একাল সেকাল || @shy-fox 10% beneficiary
আজকের গল্পটি একটু ভিন্ন হবে। আর আজকের গল্পের চরিত্রে যে মানুষটি থাকবে, সে মানুষটি আর অন্য কেউ না। সে মানুষটি হচ্ছে আমার দাদা শ্বশুর। আজ আমি চেষ্টা করব, তার জীবন সম্পর্কে কিছুটা হলেও লেখার জন্য। আশা করি আমার পাঠকদের বিষয়টা ভালো লাগবে।
বিয়ের পর থেকে তার নাম অনেক শুনেছি। তার কথা অনেক শুনেছি কিন্তু তাকে কখনো স্বচক্ষে খুব একটা বেশি দেখা হয়নি। কারণ আমরা বিয়ের পর থেকে, অনেক দূরে থাকতাম। যার কারণে প্রতিনিয়ত যেতে চাইলেও,আর কি সেই ভাবে যাওয়া হয়ে ওঠেনি। এবার যেহেতু বাবুকে নিয়ে প্রথমবার আমার শশুর বাড়িতে গিয়েছিলাম, সেই সুবাদেই আমার দেখা হয়ে গিয়েছিল আমার দাদাশ্বশুরের সঙ্গে।
বয়স 100 ছুঁইছুঁই হবে এবং ব্যক্তিগত জীবনে সে একটা হাই স্কুলের হেডমাস্টার ছিল যার কারণে মূলত এখনো সে কিছুটা হলেও স্ট্রং আছে মানসিক ও শারীরিকভাবে। সবথেকে মজার বিষয় হচ্ছে,সে ভীষণ গল্পের মানুষ। দীর্ঘদিন পরে তার সঙ্গে যখন আমার দেখা হয়েছে, তার সঙ্গে আমার মূলত ভালো সময় কেটেছে। কারণ সে পুরো সময়টা আমার সঙ্গে গল্প করেই মেতেছিল। আর সবথেকে বড় বিষয় হচ্ছে, যেহেতু আমার দাদী শাশুড়ি মারা গিয়েছে অনেক আগেই, তাই মূলত সে একাকী জীবন যাপন করে। তাই তার একটু কথা বলার লোক হলে মোটামুটি ভালই সে কথা বলতে চায়।
সে তার ব্যক্তিজীবনে মূলত ছয় সন্তানের জনক এবং ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস ,সে সবগুলো সন্তানকেই সুশিক্ষিত করেছে। কিন্তু শেষ বয়সে এসে তাকে, দেখার মত লোক খুব একটা কাছে নেই। কারণ তার সন্তানরা সবাই চাকরির সুবাদে বাহিরে থাকে এবং তার মেয়ের বিয়ে হয়েছে অনেক দূরে। যার কারণে মোটামুটি তার সঙ্গে বাড়িতে কাজের লোক থাকে আর যেহেতু বাড়িটা অনেক বড় এবং মোটামুটি তার এলাকায় ভালো প্রভাব আছে, যার কারণে মূলত এই বয়সে এসে ভীষণ একাকীত্বে ভোগে। কিন্তু সে সেটাকে কোনভাবেই পাত্তা দেয় না। কারণ সে এখনো চেষ্টা করে সবার সঙ্গে, হাসিখুশি ভাবে কথা বলার জন্য।
একটা সময় তার বাড়িতে মোটামুটি অনেক লোকজনের আনাগোনা থাকত এবং বাড়িটা মুখরিত হয়ে থাকত সবসময়। কারণ 6 সন্তান ছিল এবং তারা প্রতিনিয়ত বাড়িতেই থাকতো। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনে বর্তমান চিত্র ভীষণ করুন। কারণ বাড়িতে কেউ থাকে না। আর তার জীবন এখন পুরোটাই নির্ভরশীল হয়ে গিয়েছে কাজের মানুষের প্রতি। যাইহোক সর্বোপরি আমার দাদাশ্বশুর এখনো মানসিক ও শারীরিক ভাবে যথেষ্ট সুস্থ আছে। তবে তার জন্য খারাপ লাগে এটা ভেবে যে, যে মানুষটা পুরো সংসারটা কে জীবিত রেখেছে, সেই মানুষটাকে আজ সঙ্গ দেওয়ার মত কেউ নেই।
তার জীবনের যদি কৃতিত্ব বলি, সে মূলত খুব ভালোভাবেই তার কর্মজীবন শেষ করেছে এবং এখন মোটামুটি তার যে জমিজমা গুলো আছে,সেগুলো কিছুটা হলেও দেখভাল করার চেষ্টা করে। যদিও সেগুলো সে তার সন্তানদেরকে ভালোভাবে বন্টন করে দিয়েছে, কিন্তু তার সন্তানরা সেগুলো দেখার সময় পায় না। তাই এখনও তাকে সেগুলো দেখতে হয় এবং মোটামুটি যদি আমাকে বলতে হয় আমার দাদাশ্বশুরের কথা, তাহলে আমি বলব সে সচেতন ও স্বনির্ভর একজন মানুষ।
সর্বোপরি মানুষের জীবন সর্বদা এক থাকেনা । তবে বয়সের কারণে এখন অনেক কিছুই সে আর আগের ঠিকমত মনে রাখতে পারেনা। তবে সে এখনো চেষ্টা করে, সবকিছু নিজের মত করে করার জন্য। যাইহোক এই মানুষটার জন্য আমার আলাদা একটা শ্রদ্ধাবোধ কাজ করে। কারণ সে তার দীর্ঘ জীবনে বহু কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল এবং তার কর্মকাণ্ড গুলো ভাল ছিল বিধায় এবং মানুষের ভালো আশীর্বাদ পেয়েছে। বিধায় সে এখনো এলাকার মানুষের মনে ভালোভাবে জায়গা করে আছে।
কি বলবো আপু কত সুন্দর ভাবে আপনি এই কথা গুলো সাজিয়ে লিখেছেন। আসলে আমাদের মানবতা আজ কোথায় তা আমরা কেউ বলতে পারিনা। নিজেকে সুশিক্ষিত দাবি করলেও আসলে কি আমরা সুশিক্ষিত?? বাবার মায়ের প্রতি যত্নশীল হতে পারি না। অনেক সুন্দর একটি টপিক নিয়ে কথা বলেছেন সত্যি বলতে কথাগুলো মনের মধ্যে যে গিয়ে লেগেছে। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করেছেন।
আপনি আপনার গল্পে একজন যোদ্ধার কথা বলেছেন।সত্যিই তার জীবন কাহিনী খুব ভালো লাগলো আমার কাছে।তার জীবনের সম্পূর্ণ সময় কাজে লাগিয়েছে।এবং এখনো জমিজমা দেখভাল করতে পারে।
অনেক অনেক দোয়া ও ভালোবাসা রইলো দাদার জন্য।শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য।
ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করেছেন।
কিছু কিছু মানুষের জীবনের গল্প আমাদের জীবনের জন্য বিশেষ অনুপ্রেরণা। এ সকল মানুষদেরকে শ্রদ্ধাভাজন হিসেবে আমি খুব বেশি ভালোবাসি
ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করেছেন।
অনেক সুন্দরভাবে আপনার দাদা শশুর এর জীবনের কিছু অংশ আমাদের সামনে উপস্থাপন করেছেন।উনি মানুষ হিসেবে অনেক সৌখিন ছিলেন। আপনার লেখার হাত অনেক সুন্দর। ধন্যবাদ আপনাকে।
ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করেছেন।
অনেক সুন্দরভাবে আপনার দাদা শশুর এর জীবনের কিছু অংশ আমাদের সামনে উপস্থাপন করেছেন।আল্লাহ নেক হায়াত দারাভ করুন।
ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করেছেন।