ফাতেমার অনিশ্চিত জীবন || এবং সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প || দ্বিতীয় এবং শেষ পর্ব

in আমার বাংলা ব্লগlast year

1000022405.jpg
সোর্স

"হ্যালো",

আমার বাংলা ব্লগ বাসি, সবাই কেমন আছেন? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন।আমিও আপনাদের দোয়াই এবং আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। সবার সময় ভালো কাটুক এই কামনাই করছি।

গত কয়েকদিন আগে আমি ফাতেমার অনিশ্চিত জীবন নিয়ে একটি গল্প লিখেছিলাম। সেটির প্রথম পর্বটি আপনারা অনেকেই খুব পছন্দ করেছেন এবং বেশ সুন্দর সুন্দর মন্তব্য করেছেন। তো আজকে আমি দ্বিতীয় এবং শেষ পর্ব শেয়ার করার চেষ্টা করছি।

ফাতেমা দিশেহারা হয়ে পড়ে এই ছোট বাচ্চাটাকে নিয়ে সে কিভাবে চলবে। তখন ফাতেমা খুব ভালোভাবে বুঝতে পারে যে তার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাকে ঠকিয়ে বিয়ে দিয়েছে।তাদের ছেলে যে অসুস্থ এটা তারা খুব ভালোভাবেই জানতো। কিন্তু এখন তো আর কিছু করার নেই। এভাবেই বেশ কিছু মাস চলে যায়। ছেলেটাও আস্তে আস্তে বড় হতে থাকে। আর এদিকে ফাতেমার স্বামীর অবস্থা খুব একটা ভালো না। এর মধ্যে হঠাৎ করে তার স্বামী একদিন সকাল বেলা অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিলে সেখানেই তাকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এরপর সন্তানকে নিয়ে একা সংসারে বেশ কয়েক মাস কেটে যায় ফাতেমার। যেটুকু সঞ্চয় ছিল এই কয় মাসে প্রায় শেষ হয়ে গেছে। এদিকে তার শশুর শাশুড়ি আত্মীয় স্বজনও কোন খোঁজ খবর নেয় না। মাঝেমধ্যেই বাবার বাড়ি থেকে টাকা পয়সা পাঠালে সেটা দিয়ে ফাতেমা খরচ চালায়। কিন্তু এভাবে আর কতদিন। ছেলেটা বড় হচ্ছে দিনে দিনে খরচ বাড়ছে। আর তার ভবিষ্যতের জন্য তো কিছু করতে হবে। এদিকে ফাতেমার শ্বশুর-শাশুড়ি ফাতেমার উপর মানসিক অত্যাচার চালাতে শুরু করে। তখন ফাতেমা সিদ্ধান্ত নেয় সে বাপের বাড়ি চলে যাবে ছেলেকে নিয়ে। এর মধ্যে সে তার বাবার বাড়িতে খবর পাঠায় এবং বাবার বাড়ি থেকে লোক এসে তাকে এবং তার ছেলেকে নিয়ে যায়।

ফাতেমা বেশি দূর পড়াশোনা করেনি। কি করবে ভেবে উঠতে পারছিল না। যেকোনো একটা কর্মের মধ্যে তো ঢুকতে হবে কিছু পয়সা রোজগার করার জন্য। এরমধ্যে কিছু পাড়া প্রতিবেশী তাকে বুঝায় যে ঢাকাতে গিয়ে কোন একটা গার্মেন্টসে ঢুকে চাকরি করলে কিছু টাকা উপার্জন করতে পারবে। এদিকে বাবার বাড়ির তেমন অবস্থাও নেই যে তাদেরকে বসিয়ে খাওয়াবে।তখন ফাতেমা তার মা-বাবাকে বলে যে তার সঙ্গে ঢাকায় যেতে তারা বাচ্চাকে দেখাশোনা করবে এবং সে চাকরি করবে।তার বাবা-মা ও এক কথায় রাজি হয়ে যায়। এরপর সবাই মিলিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে চলে যায় এবং সে ভালো একটা গার্মেন্টস চাকরি পায়। বেশ কয়েক মাস চাকরি করার পর তাদের আর্থিক অবস্থার উন্নতি হয়। কারণ পাশাপাশি তার বাবাও বিভিন্ন জায়গায় কাজে যান। মা বাসায় বসে ছেলেকে দেখাশোনা করেন।

এভাবে কেটে যায় বেশ কয়েকটা বছর। এখন তার ছেলে অনেক বড় হয়ে গিয়েছে। দশম শ্রেণীতে পড়াশোনা করছে। এর মধ্যে সে টাকা জমিয়ে ছেলের জন্য বাড়ি করার জন্য একটা জমিও কিনেছে। তো এভাবেই চলছে তাদের জীবন। আশা করছি তারা জীবনে আরও উন্নতি করবে। হয়তো ছেলেটা বড় হয়ে তার মায়ের কষ্ট বুঝতে পারবে এবং মায়ের কষ্ট লাঘব হবে। সবশেষে ফাতেমা যে জীবনে এত যুদ্ধ সামলিয়েও ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে এটাই অনেক। কজন মেয়েই বা এমনটা করতে পারে।

এই ছিল ফাতেমার জীবনের কিছু কথা যা আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। আশা করছি দ্বিতীয় এবং শেষ পর্বটি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে। আর ভালো লাগলে অবশ্যই আপনাদের সুন্দর মতামতের আশা রাখছি। দেখা হবে পরবর্তীতে নতুন কোন বিষয় নিয়ে ততক্ষণে সবাই ভালো থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন।

ধন্যবাদ সবাইকে।

1000006402.png

1000006403.gif

1000006401.gif

Sort:  
 last year 

ফাতেমার অনিশ্চিত জীবনের গল্পটির দ্বিতীয় পর্ব পড়ে আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। ফাতেমা চাকরি করে তার জীবনে বাবা মা ও ছেলেকে নিয়ে ভালো আছে জেনে আমার কাছেও খুবই ভালো লাগলো। এবং সে সব সামলিয়ে আবার ঘুরিয়ে দাঁড়াতে পেরেছে। এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 last year 

আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 last year 

ফাতেমার অনিশ্চিত জীবনের প্রথম পর্ব হয়তো আমার পড়া হয়নি। তবে দ্বিতীয় পর্ব পড়ে যা কিছু বুঝতে পারলাম আসলে কিছু কিছু মানুষের জীবন এমনি। তবে ফাতেমা যে অনেক কষ্ট জয় করেছে এটাই অনেক। সত্যি সব কিছু সামলিয়ে সে ছেলেকে পড়াশোনা করাতে পারছে এটাই অনেক। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 last year 

হ্যাঁ আপু অবশেষে ফাতেমা কষ্ট জয় করে ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে এটাই অনেক। ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 last year 

ফাতেমার অনিশ্চিত জীবন থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর গল্পটি পড়ে আমার কাছে খুব ভালো লাগলো আপু। যদিও বা আমি প্রথম পর্বটি পড়ার সুযোগ পাইনি, তবে দ্বিতীয় ও শেষ পর্বটি পড়ে ফাতেমার জীবন কাহিনীটি বেশ বুঝতে পারলাম। ফাতেমার স্বামী মারা যাওয়ার পরে, শ্বশুরবাড়িতে অত্যাচারিত হওয়ায়র হাত থেকে বাঁচতে বাবার বাড়িতে চলে এসেছিলেন। আর বাবার বাড়িতে এসে ফাতেমা কারো মুখাপেক্ষী না হয়ে বরং ঢাকায় গিয়ে গার্মেন্টসে চাকরি করে ছেলেকে বড় করার গুরু দায়িত্ব পালন করেছিলেন। আর এভাবেই ফাতেমা ও তার ছেলের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিলেন। যাক অবশেষে ফাতেমার অনিশ্চিত জীবন থেকে ঘুরে দাঁড়ানোটা সফল হয়েছে। আপু আপনার পুরো গল্পটি পড়ে খুবই ভালো লেগেছে, শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

 last year 

অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া পুরো পোস্টটি পড়ে গঠন মূলক একটি মন্তব্য করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.17
JST 0.031
BTC 84117.89
ETH 3275.07
USDT 1.00
SBD 2.81