মেডেল নাটক রিভিউ [১০% লাজুক খ্যাকের জন্য]
24-01-2022
১১ মাঘ,১৪২৮ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাই
নাটকটি সম্প্রতি রিলিজ হয়েছে। রিলিজ হওয়ার পর থেকেই নাটকটি বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। তাই চলে এলাম আপনাদের সাথে নাটকটি শেয়ার করার জন্য। আশা করি আপনাদের কাছে নাটকের রিভিউটি ভালো লাগবে।
নাটকের কিছু তথ্য
নাম | মেডেল |
---|---|
রচনা | সাইফুর রহমান কাজল। |
পরিচালনা | নাজমুল রনি। |
প্রযোজক | জামিল উদ্দিন |
অভিনয়ে | জিয়াউল ফারুক অপূর্ব, সাবিলা নূর, আবদুল্লাহ রানা, শেলী আহসান, পীরজাদা হারুন, এস এন জনি |
আবহ সঙ্গীত | সাকির হোসেন রাজ। |
দৈর্ঘ্য | ৫২ মিনিট। |
মুক্তির তারিখ | ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ |
ধরন | সামাজিক,ড্রামা,কাল্পনিক |
ভাষা | বাংলা। |
দেশ | বাংলাদেশ |
কাহিনী সারসংক্ষেপ
নাটকের শুরুতে দেখা যায় একটি মেয়ে ভেজা কাপড় শুকাতে ছাদে আসে । ঠিক একই সময়ে আরেকটি মহিলা ভেজা কাপড় নিয়ে আসে ছাদে শুকাতে । কিন্তু ছাদে শুধু একটিমাত্র রশি বাঁধাছিল । এবার তাদের একটু পরিচয় দিয়ে নেই । মেয়েটির নাম হলো হিয়া । সে পাশের ফ্ল্যাটে থাকে । তার বাবার সাথে সে থাকে এবং তার মা ছোটবেলায় মারা গেছে । আর ঐ মহিলা ও হচ্ছে শুভ্র মা । তো শুক্রবার ছুটির দিন উপলক্ষে হিয়া তার সব কাপড় চোপড় ধুয়ে দিছে । শুভ্রর মা তাদের বাসার সমস্ত কাপড় ধুয়ে দিয়েছিল । শুভ্রর মা ছাদে এসে যখন দেখে ছাদে কাপড় শুকানোর জায়গা নেই তখন হিয়ার সাথে ঝগড়া লেগে যায় । হিয়া তখন শুভ্র ওর মার সাথে মুখে মুখে তর্ক করা শুরু করে । অবশেষে শুভ্রর মা কাপড়-চোপড় নিয়ে বাসায় চলে আসে ।
এদিকে এদিকে শুভ্র মা বাসায় এসে শুভ্র বাবাকে বলে বাসায় যেন একটি ধরি টানিয়ে দেয় । শুভ্রর বাবা শুভ্র আর মাকে বলে ছাদ থাকতে বারান্দায় কেন কাপড় শুকাবে? তখন শুভ্রর মা সবকিছু খুলে বলে শুভ্র ওর বাবাকে । এখন একটু পিছনে ফিরে আসা যাক । একটি ফ্ল্যাট যেখানে তিনটি পরিবার বাস করে । এই বাসার একটি নিয়ম হচ্ছে বারসই একটি দাবা খেলায় যে জিতবে সে শাসন করবে । এবারের বার্ষিক দাবা খেলায় হিয়ার বাবা জিতেছিল । আর সেখানেই বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে পাশের ফ্লাটের ছেলে জাবির । জাবির অবশ্য হিয়াদের পক্ষে থাকে কারণ জাবির হিয়া কে পছন্দ করে । এজন্য জাবির অবশ্য দুই পরিবারের ঝগড়া হলেই সে বিচারকের ভূমিকা পালন করে ।
অন্যদিকে হিয়া বাসায় এসে তার বাবাকে বলছে যে ওই পাশের বাসার মহিলা তার সাথে ঝগড়া করেছে । ঝগড়া করার কারণ হচ্ছে রশিতে কাপড় শুকানো নিয়ে । এটা শুনে অবশ্য তার বাবা রিয়াকে বলে যে তারা তো কখনই ঝগড়াও যেতে না এমনকি বিচারেও যেতে না । দুর্বল প্রতিপক্ষ দাবি করে । হিয়ার বাবার মতে প্রতিপক্ষ যদি সমানে সমানে না হয় তাহলে কি ঝগড়া করতে ভালো লাগে! হিয়ার বাবা দাবা খেলায় জেতার পর তার গলায় সব সময় একটি মেডাল ঝুলিয়ে রাখে । এই মেডাল যেন হিয়ার বাবার গর্ব ।
তার পরের দিনের ঘটনা , শুভ্রর বাবা ছাদে গিয়ে গাছে পানি দিতেছিল । ঠিক সেই সময়ই হিয়ার বাবাও ছাদে গিয়ে শুভ্র বাবার আশেপাশে ঘোরাঘুরি করতে ছিল । কিন্তু শুভ্রর বাবা মোটেও পাত্তা দিতে ছিল না । হেয়ার বাবাকে দেখেও না দেখার ভান করতেছিল । তখন ই এর ব্যবহার জোর করে কথা বলাতে বাধ্য করে । হেয়ার বাবা বলে যে আমার সাথে কথা বলতে না চাইলেও আমার মেডাল তো আপনি স্বীকার করতে হবে । শুভ্রর বাবা তখন বলে, মেডাল তো আপনি দাবা খেলায় কারসাজি করে জিতেছেন । আর দাবা খেলায় এই কারসাজির পিছনে বিচারকের হাত ছিল ওই পাশের বাসার জাবিরের । কিন্তু হিয়ার বাবা এটা মোটেও মানতে নারাজ । তিনি বলেছেন যে দাবা খেলা হচ্ছে বুদ্ধিমত্তার খেলা । আমি জিতেছি এই জন্য আমি মেডালটি পেয়েছি । যাইহোক হিয়ার বাবা শুভ্রর বাবার কাছে এসেছিল মূলত কালকের ঘটনার জন্য কাজটা মোটেও ঠিক করেনি বলতে ।
এবার মূল ঘটনায় আসা যাক, অবশেষে শুভ্র বাসায় আসে লন্ডন থেকে । বাসায় আসার পথিমধ্যে সে হিয়াকে দেখতে পায় । হিয়া শুভ্র কে দেখেই নাক উস্কানি দিয়ে চলে যায় । মোটেও পাত্তা না দেওয়ার ভান করে হিয়া । যাইহোক শুভ্র সেটা পজিটিভ ভাবে নিয়েছিল । বাসায় ঢুকতেই তার বাবা এসে গ্রহণ করে । ঠিক সেই সময় হিয়ার বাবা তাদের বাসা থেকে শুভ্র এবং শুভ্র বাবাকে দেখতে ছিল । শুভ্রর বাবা হিয়ার বাবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় । শুভ্রর বাবা তখন শুভ্র কে বলতেছিল যে তার গোল্ড মেডেলটা বের করার জন্য । শুভ্রর বাবা তখন লোকাল মেডেলের সাথে গোল্ড মেডেল এর তুলনা দিতে না করে হিয়ার বাবাকে । এই কথা শুনে এই হিয়ারে বাবার মুখটা একটু অন্যরকম হয়ে যায় । হিয়ার বাবা তখন মেডেলটি লুকিয়ে ফেলে ।
তো যাই হোক পরের দিন শুভ্রর সাথে আবার হিয়ার দেখা হয় ।
শুভ্র হিয়ার কাছে জানতে চাই তাকে দেখে নাক সিটকানি দেয় কেন? হিয়া তখন বলে তার খাইতে ভালো লাগে । অবশ্য প্রথম দেখাতেই শুভ্র হিয়াকে পছন্দ করে ফেলে । ধীরে ধীরে তাদের সম্পর্ক আরও গভীর হতে থাকে । একটা সময় শুভ্র তার ভালোলাগার কথা হিয়াকে বলে ফেলে । কিন্তু হিয়া শুভ্র ওর ভালো লাগার কথা একদম সিরিয়াস ভাবে নেইনি ।
অবশেষে আবারও শুরু হয় সেই বার্ষিক দাবা খেলা । কিন্তু এবারের দাবা খেলা একটু ভিন্ন রকমের ছিল । কারণ প্রতিবারই দুইবার মুরুব্বীরা দাবা খেলায় অংশগ্রহণ করে । এবার হিয়া ও শুভ্র দাবা খেলায় অংশগ্রহণ করবে । শুভ্র যেহেতু লন্ডন থেকে পড়ালেখা করে আসছে আর দাবা খেলায়ও সে দক্ষ । প্রতিবারের ন্যায় খেলায় বিচারকের দায়িত্ব পালন করে আরেক প্লেটের জাবির । খেলা শুরু হওয়ার পর শুভ্র ইচ্ছে করেই খেলায় হেরে যায় । আর উপহার হিসেবে সে হিয়াকে গোল্ড মেডেলটা দিয়ে দেয় । কিন্তু শুভ্রর বাবা এটা মোটেও পছন্দ করেনি । অবশেষে হিয়া তার ভুল বুঝতে পারে এবং মেডেলটি ফিরিয়ে দেয় শুভ্রকে । অবশেষে হিয়া শুভ্রকে ভালবেসে ফেলে । অবশেষে দুটি পরিবার এক হয়ে যায় ।
এভাবেই নাটকটি সমাপ্ত হয় ।
নাটকটি থেকে শিক্ষা
সব নাটক থেকেই আমরা কম বেশী কিছু না কিছু শিক্ষা পেয়ে থাকি । আজকের নাটকটি তেমনই শিক্ষণীয় ছিল । কোন কিছু নিয়েই আমাদের তেমন কর্ম করা উচিত নয় কারণ হচ্ছে গর্ব বা অহংকার করলে সেটা বেশিদিন টিকে না । তারই প্রমাণ যেন পাওয়া গেছে এই নাটকটিতে । মেডেল নিয়ে যে গর্ব ছিল সেটি বেশিদিন টিকেওনি । অবশেষে ভালোবাসার মধ্য দিয়ে নাটকটি শেষ হয়
ব্যক্তিগত মতামত
মেডেল নাটকটি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে । গল্পটি কাল্পনিক হলেও আমাদের সমাজে এমন অনেক মানুষই আছে যারা ছোট কিছু নিয়ে অনেক গর্ব বা অহংকার করে থাকে। তার উপর ভিত্তি করে মূলত নাটকটি নির্মিত হয়েছে । নাটকের পরিচালক খুব সুন্দর করে নাটকের গল্পটি পরিচালনা করেছেন । অপূর্ব নাটকে খুব শান্ত স্বভাবের হয়ে খুব সুন্দর করে অভিনয় করে গেছেন । সাবিলা নূর খুব ভালো অভিনয় করেছে । সব মিলিয়ে নাটকটি আমার কাছে দেখার মতোই মনে হয়েছিল, ভালোই লেগেছে ।
ব্যক্তিগত রেটিং
নাটকটির লিংক
আশা করি নাটকটি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে। নাটকটি দেখে না থাকলে লিংকে প্রবেশ করে দেখতে পারেন। আমি চেষ্টা করেছি মূল কাহিনীটা শেয়ার করার জন্য। আশা করি বুঝেছেন। সকলের সু্স্থ্যতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মতো এখানেই শেষ করছি।
ধন্যবাদ
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
Twitter link:
হাহা, অনেক সুন্দর একটি রিভিউ করেছেন ভাই, ঠিক কথা বলেছেন খেলায় হার জিত রয়েছে। তাই বলে কখনো অহংকার করা যাবে না। ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনাকেও ধন্যবাদ ভাই রিভিউটা পড়ে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য
আপনার নাটক রিভিউ পড়ে অনেক ভালো লাগলো । কারণ নাটকটির মাঝে অনেক কিছু শেখা ও জানার আছে । সেগুলো আপনি আমাদের সামনে সংক্ষেপে তুলে ধরেছেন । এত সুন্দর একটি নাটক রিভিউ দেয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য
ভাই আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ, ভাই আপনি খুবই সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন, নাটকটি আমার দেখা হয়নি, আপনার রিভিউ দেখে নাটকটি দেখার ইচ্ছা জাগল, ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।
আশা করি আপনি নাটকটি দেখবেন । ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য ।
ভালবাসায় ভরপুর থাক নাটকের শেষেও। নাটকের মত ভালবাসা, শেষ পর্যন্ত প্রতিফলিত হোক আপানার বাস্তব জীবনেও। ভালবাসায় ভরিয়ে
মন্তব্যটি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে । ধন্যবাদ আপনাকে ❤️
আবার আসবেন।
নাটকটি অনেক সুন্দর। কাহিনীটাও চমৎকার। নাটকের বর্ণনা এক কথায় অসাধারন ভাবে দিয়েছেন। ধন্যবাদ ভাই