আরেকটি অধ্যায়ের সমাপ্তি | ১ম পর্ব

19-08-2022

৪ ভাদ্র ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ


আসসালামুআলাইকুম সবাইকে

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি ভালো আছেন। আমি আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। যায়হোক, আপনাদেরকে বলেছিলাম যে কলেজের শেষ দিনের কিছু মুহূর্ত আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। আসলে এটাকে বিদায়ী সংবর্ধনাও বলা যায় না। কারণ কিছুদিন পরেও কলেজের প্রাঙ্গনে আসতে হবে। কিন্তু কখনো আর বন্ধুদের সাথে আড্ডা জমিয়ে ক্লাস করা হবে না। সেই হিসেবে বলা যায় এটা বিদায় সংবর্ধনা।

IMG-20220817-WA0053.jpg

স্যারদের সাথে ফেনী পলিটেকনিক এ দীর্ঘ একটি বছর চলেছি। স্যারদের শাসন-বারণ আমাদের জন্য অবশ্য মঙ্গলকর। ২০১৮ সালে মাধ্যমিক লাইফের ইতি ঘটিয়ে ডিপ্লোমা লাইফে পা দিয়েছিলাম। যা আরেকটি অধ্যায়ের সমাপ্তি হতে চলেছে। স্কুল লাইফে সেবার বন্ধুদের সাথে দিনটি বেশ উপভোগ করেছিলাম। ভাবতেই অবাক লাগছিল যে আবারো আরেকটি অধ্যায়ের সমাপ্তি হতে চলেছে। যায়হোক দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য আমরা সবাই প্লেন করি মিলনমেলা ও দোয়ার মাহফিল আয়োজন করার। আসলে স্যারদের কাছে আমাদের ডিপার্টমেন্ট এর সুনাম শুনেছি। প্রতি বছর খুব সুন্দর করে সুশৃঙ্খল করে দিনটি পালন করে থাকে। সবার সহযোগিতায় আমরা অনুষ্ঠানটি আয়োজন করার প্লেন করি। মূলত আমাদের ক্লাসের ক্যাপ্টিন রনিমের উপর গুরু দায়িত্বটা দেয়া। একটি অনুষ্ঠান পরিচালনা করতে আসলে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। এজন্য অনুষ্ঠানটি সুন্দরভাবে সম্পন্ন করার জন্য জনপ্রতি ৬০০ টাকা করে নির্ধারণ করা হয়। শুরুতে ১০০০ টাকা করে নির্ধারণ করা হয়েছিল কিন্তু সবার আর্থিক অবস্থা বিবেচনায় ৬০০ টাকা করে নির্ধারন করা হয়। আমি অবশ্য আর্থিক সংকটে ছিলাম। আসলে মাস শেষে হাত একদম ফাকাঁ। তবে জীবনের আরেকটি অধ্যায় শেষ করতে যাচ্ছি সেখানে না থাকলে কি হয়! ৬০০ টাকা অবশ্য ম্যানেজ করলাম এক বন্ধুর কাছ থেকে।

IMG-20220817-WA0008.jpg

IMG-20220817-WA0024.jpg

সবার কাছ থেকে ১৪ তারিখের আগেই টাকা সংগ্রহ করা হয়। অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে ১৭ তারিখে। প্লেন করা হয় সবাই এক ড্রেস পরিধান করবে। এজন্য টি-শার্ট অর্ডার দেয়া হয় আগে থেকেই। আর লেখালেখির জন্য সাদা একটি টি শার্টের ব্যবস্থা করা হবে। এরই মাঝে টি-শার্ট এর কালার নিয়ে সমস্যা হয়ে পড়ে। অনেকের টি-শার্ট এর কালার চয়েস হয় আবার অনেকের হয়না। টি-শার্ট এ ডিজাইন ভালো হয় নি। এজন্য টি-শার্ট প্রথম যেটা নির্ধারণ করা হয়েছিল সেটা বাদ দিয়ে দেয়া হয়। আবার নতুন করে টি-শার্ট অর্ডার দেয়া হয়। টোটাল ৯০ টি টি-শার্ট এর ব্যবস্থা করা হয়। আর যেহেতু সব বন্ধুরাই থাকবে তাই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করার জন্য সাউন্ড বক্স ভাড়া করে নিয়ে আসার প্লেন করা হয়। ডিপ্লোমা লাইফটাকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য ক্রেস্টের ব্যবস্থা করা হবে। এ ব্যাপারটা আমার কাছে খুব ভালো লেগেছিল আসলে। ১৬ তারিখের মধ্যে টি-শার্ট এর ডিজাইন কমপ্লিট। আমরা মেসের সবাই গিয়ে সকাল সকাল টি-শার্ট নিয়ে আসি। টি-শার্ট এর কালার সবার পছন্দ হয়েছিল। আর একটি দিনই তো সবাই একসাথে সেইম টি-শার্ট পড়ে ফটোসেশন করবে।

IMG-20220817-WA0059.jpg

আগের দিন রাতে অবশ্য ভালোও লাগতেছিল আবার খারাপও। আরেকটি জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় যে শেষ করতে চলেছি। হয়তো এর পরে অনেকের সাথে দেখাই হবে না। আবার খুশি লাগতেছিল যে সবার সাথে দিনটি উদযাপন করতে পারবো। যায়হোক, আমাদের বলেছিল সকাল নয়টা থেকে অনুষ্ঠান শুরু হবে। আমরা অবশ্য সবাই রেডি হয়ে কলেজে চলে যায়। আমাদের সাথে আরও কিছু ডিপার্টমেন্ট এর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। কলেজে গিয়ে দেখি এখনও সবাই আসেনি। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে কিছু ফটোগ্রাফি করে নিলাম। হয়তো কখনো এভাবে আর ছবি তোলা হবে না। আমাদের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল কলেজের অডিটোরিয়াম এ। কিন্তু অডিটোরিয়াম এ গিয়ে দেখি সিভিল ডিপার্টমেন্ট এর প্রোগ্রাম হচ্ছে। আমাদের প্রোগ্রাম যেখানে সকাল নয়টায় শুরু করা হওয়ার কথা ছিল। তারপর সিদ্ধান্ত হলো অনুষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু হবে দুপুর ২ টা থেকে। সিভিল ডিপার্টমেন্ট এর অনুষ্ঠান শেষ হলে আমাদের অনুষ্ঠান শুরু হয়ে যাবে। আর স্যারেরাও তখন থাকবে। আমরা বন্ধুরা সবাই মিলে শাহাবুদ্দিন হোস্টেলের সামনে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম। সেই সাথে কিছু ফটোগ্রাফি করেও নিয়েছিলাম।

IMG-20220817-WA0011.jpg

এদিকে আমাদের বলেছিল সকালের নাস্তার ব্যবস্থা করা হবে। অনেকেই সকালের নাস্তা করেই চলে আসে ক্যাম্পাসে। রনিম আমাদের সাবইকে বললো আমাদের ডিপার্টমেন্ট এর সার্কটি ল্যাবের ক্লাসরুমে গিয়ে বসতে। ইলেকট্রিক্যাল ডিপার্টমেন্ট এর বেশিরভাগ ক্লাস এ ল্যাবে করেছি। এজন্য ক্লাসরুমটা প্রতি আলাদা একটা ভালো লাগা কাজ করে। আর কখনো এই ক্লাসে বসে ক্লাস করা হবে না। ক্লাসরুমটা বেশ অগোছালো ছিল। আমরা প্লেন করি ক্লাসরুমটা সাজাবো। অনেক বেলুন আনা হয়। বেলুন ফুলিয়ে দেয়ালে টাঙানো হয়। ক্লাসের রুমের বেঞ্চগুলো সিরিয়াল করে সাজিয়ে ফেলি। বেলুন দিয়ে রুম টাঙাতে বেশ সুন্দর লাগছিল। আমরা ক্লাসে বসেই আড্ডা দিতেছিলাম। ঠিক কিছুক্ষণ পর আমাদের সকালের নাস্তা চলে আসে। কিন্তু সবাই আবার নিচে চলে যায় ফটোসেশনের জন্য। নিচে গিয়ে অবশ্য সবাই একসাথে কিছু ফটোগ্রাফি করে নিলাম। তারপর আবার ক্লাসরুমে এসে রনিম সবাইকে রোলের সাথে মিলিয়ে নাস্তা দিতে শুরু করলো। আসলে দায়িত্ব পালন করা বেশ কঠিন একটা কাজ। সকালের নাস্তায় একটি কলা, সিঙ্গারা আর নিমকি ছিল। যায়হোক, সকালের নাস্তা খেয়ে আমরা চলে যায় কলেজের মাঠে। তখন এগারোটা বেজে গেছে। আমাদের অনুষ্ঠান শুরুরও অনেক সময় বাকি। ডিএসএলআর ক্যামেরা নিয়ে সবার বেশ কিছু ছবি তোলা হলো। এদিকে রোদের তাপমাত্রাও বাড়তেছিল।

DeviceOppo A12 & Samsung Galaxy A12
Photographer@haideremtiaz & my friend
LocationFeni polytechnic Institute
Date17 August, 2022

চলবে



10% beneficary for @shyfox ❤️

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNzq2MSXKSji21JRspt4nqpkXPR5ea7deLzvmJtuzVBwdLJUpBqtgAZ5gHtHPbayD2jR3CWqjkJ.png

ধন্যবাদ সবাইকে



WhatsApp Image 2021-12-23 at 19.46.54.jpeg



আমি কে?

IMG20210908180509.jpg

আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59453.81
ETH 2607.50
USDT 1.00
SBD 2.39