বিকালের সুন্দর মুহূর্ত
16-05-2022
২ জৈষ্ঠ ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি ভালোই আছেন। আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। জৈষ্ঠ মাস শুরু হয়ে গেছে। আশে পাশে ফলমূল পাকাঁও শুরু করে দিয়েছে। ইতোমধ্যে লক্ষ্য করলাম গাছের কাঠাঁল পাকাঁ শুরু করেছে। এখনও কাঠাঁল খাওয়া হয়নি। আমাদের গাছে প্রতিবছরই মোটামোটি ভালোই কাঠাঁল হয়ে থাকে।
যায়হোক, সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি বাহিরে রোদ অনেক। আমাদের কিছু ধান ছিল এগুলো বাহিরে দেয় শুকানোর জন্য। জৈষ্ঠ মাসের রোদ নরমালি বেশিই থাকে অন্য মাসের তুলনায়। ষড়ঋতুর এই বাংলাদেশে একেক সময় একেক ঋতুর আগমন ঘটে। বৈশাখ-জৈষ্ঠ বাংলাদেশে গ্রীষ্মকাল। আর গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রাও বেশি থাকে। তবে জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের জলবায়ুও পরিবর্তিত হচ্ছে। বৈশাখ মাসে কাল বৈশাখীর তান্ডবে বাংলাদেশের অনেক জায়গায় ঘর বাড়ি ভেঙ্গে যায় ; ফসলী অনেক জমি নষ্ট হয়ে। কিন্তু এবার হলো তার উল্টো। ঝড়ের আভাস তো দূর থাক, বাতাসও নেই তেমন। এটা অবশ্য ভালো হয়েছে এক হিসেবে । কারণ কৃষকদের ফসল আগের তুলনায় এবার ভালো হয়েছে।
দুপুরের কিছুক্ষণ আগে আমাদের ধানগুলো প্রায় শুকানোর মতো অবস্থা। ঠিক সেসময় আকাশ দেখলাম কালো মেঘে ঢেকে গেল। ধান ঘরে তুলতে তুলতে দেখি বৃষ্টি পড়া শুরু হয়ে গেছে। তাড়াহুড়ো করে ধান ঘরে নিলাম। একি! একটুপরে দেখি আবার রোদ উঠে গেছে। তখন কেমন লাগে! আবার চালা বের করে ধান বাহিরে আনলাম শুকানোর জন্য। যাক, সব ধান বাহিরে দিয়ে গোসলের কাজ সেরে নিলাম। আর আবার ধান ঘরে তোলার দায়িত্ব আমার বড় ভাইকে দিলাম।
বিকালবেলা দেখলাম আবার আবহাওয়া ঠান্ডা এবং আকাশে ঘন কালো মেঘ জমে ছিল। ঘরে ভিতরে কোনোভাবেই থাকতে পারতেছিলাম না। বাড়ির পাশে সব জমি কাটাঁ হয়ে গিয়েছি। কৃষকেরা তাদের ধানও ঘরে তুলে নিয়েছে। বাড়ি থেকে বেরুতেই লক্ষ্য করলাম কিছু ছেলে ফুটবল খেলছে। এ সময়টাতে ফুটবল খেলার ধুম পড়ে আমাদের এখানে। কারণ তখন জমি সব কাটাঁ হয়ে যায়। আর আমাদের দিকে খেলারও তেমন উপযুক্ত মাঠ নেই। তাই জমির ধান কাটা হলেই পরে খেলাধুলা করা হয়। তো কিছু ছোট ছেলেরা দেখলাম ফুটবল খেলা করছে। আমি দূর থেকেই দেখতে পেলাম। তো আমিও গিয়ে তাদের খেলা উপভোগ করলাম। ছোটবেলায় ঠিক এসময়টাতে আমিও কতো ফুটবল খেলেছি! ছোট বাচ্চাদের খেলা দেখে আমারও খেলতে ইচ্ছে করছিল। কিন্তু কি আর করার খেলার উদ্দেশ্যে তো আর বেরুইনি। আমি দাড়িঁয়ে দাড়িঁয়ে তাদের খেলা উপভোগ করতে থাকলাম।
আমি প্রায় খেলার শেষ মোমেন্টের কিছুক্ষণ আগে গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখি একদল পাচঁটা গোল দিয়ে দিছে আর আরেকদল দুই গোল দিতে পেরেছে। এখানে সবার বয়সই প্রায় সমান বলা চলে।
আমাদের বাড়ির পাশেই এদের বাড়ি। অথচ আমি তাদেরকে চিনিনা ভালো করে। আর চিনবোই বা কেমন করে বাড়িতে তো আর থাকা হয়না তেমন। কয়েকজনের সাথে পরিচয় হয়ে নিলাম। আরাফাত,রাকি,রনি আরও কয়েকজন তাদের সাথে খেলা করছিল। তো আমি যখন ফোন দিয়ে ছবি তুলতেছিলাম তাদের অনেকেই আমার ক্যামেরার সামনে এসে পোজ নেয়ার চেষ্ট করছিল।
এদিকে সন্ধ্যায় ঘনিয়ে এসেছিল। কিন্তু তাদের খেলা অবিরামভাবে চলতেছিল। এরকম ফুটবল খেলার বিশেষত্ব হচ্ছে নির্দিষ্ট কোনো ধরাবাঁধা টাইম নেই 😐। যতক্ষণ পর্যন্ত না সন্ধ্যায় হয় ততক্ষণ পর্যন্তই এই খেলা চলতে থাকে। আমি যাওয়ার পরে আরও দুইগোল হলো। মোট গোল হলো এক পক্ষের আটটি আর এক পক্ষের দুইটি রয়ে গেল। সবাই দেখি খেলা শেষে অনেক ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিল। তারপর আমি তাদেরকে বলি এবার খেল বন্ধ করে দাও। তখন বললাম তোমরা বল নিয়ে দাড়াঁও সবার ছবি তুলবো একসাথে। তখন সবাই একসাথে ছবি তুলে নিলাম। তারা দেখলাম ব্যাপারটা বেশ উপভোগ করেছে। তারপর তারা অবশ্য বাড়িতে চলে যায় আর আমিও বাড়িতে এসে পড়ি। ভালো একটি সময় কাটিয়েছি তাদের সাথে।
Device | Oppo A12 |
---|---|
Photographer | @haideremtiaz |
Location | W3w |
Date | 16 May,2022 |
যায়হোক, আজ এই পর্যন্তই । ধন্যবাদ সবাইকে পোস্টটি পড়ার জন্য। সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মতো এখানেই শেষ করছি।
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
আমিও ফুটবল খেলছি গ্রামের ধান ক্ষেতের জমি তে। বিশেষভাবে করে বৃষ্টির দিনে ফুটবল বল খেলতে বেশি ভালো লাগে। আপনার পোস্ট পড়ে আমারও এখন ফুটবল খেলতে মন চাচ্ছে ভাই। শুভকামনা রইলো।
ঠিক বলেছেন বৃষ্টির দিনে ফুটবল খেলার মজাই অন্যরকম । ছোটবেলায় খেলেছি এভাবে ফুটবল ।
Link
আপনার পোস্টটি পড়ে এবং ফটোগ্রাফি গুলো দেখে আমারও সেই সব দিনের কথা মনে পড়ে গেল। ছোটবেলায় যখন গ্রামে যেতাম দাদা বাড়ির পাশের ধান কাটার পর খালি জায়গা গুলোতে পরিষ্কার করে ফুটবল খেলতাম। সেসব স্মৃতি গুলো আসলেই অনেক আনন্দের। আপনার আনন্দঘন মুহুর্তটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ
আমাদের এদিকে ধান কাটার পরেই খেলা শুরু হতো। ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া
আপনার কাজকর্ম থেকে শুরু করে কাটানো মুহূর্তগুলো অসাধারণ ছিল। তবে হ্যাঁ আপনি ঠিকই বলেছেন গ্রাম অঞ্চলের ছেলেদের ফুটবল খেলার কোন সময় সীমা থাকে না। কারণ সন্ধ্যে না হওয়া পর্যন্ত অনেক সময় আযান না দেওয়া পর্যন্ত খেলা ছলে, তবে খুবই ভাল লেগেছে আপনার পোস্টে। আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
বিকালের সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছেন দেখে অনেক ভালো লাগলো। এধরনের খেলা ছোটবেলায় অনেক খেলেছি। ঐসময়টা বেশি ভালোই কেটেছে। আপনার পোস্ট ভিজিট করে ভালো লাগলো। আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো ভালো থাকুন।
হা হা,রোদ বৃষ্টির খেলার মধ্যে পরলেন,একবার ধান শুকাতে,একবার ঘরে নিয়ে যাওয়ার জন্য।ভালো ছিলো।ধন্যবাদ আপনাকে।
হুমম আপু এই অবস্থা কাল হয়েছিল। ধন্যবাদ আপনাকেও
ভাই কাঠাল বেশী হলে আমাদের জন্য কিছু পাঠিয়ে দিয়েন হা হা,জৈষ্ঠ্যমাস কে বলা হয় মধুর মাস। এই মাসে আমাদের দেশের সকল ফল ফ্রূট পাকে।বাচ্ছাদের ফুটবল খেলা দেখে শৈশবের কথা মনে পরে।আপ্নি অনেক ভালো ফটোগ্রাফি করছেন।সব মিলিয়ে ভালো একটি ব্লগ উপহার দিয়েছেন।
অবশ্যই ভাই। আপনার কাঠাঁল লাগলে বইলেন। কুরিয়ার করে পাঠিয়ে দিবো। 😇
আপনার পোষ্ট পড়া এবং ছবিগুলো দেখে ছোটবেলার স্মৃতি বিজড়িত দিনের কথা মনে পড়ে গেল। এভাবে মাঠের ভিতর বৃষ্টির সময় কাদা মাটিতে ফুটবল খেলে খুবই মজা নিয়েছি ছোটবেলায়। যেটা এখনো মনে পড়ে মনে হয় আবার ছোটবেলায় ফিরে যাই ভালো লাগলো।
হুম সবারি এরকম স্মৃতি থাকে ছোটবেলার। আপনাকে ধন্যবাদ ভাই
ছোট বেলায় বৃষ্টির দিনে এই ফুটবল খেলার মুহূর্ত আজও মনে পড়ে। আপনি বিকেলবেলার খুবই সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছেন এই ফুট বোলারদের সাথে খুবই ভালো লাগছে আপনার এই মুহূর্তগুলো।
আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম ভাইয়া ।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য ❤️
এখন বিকেলের মুহূর্তটা বাহিরে কাটাতে বেশ ভালই লাগে। কারণ আপনি যেভাবে বিকেলের মুহূর্তটা কাটিয়েছেন দেখে ভালই লাগলো। ছোট ছোট ছেলেদের ফুটবল খেলার মুহূর্ত টা বেশ ভালো লাগলো। এমনকি আপনি অনেক সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি করেছেন। তোমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু আমার পোস্টটি পড়ে খুব সুন্দর একটি মন্তব্য শেয়ার করে নেওয়ার জন্য ।