নোটিফিকেশন, শেষ পর্ব ||@shy-fox 10% beneficiary

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

সুইটি আমার ভালো বান্ধবী ছিল কিন্তু কলেজ জীবনে থাকাকালীন সময়ে, সে একবার আমার বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল কিন্তু তার বাড়িতে যাওয়ার সুযোগ আমার কখনো হয়নি। প্রথমেই চেষ্টা করেছিলাম যে, মাধ্যমে নোটিফিকেশনটা পেয়েছি তার সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য, তারপরে সে যখন আমাকে সুইটির বাড়ির অ্যাড্রেসটা দিয়েছে তখন আমি সেই এড্রেস অনুযায়ী চলে গিয়েছিলাম। যদিও জানতাম সুইটির বাড়ি জয়পুরহাটের আশেপাশেই হবে । তবে সঠিক লোকেশনটা জানতাম না। তবে এড্রেসটা পাওয়াতে ভালোই হয়েছিল।
IMG_20211004_103504.jpg
একটা জিনিস খেয়াল করে দেখবেন, যখন কারো বিপদ শুনবেন। তখন দেখবেন যে, আপনি তার নাম্বারে যোগাযোগ করার চেষ্টা করবেন কিন্তু আপনি ভুলে যাবেন যে সে বিপদগ্রস্থ তার নাম্বারে তাকে পাওয়া একদম মুশকিল। এটা জেনেও আপনি সেই কাজটাই করবেন। আমিও ঠিক একই রকম কাজটাই করেছিলাম। আমি এড্রেস পাওয়ার আগে, প্রথমে সুইটির নাম্বারে বহুবার ফোন দিয়েছিলাম কিন্তু তাকে আমি ফোনে কোনভাবেই পাইনি।


যেহেতু আমার বিয়ে হয়ে গেল, তাই মোটামুটি আমার শ্বশুরবাড়ি এলাকাতে আমি অনার্সে ভর্তি হয়ে গেলাম কিন্তু সুইটি থেকে গেল সেই জয়পুরহাট শহরেই। সেখানেই সে সরকারি কলেজে অনার্সে ভর্তি হয়েছিল এবং পরবর্তীতে সে সেখানেই থেকে যায়।
অজানা এবং অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে হুটহাট করে কারো সঙ্গে পরিচয় হলে, সেই পরিচয় গুলোকে বেশিদিন টিকিয়ে রাখতে নেই। কারণ সেই পরিচয় গুলো খুব একটা ভালো দিক বহন করেনা। যেটা হয়েছিল আরকি সুইটির ক্ষেত্রে। আমি চলে আসার পরে মোটামুটি আননোন নাম্বারে তার সঙ্গে একটা অপরিচিত ছেলের পরিচয় হয় এবং সেখান থেকেই মূলত সূত্রপাত ঘটে।
IMG_20211004_103459_1.jpg
যখন আমার ওর সঙ্গে মাঝে মাঝে কথা হতো, তখন সে প্রায়ই একটা ছেলের কথা বলতো এবং বলতো সে নাকি অনেক ভালো এবং সে নাকি তাকে বিয়ে করতে চায় এবং তার সঙ্গে তার সম্পর্কের গভীরতাটা অনেক গভীরতর পর্যায়ে চলে গিয়েছে। তবে সে এখনো তার পরিবারে জানায়নি।
করোনাকালীন সময়ে সেই ছেলে বহুবার সুইটির সঙ্গে দেখা করেছিল এবং তাদের মধ্যে সম্পর্কটা গভীর থেকে গভীরে চলে পর্যায়ে গিয়েছিল। কিন্তু সুইটি জানত না যে,এটার বাহিরে সে একটা প্রতারণার শিকার হচ্ছে। কারণ তাদের ব্যক্তিগত মুহূর্ত গুলো, সেই ছেলেটা ভিডিও রেকর্ড করে ফেলেছিল।
ঐ যে বললাম, অজানা মানুষের চেহারা পরিবর্তন হতে বেশি সময় লাগে না। ঠিক তেমনটাই ঘটনা ঘটেছে সুইটির সঙ্গে। যখন মোটামুটি তাদের সম্পর্ক গভীরতর অনেকটা পর্যায়ে চলে যায় এবং ভিডিও করে ফেলে সেই ছেলেটা। তখন সেই ভিডিও হয়ে যায় ব্ল্যাকমেইলের প্রথম কারণ এবং সেটা দিয়েই প্রথমে সুইটির কাছে টাকা পয়সা নিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে এবং সেটা প্রতিনিয়ত করতে থাকে।
IMG_20211004_103652.jpg
ক্রমাগত ব্ল্যাকমেলিং, টাকা-পয়সার চাপ এবং মানসিকভাবে সবরকম নির্যাতন শুরু হয় সুইটি সঙ্গে। একটা সময় গিয়ে সে আর নিতে পারছিল না। তাই সে নিজের অজান্তে নিজেকে শেষ করে ফেলেছে এবং লিখে গিয়েছে তার মৃত্যুর ঘটনাগুলো। যাইহোক এমন অপমৃত্যু যেন কারো সঙ্গে না হয়, ঠিক এমনটাই কামনা করি। তবে অজানা মানুষের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার আগে, অবশ্যই সর্তকতা অবলম্বন করা দরকার। কারণ এরকম হাজার হাজার প্রতারক আশেপাশেই আছে। সুতরাং সাবধান ।

Sort:  
 3 years ago 

সবকিছু মিলিয়ে অসাধারণ ছিল। পরবর্তী এপিসোড অথবা অন্য কোন বিষয় নিয়ে লিখবেন এই প্রত্যাশা এবং আশায় থাকলাম। ধন্যবাদ আপনাকে

 3 years ago 

সবকিছু মিলিয়ে দুর্দান্ত ছিল। খুব সুন্দর একটি মেসেজ আপনি আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন। আসলেই যাদের সাথে আমাদের হুটহাট করে পরিচয় হয়ে যায়, তাদের সাথে বেশিদিন সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে নেই। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।

 3 years ago 

এতো সুন্দর ভাবে লিখেছেন পড়তে পড়তে যেনো লেখা শেষ হওয়ার আগে চোখ তুলতে পারিনি।
খুব বেশি সুন্দর আপনার লেখার ধরণ।

 3 years ago 

খুব সুন্দর করে আপনি পোস্টটি গুছিয়ে লিখেছেন সুইটির মৃত্যুর কাহিনী। যতই পড়ছি ততই খালি পড়তে মন চাচ্ছে। আসলে এরকম ঘটনা আমাদের কারো সাথে ঘটা উচিত নয়। অবশ্যই আমাদের সবাইকে সব দিক থেকে সাবধানতার সহিত চলতে হবে। ধন্যবাদ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।

 3 years ago 

ঘটনাটি সত্যিই অনেক দুঃখজনক আপু।তবে এরকম ঘটনা এখন অহরহ ঘটছে আমাদের চারপাশে। এজন্য নিজের পারসোনাল বিষয়গুলো কারো সঙ্গে শেয়ার করা উচিত নয়।

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 59231.42
ETH 2599.06
USDT 1.00
SBD 2.45