নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা|[১০% লাজুক খ্যাকের জন্য ]
14-12-2021
৩০ই অগ্রহায়ণ, ১৪২৮
আসসালামুআলাইকুম
আশা করি সবাই ভালো আছেন আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আজকের পোস্টে আমি আপনাদের সাথে নাড়ির টানে বাড়ি ফেরার অনুভূতি শেয়ার। শেষ পর্যন্ত আশা করি সঙ্গেই থাকবেন।
পড়াশোনার জন্য বাড়ি থেকে অনেকটা দূরে থাকতে হয় আপনজন ছাড়া। অবশ্য জীবনে চলতে গেলে এভাবে প্রিয়জন ছেড়ে থাকতে হবে। তবে মাঝে মাঝে মন খুব খারাপ হয় এতোদূরে আপনজন মানুষ ছাড়া থাকতে। কিছুদিন আগে আমার দাদা মারা গিয়েছিল। যার হাত ধরে অনেকটা পথ হেটেঁছি সেই ছোটবেলা থেকে। কতো মজা কিনে দিতো এখনো আমার মনে আছে! কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস সেই দাদা মারা যাওয়ার সময় আমি উপস্থিত থাকতে পারিনি। একদিকে আমার পরীক্ষা চলছিল আর অন্যদিকে অনেকটা পথ পাড়ি দিয়ে আসতে হবে। এই ভেবে আর বাড়িতে আসা হয়নি। তবে ভিডিও কলে দাদাকে শেষ বারের মতো দেখেছিলাম। খুব খারাপ লাগছিল তখন। এতো দূরে থাকার কারনে মাঝে মাঝে এজন্য খারাপ লাগে।
প্রায় দুইমাস ধরে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা চলছে। এজন্য বাড়িতেও আসতে পারছিলাম না। অবশেষে পরীক্ষা শেষ হলো গতকাল। কিন্তু ট্রেনের টিকেট কেটে ছিলাম ১০ তারিখে। কারণ চার বা পাচঁ দিন আগে টিকেট না কাটলে পরে আর টিকেট পাওয়া যায় না। তো ১০ তারিখে ১৪ তারিখের টিকেট কেটে ফেলেছিলাম। আর আমার বাড়ি যেতে সবচেয়ে ভালো যান হচ্ছে ট্রেন। আর ট্রেন দিয়ে আসতেও আমার ভালো লাগে। বাস দিয়ে ফেনী থেকে বাড়িতে আসা হয়না এখনো। কম দামে টিকেট পাওয়া যায় আর যাতায়াত সুবিধাও বেশ ভালো।
তো ১৩ তারিখে শেষ প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা দিয়ে মেসে এসে কাপড়-চোপড় সব ব্যাগে ভাজ করে রেখে দেই। আর কিছু সেখানে থাকবে এজন্য আরেকটা ব্যাগে রেখে দেই। ভারী বোঝা বহন করা একটু কঠিন হয়ে যাবে এজন্য তেমন কাপড় চোপড় ছাড়া আর কিছু নেইনি। সেদিন রাত থেকে অপেক্ষা করতেছিলাম কখন সকাল হবে আর কখন বাড়িতে যাবো। আমার আবার একটা বদঅভ্যাস হচ্ছে কোনো জায়গার যাওয়ার চিন্তা মাথায় এসে পরলে সে রাতে আর তেমন ঘুম হয় না। তো ঘুমাতে ঘুৃমাতে প্রায় ২ টার মতো বেজে যায়। তো সকালে উঠে তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে পড়ি।
আমার ট্রেন ছিল সকাল ৯:১০ মিনিটে। কিন্তু ট্রেন এসে ফেনী স্টেশনে এসে পৌছায় ৯:২০ মিনিটে। একটু লেইট করেই আসছিল। আমার সিটের অবস্থান ছিল ছ বগির ৪৮ নাম্বারে। আর আমি সিট কাটার সময় সবসময় চেষ্টা করি জানালার পাশে বসে আসার জন্য। তো ট্রেন আসতে ব্যাগ নিয়ে উঠে পরি ছ বগিতে। উঠে দেখি আমার সিটে একজন বসে আছে। তো আমি বললাম এটা আমার সিট। তারপর ভদ্র লোকটি আমার সিট থেকে উঠে গেলে আমি গিয়ে আমার সিটে বসি। তারপর স্টেশনে ১০ মিনিটের মতো অপেক্ষা করে ছেড়ে দেয়। আমার উদ্দেশ্যে কিশোরগঞ্জ। ট্রেনটি মূলত চট্রগ্রাম থেকে ময়মনসিংহ যাবে।
তারপর জানালার পাশে বসে কুয়াশা ভেজা সকাল দেখতে পেলাম। অনেক ধান ক্ষেত দেখলাম কেটে ফেলেছে। খুব দেখে ভালো লাগছিল। আর ভাবছিলাম আমাদের দিকেও হয়তো ধান ক্ষেত কাটা হয়ে গেছে প্রায়। সকাল বেলার কুয়াশাভেজা সকাল দেখতে খুব ভালো লাগছিল। আস্তে আস্তে যখন সকাল ঘনিয়ে দুপুর আসে তখন কুয়াশা দুপুরের রোদে হারিয়ে যায়। সেই মুহুর্তগুলো জানালার পাশে থেকে উপভোগ করতে থাকলাম।
তারপর এভাবে প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে চলে এলাম আমার গন্তব্য কিশোরগঞ্জে। কিন্তু এখানে শেষ নয়। আমার বাড়ি এখান থেকে আরেকটু দূরে। অটো দিয়ে যেতে হয়। তো বেশি দেরি না করে একটা অটো নিয়ে নেই। অটো দিয়ে বাড়ির কাছে আসতে প্রায় ৪৫ মিনিটের মতো লেগে গেছিল। এসে দেখি গ্রামের ক্ষেত সব কেটে ফেলেছে। ক্রিকেট খেলার জন্য ক্রিজও বানানো হয়ে গেছে। অনেকদিন হলো ক্রিকেট খেলাও হয়না। এজন্য এটা ভেবে অবশ্য খুব খুশি লাগছিল। তারপর হাটতে হাটতে বাড়িতে এসে পরি।
আশা করি আজকের ব্লগটি আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। সময় নিয়ে পোস্টটি পড়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মতো এখানেই শেষ করছি
ধন্যবাদ
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কোকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যৎ এ প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চায়।
আপনার সাথে সাথে আমরাও আপনার পুরো জার্নি উপভোগ করলাম। আমি আগে যখন ঢাকায় থাকতাম তখন বাড়ি আসার সময় এমন অনুভুতি হতো। সুন্দর একটি বিষয় শেয়ার করেছেন আমাদের সাথে অনেক ধন্যবাদ
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ
সত্যি অনেক দিন পর কোথাও থেকে বাড়ি ফেরা হলে কেমন যেন একটা অনুভূতি হয় বলে বোঝাতে পারবোনা। বাড়ি ফেরাটা ট্রেন ভ্রমণ হলে ফিলটা একটু বেশি অনুভব করা যায়। সুন্দর একটি ভালোলাগার বিষয় শেয়ার করেছেন। আপনার জন্য শুভেচ্ছা রইল।
আপনার মন্তব্য দেখে ভালো লাগলো। সুন্দর মতামত দিয়ে পাশে থাকার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ভাই।
সুন্দর হয়ে বাড়িতে ফেরার জন্য আপনার জন্য শুভেচ্ছা। পোস্টটি পড়ে মনে হচ্ছে জার্নি দারুণভাবে উপভোগ করেছে। বাড়ি ফেরার বিষয় নিয়ে আপনার পোস্টটি পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে। আপনার পোষ্টে দারুন কিছু সুন্দর মুহূর্তের কথা চমৎকারভাবে তুলে ধরেছেন। এককথায় পোস্টটি খুবই সুন্দর হয়েছে। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
অনেকদিন পরে বাড়িতে এসেছি এজন্য জার্নিটা বেশ উপভোগ করেছি। আপনাকে ধন্যবাদ ভাই সুন্দর মতামত দিয়ে পাশে থাকার জন্য।