মডার্ন কাপল নাটক রিভিউ [ ১০% @shyfox এর জন্য ]
27-02-2022
১৫ ফাল্গুন ,১৪২৮ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
নাটকের কিছু তথ্য
নাম | মডার্ন কাপল |
---|---|
রচনা | মহিদুল মহিম |
পরিচালনা | মহিদুল মহিম । |
প্রযোজক | আর এইচ তানভীর। |
অভিনয়ে | ফারহান আহমেদ জোভান, তানজিন তিশা, এস এম আশরাফুল আলম, দৃষ্টি দোলা |
আবহ সংগীত | আবরাল সাহীর। |
দৈর্ঘ্য | ৫১ মিনিট। |
মুক্তির তারিখ | ২৬ জুলাই, ২০২১ |
ধরন | সামাজিক,ড্রামা,রোমান্টিক। |
ভাষা | বাংলা। |
দেশ | বাংলাদেশ |
কাহিনী সারসংক্ষেপ
নাটকের শুরুতে দেখা যায় মতিন সাহেব তার প্রিয় স্ক্রুটি নিয়ে অফিসে যাচ্ছে। অফিসে যাওয়ার পথে তিনি দেখতে পান জোড়ায় জোড়ায় প্রেম চলছে। কিন্তু মতিন সাহেবের ইচ্ছে সেও প্রেম করবে। তবে বিয়ের পর তার বউয়ের সাথে। এই মডার্ন যুগে এসেও মতিন সাহেব মডার্ন হতে পারেননি। তার ইচ্ছে এমন একজনের সাথে প্রেম করবে যে কিনা ফেইসবুক,ওয়াটসঅ্যাপ,ইমু এসবে আসক্ত থাকতে না। শুধু তার প্রেমেই আসক্ত থাকবে। কিন্তু এমন মেয়ে কি পাওয়া সম্ভব এই মডার্ন যুগে? তবে তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মফৎশলের কোনো মেয়েকে বিয়ে করবে। যে শুধু মতিন সাহেবের প্রেমেই আসক্ত থাকবে। তাই তিনি পারুল নামের এক মফৎশলের মেয়েকে বিয়ে করবে। অবশেষে মতিন সাহেবের ঘরে বউ হয়ে আসে পারুল। পারুলকে পেয়ে মতিন সাহেব ভেবেছিল সে খুব ভালো একজনকে পেয়েছে। পারুল দেখতে খুব মিষ্টি। মতিন সাহেব ভেবেছিল পারুল শুধু তার প্রেমেই আসক্ত থাকে।
পরেরদিন মতিন সাহেব অফিস যাওয়ার সময় পারুল তার জন্য খাবার রান্না করে দেয় দুপুরে খাওয়ার জন্য। মতিন সাহেব পারুলকে ভালোবাসার কিছু কথা বলে। সে পারুলকে বলে এমন একজনকেই জীবনে চেয়েছিল যে কিনা কিছুই বুঝবেনা। শুধু ভালোবেসেই যাবে। কিন্তু হলো তার উল্টো। অফিসে যাওয়ার সময় পারুল মতিন সাহেবকে বলে লল। কিন্তু মতিন সাহেব লল এর মানে বুঝেনি। পারুল ও এমন কাউকে চেয়েছিল যে কিনা সবকিছু বলবে কিন্তু তার স্বামী কিছু বুঝবেনা! পারুল মতিন সাহেবকে বলে লল-২ বলে চলে যেতে অফিসে। লল-২ বলে মতিন সাহেব চলে আসে অফিসে। অফিসে এসেও সে এখনও বুঝতে পারেনি লল-২ এর মানে কি! তাই তার অফিসের সহকর্মী পিয়াল ভাইকে বলে যে লল-২ মানে কি? পিয়াল ভাই তখন বলে লল-২ মানে হলো লটস অব লাব তার মানে হলো বাংলায় বলে অনেক অনেক ভালোবাসা। মতিন তো তা শুনে মহাখুশি! কিন্তু পিয়াল ভাই যখন বলে উঠল যে এটা ফেইসবুকের ভাষা। তখনই মতিন সাহেবের মনটা খারাপ হয়ে যায়। কারণ সে চেয়েছিল এমন একজনকে সে ভালোবাসবে যে কিনা ফেইসবুক ব্যবহার করবেনা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সম্পর্কে কোনো ধারণা থাকবেনা।
রাতে মতিন সাহেব বাসায় আসে। কিন্তু সে স্বপ্নে দেখে তার বউ তাকে জড়িয়ে ধরে ভালোবাসছে। যখন বাসায় প্রবেশ করলো তখন তার বউকে বললো মিস ইউ কিন্তু তার বউ তো কোনো জবাব দিলোনা। এমন হলো কেন? এমন তো হওয়ার কথা ছিলনা। মতিন সাহেব তার বউকে জড়িয়ে ধরতে চাইলো যেইনা ধরতে গেলো তারপর পারুলের ফোনে কল চলে আসে! সে জিজ্ঞেস করলো কে ফোন দিয়েছে? পারুল বললো তার এক বন্ধু মেসেঞ্জার এ ফোন দিয়েছে! কিন্তু মতিন সাহেব মেসেঞ্জার কি জানেনা। সে তো শুনে রীতিমত অবাক হয়ে গেলো। পারুল তো অনেক এক্সপার্ট। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সম্পর্কে ভালো ধারণা আছে তার। এদিকে মতিন সাহেব বহু সিনেমায় দেখেছিল স্বামী যখন অফিস থেকে আসে তখন বউ অনেক যত্ন করে ব্লেজার খুলে দেয়। মতিন সাহেবও সে অপেক্ষায় আছেন। কিন্তু তার আশা পূর্ণ হলো কই! মতিন সাহেব তার বউয়ের কাছে হাত নাড়াচ্ছিল তার ব্লেজার খুলে দেয়ার জন্য। পারুল এদিকে মেসেঞ্জার কলে তার বান্ধবী শেপালীর সাথে কথা বলায় ব্যস্ত! মতিন সাহেবের এই ইচ্ছাটাও পূরণ হলো না!
তো রাতে টেবিলে খেতে বসে মতিন সাহেব। মতিন সাহেবের ইচ্ছে সে এক প্লেটে করে দুজন খাবে। কিন্তু পারুল লুডু খেলায় ব্যস্ত! মতিন সাহেব আবার অনলাইনে কিভাবে লুডু খেলে তা জানেনা। পারুল অনলাইনে শরীফের সাথে লুডু খেলে। শরীফকে পারুল চিনে না। মতিন সাহেব শুনে অবাক হয় চিনেনা মানুষের সাথে লুডু খেলা যায় কি করে! যাক মতিন সাহেবের এই ইচ্ছেটাও পূরণ হলোনা। একা একা বসে খেয়ে নিলো মতিন সাহেব আর পারুল লুডু খেলায় ব্যস্ত। তো পরেরদিন ছিল শুক্রবার। মতিন সাহেবের অফিস বন্ধ। আর বাহিরেও সকাল সকাল বৃষ্টি হচ্ছে। পারুল বললো বৃষ্টিতে তারা একসাথে সারা শহর ঘুরে বেড়াবে। এটা শুনে মতিন সাহেব অনেক খুশি হয়। তার অনেকদিনের স্বপ্ন বউকে নিয়ে স্ক্রুটিতে করে ঘুরে বেড়াবে। তো তারা দুজন সারা শহর ঘুরে বেড়ায় আনন্দে। তারপর খাওয়ার জন্য একটি রেস্টুরেন্ট এ যায়। সেখানে গিয়ে মতিন সাহেব দেখে এক কাপল রোমান্টিক মুডে একজন আরেকজনকে খাওয়াচ্ছে। এটা দেখে তারও ইচ্ছে হয় পারুল তাকে এভাবে খাওয়া দিয়ে। কিন্তু তার এসব ন্যাকামু একদম পছন্দ হয়নি পারুলের। যায়হোক পরবর্তীতে তারা বাসায় চলে আসে।
তো এভাবে আর মতিন সাহেব নিতে পারছিল না। এজন্য বাসায় রাগ করে সে কয়েকদিনের জন্য ঢাকার বাইরে চলে যায়। পারুল তখন তার অনুপস্থিতি বুঝতে পারে। কিছুদিন পরেই মতিন সাহেব বাসায় চলে আসে। মতিন সাহেব পারুলের জন্য একটা স্মার্টফোন কিনে নিয়ে আসে যেন সে ফেইসবুকে লুডু খেলতে পারে। কিন্তু পারুলের তা দরকার নেই। পারুল বুঝতে পেরেছে যে মতিন সাহেবকে সে সময় দিতে পারেনাই। ফাইনালি মতিন সাহেব তার ভালোবাসা খুঁজে পেল। এভাবেই মূলত নাটকটি শেষ হয়।
নাটকটি থেকে শিক্ষা
তথ্য প্রযুক্তির এ যুগে আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যস্ত হয়ে পড়ছি। ফেইসবুক, টুইটার,ওয়াটসঅ্যাপ, ইমু,ইউটিউব এসবের মধ্যে বেশিরভাগ সময় নষ্ট করে ফেলি। দিনশেষে আমাদের প্রিয় মানুষটাকে পর্যন্ত সময় দিতে পারিনা। দিন শেষে একবার মা বাবাকেও ফো দিয়ে জিজ্ঞেস করা হয়না মা খেয়েছে কিনা! প্রিয় মানুষ যখন পাশে থাকেনা তখনই তার অনুপস্থিতি আমার বুঝতে পারি। এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো আমাদের অনেকটা আলাদা করে রেখেছে প্রিয়জনদের কাছ থেকে। নাটকটি থেকে এটাই সব থেকে বড় শিক্ষা।
ব্যক্তিগত মতামত
নাটকটি আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে বলতে গেলে ভালো লেগেছে। পরিচালক বর্তমানে প্রেক্ষাপটের আলোকে খুব সুন্দর একটি গল্প নির্মাণ করেছে। জোভান ও তানজিন তিশা পারফেক্ট অভিনয় করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যে আমাদের প্রিয়জন থেকে কতটা দূরে রেখেছে তারই প্রমাণ পাওয়া যায় নাটকটিতে। ফাইনালি প্রিয় মানুষটির অনুপস্থিতি বুঝা সবমিলিয়ে ভালোই লেগেছে নাটকটি।
ব্যক্তিগত রেটিং
নাটকটির লিংক
আশা করি নাটকটি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে। নাটকটি দেখে না থাকলে লিংকে প্রবেশ করে দেখতে পারেন। আমি চেষ্টা করেছি মূল কাহিনীটা শেয়ার করার জন্য। আশা করি বুঝেছেন। সকলের সু্স্থ্যতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মতো এখানেই শেষ করছি।
ধন্যবাদ
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
Twitter share link
মডার্ন কাপল এই নাটকটি আমি আগে কখনো দেখিনি তবে আপনি যেভাবে আমাদের মাঝে রিভিউ করেছেন মনে হচ্ছে নাটকটি খুবই ইন্টারেস্টিং হবে । আমি সময় পেলে এই নাটকটি একবার দেখার চেষ্টা করব আপনি খুবই সুন্দরভাবে অনেক সাজিয়ে গুছিয়ে পোস্ট টি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনার নাটক রিভিউটি অনেক সুন্দর হয়েছে।আমি এই নাটক আগে দেখেছি। জোভান ও তিশার নাটক গুলো সত্যিই অসাধারণ হয়। আমার কাছে খুব ভালো লাগে এদের নাটকগুলো। যে বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে বর্তমান প্রযুক্তির যুগে আমরা এতটাই নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে যে প্রিয় মানুষগুলোকে সময় দিতে পারছি না। যার ফলে সম্পর্ক গুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। প্রযুক্তি আমাদের ব্যবহার করতে হবে বাস্তবতার সাথে তাল মিলিয়ে কিন্তু পরিবারকে প্রিয় মানের জন্য অবশ্যই উপেক্ষা করে নয়।
জি আপু আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ
তানজিন তিশা কে তো খুবই কিউট লাগতেছে এই নাটকে ভাই। আপনার রিভিউ পড়ে মনে হলো নাটিক টি অসাধারন হয়েছে। সময় পেলেই দেখতে হবে। জোভান আর তানজিন তিশার নাটক গুলা ভালোই হয়। আর তিশা রে তো অনেক আগে থেকেই পছন্দ আমার। ইশ যদি বউ হিসেবে পাইতাম।
এই ধরনের নাটক আমার কাছে খুবই ভালো লাগে ।অবশ্য নাটকটা আমার এখনো দেখা হয়নি ।তবে আপনার নাটকের রিভিউ পড়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম। দেখি সময় পেলে নাটকটি দেখবে ।শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
আপনার মডার্ন কাপল নাটক রিভিউ পোস্ট পরে ভালো লাগলো।আমি নাটকটা দেখি নি।তবে রিভিউ পোস্ট পড়ে ভালো লাগলো।তাছাড়া জোভান ও তিশার নাটক গুলো আমার ভালো লাগে। আসলে এই যুগে মফৎশলের মেয়ে পাওয়া যায় না ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদি ছাড়া।যাই হোক ভালে ছিলো।সময় পেয়ে একদিন দেখে নিবো।ধন্যবাদ আপনাকে।
মডার্ন কাপল নাটক রিভিউটি অনেক সুন্দর হয়েছে।জোভান এবং তানজিন তিশা আমার খুব প্রিয় একজন আর্টিস্ট।তাদের নাটকগুলো আমি প্রায় দেখে থাকি আমার কাছে অসম্ভব ভালো লাগে। মর্ডান কাপল নাটকটি আমার দেখা হয়ে ওঠেনি ব্যস্ততার কারণে তবে আপনার রিভিউ এর মাধ্যমে অনেক কিছুই জানতে পারলাম। ধন্যবাদ আমাদের সাথে নাটকটির রিভিউ শেয়ার করার জন্য। শুভকামনা রইল আপনার জন্য
মর্ডান কাপল নাটকটি এখনো দেখা হয়নি। আপনার রিভিউ পড়ে খুবই ভালো লাগলো। খুব সুন্দর একটি নাটক ।এত সুন্দর করে রিভিউ এর মাধ্যমে আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ।
আকাংখিত গল্গের অবতারণা ছিল বলে মনে হয়। যা সঠিক বর্ননায় আরোও গতিশীল ছিল।ভাল ছিল উপাস্থাপন।
জি ভাই ধন্যবাদ আপনাকে
🌹
অনেক সুন্দর এবং রোমান্টিক একটি নাটকের রিভিউ ছিল। বিশেষ করে তানজিন তিশার নাটক আমার খুব ভালো লাগে। অনেক ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য। এবং যথাশীঘ্রই এ নাটকটি দেখে নিব।