বেঁচে থাকতে প্রবল ইচ্ছা দরকার ||@shy-fox 10% beneficiary

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

আমাদের বাড়ির উত্তর পাশে যে বাড়িটা আছে, সেই বাড়িটা হচ্ছে রহিমা খালার। রহিমা খালার ব্যাপারটা এমন যে, তিনি নিজে মোটামুটি ছেলে মানুষ এবং মেয়ে মানুষ দুটো মানুষের দায়িত্ব সে একাই সামলিয়ে থাকে এবং পুরো সংসারটাকে সে একাই মোটামুটি দেখভাল করে। আসলে কিছু কিছু কাজ মানুষের অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায়। যেটা সে করতে কখনো পিছপা হয়না। কারন সেটার সঙ্গে সে, এমনভাবে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে যায়, যেটা তাকে কিছুটা বেঁচে থাকতে সহযোগিতা করে।
20211011_102823-01.jpeg
যদিও রহিমা খালার এখন অনেকটাই বয়স হয়ে গিয়েছে। তবে এই বয়সেও সে মোটামুটি তার পুরো সংসারটাকে সামলিয়ে নিচ্ছে। কারণ তার যখন বিয়ে হয়েছিল তার ঠিক কয়েক বছর পরেই,তার স্বামী মারা যায়। সন্তানগুলোকে বড় করা থেকে শুরু করে সংসারের সকল প্রকার কাজ সে একাই সামলিয়েছে এবং মোটামুটি সে যে যুদ্ধের মধ্য দিয়ে গিয়েছে তা ছিল খুবই ভয়ানক।


আসলে খালা এখন চাইলেও সেই দায়িত্ব গুলো বাদ দিতে পারে না। কারণ এটা তার সঙ্গে এমন ভাবে জড়িয়ে গিয়েছে, যে তার এটা প্রতিনিয়ত অভ্যেসে পরিণত হয়েছে। সে তার সংসারের সব রকম কাজ একাই করে এবং তার মোটামুটি যখন সন্তানরা বড় হয়ে গিয়েছে এবং তারা একটা গতিপথে উঠে গিয়েছে। তখন তাঁর সন্তানেরাও তাকে অনেক ভাবে সান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল এবং তাকে সেই কাজগুলো থেকে বিরত থাকতে বলেছিল। কিন্তু যেহেতু সে অভ্যস্ত তাই সে চাইলেও সেগুলো থেকে সে আর সরে আসতে পারেনি।
20211011_102825-01.jpeg
মানুষ বিভিন্নভাবেই বেঁচে থাকে কিন্তু কয়জনই বা বাঁচার মত করে, বেঁচে থাকে! এটা হচ্ছে দিনশেষে প্রশ্ন? আমি রহিমা খালার মাঝে যে, অদম্য ইচ্ছাশক্তি সেই ছোটবেলা থেকে দেখেছি, সেটা আমাকে বরাবরই অনুপ্রাণিত করে। সেই মাঠের ফসল ফলানো থেকে শুরু করে, বাড়ির পুরুষ মানুষের কাজ পর্যন্ত সে একাই করেছে। তার বাচ্চাদেরকে সে লালন-পালন করে মানুষ করেছে। মোটামুটি আমি মনে করি, সে তার জীবনে সফল এবং তার এই সফল জীবন কিন্তু এককভাবে হয়নি। কারণ এক্ষেত্রে তার ইচ্ছা শক্তি তাকে প্রচুর পরিমাণে সহযোগিতা করেছিল।
যদিও তার সন্তানেরা, তাকে আর আগের মত করে কাজ করতে দেয় না। কিন্তু কে শোনে কার কথা, আজ সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে দেখি, রহিমা খালা নিজেই বাঁশ কেটে ছোট ছোট করছে ক্ষেতের জমির বেড়া দেওয়ার জন্য। আমি খালাকে বললাম, কি গো খালা আর কত। এই বয়সে এসেও এত ভারী কাজ। তখন খালা বলল আরে চুপ করে থাক। না হলে আমার ছেলে পেলে জেনে যাবে, আবার আমাকে কাজ করতে দেবে না। যাইহোক ব্যাপারটা আমাকে খুব ভালোই উৎসাহ যুগিয়েছে। কারন আমি এই মানুষটাকে যতবার দেখি ততবার অনুপ্রাণিত হয়ে যাই। যাইহোক এই মানুষটার জন্য আমার প্রতিনিয়ত শ্রদ্ধা থাকে।

Sort:  
 3 years ago 
  • সেই মাঠের ফসল ফলানো থেকে শুরু করে, বাড়ির পুরুষ মানুষের কাজ পর্যন্ত সে একাই করেছে। তার বাচ্চাদেরকে সে লালন-পালন করে মানুষ করেছে।

এই কথা গুলো পড়তে যতটা সহজ মনে হয়েছে। ঠিক ততোটাই কঠিন লাগে যখন বাস্তবতার সাথে তুলনা করি। পুরুষ মানুষ ই মাঠ থেকে এসে এক গ্লাস পানি পুরিয়ে খেতেও বিরক্ত হয়। আর সেখানে এই খালা সব একাই করছে। দোয়া করি উনি এভাবেই যেনো আরো অনেক বছর শক্ত থাকতে পারে।

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করেছেন।

 3 years ago 

আসলে কিছু কিছু কাজ মানুষের অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায়। যেটা সে করতে কখনো পিছপা হয়না। কারন সেটার সঙ্গে সে, এমনভাবে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে যায়, যেটা তাকে কিছুটা বেঁচে থাকতে সহযোগিতা করে।

আপনি বরাবরের মতো নিয়ে অনেক বাস্তবধর্মী কথা তুলে ধরেন যা খুবই ভালো লাগে। আসলে মানুষ যেটা করে যায় প্রতিনিয়ত সেটা তার জীবনের সাথে জড়িয়ে যায় সে আর সেটা ত্যাগ করতে পারে না অনেক ভাল ছিল কথাটা এবং বাস্তবধর্মী। অনেক সুন্দর কথা তুলে ধরেছেন একজন নারীর । অনেক ভালো লাগলো সে একাই দিন শেষে নিজের ও সংসারের দেখভাল করে তার সন্তান লালন-পালন করে এবং গরু ছাগল সবকিছু দেখে রাখে। একটু মজা লাগলো আপনি যে বলছিলেন কিগো খালা বয়স হয়ে গেছে তবে এসব কেন খালা কি বলল চুপ করে থাক। আমার ছেলেমেয়ে জেনে যাবে কারণ কাজটি তার জীবনের সাথে জড়িত সে আর এটা ছাড়তে পারবে না। সে আনন্দের সাথে করে থাকে। অনেক ভালো কথা লিখছেন

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করেছেন।

 3 years ago 

রহিমা খালার মতো কিছু মহিলা রয়েছে যারা এ টু জেড কর্ম করতে পারে। আমার একজন চাচী আছে।উনি পুকুরে মাছ পর্যন্ত মারতে পারে।খুব সুন্দর হয়ে আপনার লেখাটি।ধন্যবাদ আপনাকে।

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করেছেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 66666.50
ETH 3503.76
USDT 1.00
SBD 2.71