তারা এখনো আশায় বুক বাঁধে ❤️

in আমার বাংলা ব্লগ11 months ago

1000027826.jpg
সোর্স

"হ্যালো",

, আমার বাংলা ব্লগ বাসি, সবাই কেমন আছেন? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়াই এবং আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। সবার সময় ভালো কাটুক এই কামনাই করছি।

সবাইকে আমার নতুন একটি ব্লগে স্বাগতম। আজকে আমি আপনাদের সামনে আবারো বাস্তব জীবনের একটি ঘটনা নিয়ে হাজির হয়েছি। আমি চেষ্টা করি আমার আশেপাশের ঘটনাগুলো আপনাদের সামনে গল্প আকারে শেয়ার করার। আমরা সব সময় মনে করি সংসার জীবনে সন্তান থাকা খুবই জরুরি তাহলে সংসারটি সুখের সংসার হিসেবে গড়ে ওঠে। অপর দিকে যদি স্বামী স্ত্রীর মধ্যে প্রকৃত ভালোবাসা থাকে তাহলে কোন সন্তানের অভার সেই সুখের সংসারে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। তেমনি একটি বাস্তব ঘটনা নিয়ে আজকে গল্পটি সাজিয়েছি। আশা করছি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।

মিঠু এবং ফারহানার সম্বন্ধ করে বিয়ে হয়। ফারহানা দেখতে শুনতে যেমন সুন্দরী তেমনি তার ব্যবহার সুন্দর। অপরদিকে মিঠুও কোনো অংশে কম যায় না। বিয়ের পর থেকে বেশ সুখে-শান্তিতে তাদের জীবন চলছিল। এভাবে বিয়ের পর প্রায় বছর দুই কেটে যায়। তারা খুব করে চাইছিল তাদের সংসারের নতুন অতিথি আসুক। কিন্তু অনেক চেষ্টা করার পরও তারা বাবা মা হতে পারেনি। এতে তাদের দুজনের মধ্যে কোনো আফসোস ছিল না। কারণ তারা একে অপরকে খুবই ভালোবাসতো। কিন্তু পাড়া-প্রতিবেশী আত্মীয়-স্বজন যেন তাদের সুখের পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়ালো।

ফারহানা কোন অনুষ্ঠানে যেতে পারত না সবাই তাকে বানজা বলে আখ্যায়িত করত। আশেপাশের লোকজনও তাকে সব সময় কটু কথা শোনাত। এসব শুনে তার খুব খারাপ লাগতো প্রায় সময় সে কান্নাকাটি করত মিঠুর সামনে। মিঠু সব সময় ফারহানাকে বোঝাত। যে আমরা তো সন্তান ছাড়াও খুব সুখে আছি তাহলে পাড়া-প্রতিবেশী আত্মীয়-স্বজনের কথায় কেন কান দেবো। ফারহানা এবং মিঠু প্রতিনিয়ত চিকিৎসা চালিয়ে যেত এবং ফারাহানাকে যে যেটা করতে বলতো সেটাই করতে শুধুমাত্র একটি সন্তানের জন্য।

প্রায় ১০ বছর পর আল্লাহ তায়ালা যেন তাদের দিকে মুখ ফিরে চেয়েছেন। ফারহানা হঠাৎই জানতে পারলেও সে মা হতে চলেছে। ফারহানা এবং মিঠু তখন মহা খুশি। এভাবে প্রায় ছয় মাস কেটে যায়। ফারহানা একটু একটু করে তার সন্তানের উপস্থিতি বুঝতে পারে। এরমধ্যে হঠাৎ একদিন ফারহানা জীবনে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। একদিন সন্ধ্যায় সে প্রচুর অসুস্থ হয়ে পড়ে। খুব দ্রুত তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু ততক্ষণে অনেকটা দেরি হয়ে যায়। তাদের সন্তানকে আর বাঁচানো সম্ভব হয়নি।

এরপর থেকে প্রায় সময়ে ফারহানা খুব কান্নাকাটি করত।কিন্তু এত বছরেও তাদের একে অপরের প্রতি একটুকুও ভালোবাসা কমে নি। তারা এখনো স্বপ্ন দেখে, এখনো আশায় বুক বাধে।

তো বন্ধুরা আজ এ পর্যন্তই। দেখা হবে পরবর্তীতে নতুন কোন বিষয় নিয়ে। আশা করছি গল্পটা আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে অবশ্যই আপনাদের সুন্দর মতামতের মাধ্যমে আমাকে জানাবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।

1000006402.png

1000006403.gif

1000006401.gif

Sort:  
 11 months ago 

আপনার গল্পটা পড়ে অনেক খারাপ লেগেছে আমার কাছে। প্রত্যেকটা মানুষ চায় তাদের একটা হলেও সন্তান হোক। কিন্তু তাদের দুজনের সন্তান না হওয়ার বিষয়টা শুনে খারাপ হয়ে গেছে। তবে যখন শুনেছি দশ বছর পরে তাদের সন্তান হবে এটি শুনে অনেক ভালো লেগেছিল। কিন্তু তারা তাদের সন্তানকে বাঁচাতে পারেনি এটা আসলে আরো বেশি খারাপ লেগেছে। তাদের ভালোবাসা এখনো একটুও কমেনি।

 11 months ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 11 months ago 

মানুষ বাঁচে আশায়.... মিঠু-ফারহানার ভালোবাসা এমন ই অটূট থাকুক। যেহেতু সত্য ঘটনা অবলম্বন এ আপনার গল্প, তাই পড়ে মনটা খুব ভালো হয়ে গেলো। উপরওয়ালা সবাইকে সঠিক জ্ঞান-বুদ্ধি দান করুক। তার মর্জি ছাড়া কিছুই হয় না। পাড়াপ্রতিবেশিরাও বেশির ভাগ সময়ে এমন অযাচিত কাজ করে অন্যদের জীবনে ভোগান্তি এবং দু:খ আনে, যা আসলেই কাম্য না।

Posted using SteemPro Mobile

 11 months ago 

গল্পটা আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম আপু। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 11 months ago 

সত্যি আপু আমাদের সমাজে এরকম ঘটনা অনেক আছে। যাদের বাচ্চা হয় না তাদেরকে বানজা বলে। এভাবে মানুষ মানুষকে ব্যবহার দিয়ে মানুষের মনে কষ্ট দেয়। যদিও মিঠু এবং ফারহানা দুইজন দুজনকে খুব ভালবাসে। তবে ১০ বছর পর পারহানা মা হাতে চলেছে। সত্যি এটি খুশির খবর। কিন্তু হঠাৎ করে অসুস্থ হয় হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তাদের সন্তানকে বাঁচাতে পারল না। আসলে এরকম পরিস্থিতি হলে মা-বাবা সবাই ভেঙ্গে পড়ে। কারণ এত বছর পর তাদের সন্তান পৃথিবীতে আসতেছে। তাও আবার না ফেরার দেশে চলে গেল। খুব সুন্দর করে পোস্টে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 11 months ago 

হ্যাঁ ভাইয়া ১০ বছর পর মা হতে চলেছিল কিন্তু বাচ্চাটাকে তারা পারেনি। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 11 months ago 

অনেক ধরনের মানুষ আছে। তারা কুসংস্কার ভাবে মানুষকে বিভিন্ন ধরনের কথা বলে।মিঠু এবং ফারহানা পছন্দ করে বিয়ে করেছে এবং তারা অনেক সুখী। হয়তোবা তাদের ঘরে ছেলে সন্তান হচ্ছে না। এই কারণে ফারহানাকে অনেক কথা শুনতে হয়। তবে বানজা বললেই এ কথাটি অনেক খারাপ। দীর্ঘ 10 বছর পর সুখবর আসলো তাদের বাচ্চা হবে। হঠাৎ করে পারাহানা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে নিলে তাদের ওই গর্ভের বাচ্চাটিও নষ্ট হয়ে যায়। আসলে এরকম কষ্ট গুলো সত্যি খারাপ লাগে। খুব সুন্দর করে পোস্টটি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

 11 months ago 

আমরা যতই আধুনিক হয় না কেন কুসংস্কার গুলো এখনো মনের মধ্যে গেঁথেই আছে। তাইতো মানুষকে কটু কথা বলতে দুইবার ভাবি না। ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 11 months ago 

আসলে এরকম কয়েকটা ফ্যামিলি দেখা যায় যাদের বাচ্চা হয় না। অনেকেই ফারহানাকে অনেক কথা বলতো, কিন্তু মিঠু এবং ফারহানা এখনো আশায় রয়েছে তাদের সন্তানের। ১০ বছর পরে যদিও তারা অনেক খুশি হয়েছিল ওর সন্তান হওয়ার কথাটা শুনে। কিন্তু মারা গিয়েছিল সেই সন্তান, এটা শুনে সত্যি আমার চোখে জল চলে এসেছে।

 11 months ago 

এটা ঠিক বলেছেন আপু ব্যাপারটা আসলেই খারাপ লাগার মতো।যে কেউ শুনলে তার আবেগ ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে। যাইহোক আপু অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর একটা মন্তব্যের জন্য।

 11 months ago 

আপু আপনার গল্পটা পড়ে অনেক খারাপ লাগল। সত্যি আপু পৃথিবীতে সন্তানের অনেক প্রয়োজন। তবে আল্লাহ না চায়লে কিছু করার থাকে না। তবে এটা জেনে অনেক ভালো লাগলো মিঠু ও ফারহানার ভালোবাসা একটু কমেনি। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 11 months ago 

বিয়ের পর থেকে আজও তাদের ভালোবাসা এতোটুকুও কমেনি।হয়তো তাদের পরিবারের সন্তানের অভাব তবে তাদের ভালোবাসা সেই অভাব কখনোই বুঝতে দেয় না একে অপরকে। ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 11 months ago 

অসাধারণ লিখেছেন আপু বাস্তব গল্পটি পড়ে খুব ভালো লেগেছে। আমাদের সমাজে এমন দম্পতি আছে যারা সন্তান ছাড়াই কাটিয়ে যাচ্ছে সারা জীবন। তবে অনেকে আছেন দুই এক বছর হতে না হতেই অস্থিরতা শুরু হয়ে যায়। নতুন করে আবারও বিয়ে করে নেয়। এতে করে মূল কারণ সন্তান না আসলেই বিয়ের প্রতি তাদের আগ্রহ টা বেশি থেকে যায়। তো ফারহানার অবশেষে সন্তানটি নষ্ট হয়ে গেল শুনে খারাপ লাগলো। আশা করি পরবর্তী পর্বে বিস্তারিত জানতে পারবো।

 11 months ago 

ভালো খারাপ সব মিলিয়েই আমাদের পৃথিবীটা চলছে এখনো। ঠিক বলেছেন অনেকে আছেন দু এক বছর না যেতেই আবারো বিয়ে করে। আবার অনেকে বছরের পর বছর একসাথে কাটিয়ে যাচ্ছে সন্তান ছাড়া। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59834.01
ETH 2665.66
USDT 1.00
SBD 2.46