পরিশ্রম করে আয়নার ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প ❤️
"হ্যালো",
সবাইকে আমার নতুন একটি ব্লগে স্বাগতম। আশা করছি আজকের ব্লগটা আপনাদের কাছে হয়তো ভালো লাগবে কারণ আজকে আমি আপনাদের সামনে একটি বাস্তব ঘটনা তুলে ধরব। আমাদের চাওয়ার কোন শেষ নাই। এরমধ্যে অনেকের অনেক বড় বড় চাওয়া থাকে আবার অনেকের খুব ছোট ছোট ইচ্ছে চাওয়া পাওয়া থাকে যেগুলো পূরণ করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে যায়।যদি মন প্রাণ দিয়ে কোন কাজের পেছনে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া যায় তবে সে কাজে অবশ্যই সফলতা অর্জন করা যায়। যেটি আমি আজকের গল্পে তুলে ধরব।
আয়না গরিব ঘরের মেয়ে। তারা দুই বোন বড় বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। বাবা কৃষিকাজ করে কোন মত সংসার চালিয়ে বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। এখন আয়নাও বিবাহযোগ্য হয়েছে তাকে বিয়ে দেওয়ার জন্য বাবা মা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। এরমধ্যে দেখে শুনে আয়নারও বিয়ে হয়ে যায়। গরিব ঘরের মেয়ে গরিব ঘরে বিয়ে হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আয়নার মনে অনেক ইচ্ছা। যে সে নিজের পায়ে দাঁড়াবে এবং তার পরিবার যেন সচ্ছল পরিবার হিসেবে গড়ে ওঠে। সে পড়াশোনা জানে না খুব একটা তাই চাইলেও চাকরি করতে পারবে না। কিন্তু সে বিয়ের আগে টুকটাক সেলাইয়ের কাজ শিখেছিল।
তখন সে তার স্বামীর সঙ্গে আলোচনা করছিল এবং বলছিল ও যেন তাকে একটি সেলাই মেশিন কিনে দেয়।তার স্বামী অনেক কষ্ট করে তাকে একটি সেলাই মেশিন কিনে দেয়। তখন থেকে আয়না সেলাইয়ের কাজ শুরু করে। তার হাতের কাজ এতই ভাল ছিল যে কিছুদিনের মধ্যে তার পরিচিতি বেড়ে যায়। কাজের এত চাপ ছিল যে সেই সেলাই মেশিন দিয়ে তার কিছুতেই হচ্ছিল না কারণ সেটি খুবই নরমাল একটি সেলাই মেশিন ছিল যা দ্বারা এত বেশি কাপড় সেলাই করা সম্ভব হচ্ছিল না। সেলাই করে করে তখন থেকে কিছু টাকা জমিয়ে কিস্তিতে একটি কারেন্ট দিয়ে চালিত বড় সেলাই মেশিন কিনে।
এরপর থেকে তার ভাগ্যের চাকাও ঘুরে গিয়েছিল। প্রথমে নিজের গ্রামে পরিচিতি পাওয়ার পর আশেপাশে গ্রামের লোকজনের কাছেও সে পরিচিত হয়। এভাবে বেশ কয়েক বছর কেটে যায়।তার একটি ছেলে হয়েছে। তার বিয়ের পর ছোট্ট একটা টিনের ঘর ছিল। এখন সে নিজের ইনকামের টাকা দিয়ে ছোট্ট ইটের বাড়ি বানিয়েছে। স্বামীকেও আর বাহিরে মানুষের বাসায় গিয়ে কাজ করতে হয় না। বাজারে একটি মনোহারির দোকান আছে তার স্বামীর। এক কথায় বলতে গেলে তার খুবই ভালোভাবে দিন পার হচ্ছে। স্বামী সন্তান এবং সেলাই মেশিন নিয়ে সে খুবই ভালো আছে। সে টুকটাক করে নিজের গায়ের গহনা এবং ছেলে স্বামী শ্বশুর-শাশুড়ি সবার ইচ্ছে পূরণ করে।
তার আহামরি কোন ইচ্ছা ছিল না। এই ছোট ছোট ইচ্ছে গুলো ছিল যেগুলো সে তার কষ্টের বিনিময়ে বা পরিশ্রমের মাধ্যমে পেয়ে গেছে। এজন্যই বলা হয় পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি। আপনি শুধু চেয়ে যাবেন পাওয়ার জন্য পরিশ্রম করবেন না তাহলে শতবার চাওয়ার পরও সেই জিনিস আপনি পাবেন না। যাইহোক যদি ইচ্ছা থাকে পরিশ্রম করা যায় তাহলে সামান্য সেলাই মেশিন দিয়েও কিংবা ছোট থেকে কিছু করে নিজের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে নেওয়া যায়। যেমনটা আয়না করেছে।
তো বন্ধুরা আজ এ পর্যন্তই।আশা করছি এই গল্পটা আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে।ভালো লাগলে অবশ্যই সুন্দর মতামতের মাধ্যমে আমাকে জানাবেন। দেখা হবে পরবর্তীতে নতুন কোন বিষয় নিয়ে। সবাই ভাল থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন।