ফাতেমার অনিশ্চিত জীবন || ১ম পর্ব
"হ্যালো",
মাঝেমধ্যে চেষ্টা করি বিভিন্ন ধরনের বাস্তব ঘটনাগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করার। অবশ্যই সেগুলো আমার চোখের সামনে ঘটে যাওয়া ঘটনা। সত্যি কথা বলতে বানিয়ে বানিয়ে গল্প খুব একটা লিখতে পারি না। তাই চেষ্টা করি আশেপাশের অনেক ঘটনায় যেগুলো ঘটে যায় সেগুলোই আপনাদের সাথে শেয়ার করার।অনেক সময় আমরা কাল্পনিক অনেক গল্প লিখে থাকি।সেগুলো কারো না কারো জীবনের সঙ্গে ঘটে যায়। যার কিছু ঘটনা হয়তো আমাদের চোখের সামনে ঘটে বা কিছু ঘটনা আমাদের অজানা। আমার জানা মতে তেমনই একটা গল্প আবারও আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চলেছি। আশা করছি ভালো লাগবে।
ফাতেমা গরিব ঘরের মেয়ে। গায়ের রং দেখতে কালো হলেও চেহারা ছিল অনেক মায়াবী। কিন্তু আমাদের সমাজে কালো মেয়েদের খুব একটা ভালো চোখে দেখা হয়না।দেখুন পাএ পক্ষরা মেয়ে সুন্দর কিনা দেখতে গায়ের রং ফর্সা কিনা এসব বিষয় নিয়ে বেশি মাথা ঘামায়।মেয়ের মন মানসিকতা কেমন হবে বা আচার ব্যবহার কেমন হবে এসব বিষয়ে তারা তেমন কিছু ভাবে না। ফাতেমার বিয়ের বয়স হয়ে গেছে। সে দেখতে অসুন্দর হওয়ায় বারবার ফাতেমার বিয়ে গুলো ভেঙ্গে যাচ্ছিল। অনেক খোঁজাখুঁজি পরও কোন ছেলে পাওয়া যাচ্ছিল না তার জন্য। অবশেষে পরিচিত এক আত্মীয়ের ছেলের সঙ্গে ফাতেমার বিয়ে হয়।
বেশ ভালোই চলছিল ফাতেমার সংসার। কিন্তু তার স্বামী মাঝে মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়তেন। ফাতিমা মনে করত এটা হয়তো বা স্বাভাবিক কিছু। এভাবেই দিন যাচ্ছিল ফাতেমার ঘর আলো করে একটা ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। এদিকে তার স্বামীর অসুস্থতা আরও বেড়েই যাচ্ছিল। ফাতেমার দুই বছরের সংসার। তেমন কোন আয় উন্নতি এখন পর্যন্ত করতে পারেনি। তারপরও অসুস্থ স্বামীকে তো আর ঘরে ফেলে রাখা যায় না। তখন ফাতেমা একটা বড় ডাক্তারের শরণাপন্ন হয় তার স্বামীকে নিয়ে। ডাক্তার তার স্বামীকে দেখে বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে বলেন।
পরীক্ষা-নিরিক্ষা করতে অনেক টাকার লাগবে।শশুর শাশুড়িকে জানালে তারা বলে তারা এত টাকা কোথায় পাবে। তখন সে বাবার বাড়িতে যোগাযোগ করে এবং তার বাবা অনেক কষ্ট করে কিছু টাকা ম্যানেজ করে দেয়। তারপর তার স্বামীর সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর ডাক্তার তাকে জানায় তার স্বামীর অনেক বড় একটা রোগ হয়েছে এবং অনেক আগে থেকে এই রোগটি শরীরে বাসা বেধেছে। ফাতেমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে।ডাক্তার পরিষ্কার জানিয়ে দেন এখন চিকিৎসা করে কোন লাভ নেই উনি একদমই শেষ ধাপে চলে গিয়েছেন।
ফাতেমা দিশেহারা হয়ে পড়ে এই ছোট বাচ্চাটাকে নিয়ে সে কিভাবে চলবে। তখন ফাতেমা খুব ভালোভাবে বুঝতে পারে যে তার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাকে ঠকিয়ে বিয়ে দিয়েছে।তাদের ছেলে যে অসুস্থ এটা তারা খুব ভালোভাবেই জানতো। কিন্তু এখন তো আর কিছু করার নেই। এভাবেই বেশ কিছু মাস চলে যায়। ছেলেটাও আস্তে আস্তে বড় হতে থাকে। আর এদিকে ফাতেমার স্বামীর অবস্থা খুব একটা ভালো না। এর মধ্যে হঠাৎ করে তার স্বামী একদিন সকাল বেলা অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিলে সেখানেই তাকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
তো বন্ধুরা এই ঘটনাটি আরো অনেক বড়। এক পর্বে লিখে শেষ করা সম্ভব হলো না। চেষ্টা করব পরের পর্বে সম্পূর্ণটা তুলে ধরার। তবে এরপর থেকে শুরু হবে ফাতেমার জীবনের আরো নতুন একটি অধ্যায়। সেটা জানতে হলে অবশ্যই আমার সঙ্গে থাকতে হবে। আমি আশা করছি আপনারা আমার পরের পর্বের জন্য অপেক্ষা করবেন।
আসলে বাস্তবতা এমন একটা জিনিস,,,, যেটা আমরা না চাইলেও আমাদেরকে মেনে নিতে হয়! ঠিক তেমনি ফাতেমার জীবনটাও এমন।
তবে তা শশুর শাশুড়ি তাকে ঠকানো ঠিক হয়নি! কারণ একজন মানুষকে ঠকিয়ে,,, কখনো ভালো থাকা যায় না।
যাইহোক আপনার গল্পের পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম! আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল! ভালো থাকবেন।
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া প্রথম পর্ব টা পড়ে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
ফাতেমার অনিশ্চিত জীবনের গল্পটা পড়ে আমার কাছে খুবই খারাপ লেগেছে।ভাগ্যের লিখন ফাতেমার জীবনে এগুলো হবে।আসলে ফাতেমাকে না জানিয়ে এরকম অসুস্থ ছেলের সাথে তাকে বিয়ে দেওয়া ঠিক হয়নি। যাই হোক পরবর্তী সময়ে ফাতেমার জীবনের কি হয়েছে তা জানার অপেক্ষায় রইলাম।
ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য। পরের পর্বটি পড়লে জানতে পারবেন আপু ফাতেমার জীবনে শেষে কি ঘটেছিল।
সমাজের সুন্দর মেয়ে বলতে ফর্সা মেয়েকে বোঝায়। যদিও এখন এই মন মানসিকতার কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে ফাতেমার স্বামীর অসুখটা একদম শেষ পর্যায়ে ধরা পরেছে জন্য আর চিকিৎসা করার সুযোগ হলো না। এমন মুহূর্তে ছোট ছোট বাচ্চা নিয়ে ফাতেমা তো অনেক বিপদে পড়লো বেশ ভালোই লিখেছেন গল্পটি। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম আপু।
ঠিক বলেছেন আপু আমাদের মন-মানসিকতার কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে তবে পুরোপুরি এখনো হয়নি। ধন্যবাদ আপু গঠনমূলক একটি মন্তব্য করার জন্য।
আপনি সবসময় বাস্তবিক ঘটনাগুলোকে নিয়ে গল্প লিখে থাকেন আর সেগুলো করতে খুব ভালো লাগে আমার কাছে। ফাতেমার অনিশ্চিত জীবন গল্পটার প্রথম পর্ব পড়ে খুব ভালো লেগেছে। যেহেতু তার হাজবেন্ড অসুস্থ ছিল তাই তার শ্বশুর-শাশুড়ি তাকে ঠকিয়ে বিয়ে করিয়েছে। হয়তো ফাতেমা এসব সম্পর্কে কিছুই জানতো না কিন্তু পরে বুঝতে পেরেছিল। তার স্বামীর মৃত্যুর পরে পরবর্তীতে কি হয়েছিল তা জানার অনেক বেশি আগ্রহ জেগেছে। অপেক্ষায় থাকলাম পরবর্তী পর্বের জন্য।
যতক্ষণে ফাতেমা বুঝতে পেরেছিল ততক্ষণে অনেকটা দেরি হয়ে গিয়েছিল আপু শেষ রক্ষা আর হয়নি। তার স্বামী মারা যাওয়ার পর তার জীবনে আবারও নতুন অধ্যায় শুরু হয়।ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্য।
আসলে বেশিরভাগ সমাজে কালো মেয়েদেরকে মর্যাদা দেয় না এটা কিন্তু সত্যি। ফাতেমার মত এরকম একটা মেয়ের জীবনে দেখছি বেশ কঠিন একটা পরিস্থিতি এসে দাঁড়িয়েছে। তার স্বামীর ভেতরে যে এরকম একটা কঠিন রোগ বাসা বেধেছিল এটা সে জানতো না। তবে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পরে চিকিৎসা করানোর পর সবকিছু জানতে পেরেছিল। তার স্বামী সবশেষে মারা গিয়েছিল এটা ভাবতেই খারাপ লাগছে। পরবর্তী পর্ব দেখার জন্য অপেক্ষায় থাকলাম।
জ্বি ভাইয়া তার স্বামীর অসুস্থতার কথা সে একবারে শেষ পর্যায়ে এসে বুঝতে পেরেছিল আর তখন করার কিছু ছিল না। অবশেষে তার স্বামী মারা গেছে।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
অনেক পরিবার রয়েছে তাদের সন্তান অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও বিয়ে দিয়ে থাকে এবং এই কারণে একজন ছেলে অথবা মেয়ের জীবন নষ্ট হয়। হয়তো আপনার ঘটনায় আজ ফাতেমার জীবনের তেমন করুন কাহিনী করেছে। এদিকে লক্ষ্য করে দেখলাম ফাতেমার শ্বশুর শাশুড়ি নিজের সন্তানের অসুস্থতার খরচ বহন করল না। ফাতেমা তার বাপের বাড়ি থেকে আন্দোলন আবার ডাক্তারের কথা শুনে হতাশাগ্রস্থ হলো। নিজের সন্তানকে নিয়ে কিভাবে জীবন যাপন করবে। সত্যিই এমন হৃদয়বিদারক কাহিনী মনকে খুবই কষ্ট দেয়
হ্যাঁ ভাইয়া এখনো অনেক পরিবারই আছে এমনটা করে থাকে। তবে আমাদের একদমই কারোর জীবন নিয়ে খেলা করা উচিত নয়। সত্যিই এমন ঘটনা হৃদয়বিদারক।