বাড়ি ফেরা || ১ম পর্ব

06-07-2022

২২ আষাঢ় ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ


আসসালামুআলাইকুম সবাইকে


আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। কয়েকদিন ধরে মিডটার্ম পরীক্ষার চাপ মাথার উপর দিয়ে গেল। আজ পরীক্ষা শেষ হলো। আর সামনে ঈদ। তাই আর বেশি দেড়ি করলাম না। আমরা বন্ধুরা সবাই পরীক্ষা দিয়ে এসে কাপড় ঘুছিয়ে নিলাম। টিকেট ছাড়া যেহেতু যাবো এজন্য সবকিছু আগে থেকেই রেডি করে নিলাম। এর আগেও নাসিরাবাদ ট্রেন দিয়ে গিয়েছি। টিকেট + টাকা ছাড়া যাওয়া যায় বলা চলে। আসার সময় অবশ্য বিজয় এক্সপ্রেস দিয়ে আসা হয় ফেনী।

IMG-20220705-WA0002.jpg

সন্ধ্যা ৬ টায় নাসিরাবাদ ট্রেন ফেনী রেলস্টেশনে আসে। মাঝে মাঝে লেইটও ও করে। লোকাল ট্রেন বলে কথা। আমরা ছয়টার আগেই ফেনী রেলস্টেশনে এ এসে বসে রইলাম। বাহিরে প্রচন্ড রোদ। কিছুক্ষণ অবশ্য রেল স্টেশনে গিয়ে বসে রইলাম। আমরা সিডিউল করে রেখেছিলাম ট্রেন হয়তো সন্ধ্যার ৭ টার দিকে আসবে। কিন্তু না! ঠিক ছয়টার কিছুক্ষণ পরেই দেখলাম নাসিরাবাদ ট্রেন চলে এসেছে। তাড়াতাড়ি করে একটা বুগীতে উঠে গেলাম। উঠে তো দেখি পুরাই ফিল আপ সব সিট! এই গরমের মধ্যে দাড়িঁয়ে যেতে হবে! কি আর করা। ব্যাগগুলা তাকে রেখে বাহিরে চলে গেলাম। এই গরমের মধ্যে ভিতরে দাড়িঁয়ে থাকাও কষ্টের। এবার ঈদের ছুটিতে অনেক মানুষই বাড়িতে যাচ্ছে। স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা ঈদের ছুটি দিয়ে দিয়েছে। লক্ষ্য করলাম মাদ্রাসার অনেক ছাত্র ট্রেনে উঠছে। আমার বন্ধু নিশাদকে বলতেছিলাম যে এবারের যাত্রায় বাড়িতে পৌছাঁতে বারোটা বেজে যাবে!! যে গরম তার মধ্যে আবার সিটও পায়নি। ট্রেন থেকে নেমে দেখলাম কিছু মালপত্র ট্রেনে উঠাচ্ছে। এজন্য ট্রেন ছাড়তেও দেড়ি হবে। আমি ট্রেনের বাহিরেই দাড়িঁয়ে থাকলাম। বাহিরেও গরম লাগতেছিল।

IMG20220705180138.jpg

এতো মানুষের ভীড় এবার। আগেরবার থেকে এবার ঝামেলাও বেশি। তো মালপত্র তোলার পর ট্রেনের হর্ন দেয় মানে ছাড়ার সংকেত দেয়। ট্রেনে উঠে পরি তখন। সিট নাই যেহেতো তাই দাড়িঁয়েই রইলাম। আমার বন্ধুরা দেখি সিট শেয়ার করে বসে পরেছে। আমি বোকার মতো দাড়িঁয়েই রইলাম। দাড়িঁয়েই বাহিরের পরিবেশ দেখতে লাগলাম জানালা দিয়ে। ট্রেন চলছে ট্রেনের গতিতে। সামনে একটি স্টেশনে দেখলাম ট্রেন আবার দাঁড়ালো। একটা সিট দেখলাম খালি হলো। আমি গিয়ে অবশ্য বসে পড়লাম। বসে বসে ফোন ইউজ করতেছিলাম। নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে ফেইসবুকে স্ক্রল করতে পারতেছিলাম না। ভাবছিলাম ডিস্কর্ডে গিয়ে আড্ডা দিবো কিছুক্ষণ। কিন্তু তা আর হলো কই? গ্রামীণ নেটওয়ার্ক ও এতো জামেলা করবে কে জানে।

দেখতে দেখতে লাকসাম স্টেশনে চলে আসলাম। বাহিরে তখনও বৃষ্টি পরছে। ট্রেনের জানালর পাশ ঘেষে বৃষ্টির ফোটাঁ সিটে এসেও পরছে। আমার শরীরও ভিজে যাচ্ছে। জানালাটা লাগিয়ে দিলাম। ট্রেন সেখানেও বেশিক্ষণ দাড়াঁয়নি। মনে মনে ভাবতেছিলাম আজ হয়তো খুব তাড়াতাড়ি বাড়ি চলে যেতে পারবো। স্টেশনে ট্রেন খুব কম দাঁড়াচ্ছিল। মেস থেকে বুট রান্না করে নিয়ে আসা হয়েছিল। ঘড়ির কাটাঁতে তখন নয়টা বেজে ত্রিশ মিনিট। পরীক্ষা শেষ করে না খেয়েই বেরিয়ে পড়েছিলাম। তাই ট্রেন বসে সিদ্ধ করা বুট বা ছোলা ভাজা খেয়ে নিলাম। অল্প খেয়ে নিলাম। বাহিরে দেখলাম বিজলী চমকাচ্ছে সেই সাথে মেঘের গর্জন। তখন অবশ্য বৃষ্টিতে ভিজতে খুব ইচ্ছে করছিল। এতো গরম লাগছিল ভিতরে কি আর বলবো। জানালার পাশে বসে মাথাটা বাহির করে একটু স্বস্তির নিশ্বাস ফেললাম। মাথা বৃষ্টি পানিতে ভিজে গেল। তাই বেশিক্ষণ রাখেনি বাহিরে। কুমিল্লা যখন ট্রেন চলে আসলো তখন দেখলাম বৃষ্টি একটু কম।

IMG20220705180146.jpg

বাহিরে নামলাম কিছুক্ষণ এর জন্য। ট্রেন থেকে কিছু মালপত্র নামাচ্ছে আবার কিছু মালপত্র ট্রেনেও তুলছে। হয়তো লেইট হবে কিছুক্ষণ। বাহিরে বসেই স্টেশনের আশপাশ দেখতে লাগলাম। মালপত্র তোলা হয়ে গেলে ট্রেনে উঠে পড়লাম। ট্রেন আবার চলতে শুরু করে দিলো। এদিকে বাবা ফোন দিলো। ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করছিল কোন পর্যন্ত আসছি? কতক্ষণ লাগবে? আমি বললাম, সকাল হয়ে যাবে আসতে আসতে। কারণ লোকাল ট্রেন বলে কথা। যায়হোক, বাবা সবসময় ফোন দিয়ে বলে, ফোনটা যেন সাবধানে রাখি, আর কারো কাছ থেকে কোনো কিছু যেন না খায়। বাবার উপদেশ কি আর অমান্য করা যায়। আমিও বাবার বাধ্য ছেলের মতো কারো কাছ থেকে ট্রেনে উঠলে কিছু খায়না, সেই সাথে ট্রেনে বসে ফোন ইউজ করিনা তেমন।

DeviceOppo A12
Photographer@haideremtiaz & my friend
LocationFeni Railway station
Date06-07-2022

ধন্যবাদ সবাইকে পোস্টটি পড়ার জন্য। দুটি পর্বে সাজিয়েছি বাড়ির ফেরার গল্প। আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে। সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। আল্লাহ হাফেজ।

চলবে



10% beneficary for @shyfox ❤️



ধন্যবাদ

WhatsApp Image 2021-12-23 at 19.46.54.jpeg



আমি কে?

IMG20210908180509.jpg

আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।

Sort:  
 2 years ago 

বেশ ভিড় ঠেলে বাড়ি গিয়েছেন দেখি। কিছু করার নেই। ঈদের সময় টাতে এটা মানতেই হবে। আর গ্রামীণ ফোনের মত বাটপার কম আছে মনে হয়। ওদের সার্ভিস সত্যিই অনেক বাজে। আর আপনার বাবার মত আমাকেও বাড়ি থেকে ঠিক একই কথা বলবে যখন জার্নিতে থাকি। ভালই লাগলো পুরো লেখাটা পড়ে। ভালো একটা সময় কাটুক পরিবারের সাথে। শুভেচ্ছা রইল।

 2 years ago 

আসলেই দাদা গ্রানীণফোন গ্রাহকের এখন তেমন ভালো সার্ভিস দেয়না। আপনার লেখাটি পড়ে ভালো লাগলো জেনে খুশি হলাম দাদা ❤️

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 61152.47
ETH 2665.18
USDT 1.00
SBD 2.55