বিশ্বাসঘাতকতা || দ্বিতীয় এবং শেষ পর্ব

in আমার বাংলা ব্লগlast year

1000023984.jpg
সোর্স

"হ্যালো",

আমার বাংলা ব্লগ বাসি, সবাই কেমন আছেন? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়াই এবং আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। সবার সময় ভালো কাটুক এই কামনাই করছি। কয়েকদিন আগে আমি আপনাদের সাথে একটি বাস্তব ঘটনার প্রথম পর্ব শেয়ার করেছিলাম। আজকে সেই ঘটনার দ্বিতীয় এবং শেষ পর্ব শেয়ার করব আশা করছি ভালো লাগবে।

সন্ধ্যা পার হয়ে গেলে আমিন যখন তমাকে ফিরিয়ে আনতে যায় দেখে তমা বাড়িতে নেই। বাচ্চাটাকে তার মার কাছে রেখে সে কোথাও একটা চলে গিয়েছে। আমিন বারবার তার মাকে জিজ্ঞেস করছিলেন যে তমা কোথায়।তার মা খোলাখুলিভাবে কিছুই বলে না বলে তমা তার বান্ধবীর বাড়িতে গিয়েছে। তখন আমিন বাড়ি ফিরে এসে বারবার একটা কথাই ভাবে সে যদি তার বান্ধবীর বাড়িতে গিয়ে থাকে তাহলে আমার বাচ্চাকে কেন নিল না সাথে। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে আমিন অনেকের মুখে শুনতে পায় তমা একই গ্রামের শহীদের সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছে। আমিন এই কথা কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছিল না। কারণ শহীদ আমিনের খুবই ভালো বন্ধু।

এই ছিল প্রথম পর্ব। দ্বিতীয় পর্বে আপনাদের সাথে শেয়ার করব শহীদের সাথে আমিনের কিভাবে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে এবং শহীদের সাথে তমার কিভাবে সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং পরবর্তী সময়ে তাদের জীবন কোন দিকে মোড় নিবে সবকিছু। আজ এ পর্যন্তই। দেখা হবে পরবর্তীতে।

আমিন অনেকটাই ভেঙ্গে পড়েছিল কারণ তার বন্ধু এবং ভালবাসার মানুষের বেইমানি সে মেনে নিতে পারছিল না। সে কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছিল না যে কিভাবে তার সঙ্গে এটা হল। আমিনের বাজারে যে দোকানটা ছিল সেই দোকানে আমিন সকাল দশটায় গেলে রাত দশটায় ফিরে আসত।আর তখনই তার বন্ধু মাঝেমধ্যেই তার খোঁজ করার অছিলায় তার বাড়িতে আসত। সে কিন্তু জানতো তার বন্ধু এই সময় দোকানে থাকে। তারপরও তার বাসায় আসতো। হয়তো এদিক থেকে আমিনের স্ত্রীরও হাত ছিলো।এইভাবে তাদের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল আমিনের অজান্তে।

কিছুদিন পর আমিনের কাছে ডিভোর্স পেপার চলে আসে।যদিও আমিন ভেঙ্গে পড়েছিল তারপরও সে সবকিছু মেনে নিয়েছিল। কিন্তু তার বারবার একটা কথাই মনে হচ্ছিল যে মেয়েটা আমাকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিল সে কিভাবে আবারও একই ভালোবাসা অন্য কাউকে দিতে পারে। আমিন হাজারো টানা পোরণের মধ্যেও নিজের জীবনটাকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। কারণ তার একটা ছেলে সন্তান আছে তার ভবিষ্যৎ তাকেই গড়তে হবে। অনেকটা বছর কেটে গিয়েছে। আমিনও আবার বিয়ে করেছে।আসলে জীবন তো কারো জন্য থেমে থাকে না।ছেলেটা মাধ্যমিকে পড়ছে। একই গ্রামে বাড়ি নিত্যদিন তাদের দেখা হয়। ভাবুন তো কি একটা পরিবেশ তখন তৈরি হয়।

তমা শহীদের সংসারে দুটি ছেলে সন্তান হয়েছে।তারা সুখে শান্তিতে সংসার করছে। এদিকে আমিন তার দ্বিতীয় স্ত্রী নিয়ে ভালো আছে। হয়তো তাদের ছেলেটাও উপরে উপরে ভালো আছে। কিন্তু আদৌ কি সে ভালো আছে? আসলে বাবা মা কিছু কিছু ভুল করে যার খেসারত সারা জীবন সন্তানদেরকে দিতে হয়। হয়তো তমা আর আমিনের ছেলেও সেই খেসারত সারাজীবন দিয়ে যাবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে একটা কথাই বলবো সংসারে অনেক না পাওয়া থাকে অনেক ঝামেলায় থাকে। তাই যদি কিছু করার থাকে তাহলে সংসারে সন্তান আসার আগেই সেটা করে ফেলবেন। কারণ সন্তান হওয়ার পর একটা ভুল সিদ্ধান্ত আপনার সন্তানের পুরো জীবনটা নষ্ট করে দিতে পারে।

আজ এ পর্যন্তই। ভালো থাকবেন সবাই। দেখা হবে পরবর্তীতে নতুন কোন বিষয় নিয়ে। ধন্যবাদ সবাইকে।

1000006402.png

1000006403.gif

1000006401.gif

Sort:  
 last year 

তাই যদি কিছু করার থাকে তাহলে সংসারে সন্তান আসার আগেই সেটা করে ফেলবেন।

আপনার কথাগুলো একদমই বাস্তব সম্মত। কারও মনের অমিল কিংবা সমস্যা থাকতেই পারে তবে সেটা অবশ্যই সন্তান দুনিয়াতে আসার আগেই মিটিয়ে ফেলা উচিত। তা নাহলে ভবিষ্যতে বাচ্চাদের ভীষণ খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে পরতে হয়।

যাইহোক আপনার বাস্তব ঘটনা কেন্দ্রিক ঘটনাটা পরে অনেক কিছু শিক্ষনীয় ছিল।

 last year 

অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 last year 

আসলে কিছু কিছু বাবা মায়ের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে সন্তানদের জীবনে অনেক বড় ক্ষতি হয়। আর সেই খিসারত সারা জীবন সন্তানকেই দিয়ে যেতে হবে। তমা যে কাজটা করেছে এটা কিন্তু একেবারেই খারাপ কাজ ছিল। এরকম একটা কাজ করা তমার একেবারেই উচিত হয়নি। বন্ধু এবং ভালোবাসার মানুষ একসাথেই ধোঁকা দিয়েছে। যাই হোক বিশ্বাসঘাতকতা গল্পটা পড়ে অনেক কিছুই বুঝতে পারলাম। আপনার লেখা গল্প গুলো এমনিতেই অনেক সুন্দর হয়। ভালো লেগেছে আমার কাছে।

 last year 

পুরো ঘটনাটি পড়ে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু। সত্যি বাবা মায়ের ভুল সিদ্ধান্তের খেসারত সন্তানদেরকে দিতে হয় সারা জীবন।

 last year 

আপু আপনি সবসময় বাস্তবিক ঘটনাকে তুলে ধরে গল্প লিখে থাকেন যেগুলো পড়তে আমি খুব পছন্দ করি। বিশ্বাসঘাতকতা গল্পটির প্রথম পর্ব পড়া হয়েছিল আজকে দ্বিতীয় এবং শেষ পর্ব পড়ে ভালো লেগেছে। আসলে এখন দূরের মানুষগুলোর থেকে কাছের মানুষগুলো আমাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে যা মন থেকে মেনে নেওয়া সম্ভব হয় না। তেমনি তমা এবং শহীদ বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল। আর তমার এই ব্যবহারের খেসারত সারা জীবন তার ছেলেকে দিতে হবে।

 last year 

এটা ঠিক বলেছেন ভাইয়া বিশ্বাসঘাতকতা সব সময় নিজের লোকেরাই করে থাকে। যা মেনে নেওয়া খুব কঠিন হয়ে পড়ে। যাইহোক অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 last year 

আপু আপনি আজকে আমাদের মাঝে গল্পটি শেয়ারের সাথে বাস্তব কিছু কথা তুলে ধরেছেন। আপনার শেয়ার করা বিশ্বাসঘাতকতা গল্পটি পড়তে সত্যি আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। আসলে অন্য লোকের থেকে নিজের মানুষই নিজের মানুষের সাথে সব থেকে বেশি বিশ্বাসঘাতকা হতে পারে। আসলে আমাদের সমাজে কিছু বাবা-মায়ের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে তাদের সন্তানের জীবন অনেক বড় হুমকির মধ্যে পড়ে যায়। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

সুন্দর একটি মন্তব্যের মাধ্যমে পাশে থাকার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।

 last year 

আসলে তমার মতো মেয়ে আমিনের ভালোবাসার যোগ্য না। আমিন দোকানে প্রচুর সময় দিয়েছে শুধু তার একার জন্য নয়,বরং পুরো পরিবারের ভরণপোষণের জন্য। কিন্তু তমা সেই সুযোগে পরকীয়ার মতো এমন নিকৃষ্ট একটি কাজ করলো। আর শহীদের মতো এমন বেঈমান তো বন্ধু নামের কলঙ্ক। এখন যে যার মতো ভালোই আছে। হয়তোবা আমিন ও তমার ছেলে ততোটা ভালো নেই।

আমি ব্যক্তিগতভাবে একটা কথাই বলবো সংসারে অনেক না পাওয়া থাকে অনেক ঝামেলায় থাকে। তাই যদি কিছু করার থাকে তাহলে সংসারে সন্তান আসার আগেই সেটা করে ফেলবেন।

খুবই যুক্তিসঙ্গত একটি কথা বলেছেন আপু। আমিও একমত পোষণ করছি। আশা করি নতুন কোনো গল্প নিয়ে আমাদের মাঝে হাজির হবেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 58544.56
ETH 2629.02
USDT 1.00
SBD 2.44