"ভেলকি" নাটক রিভিউ
23-05-2022
৯ জ্যৈষ্ঠ ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
কেমন আছেন? আশা করছি ভালো আছেন। চলে এলাম আাবারো আপনাদের সাথে একটি নাটক শেয়ার করার জন্য। নাটকটি সম্প্রতি রিলিজ হয়েছে। রিলিজ হওয়ার পর থেকে ভালো দর্শকপ্রিয়তা পাচ্ছে। নাটকের নাম হচ্ছে ভেলকি। নাটকের নামটি অদ্ভুদ রকমের হলেও কাহিনিটা ভালো ছিল। যায়হোক, চলুন তাহলে শুরু করা যাক আজকের নাটকের রিভিউটি।
নাটকের কিছু তথ্য
নাম | ভেলকি । |
---|---|
গল্প ও পরিচালক | মহিদুল মহিম । |
প্রযোজক | এসকে শাহেদ আলি । |
অভিনয়ে | আফরান নিশো, মেহজাবীন চৌধুরী, মনিরা আক্তার মিতু, আশরাফুল আলম সোহাগ, তামজিদ তন্ময়সহ আরও অনেকে।। |
দৈর্ঘ্য | ৫৬ মিনিট ১৫ সেকেন্ড । |
মুক্তির তারিখ | ১৩ই মে, ২০২২ ইং |
ধরন | কাল্পনিক , রোমান্টিক । |
ভাষা | বাংলা। |
দেশ | বাংলাদেশ |
মূল চরিত্রেঃ-
বাদশা→ আফরান নিশো ।
টুকটুকি→ মেহজাবিন চৌধুরী ।
কাহিনী সারসংক্ষেপ
নাটকের শুরুতেই দেখা যায় টুকটুকি নামের একটি মেয়েই ইচ্ছে করছে বাইকের উপরে পরে যায়। তখন পায়ে ব্যথা পাওয়ার অভিনয় করে। ঠিক তখন রাস্তার পাশ দিয়ে যাচ্ছিল বাদশা জাদুঘর। বাদশা তখন বিষয়টি লক্ষ্য করে। একটা মেয়ের উপরে এভাবে বাইক উঠিয়ে দেয়া অন্যায়। এজন্য বাইক রাইডারকে বলে চিকিৎসাবাবদ চার হাজার টাকা দেয়ার জন্য। কোনো উপায় না পেয়ে বাইক রাইডার টুকটুকির চিকিৎসার জন্য চার হাজার টাকা দেয়। টাকা পেয়েই টুকটুকি খুশি হয়ে যায়। টুকুটুকি বস্তিতে তাকে। তার মা অন্যের বাসায় কাজ করে পাশাপাশি বাটপারি যেটাকে বলে ওটাও করে। আর তারই ধারাবাহিকতায় মেয়েকেও এ কাজে লিপ্ত করিয়েছে। যার জন্য মেয়েও এখন মানুষ জনের সাথে বাটপারি করে।
এদিকে জাদুগর বাদশার পরিচয় দেয়া যাক। জাদুগর বাদশা মানুষ জনকে জাদু দেখায়ে বলা যায় আধুনিক উপায়ে পকেট মেরে দেয় মানুষজনের। এভাবেই সে চলতে থাকে। বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে জাদুর মাধ্যমে মানুষজনদের বিনোদন দেয় পাশাপাশি পকেটও মেরে দেয়। টুকটুকির সাথে তার পরিচয় হয় এই এক্সিডেন্টের মাধ্যমে। যদিও বাদশা বুঝতে পারে যে ইচ্ছে করেই টুকুটুকি বাইকের নিচে পরেছে। বাদশাহ রাস্তায় রাস্তায় মানুষদের জাদু দেখায়। আজকে সে চৌদ্দ নম্বর সেক্টরে জাদু দেখাবে। আর টুকুটুকির ছোটবলা থেকেই ইচ্ছে ছিল জাদু শিল্পী হওয়ার। বাদশা টুকুটুকিকে দাওয়াত দেয় তার জাদু দেখতে আসার জন্য। যথারীতি সন্ধ্যায় টুকটুকি আসে জাদু দেখার জন্য। এসে দেখে অনেক মানুষ বসে আছে বাদশা জাদুগরের জাদু দেখার জন্য। টুকুটুকি জাদু দেখে অবাক হয়ে যায়। তারপর টুকটুকি বাদশা এর কাছে বলে সে জাদু শিখবে।
টুকটুকি, বাদশা জাদুগরকে বলে যে তার শখ ছিল ছোটবেলা থেকেই জাদুশিল্পী হওয়ার। তখন বাদশা বলে যে সমস্যা নেই তাকে সে জাদু শিখাবে। এজন্য টুকটুকি বাদশাহর ফোন নাম্বার চায়। বাদশা তখন কলম দিয়ে হাতে লিখে দেয়। এদিকে বাদশা জাদু দেখার পাশাপাশি তার সহকর্মীর কাছ থেকে আজকের কালেকশনের টাকা নেই। টুকটুকি বাড়িতে এসে সে মহাখুশী হয়ে পড়ে। আর তার মা বিষয়টা লক্ষ্য করে। তখন টুকটুকিকে বলে এতো খুশি কেন? পরে সব খুলে বলে। কিন্তু তার মা মোটেও রাজিনা। কারণ জাদু শিখলে আর বাটপারি বা ধান্দাবাজি করতে পারেনা। তার মা তাকে অনেক কষ্টে এই ধান্দাবাজি বা বাটপারি শিখিয়েছে। কিন্তু টুকটুকির ইচ্ছে সে জাদু শিল্পী হবেই।
পরেরদিন উস্তাদের কাছে যায় টুকটুকি। বাদশা প্রথমেই কিছু শর্ত দেয় টুকটুকিকে। প্রতিদিন দুপুরবেলা তার জন্য খাবার নিয়ে আসতে হবে। এছাড়াও মাসে বারো হাজার টাকা দিতে হবে। আর প্রতি দুইদিন পর এক হাজার টাকা দিতে হবে। টুকটুকি এসব কথা শুনে হতবম্ভ হয়ে পড়ে। কি আর করার টাকা ছাড়া বাদশা জাদু শিখাবেনা। এজন্য অবশ্য টুকটুকিকে বলে এডভান্স এক হাজার টাকা দিয়ে যাওয়ার জন্য। বাদশা অন্য রুমে যেতেই মানিব্যাগ থেকে এক হাজার টাকা নিয়ে নেয় আর সেটা বাদশা আসলে দিয়ে দেয়।
পরেরদিন সকালে টুকটুকি রাস্তা দিয়ে যাওয়ার পথে একটি চিরকুট পায় আর একটি গোল্ড পায়। কিন্তু চিরকুটে কি লেখা সেটা সে পড়তে পারেনো। এজন্য একজন রিকশায় আরোহী আপাকে বলে চিরকুটে কি লিখা আছে পড়ে শুনানোর জন্য। পড়ে শুনানোর পর তার কাছে যে গোল্ড আছে সেটা সে বুঝতে পারে। এটা পেয়েছে যেহেতু এজন্য পুলিশের ভয় আছে। তাই রিকশায় বসা আপার কাছে এটা দিয়ে দেয়। বিনিময়ে তাকে কিছু টাকা দেয়। টাকা পেয়ে সে মহাখুশি। আর সে টাকা দিয়েই প্রতিদিন জাদু শিখতে যায় তার উস্তাদ বাদশাহর কাছে। বাদশা টুকটুকিকে জাদু শিখাতে গিয়ে এক পর্যায়ে তাকে ভালোবেসে ফেলে। আর টুকটুকিও বাদশাহকে ভালোবেসে ফেলে। আর জাদু,প্রেম আর প্রতারণার মধ্যে দিয়ে ভালোই চলছিল বাদশাহ এর জীবন। কিন্তু হঠাৎ একদিন বাদশা ভেলকি দেখানের সময় তার কর্মচারী পকেট মারতে গিয়ে ধরা পড়ে যায়। পরে বাদশাহকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায় জেলে। এদিকে টুকটুকি বাদশাকে খোজঁতে থাকে,কোথাও পায়না। অবশেষে জানতে পারে তাকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। টুকটুকি বাদশা কাছে যায় দেখা করার জন্য এবং সব সত্য কথা বলে। আর টুকটুকিও যে বাটপারি করতো সেটাও বলে। তারা তাদের অপরাধ বুঝতে পারে। বাদশা টুকটুকিকে বলে তারজন্য অপেক্ষা করার জন্য। আর এভাবেই নাটকের সমাপ্তি ঘটে।
শিক্ষনীয় দিক
এ নাটক থেকে কিছু শিক্ষনীয় দিক পেয়েছি। কথায় আছেনা পাপ বাপকেও ছাড়েনা। এমনটা আসলে হয়েছে। আপনি যত পাপকাজ করেন না কেন একটা সময় ঠিকই এর থেকে রেহাই পাবেননা। বাদশা জাদু দেখানোর বদৌলতে তার কর্মচারীদের দিয়ে পকেট মেরে দিতো। একটা সময় ঠিকই সে ধরা পরে যায়। আর পুলিশ তাকে জেলে নিয়ে চলে যায়। অতঃপর বাদশা নিজের ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করতে রাজি হয়। এটা নাটকের আরেকটি ভালো দিক।
ব্যক্তিগত মতামত
নাটকটি আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে ভালো লেগেছে। প্রথমে ভেবেছিলাম এটা হয়তো কমেডি নাটক হবে। ফাইনালি নাটকের মোড় অন্যদিকে চলে যায়। আফরান নিশো বরাবরই সেরা। জাদুগরের চরিত্র খুব সুন্দর করে অভিনয় করেছে। আর মেহু আপুও অসাধারণ করেছে।
ব্যক্তিগত রেটিং
নাটকটির লিংক
আশা করি নাটকটি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে। নাটকটি দেখে না থাকলে লিংকে প্রবেশ করে দেখতে পারেন। সবাইকে ধন্যবাদ নাটকের রিভিউটি পড়ার জন্য। সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মতো এখানেই শেষ করছি।
10% beneficiary for @shyfox❤️
ধন্যবাদ
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
নাটকের রিভিউটা দেখে মনে হচ্ছে নাটকটি সুন্দর হবে। নাটকটি এখনো আমি দেখিনি কিন্তু সময় করে দেখার চেষ্টা করব। গত পরশু এদের দুজনের একটি নাটক দেখছিলাম খুবই ভালো লেগেছিল। সম্ভবত নাটকের নাম ছিল শিল্পী। চমৎকার নাটকের রিভিউ করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ
Link
নাটকে মেহজাবিন এর অভিনয় খুব ভালো লাগছে। সোনার বিস্কুর এর ধান্দাটা বেশ ভালো ছিলো। আসলে পুরো নাটকটাই আমার কাছে অসাধারণ লেগেছে। আপনার রিভিউ পড়ে খুব ভালো লাগলো।
হাহাহা! আসলেই ভাই সোনার বিস্কুটের ধান্দাটা ভালো ছিল। বাটপরির উপর বাটপারি। ফাইনালি ভালোই ভালল শেষ হলো
আফরান নিশোকে আমার বেশ ভালো লাগে। যদিও এই নাটকটি এখন পর্যন্ত আমি দেখি নাই।তবে আপনার রিভিউ দেখে মনে হচ্ছে যে অনেক ভালো নাটক এইটা। আপনার রিভিউটি অনেক ভালো ছিল ভাই। সুন্দর করে সবকিছু বর্ণনা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে এরকম একটি নাটকের রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আপনাকেও ধন্যবাদ ভাইয়া রিভিউটি পড়ে মন্তব্য করার জন্য 😍
আরফান নিশো ও মেহজাবিন চৌধুরীর নাটক গুলো আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। এই ধরনের নাটক গুলো খুব হাসির হয় নামটাই তো দেখে হাসি লাগছে ভেলকি। নাটকটি যদিও আমার দেখা হয়নি আপনার রিভিউ দেখে মনে হল নাটকটি খুব ভালো। আমিও নাটকটি দেখার ইচ্ছা পোষণ করলাম। খুব শীগ্রই দেখবো ইনশাআল্লাহ।
জি আপু নাটকটি উপভোগ করতে পারবেন আশা করি। ধন্যবাদ আপনাকে আপু।
নাটকটি আমি দেখেছি ভাই। হাহা। অনেক মজার একটি নাটক। মেহজাবিন যেমন বাটপার তেমনি নিশোও জাদুকরি বাটপার। ভাল লেগেছিল নাটকটি। আপনি চমৎকার ভাবে রিভিও লিখেছেন । নাটকের কাহিনি আরও একবার মনে করিয়ে দেবার জন্য ধন্যবাদ
হাহাহা আসলেই ভাই দুইজনই বাটপারি করলো। ফাইনালি তারা অবশ্য বুঝতে পেরেছিল যে বাটপারি করা ঠিক না 😄
নাটকটি এখন পর্যন্ত দেখা হয়নি কিন্তু আমার কাছে অনেক ভালো লাগলো আপনার নাটকের রিভিউ পড়ে। খুব সুন্দর করে নাটকের রিভিউ আমাদের মাঝে উপস্থাপনের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন অনেক ভালো লাগলো।
আপনার কাছে ভালো লাগলো জেনে খুশি হলাম ভাই। ধন্যবাদ আপনাকে
চমৎকার একটি নাটকের রিভিউ আজকে আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ভাইয়া। রাতে যখন আপনি এই নাটকটি সম্পর্কে আমাদেরকে বলছিলেন তখনই আমি চিন্তা করলাম নাটকটি দেখা যাক। আপনার কথা মত আমি নাটকটি তখনই দেখেছি খুবই ভালো লেগেছে আমার কাছে। আবার এখন আপনার নাটকের রিভিউটি পড়লাম পড়ে বুঝতে পারলাম যে নাটকটির শিক্ষানীয় বিষয় টি কি? আসলে নাটকটির শিক্ষানীয় বিষয়টি হচ্ছে পাপ এমনই একটি খারাপ জিনিস যা মানুষকে সবসময় ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়।
একদম ঠিক ধরেছেন। প্রথমে দুজনই বাটপারি করেছে মানুষের সাথে পরে তারা বুঝতে পারে
ভাইয়া আপনি খুব সুন্দর একটা নাটকের রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। নাটকের রিভিউ দেখে মনে হচ্ছে খুব সুন্দর হবে নাটকটি। আমি সময়-সুযোগ করে অবশ্যই নাটকটি দেখে নেব। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ এত সুন্দর করে নাটকটির রিভিউ আমাদের মাঝে পোষ্ট করার জন্য। আপনার জন্য শুভেচ্ছা রইল।
আপনাকে ধন্যবাদ নাটকের রিভিউটি পড়ে মন্তব্য করার জন্য
অনেক সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ দিয়েছেন। বলতে গেলে দুইদিন আগে এই নাটকটি দেখেছিলাম। আমার কাছে আসলে লোহাকে স্বর্ণ হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার বিষয়টা বেশ ভালো লেগেছিল। আসলে ওরা দুইজনে ছিল বাটপার। আমার কাছে নাটকটি বেশ ভালো লেগেছে। আর আপনি রিভিউ করাতে সবথেকে বেশি ভালো লেগেছে।