অনুগল্পঃ নৈতিকতা
28-08-2022
১৩ ভাদ্র ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন। আমি ভালো আছি। তবে পরীক্ষা চলছে আপনারা সবাই হয়তো জানেন। তো আজকে একটি গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য চলে এলাম। আশা করি শেষ পর্যন্ত গল্পটি পড়বেন।
রহিম বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে। ছোট বেলা থেকেই বাবা মায়ের আদর্শে বড় হয়েছে। সহজ সরল ছেলে রহিম। গ্রামের মানুষজন তাকে অনেক ভালোবাসে। কোনোরকম জামেলা বা বন্ধুদের আড্ডায়ও তাকে দেখা যায়। রহিম এবার কলেজে উঠেছে। বাবা মায়ের স্বপ্ন ছিল ছেলে ইঞ্জিনিয়ার হোক। তাই সে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হয়েছে। কলেজে গিয়ে রহিমের বেশ কিছু বন্ধুবান্ধব হয়েছে। সবার মধ্যে রহিম একটু খোদা ভীরু। অন্যায় ও পাপ কাজ থেকে সবসময় নিজেকে বিরত রাখার চেষ্টা করে। কলেজের শুরুতে রহিমের মানিয়ে নিতে কষ্ট হলেও ধীরে ধীরে সে মানিয়ে নিয়েছে। কলেজের পড়াশোনা ভালোই চলছিল। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া শেষের দিকে। এজন্য পড়াশোনার চাপটাও পড়ে যায় রহিমের উপর। এবারও থাকে কলেজে টপ স্টুডেন্টদের মাঝে থাকতে হবে। বেশিরভাগ সময় পড়াশোনা করে।
কলেজ থেকে নোটিশ দেয় রহিমদের সেশনাল খাতা দেয়ার জন্য। রহিমের অবশ্য সেশনাল খাতা করা হয়েছে। তবে স্যার বলে দেয় নতুন খাতা দিতে হবে। কারণ একসাথে তিন সাবজেক্ট এর খাতা নিবে। রহিম বিপাকে পড়ে যায় । এতো কষ্ট করে সেশনাল খাতা করলো এখন স্যার এটাই নিবে না বললো? এদিকে মাসের শেষের দিকে। হাতে তেমন টাকাও নেই রহিমের। স্যার বলে দিয়েছিল রহিমকে ১৬৪ পেইজের খাতা লাগবে। ১৬৪ পেইজের একটি খাতার দাম ৫০ টাকার মতো। রহিমের কাছে আছে ২০ টাকা। আর ৩০ টাকা কোনো বন্ধুর কাছ থেকে সংগ্রহ করবে। পরেরদিন রহিম কলেজে যায়। গিয়ে দেখে সবাই দোকানে খাতা কেনায় ব্যস্ত। নতুন খাতা দিতে হবে স্যারকে। রহিম এরই মাঝে একটি খাতা নেয়। রহিম খাতা নিয়ে পেছনে চলে আসে। এতো ভীড়ের মধ্যে খুব কষ্টে খাতা সংগ্রহ করাটাও কষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। রহিম দোকানদারকে টাকা দেয়নি। দোকানদার খেয়ালও করেনি খাতা নিয়েছে কিনা!
খেয়াল না করারই কথা কারণ ভীড়ের মধ্যে খাতা সংগ্রহ করা কঠিন হয়ে পরছিল। রহিমের সব বন্ধু খাতা সংগ্রহ করে নেয়। সবার টাকা দেয়া কম্প্লিট। এরই মাঝে রহিমের বন্ধু মেহেদী বলে টাকা দেয়া লাগবেনা, খাতা নিয়েছে রহিম সেটা দোকানদার খেয়াল করেনি। রহিম এ অন্যায় কাজ করতে পারবেনা। কারণ ব্যবসা করে মানুষ লাভের আশায় আর এই দোকানদারের সাথে রহিমের ভালো সম্পর্ক। রহিম মেহেদীকে বলে কাজটা ঠিক হবে না। রহিম চাইলেই খাতার টাকা না দিলেও দোকানদার জানতো না। কিন্তু এ অন্যায়ে ভবিষ্যৎ এ তার সাথেও এমন হতে পারে। রহিম তারপর খাতার টাকা দিয়ে দেয়। খাতা নিয়ে রহিম ক্লাসে চলে যায়। মোরাল অব দা স্টরি হচ্ছে এক টাকা মেরে কখনো বড়লোক হওয়া যায় না। নৈতিকতা বড় গুণ। নৈতিকতা সম্পন্ন ব্যক্তিগণ সবজায়গায় সম্মান পেয়ে থাকে। এজন্য আমাদের মাঝেও নৈতিক গুণাবলি লালন করতে হবে।
যায়হোক, আজ এই পর্যন্তই। আবারো হাজির হবো নতুন কোনো গল্প বা পোস্ট নিয়ে। আশা করি আজকের গল্পটি আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মতো এখানেই বিদায় নিচ্ছি।
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
Link
বাহ! বেশ চমৎকার অনুগল্প লিখেছেন ভাই আসলে মানুষের নৈতিকতাটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় গুণ আর সেটা রহিমের মধ্যে পুরোপুরি ভাবেই বিদ্যমান। আসলে এরকম বেশ কিছু নীতিবান মানুষ আছে বলেই পৃথিবীটা এখনো সুন্দরভাবে চলছে। অসংখ্য ধন্যবাদ চমৎকার একটি অনুগল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
জি ভাইয়া নৈতিকতা হচ্ছে বড় গুণ। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া চমৎকার একটি মন্তব্যের জন্য।