেশ মজার হয়েছিল। তালের বড়ার কালার গুলো খুবই চমৎকার হয়েছে। দেখেই তো লোভ লেগে গেছে আপু।

 last year 

ঠিক বলেছেন আপু সকাল সকাল মাকে দেখে বেশ অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। জ্বি আপু তালের বড়া গুলো দেখতেও যেমন সুন্দর হয়েছিল খেতেও খুবই সুস্বাদু হয়েছিল।ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য।

 last year 

তালের বরা বাঙ্গালীর খুব পছন্দের একটি পুরাতন খাবার।এটার স্বাদ বলে বোঝানো যাবে না।বানাতে যেমন কষ্টকর তেমনি এর স্বাদ খুব সুন্দর রেসিপি শেয়ার করেছেন শুভ কামনা রইল আপনার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 last year 

তালের বড়া খেতে আমি খুবই পছন্দ করি। এই তো আমার বাসায় গতকাল তালের বড়া তৈরি করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত আমি অনেকগুলা তালের বড়া খেয়ে ফেলেছি। যাইহোক আজকে আপনার তৈরি তালের বড়া গুলো দেখে মনে হচ্ছে খেতে খুবই সুস্বাদু হয়েছে। এত সুন্দর ভাবে তালের বড়া তৈরির পদ্ধতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপু।

 last year 

আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য।

 last year 

তালের পিঠা আমার খুব পছন্দ। যদিও এবার এখনো খাওয়া হয়নি।আপনার পিঠা বানানো দেখে আমার খুব ভালো লাগলো আপু।আপনি পিঠা বানানোর প্রসেস গুলো খুব সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে রেসিপিটি শেয়ার করার জন্য।

 last year 

সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

 last year 

তালের পিঠা আমার খুবই পছন্দের। বিকেল বেলা গরম গরম তালের পিঠা খাওয়ার মজাটাই আলাদা। আপনার তৈরি করা পিঠাগুলো দেখে লোভনীয় লাগছে। তৈরি করার প্রতিটি ধাপ খুব সহজ ও সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে দেখিয়েছেন চাইলে যে কেউ খুব সুন্দর ভাবে তৈরি করে নিতে পারবে। সুস্বাদু পিঠার রেসিপি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

 last year 

পুরো রেসিপিটা দেখে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

 last year 

এই সময় তাল বড়া সবার বাড়ি কম বেশি বানানো হয়ে থাকে।তাল বড়া আমার ও খুব ভালো লাগে। আপনার তাল বড়া দেখে আমার খেতে ইচ্ছে করছে এখন। আপনার তাল বড়া দেখতে অনেক লোভনীয় লাগছে। ধন্যবাদ আপনাকে এই রকম রেসিপি শেয়ার করার জন্য।

 last year 

ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 58544.56
ETH 2629.02
USDT 1.00
SBD 2.44