১ম পর্বঃ যাত্রা বিড়ম্বনা
16-01-2024
০৩ মাঘ , ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো ও সুস্থ্য আছেন। শীতের প্রকোপ যেন বেড়েই চলছে। বলতে গেলে সারাদেশেই কনকনে শীত। আর শীতের মাঝে কোনো কিছুও করতে ভালো লাগে না। বলতে গেলে জনজীবন কিছুটা হলেও দূর্বিষহ হয়ে পরে। এখন যেহেতু জানুয়ারী মাস। আর এ সময়টাতে শীতের পরিমাণটাও বেশি। বাংলাদেশের শীতলতম মাসও হচ্ছে জানুয়ারী মাস। তো অনেকদিন ধরেই কোথাও যাওয়া হয় না। বাড়িতে আছি বলতে গেলে তিনমাস হয়ে গেল। আসলে বাড়িতে থাকলেও কেমন জানি একঘেয়েমি লাগছিল। আর জীবনের ব্যস্ততার কারণে একেক সময় একেক জায়গায় ছুটে চলতে হয়। ছেলেদের জীবনটা হয়তো এমনি। একবার বাড়ি থেকে বের হলে কর্মব্যস্ততার কারণে হলেও বাহিরে থাকতেই হয়। তো জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটা সময় চলে গেছে ফেনীতে! ময়মনসিংহ থেকে ফেনী! জীবনে কখনো ভাবিও নাই এতোদূরে যেতে হবে কখনো। তবে গিয়ে অবশ্য ভালোই হলো। জীবনে প্রথমে ট্রেন জার্নির সাথে লং জার্নি করার স্বাদ ও পেয়েছিলাম।
তো ডিপ্লোমা লাইফ শেষ করলাম গত বছর! চার বছরের সাধনার ফলও ভালো পেলাম। কিন্তু ডিপ্লোমার পরের জীবনটা আসলে কঠিন! বাংলাদেশের জব সেক্টর নিয়ে আর কি বলবো। এডমিশন দিয়েও ব্যর্থ হলাম। তবে মানুষ আশায় বাচেঁ। আমিও আশায় নিয়ে বাচিঁ। তো চার বছরের সাধনার ফল হলো আসল সার্টিফিকেট! চাকরির ক্ষেত্রে সার্টিফিকেট লাগবে। যেহেতু বাড়ি থেকেও ফেনী অনেকটা দূরে। সে হিসেবে কখন সুযোগ পায় জানিনা। এখন যেহেতু বাড়িতে আছি বলতে গেলে ফ্রি সময় পার করছি। তো আমাদের কিছু বন্ধু একমাস আগেই কলেজ থেকে সার্টিফিকেট তুলে নিয়ে এসেছিল। আমার অসুস্থতার জন্য আমি তখনও যেতে পারেনি। কিন্তু আমার আরেক বন্ধু ছিল সেও যেতে পারেনি ব্যস্ততার জন্য। তো আমি ভাবলাম তাকে নিয়েই যায়। যেহেতু একা একা এতো দূরে যাওয়াটাও ঠিক হবে না। কিছুদিন আগে বন্ধু রাজনকে ফোন দিয়ে জানতে পারি সে কিশোরগঞ্জ ই আছে।
তো সময় সুযোগ করে একদিন সার্টিফিকেট গুলো নিয়ে আসলে ভালোই হয়। কিন্তু নির্বাচন যেহেতু ছিল তাই নির্বাচনের আগে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়নি। পরে অবশ্য বন্ধু রাজনের সাথে কথা বলে জানতে পারলাম সে নাকি চট্রগ্রাম যাবে তার বোনকে নিয়ে। তার বোন চট্রগ্রাম ভার্সিটিতে পড়াশোনা করে। তো আমিও তাকে বললাম আমার জন্য যেন টিকেট সংগ্রহ করে নেয়। তবে বন্ধু রাজন যখন জানায় অনলাইনে টিকেট নেয় তখন অনেকটাই টেনশনে পরে গিয়েছিলাম। কারণ এতোদূর অবধি দাঁড়িয়ে ট্রেন জার্নি করা সম্ভব না। তো রাজন আমার বন্ধু হলেও তাকে ভাই বলে ডাকি। তার আবার কিশোরগঞ্জ স্টেশন মাষ্টার চেনা পরিচিত আছে। তারপর সে আমাকে জানায় আমার জন্য একটা টিকিট পেয়েছে। গত ১৩ তারিখ রাতে ট্রেনের টিকেট পেল। আমাদের দিকে বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেন চলে। বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেন জামালপুর থেকে চট্রগ্রাম পর্যন্ত যায়। এই ট্রেন আবার আগে ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসতো। সেটাকে এখন জামালপুর অবধি নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
তো ট্রেন ছিল ১৩ তারিখ রাত সাড়ে এগারোটায়। শীতের রাতে নয়টায় বাজলেই মনে হয় গভীর রাত হয়ে গেছে। কিশোরগঞ্জ শহর আবার আমাদের বাড়ি থেকে এতোটাও দূরে না। বাস দিয়ে গেলে ত্রিশ থেকে চল্লিশ মিনিটের মতো সময় লাগে। আর সিএনজি করে গেলে আরও কম সময় লাগে। শীতের সন্ধ্যার দিকেই বেরিয়ে পরলাম বাড়ি থেকে। চারিদিকে ঘন কুয়াশা! নান্দাইল বাস স্ট্যান্ড থেকে সিএনজি করে সোজা চলে এলাম নান্দাইল চৌরাস্তা! আর নান্দাইল চৌরাস্তা থেকে কিশোরগঞ্জ কাছেই। সেখান থেকে সিএনজি করে গেলে ৩০ টাকা ভাড়া লাগে। তো সিএনজি করে চলে গেলাম কিশোরগঞ্জ গাইটাল বাস স্ট্যন্ডে। রাত আটটার মধ্যেই কিশোরগঞ্জ পৌছেঁ গেলাম। কিন্তু ট্রেন ছাড়বে রাত এগারোটায়। তার মানে আর তিন ঘন্টার মতো সময় আছে। যেহেতু কিশোরগঞ্জ মামার বাসা আছে। সেহেতু ভাবলাম কিছুক্ষণ মামার বাসায় গিয়ে রেস্ট নিয়ে তারপর কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে যাবো। আর মামার বাসা থেকেও রেলওয়ে স্টেশন কাছে। শহরে আবার গভীর রাত অবধি গাড়ি পাওয়া যায়। সে হিসেবে চিন্তার কিছু নেই। চলে গেলাম অটোরিকশা করে মামার বাসায়।
চলবে,,,,
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। সম্প্রতি আমি ইলেকট্রিক্যাল থেকে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেছি। এখন বিএসসি এর জন্য প্রিপারেশন নিচ্ছি। পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত দু বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। যাক,
নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
twitter share