ভাগ্নীকে নিয়ে গেন্ডারিয়া রেলস্টেশনে কাটানো কিছুসময়

8-05-2022

২৫ বৈশাখ ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ


আসসালামুআলাইকুম সবাইকে


আশা করি আল্লাহ তায়ালার রহমতে আপনারা সবাই ভালো আছেন। আমি আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি তবে কিছুদিন ধরে মাইগ্রেনের ব্যাথা হচ্ছে। সূর্য উঠতে থাকে আর যেন কপালের এক পাশে ব্যথা শুরু হয়। ফোনের দিকে কোনোভাবেই তাকানো সম্ভব হয়না। আজকে দুপুরেও প্রচুর ব্যাথা শুরু হয়েছিল। তো দুপুরে ট্যাবলেট খেয়ে শুয়ে পড়ি। তারপর কিছুক্ষণ অবশ্য ঘুমাই আর ব্যাথাটাও তখন কমে যায়।
কিছুদিন হলো আপুর বাসায় এসেছি বেড়াতে। বেড়াতে বললে ভুল হবে আপুদেরকে বাড়িতে নিতে এসেছি। আর ছোট ভাগ্নীটাও ভীষণ জ্বর ছিল প্রায় ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট। ডাক্তার কিছু সিরাপ দিয়েছে কিন্তু খেতে তো চায়না। অনেক কষ্টে খাওয়াতে হয়। সিজন পরিবর্তন হয়েছে এজন্য হয়তো এরকম জ্বর সর্দি হচ্ছে। ডিস্কর্ডে ইমরান হাসান ভাইয়াও বলেছিল উনার ছেলে মেয়ের দুজনেরও জ্বর কয়েকদিন ধরে। গরমে ঘাম বসে এমন হচ্ছে হয়তো। যায়হোক, ভাগ্নীকে ঔষধ খাওয়ানোর পর এখন আলহামদুলিল্লাহ সুস্থ্য হয়েছে। আর আমি ট্যাবলেট খাওয়ার পর সুস্থ্য হয়েছি। তবে জানি কাল আবার শুরু হবে ব্যাথা। তো যায়হোক ঢাকার আকাশে মেঘ জমে ঠিকই কিন্তু দেখি বৃষ্টি পড়েনা! সকাল সকাল দেখলাম অনেক মেঘ জমে আছে আকাশে কিন্তু বৃষ্টি হয়নি। বিকাল বেলা শুয়ে থাকতে এক ঘেয়েমি লাগছিল খুব। আর ভাগ্নীও ওদিকে কান্না করতেছিল বাহির থেকে কিছু খাওয়ার জন্য। তাই ভাবলাম বাহির থেকে ঘুরে আসি ভাগ্নীকে নিয়ে। ছোট বাচ্চাদের বাহিরে কোথাও নিয়ে গেলে খুব খুশি হয় তবে সমস্যা হচ্ছে সামনে দোকানে যা দেখে তাই কিনে দিতে হবে। তা না হলে কেঁদেই দেয়।

IMG20220508172053.jpg

আপুর বাসা থেকে গেন্ডারিয়া রেলওয়ে স্টেশন কাছেই। হেটেঁ গেলে দুই মিনিট লাগে। মাওয়াকে বলে নিয়ে আসছি যে তাকে ট্রেন দেখাবো। ট্রেন দেখতে পেলে খুব খুশি হবে। গেন্ডারিয়া পুরাতন ঢাকার একটি জায়গা। পুরান ঢাকার কথা খুব ভালো লাগে শুনতে। এখানে দেখার মতো অনেক কিছুই আছে তবে আমি চিনিনা তেমন। যায়হোক, ভাগ্নীকে নিয়ে রেলস্টেশন এ গেলাম হেটেঁ। রেলস্টেশন এ গিয়ে দেখি অনেক মানুষ অপেক্ষা করছে ট্রেনের জন্য। এখানে ট্রেন নারায়ণগঞ্জ হয়ে ঢাকায় আসে। তো স্টেশনের একপাশে দেখলাম অনেকেই ক্রিকেট খেলছে। ভাগ্নীকে দেখলাম কিছুক্ষণ ক্রিকেট খেলা। তার কিছুক্ষণ পরেই দেখতে একটি ট্রেন আসছে ঢাকার উদ্দেশ্যে। মাওয়া ট্রেন দেখেই খুশি হয়ে যায়।

IMG20220508171549.jpg

তবে ট্রেনের হর্ণ শুনে ভয় পেয়ে যায়। ট্রেনটা দেখলাম অনেক্ষণ অপেক্ষা করতেছিল। ক্রসিং এর জন্য অপেক্ষা করতেছিল। ঠিক ১০-১৫ মিনিট পর দেখলাম ঢাকা থেকে একটি ট্রেন আসছে। সেটা অবশ্য বেশিক্ষণ দাড়াঁইনি স্টেশনে। তারপর ঢাকাগামী ট্রেনও চলে যায়। আমি মাওয়াকে দুটি ট্রেন দেখাতে ঠিক। ঠিক সেসময় বলে উঠলো মামা! মামা! ঐ যে দেখো বিমান যাচ্ছে। বিমানের শব্দ কানে আসেনি তেমন। কিন্তু বিমান দেখে বড়সড় মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছিল খুব কাছ দিয়েই উড়ে যাচ্ছে। নীল আকাশের বুকে বিমান উড়ে যাচ্ছে। তারপর একটি ছবি তুলে নেই।

IMG20220508173643.jpg

IMG20220508173904.jpg

মাওয়া প্রথমে নামতে চায়নি রেললাইনে। আমি নামার পরে সাহস পেলো। মাওয়াকে বললাম সুন্দর করে সোজা হয়ে দাড়াঁও। ঠিকঠাকভাবেই সে দাঁড়ালো রেললাইনে। আমি তখন মাওয়ার কিছু ছবি ক্যামেরাবন্দি করে নিলাম।

IMG20220508173738.jpg

মাওয়া আমাকে বলতেছিল মামা এখানে এতো পাথর কেন? আমি বললাম ট্রেন যেন সুন্দর করে চলাচল করতে পারে এজন্য এখানে এতো পাথর দেয়া। পাথরগুলো অবশ্য সুন্দর লাগছিল। খুব কাছ থেকে রেললাইনসহ পাথরের ছবি ক্যাপচার করার চেষ্টা করলাম। ছোট বেলায় অনেক পড়েছি রেললাইন এর মাঝে ফাকঁ রাখা হয় কেন? এটা হয়তো আপনারাও পড়েছেন নিশ্চয়। খুব কাছ থেকে আজ দেখলাম। সূর্যের তাপে লোহার পাতের প্রসারন ঘটে থাকে। আর যখন ট্রেন চলাচল করে তখন রেল লাইনে ফাঁক না রাখলে বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। এজন্য মূলত রেল লাইনের মাঝে ফাঁক রাখা হয়।

IMG20220508173316.jpg

দুটি ট্রেন একসাথে ক্রস করছে রেললাইন তখন ফটোগ্রাফি করে নিলাম। যাদের রেললাইন এর পাশে বাসা বা ঘুরতে আসেন তখন এ দৃশ্যগুলো নিশ্চয় দেখে থাকেন।

IMG20220508174554.jpg

ট্রেন চলে যাওয়ার পর মাওয়াকে বললাম এবার আমাকে একটা ছবি তুলে দাও। আমি বললাম পারবে কিনা! সে তো সোজা বলে দিল পারবে। এখনকার বাচ্চারা একটু এডভান্স। তারপরও আমি দেখিয়ে দিলাম কিভাবে তুলতে হবে ছবি । উপরের এ ছবিটি তখন মাওয়া তুলে দেয়। এ ছবিটি কেমন হয়েছে জানাবেন।

DeviceOppo A12
Photographer@haideremtiaz
LocationGandaria Railway Station

মামা ভাগ্নীর বিকাল বেলা গেন্ডারিয়া স্টেশনে কাটানো মুহূর্ত আপনাদের সাথে ভাগ করে নিলাম। আশা করি পোস্টটি পড়বেন সবাই। আর ভাগ্নাীর তোলা ফটোগ্রাফি কেমন হয়েছে জানাবেন নিশ্চয়! সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মতো এখানেই শেষ করছি।



10% beneficiary for @shyfox ❤️



ধন্যবাদ

WhatsApp Image 2021-12-23 at 19.46.54.jpeg



আমি কে?

IMG20210908180509.jpg

আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।

Sort:  
 2 years ago 
 2 years ago 

ভাগ্নীকে নিয়ে গেন্ডারিয়া রেলস্টেশনে চমৎকার মুহূর্ত শেয়ার করেছেন দারুন হয়েছে।ভাগ্নী দেখতে মাশাআল্লাহ। ভাগ্নির জন্য শুভ কামনা রইলো ❤️

 2 years ago 

ভাই প্রথমে বলবো আপনি এবং আপনার ভাগ্নে দুজনে অসুস্থ, আমি আপনাদের জন্য দোয়া করি আল্লাহ যেন আপনাদেরকে সুস্থতা দান করে। সেইসাথে আপনাদের মামা ভাগ্নীর গেন্ডারিয়া রেল স্টেশনে যাওয়ার যে আনন্দঘন মুহুর্তটি সেটি খুব চমৎকার ভাবে আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। আপনাদের এই আনন্দঘন মুহুর্তটি পড়ে খুব ভালো লেগেছে। আসলে আমাদের সকলেরই এভাবে বাচ্চাদেরকে বিকেল বেলায় যেকোনো জায়গায় ঘুরানো উচিত এতে করে তাদের বন্দি দশা থেকে কিছুটা স্বস্তি ফিরে আসে। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

আপনার মাইগ্রেনের সমস্যা আছে শুনে খুব খারাপ লাগলো । এই সমস্যাটা মানুষকে খুব ভোগায় । মামা ভাগ্নি মিলে সময়টা বেশ ভালোই উপভোগ করেছেন । পুরান ঢাকার কথা শুনলেই চোখের সামনে নানা রকম মজাদার খাবার ভেসে ওঠে । পুরান ঢাকায় আসলেই দেখার মতো অনেক কিছু আছে । আপনি একটু খোঁজ খবর নিয়ে দেখেন আশেপাশেই দেখবেন অনেক কিছু পাবেন । আর মজাদার সব খাবার তো আছেই । চমৎকার লিখেছেন ।ধন্যবাদ আপনাকে ।

 2 years ago 

হ্যা ভাইয়া কয়েকদিন ধরে মাইগ্রেনের সমস্যা যেন আবার বেড়ে গেছে। ঢাকা থেকে কাল বা পরেরদিন বাড়িতে চলে যাবো এজন্য আর বের হওয়া হবেনা আর দিনের বেলা ব্যাথাও থাকে খুব 😔

 2 years ago 

কিছুদিন যাবত আমারও জ্বর ঠান্ডা, কোন কিছু ভালো লাগছেনা। দোয়া করি আপনার ভাগ্নি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাক, ছবিতে আপনার ভাগ্নিকে বেশ কিউট লাগছে মাশাল্লাহ।

 2 years ago 

হ্যা ভাই। সিজন পরিবর্তন হয়েছে তো এজন্য। সাবধানে থাকেন।

 2 years ago 

আপনার ভাগ্নিকে নিয়ে গেন্ডারিয়া স্টেশনে সময়টি দারুন কাটিয়েছেন। ছবিগুলো চমৎকার ছিল সাথে ভালো লিখেছেন। আপনি জেনে খুশি হবেন আমার ছেলে মেয়ে দুজনেই আজ আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছে।
চমৎকার পোস্ট ছিল।

 2 years ago 

যাক ভাইয়া শুনে ভালো লাগলো যে আপনার ছেলে মেয়েও সুস্থ্য আছে।

 2 years ago 

অনেক সুন্দর সময় কাটিয়েছেন ভাগ্নিকে নিয়ে ৷ সাথে সুন্দর মুহূর্তে চমৎকার কিছু ফটোগ্রাফি ও করেছেন ৷ অনেক ভালো লাগলো আমার ৷ আপনার ভাগ্নী এবং আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল ৷ ভালো থাকবেন

 2 years ago 

আপনাকে ধন্যবাদ ভাই খুব সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 2 years ago 

দেখে বোঝা যাচ্ছে যে ভাগ্নির সাথে খুব সুন্দর একটি মুহূর্ত কাটিয়েছেন ভাই। যদিও এটা শুনে খারাপ লাগলো যে আপনার ভাগ্নির 104 ডিগ্রি জ্বর। দোয়া করি আপনার ভাগ্নি যেন অতি দ্রুত সুস্থ হয়ে যায়। আর লাইনে মামা ভাগ্নে মিলে খুব সুন্দর একটি মুহূর্ত কাটিয়েছেন। আর এই রকম সুন্দর একটি মুহূর্ত আমাদের সাথে ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। দোয়া করি আপনার ভাগ্নির জন্য অতি দ্রুত সুস্থ হয়ে যায়। শুভকামনা রইলো ভাইজান আপনার জন্য।

 2 years ago 

দেখেই বোঝা যাচ্ছে ভাগ্নের সাথে ঘুরে স্টেশনে অনেক সুন্দর একটি মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন। আমরা যখন সবাই কোথাও দূরে ঘুরতে যায় তখন আমরা বেশিরভাগ সময়ই ট্রেনে করে ঘুরাঘুরি করে থাকে কারণ ট্রেন ভ্রমণ অনেক সুন্দর এবং খুব ভালো লাগে। ভাগ্নের সাথে করে এরকম সুন্দর একটি মুহূর্ত আমাদের সকলের মাঝে চমৎকারভাবে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

আর ছোট ভাগ্নীটাও ভীষণ জ্বর ছিল প্রায় ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট

ভাই কথাটি শুনে অনেক খারাপ লাগলো, মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে দোয়া করি আপনার ভাগ্নির জ্বর যেন খুব শীঘ্রই সেরে যায়। এছাড়াও আপনাদের মামা ভাগ্নের গেন্ডারিয়া স্টেশনে কাটানো মুহূর্ত গুলো পড়ে অনেক ভালো লেগেছে ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.21
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 68220.71
ETH 3321.59
USDT 1.00
SBD 2.74