ফটোফ্রেম নাটক রিভিউ |[১০% লাজুক খ্যাকের জন্য ]

19-12-2021

৫ পৌষ,১৪২৮ বঙ্গাব্দ


আসসালামুআলাইকুম সবাই

কে
মন আছেন সবাই?আশা করি ভালো আছেন।আমি ভালো আছি।আজকে আপনাদের মাঝে সম্প্রতি আমার দেখা একটি নাটক নিয়ে হাজির হলাম। নাটকের নাম হচ্ছে ফটোফ্রেম।
নাটকটি এর আগেও আমি কয়েকবার দেখেছি। আশা করি আপনাদের কাছে নাটকের রিভিউটি ভালো লাগবে।


WhatsApp Image 2021-12-19 at 01.32.39.jpeg

ছবিঃইউটিউব থেকে নেয়া স্ক্রিনশট


নাটকের কিছু তথ্য


নামফটোফ্রেম
রচনামহিদুল ইসলাম।
পরিচালনামহিদুল ইসলাম।
প্রযোজককচি আহমেদ
অভিনয়েআফরান নিশো, মেহজাবীন চৌধুরী, শাব্দিক শাহিন।
দৈর্ঘ্য৩৯ মিনিট।
মুক্তির তারিখ২২মে, ২০২০
ধরনড্রামা
ভাষাবাংলা।
দেশবাংলাদেশ


কাহিনী সারসংক্ষেপ


WhatsApp Image 2021-12-19 at 01.32.39 (1).jpeg

নাটকের শুরুতে দেখা যায় নীলা নামের একটি মেয়ে ফ্লাক্স হাতে নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় চা বিক্রি করে বেড়ায়। নীলা পরিবারের বড় মেয়ে। তার বাবা অসুস্থ। এজন্য সংসারের দায়িত্ব এখন তার উপরেই পরেছে। তার একটি ছোট বোন আছে নাম তার মিনা। নীলা চা বিক্রি করার সময় দেখা হয় কাশেম ভাইয়ের সাথে। কাশেম ভাই ছবির ফ্রেম বানিয়ে বিক্রি করে। কাশেম ভাইয়ের বাবা আছে। মা মারা গেছে সেই ছোটবেলায়। মূলত ফটোফ্রেমকে কেন্দ্র করেই আজকের নাটকের কাহিনী গড়ে উঠেছে।
তো নীলা কাশেম ভাইকে চা দেয় এক কাপ। চাতে চিনি কম হওয়ায় কাশেম ভাই বলে আরও চিনি দিতে বলে। কিন্তু নীলা রেগে গিয়ে বলে চা খেতে এসে শরবত খাইতে চাইলে হবেনা। নীলা পরিমাণমতো চিনি দিয়েছে চাতে। চা খাওয়ার পর কাশেমভাই নীলাকে ছয়টাকা দেয় কিন্তু নীলার কাছে এক টাকা ভাঙতি না থাকার কারণে সে কাশেম ভাইকে একটি চকলেট দেয়। কিন্তু কাশেম ভাই চকলেট নিতে নারাজ। সে বলে তাকে এক টাকা দিতে। পরে নিলাকে বলে সে যেন তার দোকানে গিয়ে পরে এক টাকা দিয়ে আসে।

তো একদিন নীলার দোকানে এক জনৈক ব্যক্তি চা খেয়ে ৪০ টাকা হয়েছে। কিন্তু সে ব্যক্তি চল্লিশ হয়ে গেলেও তার টাকা ফেরত দেয়নি। খাবারের একটি দোকানে সে ব্যক্তিকে পেলে বলে তার ৪০ টাকা ফেরত দিয়ে দিতে। কিন্তু লোকটি চল্লিশ টাকা দিতে নারাজ। পরে নীলা সে ব্যক্তি
র কাছ থেকে হাতের ঘড়ি রেখে দেয় চল্লিশ টাকার জন্য।

এদিকে নীলার বাবার শরীরটা আরও খারাপ হতে থাকে। টাকার অভাবে সে তার বাবাকে ডাক্তার দেখাতে পারেনা। তো তার ছোট বোন মিনাকে বলে যায় সে যেন বাবার মাতা জলপট্টি দিতে থাকে। এতে জ্বর একটু কমবে। আর এদিকে রাতে নীলা চা বিক্রি করতে বের হয়। চা বিক্রি করতে আসার সময় নীলা দেখে কাশেম ভাই ওভার ব্রিজের উপর থেকে গাড়ি দেখে। নীলা কাশেম ভাইকে বাদাম্মাইয়া বলে চলে যেতেই কাশেম ভাই থাকে ডাক দিয়ে বলে রাতের ঢাকা শহরের গাড়ি দেখতে। কাশেম ভাইয়ের স্বপ্ন সে একদিন গাড়ি কিনে গাড়ি চালাবে। তা শুনে অবশ্য নীলা বলে গরিবের আবার স্বপ্ন! কিন্তু কাশেম ভাইয়ের বিশ্বাস সে একদিন গাড়ি কিনবে। তো নীলাকে এতো রাতে চা বিক্রি করতে দেখে বলে কোথায় যায়? নীলা বলে চা বিক্রি করতে। কাশেম ভাই তাকে বলে যুগকাল পাল্টেছে। এতো রাতে চা বিক্রি করা ঠিক হবেনা। নীলা বলে এছাড়া উপায়ও নেই। কারণ তার বাবা অসুস্থ থাকার কারনে তাকেই সংসার চালাতে হয়।

WhatsApp Image 2021-12-19 at 01.32.39 (5).jpeg

তো একদিন নীলা আনন্দে রাস্তা দিয়ে হাটতে থাকে। তা দেখে কাশেম ভাই তাকে ডেকে আনে তার দোকানে। নীলারও স্বপ্ন সে বড় হয়ে নায়িকা হওয়ার। কিন্তু কিভাবে হবে! কাশেম ভাই বলে তার পাশের বসতির রহিমা নায়িকা হয়ে গেছে। সে ফটো তুলে দিয়েছিল তাকে। কাশেম ভাই নীলাকে বলে তাকেও ফটো তুলে ফ্রেম করে দিবে। এটা শুনে নীলা খুব খুশি হয়।

তো পরদিন নীলা এসে কাশেম ভাইকে বলে প্রেম করতে! কাশেম শুনে বলে কি বলস এসব! নীলা বলে আপনিই প্রেম করবেন। সে জানে কাশেম ভাই অনেক ভালো। পরে কাশেম ভাই তার প্রস্তাবে রাজি হয়। কিন্তু যখন বলে প্রেমটা একটু বড় করে করতে তখনই কাশেম ভাই বুঝতে পারে। আসলে এটা প্রেম না ফ্রেম। তারপর নীলার খালাতোভাইয়ের তোলা একটি ছবি দিয়ে বলে ফ্রেম করে দিতে। তারপর খালাতো ভাইয়ের ছবিটা কেটে নীলার ছবির ফ্রেম করে দিতে বলে।এতে নীলা শুনে প্রথমে খুশি হয়নি।

WhatsApp Image 2021-12-19 at 01.32.39 (3).jpeg

তারপর কাশেম ভাই নীলার বাড়িতে যায় ক্যামেরা নিয়ে। আর ফটো নিয়ে। নীলা তার সেই ফটো ফ্রেমটা দেখে অবাক হয়ে যায়। একদম নায়িকাদের মতো চেহারা বানিয়ে ফেলেছে। কাশেম ভাই বলে এটাকে বলে এডিটিং। যার মাধ্যমে চুল আর মুখ ফর্সা করে ফ্রেমটা তৈরি করা হয়েছে। তারপর ক্যামেরা দিয়ে নীলার কিছু ছবি তুলে নেয় কাশেম ভাই। এগুলো পরে সে ফটো ফ্রেম করে দিবে।

WhatsApp Image 2021-12-19 at 01.32.39 (2).jpeg

তারপর একদিন খবরের কাগজের দেখতে পায় ছেলের অবহেলার কারণে এক বৃদ্ধ বাবার মৃত্যু হয়েছে। অথচ সেই বাবার ছেলে কাশেম ভাইয়ের কাছে ফটো ফ্রেম করতে আসে। বাবা মারা যাওয়ার পরই ফটো ফ্রেম করতে আসে। আমরা প্রেমিকার, বন্ধু-বান্ধবের ছবি জীবিত অবস্থায় ফটো ফ্রেম করে। কিন্তু বাবা মা মারা গেলেই আমরা বেশি মাতামাতি করি। স্মরণ করার জন্য ফটোফ্রেম বাধাই করে। কাশেম ভাইয়ের দুঃখ তার বাবার সাথে এখন পর্যন্ত ছবও তোলে বাধাই করেনি। কাশেম ভাই তখন তার পেশা নিয়ে অনেক দুঃখ হয়। এভাবেই মূলত নাটকটি শেষ হয়।


নাটকটি থেকে শিক্ষা


সব নাটকেই আমরা কম বেশি শিক্ষা পেয়ে থেকি। এই নাটকটিও অনেক শিক্ষানীয় ছিল। এই নাটক থেকে একটা বিষয় স্পষ্ট যে জীবিত থাকা অবস্থায় বাবা মাকে ভালো বাসা উচিত। মরে গেলে ফটো টানিয়ে লাভ কি! আমাদের উচিত বাবা মাকে যথাযথ ভালোবেসে যাওয়া আজীবন। বৃদ্ধ হলেই অনেকে বাবা মাকে বোঝা মনে করে। ফলস্বরূপ অনেকে বাবামাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে দেয়। একাবারও ভাবে না যে তার এই অবস্থানের পিছনে বাবা মারই অবদান বেশি।


ব্যক্তিগত মতামত


নাটকটি এক কথায় আমার কাছে অসাধারন লেগেছে। আমি অনেকবার দেখেছি নাটকটা। মেহজাবীন আর আফরান বরাবরই আমার প্রিয়। তাদের অভিনয় ভালো লাগে। ফটোফ্রেমে নাটকে সহজ সরল দৃশ্যগুলো খুব সুন্দর করে তুলে ধরা হয়েছে। স্বপ্ন দেখতে সবাই চায়। কারো স্বপ্ন বাস্তবে রূপান্তরিত হয় কারোটা হয়না। তারই উদাহরন যেন এ নাটকে কাশেম ও নীলা

ব্যক্তিগত রেটিং


৯.৫/১০



আইএমডিবি রেটিং


৭.৭/১০



নাটকটির লিংক


সবগুলো ছবির স্ক্রিনশট এখান থেকে নেয়া


আশা করি নাটকটি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে। নাটকটি দেখে না থাকলে লিংকে প্রবেশ করে দেখতে পারেন। আমি চেষ্টা করেছি মূল কাহিনীটা শেয়ার করার জন্য। আশা করি বুঝেছেন। সকলের সু্স্থ্যতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মতো এখানেই শেষ করছি।


ধন্যবাদ

gPCasciUWmEwHnsXKML7xF4NE4zxEVyvENsPKp9LmDaFuzVwHnY92rponrLLcEknitVG5yvYaPTExVtjfc6Bi4cvC9ppuyLmaATGbhg8UF4suiCxVfuw2YuSWJftJo9C74dQUN2WE1yNJmdtXp.png

qQb1qbB44WNL4kcw8YRpvpA9rhDMdw5Qkx9ZgyU.png



আমি কে?

IMG20210908180509.jpg

আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কোকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যৎ এ প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চায়।

Sort:  
 3 years ago 

মেহেজাবিন ও আফরান নিশো আমারও খুব প্রিয়। তাদের অনেকগুলো নাটকই আমি দেখেছি। এটা দেখবো বলে ভেবেছিলাম কিন্তু দেখা হয়নি। আপনার রিভিউটা পড়ে মনে হচ্ছে এটাও দেখতে হবে। যেহেতু রেটিং দিয়েছেন ৯.৫ /১০ আবার লিখেছেন ও এত গুছিয়ে নাটকটা সম্পর্কে যে দেখার ইচ্ছা আরো বেড়ে গেল। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাই এত সুন্দর ভাবে একটা নাটক রিভিউ উপস্থাপন করার জন্য।

 3 years ago 

জি ভাই নাটকটি দেখে উপভোগ করতে পারবেন। ধন্যবাদ আপনাকে।

 3 years ago 

নাটকটি আমি দেখেছি দারুন লেগেছে আমার কাছে। নাটকটিতে শিক্ষণীয় অনেক কিছুই আছে তবে যারা দেখেননি তাদের দেখা উচিত নাটকটি। নাটক আমাদের ভিতরে সত্তাকে জাগিয়ে তুলতে পারে। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ দেওয়ার জন্য

 3 years ago 

আপনি একদম যথার্থ মন্তব্যটি করেছেন। ভিতরের সত্তাকে জাগিয়ে তুলার মতোই একটি নাটক। ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া।

 3 years ago 

আমার ফেভারিট নাট্যশিল্পী হল আফরান নিশো। যার প্রতিটি নাটক দেখতে আমার খুবই ভালো লাগে ।আশা করি নাটকটি এখনো দেখা হয়নি দেখব শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

 3 years ago 

আপনাকে ধন্যবাদ ভাই।

 3 years ago 

আপনি খুবই সুন্দর একটি নাটক রিভিউ আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন ভাইয়া ।এই নাটকটি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছিল ।আফরান নিশোর প্রতিটি নাটকই আমার কাছে খুবই ভালো লাগে ,আমি বেশ কয়েকদিন আগে এই নাটকটি দেখেছিলাম ।আপনি খুবই সুন্দর ভাবে সংক্ষিপ্ত আকারে নাটকটির মূল বিষয়বস্তু আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন ।এত সুন্দর একটি নাটক রিভিউ আমাদের মাঝে চমৎকারভাবে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 3 years ago 

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই সুন্দর মতামত দিয়ে পাশে থাকার জন্য।

 3 years ago 

নাটকটি রিভিউ পড়ে আমার অনেক অনেক ভালো লেগেছে। নাটকটা আমি কখনো দেখিনি তবে এবার সময় পেলে নাটকটি দেখে নেব। এত সুন্দর একটা নাটকে রিভিউ আমাদের উপহার দেয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 3 years ago 

আপনাকে ধন্যবাদ ভাই নাটকের রিভিউটা পড়েছন। আশা করি নাটকটি ভালো লাগবে

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 56477.82
ETH 2390.38
USDT 1.00
SBD 2.33