শামসুল মিয়ার জীবন কাহিনী || তৃতীয় এবং শেষ পর্ব
হ্যালো
আমাকে আমার নতুন একটি ব্লগের স্বাগতম আমি আজকে শামসুল মিয়ার জীবন কাহিনী তৃতীয় এবং শেষ পর্ব আপনাদের সাথে শেয়ার করব। প্রথম এবং দ্বিতীয় পর্ব আপন্রা খুবই পছন্দ করেছেন জেনে আমার খুবই ভালো লেগেছে। আর আমার দ্বিতীয় পর্বের শেষে আমি বলেছিলাম অজানা একটা ঝড়ের কথা। যা শামসুল মিয়ার জীবনটা আবারো এলোমেলো করে দিয়েছিল। আজকে আমি এই সেই কথাগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আশা করছি শেষ পর্বটা আপনাদের কাছে ভালো লাগবে এবং আপনারা এখান থেকে কিছুটা শিক্ষনীয় বিষয় খুঁজে পেতে পারেন।
শামসুল মিয়ার ছোট ভাই এবং তার ছোট বউয়ের তিন মেয়েকে নিয়ে ঢাকা শহরে বেশ সুখে শান্তিতে সংসার করছিলেন এবং বউ চাকরি করছিলেন। শামসুল মিয়ার বয়স হয়ে যাওয়াতে কোন চাকরি করতে পারছিলেন না। যেহেতু তার বউ সারাদিন চাকরি করে বাসায় আসে আর বাসায় এসেই কোনো না কোনো বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে অশান্তি শুরু হতে থাকে। শামসুল মিয়ার ছোট বউ সবার সামনে শামসুল মিয়ার পরিচয় দিতে অনেকটা লজ্জা বোধ করে।
এভাবে রোজকার অশান্তি সংসারে লেগেই থাকতো। আর শামসুল মিয়ার বউ শামসুল মেয়েকে কোনভাবেই সহ্য করতে পারত না। দিন দিন তার স্বভাব একদম পরিবর্তন হয়ে গেছে আর শামসুল মিয়া সেটা কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলেন না। যার জন্য আগের বউ সন্তান সবাইকে ছেড়ে নিজে নতুন করে ঘর বেঁধেছ। সে যদি এমন ব্যবহার করে তাহলে সেটা কি কোনভাবে মেনে নেওয়া সম্ভব।
একদিন শামসুল মিয়ার বউ তাকে বলে গ্রাম থেকে তাকে ঘুরে আসতে। আর শামসুল মিয়ারও এখানে আর ভালো লাগছিল না রোজগার অশান্তি। তাই সে কিছুদিনের জন্য একটু ছুটি চাচ্ছিল। এজন্য সে গ্রামের বাড়িতে চলে এসেছিল। কিন্তু গ্রামের বাড়িতে চলে আসা যেন তার কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল। হঠাৎ করে কিছুদিন পর শামসুল মিয়ার কাছে ডিভোর্সের কাগজ চলে আসে যেটা দেখার পর অনেকটাই ভেঙ্গে পড়েছিল শামসুল মিয়া।
সে কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছিল না যে তার বউ তার সাথে এমন একটা কাজ করতে পারে। তাই সে দ্রুত আবার ঢাকায় চলে যায় তার বউ এর কাছে। কিন্তু তার বউ থাকে বাসায় জায়গা দেয় না বরং আশেপাশের লোকজন ডেকে তাকে অপমান করে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেয়। এরপর শামসুল মিয়া বাধ্য হয়ে গ্রামে চলে আসে এবং এখন সে একাই বসবাস করছে।
শামসুল মিয়ার বড় বউ কোহিনুর বেগম এখনো তার বাবার বাসাতেই থাকে। সে চাইলেই শামসুল মিঞার জীবনে ফিরতে পারতো কিন্তু কোহিনুর বেগম চান না এরকম বিশ্বাসঘাতকের কাছে ফিরে আসতে। যে কিনা নিজের মোহের জন্য সুখের সংসার ভেঙে তছনছ করে দিয়েছিল। এখন শামসুল মিয়ার জীবন একাকী কাটছে একটা ভাঙ্গা গড়া মাটির বাড়িতে।
ব্যক্তিগত দিক থেকে বলতে গেলে শামসুল মিয়াকে আমি চিনি কারণ তার বাড়ি আমাদের বাড়ির সামনে এবং তিনি আমার বড় বাবা হন গ্রাম সম্পর্কে। তার একটি ভুল তার সারা জীবন টা শেষ করে দিয়েছে এবং সে এখন চাইলেও তার বড় ছেলেমেয়েদের কাছে যেতে পারে না। তবে ছেলে মেয়েরা মাঝে মধ্যে আসে বেড়াতে। সাথে নিয়ে যেতে চাওলেও সে লজ্জায় যায়না।
তো এই ছিল আমার গল্পের শেষ পর্ব। আশা করছি আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে।আমি পরবর্তীতে নতুন কোন বাস্তব জীবনের গল্প নিয়ে হাজির হবো। ততক্ষণ সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং এরকম ভুল থেকে অবশ্যই বিরত থাকবেন।
আপু আপনার গল্প টা পড়ে অনেক ভালো লাগল। আসলে আপু আমাদের সমাজে শামসুল মিঞার মতো মানুষের এমন শাস্তি হওয়া উচিত। আমি মনে করি শামসুল মিয়াকে তার ছোট বউ উচিত শিক্ষা দিয়েছে।পাপে ছাড়ে না বাপেরে। তবে শামসুল মিয়াকে তার আগের ছেলে মেয়ে দেখতে পারে।ধন্যবাদ আপু।
ঠিক বলেছেন আপু পাপ বাপরেও ছারেনা। ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
এরকম মানুষের ছোট একটা ভুলের জন্য পুরো জীবনটাই নষ্ট হয়ে যায় তাই ছোট ছোট সমস্যা এড়িয়ে চলাই ভালো। বড় বউর সাথে যদি কোন সমস্যা না করে সুন্দর মত সংসার করতেন তাহলে শামসুল মিয়ার জীবন কাহিনী এখন সুখের হতো। যদিও ওনার বড় ছেলে মেয়েরা বাড়িতে বেড়াতে আসে কিন্তু কোন মুখে তাদের সাথে যাবে সেজন্যই যায় না। উনি এখন নিজের ভুল তাহলে বুঝতে পেরেছেন। এরপর ছোট বউ তাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। আমাদের সবার উচিত ছোট ছোট ভুলগুলোকে শুধরে নেওয়া। ভালই লাগলো আপনার পোস্ট পড়ে।
জ্বী আপু শামসুল মিয়ার সুন্দর একটি সংসার হতে পারতো যদি সে পরের ভুল টি না করতো। একটা ভুল কতো গুলো জীবন নষ্ট করে দিয়েছে। ধন্যবাদ আপু।
আমাদের চারদিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে অনেক শামসুল মিয়াই পাওয়া যাবে। আমরা আসলে ভুলে যাই কে আমাদের প্রকৃত আপন। লোভের মোহে আমরা কত ভুলই না করে ফেলি। যার কোন সংশোধন নেই। আপনার গল্পে শামসুল মিয়াও ঠিক তেমনি একজন মানুষ। না পেল একুল না পেল সেকুল।
হ্যাঁ আমাদের সমাজে শামসুল মিয়ার মতো মানুষের অভাব নাই। যারা তাদের সংসার নিজের হাতে নষ্ট করে। আর বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ।ধন্যবাদ আপু।
এরকম লোকদের শাস্তি হওয়া উচিত শামসুল মিয়ারও শেষ পর্যন্ত শিক্ষা হয়েছে তাহলে। এটা দেখে ভীষণ ভালো লেগেছে আমার কাছে। যে মানুষ অন্যকে সম্মান করতে জানে না ঘরে অশান্তি করে তাদের এরকম শাস্তি হওয়া উচিত। দ্বিতীয় বউকে বিয়ে করে নিয়ে এসেছিল শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয় বউ তাকে বাইরে বের করে দেয়। বড় ছেলে মেয়েরা কিন্তু শেষ পর্যন্ত পাশে এসে দাঁড়িয়েছে কিন্তু নিজের লজ্জার কারণে আজ তাদের সাথেও যেতে পারছে না। ভালোই ছিল কিন্তু শামসুল মিয়ার জীবন কাহিনী। আমার কাছে পড়তে ভীষণ ভালো লেগেছে।
এটা আমার দেখা বাস্তব জীবনের গল্প ভাইয়া। আসলে ভুল করলে তো সাজা পেতেই হবে।শামসুল মিয়া এখন সাজা ভোগ করছে।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্যের জন্য।