ট্রেন জার্নি [ কমলাপুর টু ফেণী ]|| ১ম পর্ব
27-07-2022
১২ শ্রাবণ ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে ভালো আছেন। আমি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। বেশ কিছুদিন ধরেই ঢাকায় অবস্থান করতেছিলাম আপনারা হয়তো জানেন। সেই কবে ঈদে বাড়িতে এসেছিলাম এর পরে আর ফেনীতে যাওয়া হয়নি। কলেজে ক্লাস শুরু হয়ে গেছে ইতোমধ্যে। তাই আর বেশিক্ষণ থাকাও যাবে না। এই ৭ম সেমিস্টার খুব ইম্পরট্যান্ট। ২৫% যাবে বোর্ডে রিচাল্ট এর। বাড়িতে থাকলে পড়ালেখা তেমন হয়না। যা হয় মেসে গিয়েই। তার মধ্যে আবার আমি ঢাকায় এসেছিলাম আপুদের সাথে। বাড়ি থেকে বলে এসেছিলাম যে ঢাকা থেকে ফেনীতে চলে যাবো।
এরই মাঝে শুনি ফরম ফিল আপের সিগনেচার করতে হবে। তারিখ দিয়েছে ২৫ তারিখের! টেনশন যেন বেড়ে গেল। অনলাইনে ২৪ তারিখের টিকেট দেখলাম কিন্তু পেলাম না। কি আর করার! ২৫ তারিখের টিকেট সংগ্রহ করতে হবে।
কমলাপুর টু ফেনী পর্যন্ত টিকেট কাটলাম। ঢাকা থেকে চট্রগামগামী চট্রলা এক্সপ্রেস যাবে। ট্রেন দুপুর ১ টায়। এর আগে এয়ারপোর্ট থেকে গিয়েছিলাম চট্রলা এক্সপ্রেস দিয়ে। সেবার বন্ধুর বাসায় থেকে পরদিন রওনা দিয়েছিলাম। কিন্তু এবার আপুর বাসায় ছিলাম। আপুর বাসা ঢাকার গেন্ডারিয়াতে। এখান থেকে নাকি কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনও কাছে। রিকশা দিয়ে গেলে বেশিক্ষণ লাগে না। তবে মনের মধ্যে ভয় কাজ করছিল যে কমলাপুর এ গিয়ে ট্রেন পাবো তো? কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন এতোদিন টিভিতেই দেখে আসছি ; বাস্তবে দেখার সৌভাগ্য হয়নি। আপনারা জানেন যে, কমলাপুরে অবস্থান করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী নাম তার রনি। রেল স্টেশনে টিকেট সংগ্রহে যে কতো ধরনের দুর্নীতি হয় সেটাই তিনি প্রমাণ করেছেন। রেলের অব্যবস্থাপনার জন্য ইতোমধ্যে তিনি ছয় দফা দাবি পেশ করেছেন। ছয়দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কোথাও যাবে না। আমার মাঝে আবার আগ্রহ কাজ করছিল যদি দেখা হয় কমলাপুরে। তাহলে তো আমিও যোগদান করতে পারতাম।
ট্রেন দুপুর ১ টায় ছাড়বে কমলাপুর থেকে। আপুর বাসা থেকে বেরিয়ে পড়ি সাড়ে ১১ টার দিকে। এতো আগে বের হলাম কারণ ঢাকা শহরে যে জ্যাম! একবার জ্যামের কবলে পড়লে এক-দুই ঘন্টা বসে থাকতে হয়। গেন্ডারিয়া থেকেই রিকশা যায় কমলাপুর স্টেশনে। এক রিকশা মামাকে বললাম কমলাপুর যাবে, ভাড়া কত? রিকশা মামার ভাড়া শুনে আমার মাথাঘুরতেছিল। ২০০ টাকা চেয়ে বসে আছে। অথচ ম্যাপে দেখাইতেছে ১০ মিনিটের রাস্তা! যায়হোক, রিকশা মামার সাথে আর কথা বাড়ালাম না। গেন্ডারিয়া রেলস্টেশন এর সামনে দেখলাম বাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে একজন লোক। যানজটের এই শহরে আমি মনে করি বাইক দিয়ে চলাচল করাই ভালো। চিপা রাস্তা দিয়েও চালিয়ে নিয়ে যেতে পারে। বাইকের লোককে বললাম যে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে যাবে কি না? লোকে রাজি হলো আর ভাড়া চাইলো ১০০ টাকা। কথায় থাকেনা বাঙালি একটু আরামপ্রিয় বেশি। তাই আর কথা বাড়ালাম না ১০০ টাকা ভাড়া দিয়ে যাবো বলে রাজি হলাম। বাইকের লোক আমার মাথায় হেলমেট পড়িয়ে দিলো।
বাইক দিয়ে কমলাপুর পর্যন্ত আসতে বেশিক্ষণ লাগেনি। বাইকের লোক কমলাপুর স্টেশনের একটু কাছে নামিয়ে দিয়ে বললো নারিকেল গাছটার এখানেই স্টেশন। যানজটের কারণে ভিতের যেতে পারেনি। আমি টাকা দিয়ে হাটাঁ শুরু করলাম। দুই মিনিট হাটাঁর পর সেই কাঙ্খিত স্টেশন দেখতে পেলাম। ভিতরে গিয়ে আমি রীতিমত অবাক হয়ে যায়! এতো বড় স্টেশন মনে হচ্ছিল আমার কাছে। কোন পাশ দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করতে হয় তা কয়েকজন লোককে ফলো করে প্রবেশ করলাম। ভিতরে গিয়ে আসলে আমি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বসলাম। আমার ট্রেন কোনপাশে? এরই মাঝে দেখলাম অনেকেই বের হচ্ছে। ভিতরে দেখি প্লাটফর্ম কয়েকটা। কোন প্লাটফর্ম এ আমার ট্রেন। এরই মাঝে এক ভদ্রলোককে দেখতে পেলাম বসে পেপার পড়ছে। আমি সালাম দিয়ে বললাম, আংকেল চট্রগামগামী চট্রলা এক্সপ্রেস ট্রেনটা কোন প্লাটফর্ম এ? তারপর আমাকে বললো যে এটা সামনে গিয়ে ৬ নাম্বার প্লাটফর্ম এ দেখতে পাবে। এসে দেখতে পেলাম ৬ নাম্বার প্লাটফর্ম এ একটি ট্রেন দাড়িঁয়ে আছে। যাক কিছুটা স্বস্তি পেলাম। ঘড়িতে তখন দুপুর ১২ টা বাজে। তার মানে আর এক ঘন্টা বাকি ট্রেন ছাড়ার। তারপর একটি বাক্স এর মতো বসার জায়গা পেলাম। উপরে ফ্যান ছিল কিছুক্ষণ এর জন্য শরীর ঠান্ডা করে নিলাম। এদিকে আমি ফেইসবুকের মধ্যে
ডুব দিলাম।
চলবে
Device | Oppo A12 |
---|---|
photographer | @haideremtiaz |
location | w3w |
date | 25 july, 2022 |
10% beneficiary for @shyfox❤️
ধন্যবাদ
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
ট্রেন জার্নির মজাই আলাদা। আমি ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ট্রেন জার্নি করছে। আপনার অনুভূতি পড়ে খুবি ভালো লাগছে। শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনাকেও ধন্যবাদ ভাইয়া চমৎকার একটি মন্তব্য করার জন্য।
আসলে কখনো ট্রেন ভ্রমণ করা হয়নি। তবে ট্রেনে ভ্রমণ করতে আমার খুবই ভালো লাগে। আর ইচ্ছাও আছে হয়তো আমাদের ওখানে যদি ট্রেন যায় তাহলে অবশ্যই করবো। আপনি আজকে ট্রেনে ভ্রমণ করেছেন আর সেই মুহূর্তগুলো শেয়ার করেছেন ধন্যবাদ আপনাকে।
ভাইয়া আমার ট্রেন ভ্রমণ করতে খুবই ভালো লাগে, বাসে জার্নি করতে পারিনা। ধন্যবাদ আপনাকে চমৎকার মন্তব্যের জন্য।