৯ম পর্ব || জীবনের ব্যর্থতার গল্প

🌼 আসসালামুআলাইকুম সবাইকে 🌼

৮ম পর্বের পর

অনেকটা হতাশ হয়েই বাড়ি ফিরলাম! চাকরির কাছ থেকেও মনে হলো চাকরিটা পাওয়া হলো না। ভাইবাতে অবশ্য সুপারিশ পেতাম। যাইহোক, জীবন তো আর থেমে থাকে না! বয়সও তেমন হয়নি তখন! সবে বিশে পা দিলাম। সামনে আরও কত পরীক্ষা আসবে। তবে আমার ইচ্ছে ছিল বিমান বাহিনীতেই যেন চাকরিটা পেতে পারি। ২০২০ সালের শেষের দিকে বিমান বাহিনীর আবার সার্কুলার দিল। আমি সার্কুলার দেখেই এপ্লাই করে নিলাম। এবার দুটি পদে এপ্লাই করেছিলাম। একটা ছিল টেকনিক্যাল পোস্ট আরেকটা মেডিকেল পোস্টে। দুইটাতেই ময়মনসিংহ থেকে অনেক ক্যান্ডিডেট এপ্লাই করেছিল। আমি তখন ডিপ্লোমার তৃতীয় কি চতুর্থ সেমিস্টার এ পড়াশোনা করি। মামার দেয়া শিটগুলো এবার ভালো করে মুখস্থ করে ফেলেছিলাম। এবার যাতে মিস না হয়। বিমান বাহিনীর সার্কুলার বছরে একবারই দেয়া হয়ে থাকে। তবে নৌবাহিনীতে বছরে দুবার। বর্তমানের কথা জানি না! আমি যখন এপ্লাই করেছিলাম তখন জুন মাসের দিকে মনে হয়। আর বিমান বাহিনীর পরীক্ষা হয় সেপ্টেম্বর কি অক্টোবরের শুরুতে।

এবারো আমার পরীক্ষা হবে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর তথ্য ও যোগাযোগ কেন্দ্রে! বলতে সারা বাংলাদেশ থেকে যত ক্যান্ডিডেট আসে সবারই এখানে পরীক্ষা হয়। যেহেতু আবেদন করে অনেক ক্যান্ডিডেট। তাই তারিখ পরিবর্তন করে পরীক্ষা নেয়া হয়। আমার পরীক্ষা ছিল সকাল নয়টায়। আর আগের রাতে মহাখালীতে মামার বাসায় চলে এসেছিলাম। মহাখালী থেকে কাছেই। এবারও সাথে কাউকে আনেনি। একাই পরীক্ষা দিতে এসেছিলাম। যথারীতি কাগজপত্র সহ প্রাথমিক বাছাইপর্ব। সেখানে আমার তেমন অসুবিধা হয়নি। তবে প্রাথমিক বাছাইয়ে একটু টেনশনে ছিলাম উচ্চতা নিয়ে। নৌ বাহিনীতে উচ্চতা কম থাকার কারণে বাদ পড়েছিলাম। তবে বিমান বাহিনীতে তেমন সমস্যা হয়নি। তবে এবারো উচ্চতায় তেমন সমস্যা হয়নি। ফাইল নিয়ে সোজা চলে গেলাম উপরে। যথারীডি সবাই আসলে অফসার এসে ইন্সট্রাকশন দেয়া শুরু করলো। আমি যেহেতু আরেকবার পরীক্ষা দিয়েছিলাম সে হিসেবে আমি জানি!

তো পরীক্ষা কিছুক্ষণের মধ্যেই শুরু হয়ে যায়। প্রথমেই আইকিউ টেস্ট এমসিকিউ পরীক্ষা! সেখানে সিলেক্ট হলে আরও তিনটা ধাপ অতিক্রম করতে হবে! আইকিউ টেস্ট প্রথমবার যখন পরীক্ষা দিয়েছিলাম তখনও ভালো হয়েছিল। এবারো ভালো হয়েছিল। পরীক্ষা শেষে সবাইকে অফিসার বললো বাহিরে ওয়েট করতে! আমি জানতাম যে আমার নাম আসবে। কারণ একজন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়ে এসে বলতে পারে তার পরীক্ষা কেমন হয়েছে! যথারীতি মাইকে এনাউন্স করতে থাকে। সিরিয়ালের তিন নাম্বারের্ আমার রোলটা বলা হয়! আমি হ্যান্ডস আপ করে আমার রোলটা দেখায়ে ভিতরে প্রবেশ করি। আবারো সেই দুইতলায় যেতে বললো। সেখােই আমাদের দ্বিতীয় পরীক্ষা হবে। দ্বিতীয় পরীক্ষা হয় সেটা হচ্ছে ফিজিক্স ও গণিতের উপরে। যারা গণিতও ফিজিক্সে ভালো তারাই ভালো করতে পারে। বিশেষ দশম শ্রেণীর বই থেকেই বেশু প্রশ্ন আসে।

আগেরবার গণিত ও ফিজিক্সের জন্য বাদ পরেছিলাম। এবার আগেই পরিকল্পনা করে এসেছিলাম কোনো ভাবেই যেন এটাই বাদ না পরি! ভালোভাবে প্রিপারেশন নিয়ে এসেছিলাম। আসলে অভিজ্ঞতা অর্জন করা ভালো। এতে করে হয়কি আপনার নিজের ভুলগুলো শুধরাতে পারেন। ক্লাস টেনের ফিজিক্স বইটা ভালো করে পড়ে এসেছিলাম। হাতে যখন প্রশ্ন এলো দেখি প্রায় সবই কমন! তবে কিছু ম্যাথ আনকমন লাগলো। যেহেতু ম্যাথগুলো ঐকিক নিয়মের ছিল। যেখানে ক্যালকুলেটর ইউজ করার সুযোগ নেয়। বেঞ্চে একেঁ যতটুকু ম্যাথ করতে পারা যায় আরকি। ত্রিশ মিনিটের পরীক্ষায় আমার ভালোই হয়েছিল বলতে গেলে। আইকিউ পরীক্ষায় মনে হয় ৭৫ জনের মতো ক্যান্ডিডেট সিলেক্ট হয়েছিল। তারপর ম্যাথ ও ফিজিক্স পরীক্ষা শেষে একজন অফিসার এসে বললো দশ মিনিট পর পরীক্ষার রেজাল্ট দেয়া হবে। কিছুটা টেনশন অবশ্য কাজ করছিল। কারণ আগেরবার এটার জন্যই বাদ পরেছিলাম আমি।

চলবে,,,,,,

ধন্যবাদ সবাইকে

আমি কে?

^{আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। সম্প্রতি আমি ইলেকট্রিক্যাল থেকে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেছি। এখন বিএসসি এর জন্য প্রিপারেশন নিচ্ছি। পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত দু বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। যাক,
নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।}