তালের বড়া/গুড়গুড়ি || @shy-fox 10% beneficiary

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

হ্যালো বন্ধুরা,

সবাই কেমন আছেন? আশা করছি যে যেখানে আছেন ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমিও ভাল আছি। সবার সময় ভালো কাটুক এই কামনাই করছি।

20220911_104303.jpg

আমি বেশ কিছু দিন আগে বাবার বাসায় গিয়েছিলাম। তো ভাদ্র মাসে গিয়েছি তালের পিঠা খাব না এটা তো হতে পারে না। আসলে এই সময়ে গ্রাম গঞ্জে বা শহরে বাবা মা মেয়ে জামাইকে হরেক রকমের তালের পিঠা, পায়েস ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের খাবার রান্না করে খাওয়ান। আমার মা আমাকে অনেক কিছু খাইয়েছে আর আমি আজকে আপনাদের সাথে তারই কিছু অংশ তুলে ধরব। আসলে আজকে আমি একটা রেসিপি শেয়ার করব সেটা হচ্ছে তালের বড়া বা গুড়গুড়ি পিঠা। তো আমার মা তালের রসের গুড়গুড়ি বানিয়েছিলের যেটা আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।

উপকরনসমূহ

তালের রস
চালের গুঁড়া
ময়দা
চিনি
তেল

ধাপ-১

প্রথমে তালের খোসা সহ ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। এরপর তালের খোসা ছাড়িয়ে এটা থেকে তালের রস বের করে নিতে হবে। আর তালটা আমার গ্রামের বাড়ির আমার পাশের বাসার চাচির গাছের তাল।

PhotoCollage_1663752170889.jpg

ধাপ-২

এরপর তালের রস গুলোকে ভালোভাবে একটা প্লাস্টিকের ডালার সাহায্যে ছেঁকে নিতে হবে যাতে কোনো আঁশ না থাকে।

20220805_201414.jpg

ধাপ-৩

এরপর রস গুলোকে একটা স্টিলের বড় বাটিতে নেয়া হয়েছে।

20220910_175607.jpg

ধাপ-৪

এরপর চিনি দিয়ে ভালোভাবে নেড়ে চেড়ে রসের সঙ্গে চিনি মিশিয়ে নিতে হবে।

20220910_175637.jpg

ধাপ-৫

এরপর পরিমাণমতো চালের গুঁড়া এবং সামান্য ময়দা দিতে হবে। ময়দাটা আপনারা চাইলে দিতেও পারেন নাও দিতে পারেন। আমরা এখানে ময়দাটা দিয়েছি যাতে তালের গুড়গুড়ি একটু নরম হয়। তারপর রসের সাথে চালের গুঁড়া ভালোভাবে হাত দিয়ে মিশিয়ে নিতে হবে।

PhotoCollage_1663754496133.jpg

ধাপ-৬

এরপর এটাকে ১০ মিনিটের জন্য রেস্টে রেখে দিতে হবে। এরপর ভাজার জন্য চুলায় একটা কড়াই বসিয়ে আর আমরা এখানে ব্যবহার করেছি সিমেন্টের কড়াই যেটাতে পিঠা অনেক সুন্দর ভাজা হয়। তারপরে দেওয়া হয়েছে তেল। তেল গরম হয়ে গেলে সামান্য একটু বেটার দিয়ে আগে তেল টা পরীক্ষা করে নিতে হবে যে তেলটা গরম হয়েছে কিনা।

PhotoCollage_1663754899017.jpg

ধাপ-৭

যদি তেলটা গরম হয়ে যায় তাহলে বেটার থেকে একটু একটু করে নিয়ে হাত দিয়ে তেলের মধ্যে ছেড়ে দিয়ে গুড়গুড়ি পিঠাগুলো ভেজে নিতে হবে। আর এই পিঠাটি খেতে অনেক সুস্বাদু লাগে। আর একটু মচমচে করে ভাজতে হবে।

PhotoCollage_1663754957284.jpg

আমি মিষ্টি জিনিস খেতে খুব একটা পছন্দ করিনা। পিঠা পুলি খুব একটা খায় না। তবে তালের সিজনে আমি এই পিঠাটি প্রচুর পরিমাণে খেয়ে থাকি। কারণ এটা আমার খুবই পছন্দের একটি খাবার। আর আমার মা আমার জন্য মাঝেমধ্যে বানিয়ে পাঠিয়ে দেয়। আর আমি যখন বাড়িতে যাই তখন আমার জন্য বানিয়ে রাখে। উনি আমার জন্য ফ্রিজে তালের রস সব সময় সংরক্ষণ করে রাখেন। কারন আমি এটা খুবই পছন্দ করি খেতে।

InShot_20220921_161212769.jpg

তো বন্ধুরা রেসিপি টা ভালো লাগলে অবশ্যই বাসায় চেষ্টা করবেন। আর আমার বিশ্বাস এর মধ্যে সবাই খেয়ে ফেলেছেন। আমার একটু দেরি হয়েছে রেসিপিটা দিতে কারন আমার রেসিপি টা অনেক আগেই করা ছিল কিন্তু অনেক রেসিপি জমা হয়ে গিয়েছিল সেগুলো আপনার সাথে শেয়ার করেছি। আমার মায়ের হাতের আরো কিছু রেসিপি আছে যেগুলো আমি গ্রামের বাড়িতে গিয়ে সংরক্ষণ করেছিলাম। সেগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। তো বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং সুরক্ষিত থাকবেন। পরবর্তীতে রেসিপি ভিডিও আসবে সবাইকে দেখার আমন্ত্রণ রইল।

ধন্যবাদ সবাইকে

Sort:  
 2 years ago 

আপনার তৈরি করা তালের বড়া গুলো দেখে লোভে পড়ে গেলাম। আমরা যখন ভাই বোনগুলো একসঙ্গে হতাম এই সময় তখন মায়ের হাতে নানান ধরনের পিঠা খেতাম । সেই পিঠাগুলোর মধ্যে তাল দিয়ে বরার পাশাপাশি অনেক রকম পিঠা তৈরি করে দিত মা আমাদের।
আপনি তালের বড়া তৈরি করার পাশাপাশি ধাঁপগুলো অনেক সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন
আপনার জন্য শুভকামনা রইল

 2 years ago 

তালের বড়া খেতে আমার কাছে অনেক ভালো লাগে আপু। আপনার রেসিপিটি দেখতে অনেক লোভনীয় হয়েছে। দেখে লোভ সামলাতে পারছি না। এত সুন্দর একটি রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল।

 2 years ago 

নরম তুলতুলে তালের পিঠা ।গরম গরম খাওয়ার মজাটাই আলাদা। কি রেসিপি শেয়ার করলেন আপু ।দেখে খেতে ইচ্ছে করছে। রেসিপিটি দেখে লোভনীয় লাগছে। তবে আমার আম্মু এই রেসিপিটি বানাতে নারকেল ব্যবহার করে। নারকেল দিয়ে রেসিপিটি তৈরি করলে খেতে আর একটু বেশি ভালো লাগে। আপনার রেসিপিটি দেখে বোঝা যাচ্ছে খেতে খুবই সুস্বাদু হয়েছে। ধন্যবাদ আপনাকে ।

 2 years ago 

ঠিক বলেছেন ভাদ্র মাসে গ্রামে গন্জে প্রায় প্রতি বাড়িতে হরেক রকমের পিঠা বানানো হয় ৷সবচেয়ে তালের রসের পিঠা বেশি খাওয়া হয় ৷

যাই হোক একটা মজার কথা হলো গ্রামে গুড়ি গুড়ি গুলোকে গুলগুলা বলে ৷
আর গুলগুলা বানানোর ধাপ গুলো দেখলাম ৷
ভালো ছিল ৷

 2 years ago 

তালের বড়া খেতে অনেক মজা লাগে। ভিতরে নরম তুলতুলে হয়ে থাকে আর নরম খেতে বেশ মজা লাগে। আপনার রেসিপি দেখে তো খেতে ইচ্ছা করছে আপু। অনেক সুন্দর করে সাজিয়ে উপস্থাপনা করেছেন।

 2 years ago 
হা আপু ঠিকই তালের বড়া কমবেশি অনেকেই খেয়েছে।কারন মাস খানেক হয়েছে তাল পাকা ধরেছে এবং অনেক যায়গায় শেষের পথে।যা-ই হোক আপনার তালের বড়া রেসিপিটি দেখতে সুন্দর লাগছে এবং খেতে খুবই সুস্বাদু হয়েছিল মনে হচ্ছে। কারন দেখতে সুন্দর হলে খেতেও অনেক সময় সুস্বাদু হয়ে থাকে।অসংখ্য ধন্যবাদ আপু, এত সুস্বাদু ও মজাদার করে তালের বড়া রেসিপিটি তৈরি করে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য শুভকামনা রইল আপু।
 2 years ago 

আপু একদম ঠিক বলেছেন, বাবা মা মেয়ে জামাইদেরকে বিভিন্ন ধরনের পিঠা তৈরি করে খাওয়ায়। আর তারই অংশ হিসেবে আপনার বাবার বাসায় গিয়ে আপনি যে তালের বড়াটি খেয়েছেন তা খেতে খুব মজা হয়েছিল বেশ বুঝতে পারছি। এইতো সেদিন আমিও আমার এক বড় বোনের বাসায় গিয়ে তালের বড়া খেয়েছি এবং তার রেসিপির ছবি তুলে মোবাইলে রেখেছি তবে এখনো শেয়ার করা হয়নি। আজ আপনার তৈরি তালের বড়া দেখে সেদিনের কথা মনে পড়ে গেল। খুবই সুস্বাদু ও মজাদার একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

 2 years ago 

আসলেই আপু এ সময় কম বেশি সবার ঘরে তাল থাকে। তালের পিঠা সবাই খেয়ে থাকে ।তালের এই পিঠাকে আমাদের এখানে গুলগুলি বলে আবার অনেকেই তালের বড়া বলে থাকে। নরম তুলতুলে এই পিঠা খেতে অনেক মজা। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

তালের বড়ার আর এক নাম যে গুড়গুড়ি পিঠা এটা জানা ছিল না। তবে তালের বড়া আমার খুবই অপছন্দের একটি পিঠা। যদিও ভাদ্র মাস আসলে আমাদের বাড়ি তালের পিঠের মেলা বসে। একপ্রকার জোর করে খাওয়ানো হয় আমাকে এই পিঠা। আপনার তালের পিঠা বানানোর প্রত্যেকটা ধাপ আমার জানা রয়েছে কারণ ছোট বেলা থেকেই দেখে আসছি।

 2 years ago 

জি আপু আপনি ঠিক বলেছেন এ সময় বিভিন্নভাবে আপ্যায়ন করা হয় যে কোন মেহমানকে। আর এ সময় তার পিঠা খাওয়া হবে না তা তো হয় না। আপনি খুব সুন্দর করে তালের পিঠা রেসিপি করেছেন,লোভনীয় লাগছে। যদি সাথে একটু নারকেল দিতেন তাহলে খেতে আরো বেশি ভালো লাগতো আপু। আমি দেখেছি আমার আম্মুকে সব সময় তালের পিঠার সাথে নারকেল দিতে।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 63362.14
ETH 2592.64
USDT 1.00
SBD 2.80