"হ্যালো স্যার" নাটক রিভিউ
10-09-2022
২৬ ভাদ্র ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
শুভ সন্ধ্যা সবাইকে 🌼। কেমন আছেন তাহলে আপনারা সবাই? আশা করছি ভালো আছেন। আমি আলহামদুলিল্লাহ ভালোই আছি। পরীক্ষার প্রেসার আস্তে আস্তে কমতেছে। একটু রিফ্রেশমেন্ট এর জন্য নাটক দেখলেও মনটা ভালো হয়ে যায়। আর তাই আপনাদের মাঝে হাজির হলাম একটি নাটক রিভিউ নিয়ে। নাটকের নাম হচ্ছে হ্যালো স্যার। সম্প্রতি নাটকটি রিলিজ হয়েছিল। দেখার পর মনে হলো নাটকটি উপভোগ করার মতো। চাইলে আপনারাও দেখতে পারেন 😊🌼।
নাটকের কিছু তথ্য
নাম | হ্যালো স্যার । |
---|---|
রচনা | অনামিকা মন্ডল |
পরিচালনা | মোঃ তৌফিকুল ইসলাম |
প্রযোজক | মোঃ তৌফিকুল ইসলাম । |
অভিনয়ে | তৌসিফ মাহবুব, মুনতাহেনা চৌধুরী টয়া সহ আরও অনেকে। |
দৈর্ঘ্য | ৪৪ মিনিট ১২ সেকেন্ড। |
আবহ সংগীত | এপেল মাহমুদ এমিল । |
মুক্তির তারিখ | ১৭ ই আগস্ট, ২০২২ইং |
ধরন | কাল্পনিক, ড্রামা, সামাজিক |
ভাষা | বাংলা। |
দেশ | বাংলাদেশ |
চরিত্রেঃ
রবিনঃ
তৌসিফ মাহবুব ।রিয়াঃ
মুনতাহেনা চৌধুরী টয়া ।কাহিনী সারসংক্ষেপ
নাটকের শুরুতে দেখা যায় রিয়াকে পড়াচ্ছে তার শিক্ষক। রিয়ার শিক্ষক তাকে ম্যাথ করতে দিয়ে তার দিকে লোলুপ দৃষ্টিতে থাকিয়ে আছে। আর সেটা সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে পাশের রুম থেকে বসে দেখছে তার মা। রিয়া মায়ের বাধ্য মেয়ে। মায়ের কথা মতো সব কাজ করে থাকে। মা যেভাবে বলে সে সেভাবেই থাকে। নিজের ইচ্ছের বিরুদ্ধে কিছু করতে পারে না। প্রাইভেট পড়ানো শেষ করে জসীম বেরিয়ে যাচ্ছে। ঠিক সে সময় রিয়ার মা জসীমকে ডেকে এনে বলে যে, আগামীকাল থেকে রিয়াকে পড়াতে হবে না। রিয়ার বাবা চাইনা তুমি প্রাইভেট পড়াও। জসীম কোনোভাবেই টিউশনিটা ছাড়তে রাজি হচ্ছিল না। সে রিয়াকে পড়াতে চায়। কিন্তু রিয়ার দিকে যেভাবে তাকিয়ে থাকে সেটা দেখেই রিয়ার মা সন্দেহ হয়ছিল। রিয়ার সামনে এক্সাম। রিয়ার মা রিয়াকে কোচিং এ ভর্তি করাবে। কারণ সেখানে বিভিন্ন আকার আকৃতির টিচার, সহপাঠী থাকবে। কিন্তু রিয়ার কথা হলো সে সামনের পরীক্ষায় ফেল করলেও কিছু বলতে পারবেনা। যেহেতু তার কোনো টিচার নেই।
রিয়ার মা প্লেন করে রিয়ার জন্য বিবাহিত কোনো টিচার দেখবে। এজন্য ফেইসবুকে পোস্টও দিয়েছিল। ফাইনালি রবিন নামের একজন ছেলেকে পেয়ে যায়। পরদিন রবিন রিয়াদের বাসায় আসে। কিন্তু যখনই রিয়াকে দেখে তখনই পড়াতে না করে দেয়। কারণ তার হবু বউ চাইবেনা যে, কোনো সুন্দরী মেয়েকে পড়ায়। আর রিয়ায় যে রবিনের প্রেমে পড়ে যাবে না এই গ্যারান্টি কি আছে? রিয়ার মা তা শুনে রীতিমতো ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায় । রিয়ার মা রবিনকে আশ্বাস দেয় যে রিয়া কখনো কোনো স্যারের প্রেমে পড়েনি, পড়বেও না। তবে রবিন কিছু শর্ত দেয়। যা পড়া দিবে সব শিখতে হবে ; পড়া না পাড়লে বেতের আঘাতও দেয়া হবে। এতে রিয়ার মায়ের আপত্তি আছে কিনা? রিয়ার মা তো শুনে বেশ খুশি। কারণ এতোদিন পরে মনের মতো একজন শিক্ষক পেয়েছে।
পরদিন থেকে রিয়াকে পড়াতে শুরু করে রবিন। পাশের রুম থেকে তার মা সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে তাদেরকে দেখছে। রিয়া স্যারের সাথে বেয়াদবি করায় তাকে কানে ধরে উঠবস করতে বলে। রিয়ার মা দেখে তো খুশি। এবার নিশ্চিন্ত হওয়া গেল! যাক, কিছুদিন ভালোই চলছিল। তারপর একদিন রবিন ফোন দিয়ে রিয়ার মাকে বললো কাল সে আসতে পারবেনা, পরদিন থেকে আসবে। স্যার যেহেতু আসবেনা এজন্য রিয়ার মা কিছু জানালার পর্দা দেখার জন্য মার্কেটে যাবে। রিয়াকেও বলে যাওয়ার জন্য কিন্তু রিয়া একটি গল্পের বই পড়ায় আর যেতে চায়নি। তার মা চলে যাওয়ার পর রবিন চলে আসে। এবার মূল ঘটনায় আসা যাক। রবিন হলো রিয়ার বয়ফ্রেন্ড। রিয়া বাসায় একা থাকতে থাকতে বোরিং ফিল করতো, মায়ের কথার বাইরে সে কখনোই যেতে পার তো না।
যাক কিছুক্ষণ করেই রিয়ার মা চলে আসে। কিন্তু রিয়া তার মাকে ভুলভাল বুঝিয়ে রবিনকে বাসা থেকে বের করে।
রবিন আর রিয়া লুকিয়ে প্রেম করতে থাকে। রিয়া ক্লাস ফাঁকি দিয়ে চলে আসে। রবিনকে নিয়ে রিকশা দিয়ে ঘুরে বেড়ায়। রিয়া আর রবিন পরে একটি রেস্টুরেন্ট এ গিয়ে বসে কিন্তু রবিন যখন টাকা পে করতে যায় তখনই রিয়ার মায়ের সাথে দেখা হয়ে যায়। রবিন তখন রিয়াকে ফোন দিয়ে বলে যে তার মা এখানে, বাসায় চলে যেতে। রিয়া বাসায় চলে যায়। পরদিন রিয়া আবার ক্লাস ফাঁকি দেয়। রিয়ার বান্ধবীকে বলে যেন তার প্রেজেন্ট দিয়ে দেয়। কিন্তু রিয়া ভার্সিটিতে আসেনি সেটা তার মা জেনে যায়। রবিন আর রিয়া প্লেন করেছিল সিনেপ্লেক্স এ গিয়ে মুভি দেখবে। কিন্তু তা আর হলো না। রিয়া বাসায় চলে আসে। এসেই সে পেট ব্যথার অভিনয় করে যেন তার মা বুঝতে না পারে। তার মা মনে করে যে, সে ঔষধ কেনার জন্য ফার্মেসীতে গিয়েছিল। রিয়া তার মাকে ম্যানেজ করে ফেলে। ঠিক কিছুক্ষণ পরে রবিন ফোন দেয়। রিয়া রবিনকে বলে যে তার মা কিছু বুঝতে পারেনি। এদিকে আরেক গন্ডগোল লেগে যায়। রিয়ার ব্যাগে তার মা দুটি সিনেমা হলের টিকেট দেখতে পায়। সেটা দেখে রিয়ার মা বুঝতে বাকি রইলো না যে তার মেয়ে সিনেমা দেখতে গিয়েছিল।
পরদিন রবিন বাসায় আসে। রিয়ার মায়ের মন মেজাজ ভালো না এজন্য আজ না পড়াতে বলে। কিন্তু রিয়াকে দেখে সে বলে তাকে বকা দিয়েছে তার মা। রিয়ার মা বুঝে যায় তাদের ব্যাপারটা। যায়হোক, রবিন তারপর সব ঘটনা খুলে বলে রিয়ার মাকে। কেন সে বাসায় এসে প্রাইভেট পড়ায়, কেনই বা সে রিয়ার সাথে সময় কাটায়। আসলে রিয়ার একটি অচেনা ছেলের সাথে কথা হতো। এক পর্যায়ে বন্ধুত্ব তারপর ভালো লাগা। ছেলেটির সাথে রিয়া দেখা করে। কিন্তু রিয়া বুঝতে পারে ছেলেটির আচরণ স্বাভাবিক মনে হচ্ছে না। একটা পর্যায়ে রিয়াকে ব্ল্যাকমেইল করতে থাকে। রিয়া এই ব্যাপারে খুব আপসেট হয়ে যায়। তারপর সিদ্ধান্ত নেয় সে সুইসাইড করবে, সুইসাইড করতে যায়ও সে। তারপর রবিন সেখান থেকে রিয়াকে বাচাঁয়। আর তখন থেকেই রিয়ার সাথে রবিনের বন্ধুত্বের শুরুটা। রিয়ার মা ব্যাপারটা শুনে অনেক অনুতপ্ত অনুভব করে। তারপর রিয়ার মা চাইনা তার মেয়ে এমন একজন ভালো বন্ধু হারাক। আর বন্ধু্ত্বের মাধ্যমেই সেখানে নাটকটির সমাপ্তি ঘটে।
শিক্ষণীয় দিক
আসলে নাটকটি আমার কাছে শিক্ষণীয় মনে হয়েছে। আমাদের মা বাবা যদি আমাদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ না করে তাহলে জীবনে এমন অনেক ঘটনাই ঘটে থাকে যা শেয়ার করা যায় না। আসলে শাসন ভালো তবে অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো নয়। এজন্য মা বাবাদের উচিত তাদের সন্তানদের সাথে সৌহার্দপূর্ণ ও বন্ধুসুলভ আচরণ করা।
ব্যক্তিগত মতামত
নাটকটি আমার কাছে ভালোই লেগেছে। নাটকের কাহিনীর প্রেক্ষাপট ভিন্ন ছিল। রিয়া চরিত্রে টয়া চমৎকার অভিনয় করেছে। আসলে অনেকদিন পর টয়ার অভিনয় দেখলাম। তৌসিফ মাহবুব একজন শিক্ষক ও একজন বন্ধু হিসেবে চমৎকার অভিনয় করেছে। পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম চমৎকার একটি নাটক উপহার দিয়েছে।
ব্যক্তিগত রেটিং
নাটকটির লিংক
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
Hello friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
Link
আসলে বাব মায়ের শাষণে ও পাশে থাকাই একজন সন্তানের এগিয়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট। যাইহোক রিয়া চরিত্রে অভিনিত টয়া বেশ ভালো অভিনয় করেছে তা বুঝাই যাচ্ছে। আর তৌসিফ মাহবুব ও খুব ভালো অভিনয় করে। একটু দেখার ইচ্ছে করছে।
একটু না পুরোটাই দেখে নিয়েন, উপভোগ করতে পারবেন 😊🌼। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
আপনি চমৎকার একটি নাটকের রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ভাইয়া। নাটকটি এর আগে আমি দেখিনি আমার কাছে নতুন লাগলো। তবে নাটকটি পুরো গল্প পড়ে দেখতে ইচ্ছে করছে। আমি অবশ্যই একবার দেখার চেষ্টা করব। ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া এত সুন্দর নাটকের রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
জি আপু নাটকটি আশা করি উপভোগ করতে পারবেন। আপনার জন্য দোয়া রইল 🌼
তৌসিফ এর নাটক গুলো সব সময় খুব ভালো লাগে আমার কাছে। তৌসিফ খুব ভালো এবং সুন্দর অভিনয় করতে পারেন। তার হ্যালো স্যার নাটকটি আমার দেখা হয়নি। কিন্তু এমন নাটক গুলো আমার বেশিরভাগই দেখা হয় । রিভিউটা পড়ে খুব ভালো লাগলো তাই অবশ্যই সময় পেলে নাটকটি দেখে নিব।
জি আপু নাটকটি দেখলে আশা করি উপভোগ করতে পারবেন 😊🌼। ধন্যবাদ আপনাকে