"মরণের পরে" নাটক রিভিউ [১০% @shyfox 💙 ]
07-04-2022
২৪ চৈত্র ,১৪২৮ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আমি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। চলে এলাম একটি নাটক রিভিউ শেয়ার করার জন্য। রোযা রেখা নাটক তেমন দেখা হয়না। তবে আজকে বিকালে কিছুতেই ভালো লাগছিল না। এজন্য একটি নাটক দেখতে বসে পড়লাম। আর সেই নাটকটি চলে এলাম আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। নাটকটি কিছুদিন আগেই রিলিজ হয়েছে। বাস্তব প্রেক্ষাপট রিলেটেড একটি নাটক বলা চলে। নাটকটির নাম হচ্ছে মরণের পরে।
নাটকের কিছু তথ্য
নাম | মরণের পরে । |
---|---|
রচনা | মোঃ মোস্তফা কামাল রাজ। |
পরিচালনা | মোঃ মোস্তফা কামাল রাজ । |
প্রযোজক | মোঃ মোস্তফা কামাল রাজ । |
অভিনয়ে | তৌসিফ মাহবুব, কেয়া পায়েল, মনিরা মিঠু, তানজিম হাসান অনিক এবং আরও অনেকে |
আবহ সঙ্গীত | সালমা আক্তার । |
দৈর্ঘ্য | ৪৮ মিনিট। |
ধরন | ড্রামা, রোমান্টিক, বাস্তবভিত্তিক । |
ভাষা | বাংলা। |
দেশ | বাংলাদেশ |
কাহিনী সারসংক্ষেপ
নাটকের শুরুতে দেখা যায় রুহুল তার মায়ের কাছে টাকা চায়। কিন্তু তার মায়ের এতো কষ্টের টাকা ছেলে বাজেভাবে নষ্ট না করুক সেটা মা চায়। আজকের নাটকটটি মূলত বস্তির ভিতরের একটি পরিবার ও ভালোবাসার গল্প। আজকের নাটকের রুহুর তার স্বপ্ন সে রাজপ্রসাদে থাকার। সে স্বপ্ন দেখে একদিন ঠিকই বিশাল অট্রালিকা তৈরি করে সেখানে থাকবে। আর রুহুলের মা একটি বাসাতে কাজ করে। মাস শেষে যে টাকা পায়, সে টাকা দিয়ে কোনোভাবে সংসার চলে যায়। রুহুলের বাবা অনেক আগেই মারা গিয়েছি। সংসারের দায়িত্বটা যেখানে রুহুলের নেয়ার কথা সেখানে তার মা নিয়েছে। এজন্য রহুলের মা অবশ্য রাগ করে ছেলের সাথে। রুহুলের মা যে বাসায় কাজ করে সেখানে দেখে ছেলেরা মাকে জব করে খাওয়াই, রাজরানীর মতো রাখে। তারও ইচ্ছে তার ছেলে এভাবে জব খাওয়ানোর জন্য। কিন্তু রুহুলের ইচ্ছে সে ব্যবসা করে প্লেনে করে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় ভ্রমণ করবে। বস্তিতে থেকে তার এই ইচ্ছে কি পূরন হবে??
বস্তির আরেক মেয়ে পারুল। যার মা বাবা নেই। ছোটবেলা থেকেই বস্তিতে বড় হয়েছে। আগে গার্মেন্টস এ কাজ করে অনেক টাকা জমিয়েছে। কিছু টাকা ব্যাংকে জমা রেখেছে আর কিছু টাকা দিয়ে নিজ উদ্যোগে ব্যবসা করছে। পারুল রুহুলকে খুব ভালোবাসে। কিন্তু রুহুল তাকে পছন্দ করেনা। রুহুলের স্বপ্ন সে বস্তিতে কোনো বিয়ে করবেনা। বস্তির বাহিরে গাড়িতে চড়ে রাজ রানীর মতো দেখতে মেয়েকে বিয়ে করবে। এতে অবশ্য পারুলের কোনো আপত্তি নেই। তাকে পাত্তা না দিলেও সে রুহুলকেই ভালোবাসবে। রুহুলের হাত খরচের টাকার প্রয়োজন হলে মতিনের মাধ্যমে পারুল দেয়। মতিন কখনো বলেও না যে পারুল তাকে দিয়েছে টাকা। কারণ তার মা রুহুলকে টাকা দিতে চায়না।
অবশেষে রুহুল ব্যবসা শুরু করবে ভাবতেছে। এজন্য মতিনকে তার মায়ের কাছে যায় বলা জন্য। তার মাকে বলে যে ব্যবসা করবে। এখন কোনো কাজ করতে হবেনা। এ কথা শুনে রুহুলের মা তো মহা-খুশী কিন্তু যখনই বললো আড়াই লাখ টাকা লাগবে ব্যবসা করার জন্য তখনই তার মা রেগে যায়। কারণ আড়াই লাখ টাকা যদি তার কাছে থাকতো তাহলে তার বস্তিতে থাকতো না। আর তার মা অন্যের বাসায় কাজও করতো না। মতিন হতাশ হয়ে বাহিরে এসে পড়ে। মতিন অবশ্য বুঝানোর চেষ্টা করে থাকে যে এতো উপরের উঠার স্বপ্ন দেখাও আসলে বোকামি। মাঝে মাঝে স্বপ্ন শুধু স্বপ্নই থেকেই যায়।
পরেরদিন পারুলের সাথে দেখা হয় রুহুলের। পারুল রুহুলকে বলে বিয়ে করতে কিন্তু রুহুল তাকে অপমান করে না করে দেয়। তবুও পারুল মন খারাপ করেনি। ভালোবাসার মানুষটি হাজার কষ্ট দিলেও কি সহ্য করে নিতে হয়! পারুল এমনটাই ভাবতেছে। রুহুলের মাকে পারুল চাচী বলে ডাকে। আর পারুলের যেহেতু মা বাবা কেউ নেই তাই পারুল রুহুলের মায়ের কাছে রুহুলকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেয়। বিনিময়ে তার কাছে তিন লক্ষ টাকা আর তার ছোট দোকানটিও রুহুলকে দিয়ে দিবে। এটা শুনে রুহুলের মা খুশি হয়ে যায়। আর বিয়েতে রাজিও হয়ে যায়। কিন্তু রুহুল বিয়ের কথা শুনে রাজি হয়নি। পারুলকে সে আবার অপমান করে যে কেন তাকে বিয়ে করবে!
ঠিক ২মাস ২৭ দিন পর পারুল রুহুলের রেস্টুরেন্ট এ যায়। এই রেস্টুরেন্ট পারুলের টাকা দিয়েই তৈরি। কিন্তু রুহুল জানেও না যে পারুল টাকা দিয়েছে। পারুল যখন তার রেস্টুরেন্ট এ আসে তখন চেয়ারে বসার জন্য তাকে অপমান করে। বস্তির শরীরের ছোঁয়াতে নাকি চেয়ার ময়লা হয়ে যাবে। এটা শুনে পারুল আরও কষ্ট ও অপমানিত হয়ে সেখান থেকে চলে আসে। নাটকের কষ্টদায়ক দৃশ্যটা এখানেই ছিল। মতিন সব জানতো। তারপর সে সব বলে যে এই রেস্টুরেন্ট বানানোর টাকাও পারুল দিয়েছে। নতুন নতুন জামা কিনার টাকাও পারুল দিয়েছে! আজ তাকেই সে অপমান করেছে। পারুল অপমান সহ্য করতে না পেরে অবশেষে আগুনে পুড়ে মারা যায়। ভালোবাসার অপূর্ণতার মাধ্যমেই নাটকটি শেষ হয়।
নাটকটি থেকে শিক্ষা
নাটকটি বর্তমান প্রেক্ষাপটের বাস্তব উদাহরণ। কারন আমাদের দেশে বস্তিতে প্রতিবছরই আগুনে পুড়ে শত শত ঘর পুড়ে যাচ্ছে। সেই সাথে কতো নিরীহ প্রাণ চলে যাচ্ছে। গত পাচঁ বছরের পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, বাংলাদেশে প্রায় ৮৭২ বার অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। রুহুল আর পারুলের মত কত ভালোবাসার মৃত্যু হয়েছে আজও আমাদের অজানা! বেচেঁ থাকুুক ভালোবাসাগুলো মরণের পরেও।
ব্যক্তিগত মতামত
ব্যক্তিগতভাবে নাটকটি আমার কাছে ভালো লেগেছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটের আলোকে নির্মিত হয়েছে নাটকটি। নাটকের শুরু থেকে শেষ দৃশ্যটি কষ্টদায়ক ছিল। আমরা এমনিভাবে প্রিয় মানুষের প্রিয় হতে কত কিছুই না করি। কিন্তু প্রিয় মানুষটা প্রিয় হতে পারিনা। এমনটাই দেখা গেল নাটকটিতে। পরিচালক বর্তমান সময়ের জন্য সুন্দর একটি নাটক উপহার দিয়েছেন। নাটকের চরিত্রগুলো অসাধারণ ছিল।
ব্যক্তিগত রেটিং
নাটকটির লিংক
আশা করি নাটকটি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে। নাটকটি দেখে না থাকলে লিংকে প্রবেশ করে দেখতে পারেন। আমি চেষ্টা করেছি মূল কাহিনীটা শেয়ার করার জন্য। আশা করি বুঝেছেন। সকলের সু্স্থ্যতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মতো এখানেই শেষ করছি।
ধন্যবাদ
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
Link
খুব সুন্দর ভাবে নাটক রিভিউ করেছেন ভাইয়া। এ নাটকটি আমার খুবই প্রিয় নাটক। কয়েকবার করে আমি এই নাটকটি দেখেছি।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া
খুবই সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ আপনি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। আসলে নাটকটির রিভিউ যদি আপনি না দিতেন তাহলে নাটকটি দেখাই হতো না। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার রিভিউর মাধ্যমে নাটকটি দেখার ইচ্ছা জাগল এবং খুব শীঘ্রই নাটকটা দেখে নিবো।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। খুবই সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ দেয়ার জন্য আপনি যদি এই নাটকের রিভিউ না দিতে হয় তোবা কোনদিনই নাটকটি দেখা ভাগ্যে হতো না। আপনি এই নাটকের রিভিউ দেয়ার কারনে আমার মনে দেখার কৌতুহল জেগেছে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও শুভকামনা রইল।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া খুব সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য
জি আপু নাটকটি দেখলে আপনি উপভোগ করতে পারবেন ধন্যবাদ আপনাকে ❤️
বেস্ট চমৎকার ভাবে নাটকটির রিভিউ আপনি করেছেন, যার কারণে নাটকটি দেখার ইচ্ছে জাগলো। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর ভাবে রিভিউ করার জন্য, এবং খুব সুন্দর একটি নাটক ছিলো। আবারো ধন্যবাদ আপনাকে
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া
দেখে মনে হচ্ছে খুব সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ করেছেন আপনি। নাটকটি দেখেছি বলে আমার মনে হয় না। কিন্তু দেখে মনে হচ্ছে খুব সুন্দর হবে। সময় পেলে অবশ্যই নাটকটি দেখে নিব। এত অসাধারন একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো আপনার জন্য।
জি ভাইয়া নাটক দেখে আপনি উপভোগ করতে পারবেন। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য
সাম্প্রতিক সময়ে আমরা বাংলাদেশীরা ভয়াবহ কিছু অগ্নিকাণ্ডের সাক্ষী হয়েছি। এইরকম একটি প্রেক্ষাপটর উপরই নাটকটা নির্মিত। নাটকটা আমি দেখি নাই। তবে অনেক সুন্দর কাহিনী সম্বলিত এবং শিক্ষনীয় নাটক এটা। তৌসিফ মাহবুব আমার অনেক পছন্দের একজন অভিনেতা। অনেক সুন্দর করেছেন রিভিউ। ধন্যবাদ আমাদের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য।।
আপনাকে ধন্যবাদ ভাই খুব সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য