অতঃপর বৃষ্টির দেখা
20-07-2022
৫ শ্রাবণ ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি ভালো আছেন। আজকে বলতে গেলে অনেক ভালো আছি। কারণ মনে হলো অনেকদিন পর বৃষ্টির দেখা পেলাম। প্রচন্ড তাপদাহে যখন মানুষ ভুগছে ঠিক তখন আকাশ থেকে বৃষ্টি যেন আশীর্বাদ হয়ে নামলো। অনেক অপেক্ষার পর যেন পাওয়া এ বৃষ্টি। সকাল থেকেই আকাশটা ঘন কালো মেঘে ঢেকেছিল। ভেবেছিলাম আজ ধুম বৃষ্টি হবে। কিন্তু একি!! কিছুক্ষণ পরেই দেখি আবার রোদ। ধীরে ধীরে তাপ যেন বেড়েই যাচ্ছিল। আমি বারান্দায় দাড়িঁয়ে ভাবতে থাকি আজও আমাকে হতাশ করলো বৃষ্টি। ফোনটা হাতে নিয়ে কিছুক্ষণ ইউটিউব এ ডুব দিলাম।
আবহাওয়ার অনেক তথ্যই জানতে পারলাম। অনেক জেলায় দেখছি বৃষ্টি হয়েছে। আমি দেখলাম আমাদের এখানেও বৃষ্টি হবে। ওয়েদার ক্লাডি দেখাচ্ছে। ঠিক ১২ টার দিকে কারেন্টও চলে গেল। এখন গরমে আর থাকতে পারা যাবে না। কারেন্ট চলে গেলেই যেন শরীর হিট হতে থাকে। কি আর বলবো! ফ্যানের বাতাসেও যে শরীর শীতল হয়না। টিনের চাল যেন সূর্যের তাপে আর উত্তপ্ত হতে থাকে। গাছপাতা নাড়াচাড়া করে না। অথচ আমরা জানতাম আষাঢ়-শ্রাবণ দুইমাস বর্ষাকাল। জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য বাংলাদেশের ঋতুর মাঝেই পার্থক্য হয়েছে। এইতো কিছুদিন আগেও তো প্রকৃতি এতো নিষ্ঠুর ছিল না। তাহলে কেন এমন আচরণ করছে আমাদের সাথে। তার পিছনে অবশ্যই তো কোনো না কোনো কারণ আছে। জলবায়ুর এই পরিবর্তনের জন্য একমাত্র আমরাই দায়ী। স্টিফেন হকিং বলিছিলেনঃ- পৃথিবী মানুষের বসবাসের অনুপযোগী হয়ে যাবে যখন ৭০০ কোটির উপরে মানুষ এই বায়ুমণ্ডলে বসবাস করবে। এখন কিন্তু ৭০০ কোটির উপরে মানুষ বসবাস করছে এই পৃথিবীতে। তাহলে আমরা কি ধ্বংসের দিকে এগোচ্ছি ধীরে ধীরে! তাই তো মনে হচ্ছে। ইতোমধ্যে বিজ্ঞানীরা বিকল্প বাসস্থান খোজঁছে মানুষের বসবাসের জন্য। মঙ্গলগ্রহ আর চাদঁ হতে পারে মানুষের ভবিষ্যৎ আবাসস্থল যেমনটা দাবি করেছে নাসা। কারণ বিকল্প বাসস্থানের চিন্তা না করলে পৃথিবীতে একসময় মানুষের বসবাসের অনুপযোগী হয়ে যাবে।
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল ঠিক রাখতে আমাদের প্রয়োজন জনসচেতনতা মূলক উদ্যোগগ্রহণ । বৃক্ষরোপণ হতে পারে তার মধ্যে অন্যতম। কারণ একমাত্র বৃক্ষরোপণের মাধ্যমেই জলবায়ুতে ভারসাম্য বজায় রাখা সম্ভব। পর্যাপ্ত অক্সিজেন সৃষ্টি হবে আর বায়ুমণ্ডলের পরিমাণ হ্রাস পাবে। গবেষণায় দেখা গেছে, যে দেশে বনভূমি যতবেশি সে দেশে বেশি বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। তাহলে বুঝাই যাচ্ছে বনায়ন একটি দেশের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। যাক, এসব কথা ভাবতে ভাবতেই দেখি আকাশে আবার কালো মেঘ জমা হয়েছে। এবার বুঝি বৃষ্টি হবে। ঠিক ১:৩০ মিনিটের দিকে দেখি দক্ষিণ দিক থেকে বৃষ্টি আমাদের দিকে আসছে। আসলে আমাদের বারান্দা থেকে সেই ছোটবেলা থেকেই দেখে এসেছি বীর পাড়া আগে বৃষ্টি আরম্ভ হতো। তারপর আমাদের দিকে আসতো। আহা! বৃষ্টি দেখেই যেন মনে শান্তি পেলাম। মনে হচ্ছে কয়েক বছর পর বৃষ্টি হবে। বারান্দায় দাড়িঁয়ে রইলাম বৃষ্টি উপভোগ করার জন্য। টিনের চাল বেয়ে পানি গড়গড়িয়ে পড়ছে। যারা গ্রামে থাকেন তারা নিশ্চয় এই মোমেন্টটা অনুভব করেছেন। টিনের চালে বৃষ্টির পানি পড়ার শব্দ যেন মনে অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করে। বৃষ্টির পানির শব্দেই ছোটবেলায় ঘুমিয়ে যেতাম অনায়াসে।
ফোন হাতে দাড়িঁয়ে এই বৃষ্টি ভেজা গাছপালার কিছু ফটোগ্রাফি করে নিলাম। বৃষ্টি যেন সাক্ষী হয়ে থাকবে। গাছপালা যেন প্রাণ ফিরে পেলো। প্রকৃতি পেলো তার হারানো সজীবতা। জমিতে পানি ভালোই জমেছে।। হাল চাষ করার আগে মনে হয়না আর সেচের মাধ্যমে পানি দিতে হবে। আমাদের পুকুরের পানি আরেকটু যেন বেড়ে গেল। এতোদিন পানি শুকিয়ে গেছিল। বারান্দায় দাড়িঁয়ে আমি এসব উপভোগ করতে থাকি। কিন্তু ইচ্ছে ছিল বৃষ্টির পরশ নেই। কিন্তু তা আর হলো কই! আমার মায়ের নিষেধ বৃষ্টিতে ভেজা যাবে না। কারণ দুদিন হলো বুস্টার ডোজ দিয়েছে। শরীরে জ্বর এসেছে। আর এই জ্বর নিয়ে বৃষ্টিতে ভিজলে আরও ঠান্ডা ও জ্বর লেগে যাবে। তবে টিনের চাল বেয়ে পড়া পানির পরশ নিলাম হাত দিয়েই। বৃষ্টির পানি যেন একদম শীতল। হাত যেন নিমিষেই ঠান্ডা হয়ে গেল। এ যেন তৃপ্তির বৃষ্টি। আশীর্বাদ হয়ে এসেছিল মোর জীবনে।
Device | Oppo A12 |
---|---|
Photographer | @haideremtiaz |
Location | w3w |
Date | 19 july, 2022 |
যায়হোক, আপনাদের সাথে অনেক কিছুই শেয়ার করলাম। বৃষ্টির পরশে আপনাদেরও মন তৃপ্ত হয়ে উঠুক এই কামনাই করি। সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মতো এখানেই বিদায় নিলাম। আল্লাহ হাফেজ।
10% beneficiary for @shyfox❤️
ধন্যবাদ
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
বৃষ্টির দেখা আমরা এখনো পাচ্ছিনা ভাইয়া। প্রচুর গরমের মধ্যে একটু বৃষ্টির একান্ত প্রয়োজন। আবহাওয়া একটু অন্যরকম লাগছে। আপনি ঠিকই বলেছেন আবহাওয়া ঠিক করতে হলে আমাদেরকে বৃক্ষরপন করতে হবে। যাইহোক আপনাকে ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর এই পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
জি আপু একমাত্র বৃক্ষরোপণ এর মাধ্যমেই পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখা সম্ভব।
আপনি একদম ঠিক কথা বলেছেন ভাই বৃক্ষরোপণ করা আমাদের একান্ত জরুরী। তবে এটা জেনে খুশি হবেন যে আমি প্রায় প্রতিবছর বৃক্ষরোপণ করে থাকি। কারণ বৃক্ষরোপণ করা আমার অনেক আগের অভ্যাস। তবে এবার আবহাওয়া একটু অন্যরকম, এবার শীতের মধ্যে প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে কিন্তু এখন আর তেমন বৃষ্টি দেখা নেই। যার জন্য মানুষ হয়ে আছে অতিষ্ঠ।
আপনার কথা জেনে খুশি হলাম ভাই। বৃক্ষরোপণ এর মাধ্যমেই পরিবেশের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনা সম্ভব। আপনার জন্য শুভকামনা রইল
আমাদের এখানেও বৃষ্টি হয়েছিলো তবে বেশিক্ষণ থাকেনি প্রায় ১০ মিনিট পরে চলে গেছে। অনেক সুন্দর পোস্ট শেয়ার করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া
আপনাকে ধন্যবাদ ভাইয়া চমৎকার মন্তব্য করার জন্য।
যে গরম পড়ছিলো কিছু দিন থেকে। চার দিকে তো নানা রকম ট্রল ভিডিও হচ্ছিলো। রাস্তায় কেউ কেউ ডিম ভেজে খেয়েছে। যাইহোক বৃষ্টির অনেক দরকার ছিলো।
হাহাহা বাঙালি কিছু একটা দেখলেই মেতে উঠে। অনেকদিন পরে মন হচ্ছিল বৃষ্টির দেখা পেলাম। আপনাকে ধন্যবাদ
গ্রামেই একমাত্র সব দৃশ্য দারুণভাবে উপভোগ করা যায়।শেষমেশ আপনাদের ওখানে তাহলে বৃষ্টি হলো,আমাদের এখানে যে কবে হবে।সবাই সেই প্রতীক্ষায় রয়েছে।ধন্যবাদ ভাইয়া।
জি দিদি হবে কয়েকদিনের মধ্যেই। বৃষ্টির পরশে আপনাদের হৃদয় শান্ত হোক এটাই কামনা করি
কয়েকদিন যাবত প্রচুর গরম পরছে। এবং রোদ্দুরের তীব্রতা অনেক ।এক পশলা বৃষ্টির ছোঁয়া পেতে সবাই মুখিয়ে থাকে।। আপনি খুবই সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন ধন্যবাদ।।
প্রচন্ড গরমের পর আজ দুই দিন বৃষ্টি হচ্ছে। আমাদের মাঝে খুব প্রশান্তি নিয়ে এসেছে বৃষ্টির। বৃষ্টির জন্য চারদিকে হাহাকার পড়ে গেছে। বৃষ্টি এসেছে দেখে খুব ভালো লাগলো। বৃষ্টির অনুভূতি নিয়ে এত চমৎকার পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
হ্যাঁ অবশেষে বৃষ্টি হলো হৃদয় সিক্ত হলো ঘর্মাক্ত মানুষ এর মাঝে স্বস্তি ফিরে এলো। একটুকু বৃষ্টির বড় প্রয়োজন ছিল মানুষের প্রার্থনা হাহাকার সৃষ্টিকর্তা না মেনে পারেনি।
সবু জ এই প্রকৃতিকে টিকিয়ে রাখতে হলে প্রচুর পরিমাণে বৃক্ষ রোপণ করতে হবে বৃক্ষ রোপন ছাড়া কোন গঠন তো নেই
সবাই মিলে করব রুপন বৃক্ষরোপণ অভিযান মানব জীবনের চাহিদা পূরণে বৃক্ষেসম অবদান