সুখের সংসারে দুঃখের আগুন || একটি বাস্তব ঘটনা || দ্বিতীয় এবং শেষ পর্ব

in আমার বাংলা ব্লগlast year

1000024888.jpg
সোর্স

"হ্যালো",

আমার বাংলা ব্লগ বাসি, সবাই কেমন আছেন? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়াই এবং আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। সবার সময় ভালো কাটুক এই কামনাই করছি।"সুখের সংসারে দুঃখের আগুন" গল্পটির প্রথম পর্ব আমি শেয়ার করেছিলাম আজকে দ্বিতীয় এবং শেষ পর্বটি শেয়ার করব। আশা করছি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।

এরপর দুজনের তুমুল ঝগড়া হয় এবং সুমন কিছুতেই স্বীকার করে না যে সে কোন একটা মেয়ের সঙ্গে কথা বলছিল। সে বারবার বলছিল রং নাম্বারে ফোন এসেছে। যাইহোক এরপর থেকে সুমন খুবই সাবধানে চলাফেরা করছিল এবং তার বউকে বুঝাচ্ছিল যে খুবই ভালো হয়ে গেছে সে। আর তার ভালো ব্যবহারে সাহেরা ভেবেছিল হয়তোবা সুমন ভালো হয়ে গেছে। এখন কথা হচ্ছে সুমন কি আদৌ ভালো হয়ে গেছে? নাকি সে কোন অঘটন ঘটিয়ে ফেলেছে। যা পরবর্তীতে তাদের সংসারে বড় একটি সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। আর সেটা জানতে হলে অবশ্যই আপনাদেরকে পরের পর্বের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

কিছুদিন সুমন খুব স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করছিল। আবারো হঠাৎই তার পরিবর্তন ঘটে। আবারও সেই আগের মত বাসায় দেরি করে ফেরা ও রাতে লুকিয়ে ফোনে কথা বলা শুরু করে।সাহেরা আবারও বুঝতে পারে এবং একদিন তার সাথে খুবই ঝগড়াঝাঁটি শুরু করে।আর তাদের ঝগড়া শুনে আশে পাশের বাড়ির মানুষ চলে আসে। এবং তাদেরকে থামানোর চেষ্টা করে। তখন সাহেরা বারবার একটা কথাই বলে যে তুমি সবকিছু আমাকে খুলে বল কি হয়েছে।তখন সুমন বলে ফেলে যে সে আর একটা বিয়ে করেছে। এই কথা শুনে সাহেরার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে। সে তার কানকে কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছে না। বারবার সুমনকে বলতে থাকে যে তুমি আমার সঙ্গে ফাজলামো করছো। তখন সুমন রেগে বলে যে না আমি ফাজলামো করছি না। আমি সত্যিই বিয়ে করেছি।

তখন সবাই সুমনকে বোঝায় ঠিক আছে বিয়ে করেই ফেলেছ এখনো সময় আছে সেই সংসারে সন্তান হয়নি তুমি মেয়েটাকে ডিভোর্স দিয়ে দাও। তখন সুমন বলে কিছুতেই সম্ভব না কারণ তার দ্বিতীয় স্ত্রী সন্তান সম্ভবা। তাকে বন্দরে একটা ভাড়া বাসায় রেখেছে সে। এ কথা শোনার পর সাহেরা আরো ভেঙে পড়ে। আশেপাশের লোকজন হতাশ হয়ে কথাটি শুনে। কোন মেয়ে স্বামীর ভাগ কাউকে দিতে পারেনা। তাইতো সাহেরা কিছুতেই মেনে নিতেই পারছে না যে তার স্বামীর আর একটা বউ থাকবে। একজন ছেলের যখন দুইটা বউ হয় তখন সেই সংসারে কতটা অশান্তি হয় যার পরিবারে হয় সেই ভালো জানে। যাইহোক এদিকে সাহেরা বলছে আমি তাহলে চলে যাচ্ছি কারণ আমি কিছুতেই তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে মেনে নিতে পারব না।

তখন সবাই মিলে সাহেরাকে বোঝাতে শুরু করে যে তুমি চলে গেলে তোমার দুইটা ছেলে মেয়ের কি হবে। সে তো তার বউ নিয়ে ব্যস্ত থাকবে তোমার বাচ্চাদের তো সেই মেয়ে দেখবে না। এদিকে সুমনের ভেতর কোন অনুশোচনা নেই এই কাজটি করার পর। যাইহোক সবাই অনেক বুঝিয়ে সুুঝিয়ে সাহেরাকে শান্ত করে।এভাবেই অশান্তিতে চলছে তাদের জীবন ।ঘটনাটি আমার খুব কাছের এক আত্মীয়ের। এখনো কোনো সমাধান হয়নি। আর কিবা সমাধান হবে হয়তো এভাবেই তাদের বাকিটা জীবন চলে যাবে। জানিনা কি হবে পরবর্তীতে। তবে আমার নিজের কাছে খুবই খারাপ লেগেছে। কি দরকার ছিল ঘরে বউ বাচ্চা থাকতে আবারো বিয়ে করা। এতে সুমনের দোষ দিবো নাকি তার দ্বিতীয় স্ত্রীর দোষ দিবো বুঝতে পারছি না।

তবে এই ঘটনাগুলো আমাদের আশেপাশে এখন অহরহ ঘটছে। যার ফলে একটি সুখের সংসার নিমিষেই তছনছ হয়ে যাচ্ছে। এখন সাহেরা না পারছে তার ছেলেমেয়েদেরকে ছেড়ে চলে যেতে। আবার সুমন না পারছে তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে ছেড়ে দিতে। কি একটা জগাখিচুড়ি অবস্থা।তারা কেউ জানে না তাদের আগামী দিনগুলোতে কি হতে চলেছে।

তো বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। দেখা হবে পরবর্তীতে নতুন কোন বিষয় নিয়ে। ততক্ষনে সবাই ভালো থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।

1000006402.png

1000006403.gif

1000006401.gif

Sort:  
 last year 

এই ঘটনার প্রথম পর্বটি আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছিলেন কিছুদিন আগে তা আমি পড়েছিলাম। আজকেও তার শেষ অংশটুকু পড়তে পারলাম। আসলেই মানুষের জীবন এভাবেই ধ্বংসের দিকে নেমে আসে। অনেকে নিজের ভুলে আবার অনেকেই নিজের অজান্তেই ভুলে-পা বাড়িয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায়।

 last year 

ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 last year 

এখানে আমি সম্পূর্ণ দোষ সুমনকেই দিব। যার ঘরে স্ত্রী এবং বাচ্চা রয়েছে সে অন্য মহিলার সঙ্গে সম্পর্কে জড়াই বা কিভাবে। শুধু সম্পর্কে জড়াইনি সে বিয়েও করে ফেলেছে এবং দ্বিতীয় স্ত্রী সন্ধান সম্ভবা হয়েছে। আমি সাহেরার কথা চিন্তা করছি। সে কতটা কষ্ট পেয়েছে স্বামীর এমন আচরণে। বাচ্চাদের মুখের দিকে তাকিয়ে এমন লম্পট স্বামীকে ছেড়ে যেতে পারছে না। পরবর্তীতে যদি কোন সমাধান হয় আপু শেয়ার করবেন অবশ্যই।

 last year 

ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য। যদি কোনো সমাধান হয় পরবর্তী সময়ে শেয়ার করার চেষ্টা করবো আপু।

 last year 

আসলে এধরনের ঘটনা গুলো আমাদের আশেপাশে অহরহ ঘটছে। এখানে আসলে সম্পূর্ণ দোষ সুমনের। ঘরে স্ত্রীর সন্তান রেখে আরেকটি বিয়ে করার কোন দরকার আছে বলে আমি মনে করি না। সাহেরার জন্য আমার খুব খারাপ লেগেছে। সে তার ছেলে মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে হয়তো এখন ধৈর্য ধরে চুপ করে রয়েছে। পরবর্তী তে কোন সমাধান হলে অবশ্যই জানাবেন। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু আপনাকে।

 last year 

আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

 last year 

এই গল্পের প্রথম পর্ব পড়েই বুঝেছিলাম সুমন গোপনে বিয়ে করেছে। দোষ সুমন এবং সুমনের দ্বিতীয় স্ত্রী করেছে। কিন্তু প্রতিনিয়ত কষ্ট পেতে হচ্ছে সাহেরার এবং তার সন্তানদের। দিন যত অতিবাহিত হবে ঝামেলা ততোই বাড়তে থাকবে । আমাদের এখানেও এমন কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। এই কাজগুলো সত্যিই নিকৃষ্ট। যাইহোক এমন বাস্তব একটি গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.14
JST 0.028
BTC 58551.09
ETH 2617.32
USDT 1.00
SBD 2.44