সাইকেল কিনতে গিয়ে বিপাকে [১০% লাজুক খ্যাকের জন্য ]
06-02-2022
২৪ মাঘ,১৪২৮ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
হেলো! আশা করি সবাই ভালোই আছেন। আমি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। তো আজকে আবারো চলে এলাম আপনাদের সাথে কিছু কথা শেয়ার করে নেয়ার জন্য।
আজকে ওয়েদার মোটামুটি ভালোই ঠান্ডা ছিল। সকালের দিকে বৃষ্টি হয়েছিল কিছুক্ষণ। তারপর আবার রোদ। শীতকালে বৃষ্টি হতে আমি দেখিনি তবে এখন পৃথিবীর ক্লাইমেট পরিবর্তন হওয়ার কারণে পরিবেশের ভারসাম্যেরও পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। যায়হোক আজকে একটু কিশোরগঞ্জ যাওয়ার কথা ছিল। এজন্য ঘুম থেকে তাড়াতাড়ি উঠে পড়ি। কিন্তু বৃষ্টি হওয়ার কারণে বাহিরে বের হতে পারেনি। তাই বৃষ্টি থামলেবের হতে হলো। তো আজকে আমার ফুফু আমাকে বলেছিল একটা সাইকেল কিনার জন্য কিশোরগঞ্জ যাবে। এর আগের দিন অবশ্য আমাদের নান্দাইলে একটা দোকানে সাইকেল দেখেছিলাম। কিন্তু দামে মিল না পরায় আর কিনা হয়ে উঠেনি। এজন্য কিশোরগঞ্জ যেতে হবে সাইকেল কিনার জন্য। আমাকে বারবার ফোন দিচ্ছিল আমার ফুফু রেডি হয়ে এসে পরতে। আমার তো যেতেই ইচ্ছে করছিল না এই ঠান্ডা ওয়েদার সেই সাথে বাতাসও ছিল অনেক। কি আর করার! আমাকে ছাড়া আমার ফুফু যাবেনা। কারণ কিশোরগঞ্জ দোকানপাট কোথায় আমার মোটামুটি সব চিনা আছে। কিশোরগঞ্জ-এ তিন বছরের মতো পড়াশোনার জন্য থাকতে হয়েছে। সেই সুবাধে প্রায় শহরের অলিগলি থেকে দোকানপাট ভালোই চিনা পরিচিত আছে। তো ১২ টার দিকে ফুফুর বাসায় যায় রেডি হয়ে।
তারপর ফুফুও দেখি রেডি হয়ে বসে আছে। কিন্তু আমার ফুফুর ছোট মেয়ে আমাদের সাথে কিশোরগঞ্জ যাওয়ার জন্য কান্নাকাটি শুরু করে দেয়। কিন্তু তাকে নিলে সাইকেল নিয়ে আসতে সমস্যা হবে এটা ভেবে আর নেয়নি। এজন্য ফুফুর মেয়েকে ম্যানেজ করে কান্নাকাটি থামিয়ে বাসায় রেখেই বের হয়। ফুফুর বাসা থেকে বাসস্টপেজ ও কাছে। হেটে গেলে প্রায় ১০ মিনিটের মতো লাগে। হেটেই বাসস্টপেজ এ চলে আসি। কিন্তু বাসস্টপেজ -এ কিছুক্ষণ দাঁড়ানোর পরও দেখি বাস আসছেনা। তাই অটো যেটা ব্যাটারিচালিত একটি যান এটা নিয়েই রওয়ানা দিয়ে দেয়। অটো দিয়ে কিশোরগঞ্জ গেলে জনপ্রতি ভাড়া ৩০ টাকা। আর নান্দাইল থেকে কিশোরগঞ্জ প্রায় ২১ কিমি পথ। যেতেও বেশিক্ষণ লাগেনা। তো যায়হোক কিশোরগঞ্জ পৌঁছালাম দুপুর ১টা বাজে তখন। কিশোরগঞ্জ গিয়ে দেখি অনেক রোদ। শীতের হুডি পড়ে গেছিলাম কিন্তু পরে দেখি শরীর গরম লাগছে যায়হোক এভাবেই পড়ে থাকলাম।
আমার পরিচিত একটি সাইকেলের দোকান আছে। এর আগেও এই দোকান থেকে আমার এক কাজিনকে সাইকেল কিনে দিয়েছি। তো ফুফুকে সেই দোকানে নিয়ে গেলাম। দোকানটি গোরাঙ্গ বাজারের পাশেই। নতুন আপডেট সাইকেলের কালেকশন আসে এই দোকানে। আমার পছন্দ দূরন্ত সাইকেল গিয়ারের মধ্যে। তো দোকানে যাওয়ার পর কিছু সাইকেল দেকলাম গিয়ারসহ এবং গিয়ার ছাড়া।
গিয়ারসহ সাইকেলগুলো একটু ক্লাসিক বেশি আর দামের দিক থেকেও মোটামুটি ভালোই। তবে বলে রাখা ভালো আমার ফুফু একটু কিপ্টে টাইপের হাহাহা! উনার কাছ থেকে একটাকা খাইতেও কষ্ট হয়। যায়হোক ফুফু প্রথমে কিছু সাইকেল দেখলো। গিয়ারসহ সাইকেল এগুলো আপডেট সব আর দামের দিক থেকে প্রায় ১৩-১৫ হাজারের মতো ছিল। কিন্তু আমার ফুফুর এসব সাইকেল পছন্দ হলো না। তাই আমি বললাম তাহলে গিয়ারছাড়া যেগুলে আছে এগুলো নিয়ে নিতে। তারপর গিয়ার ছাড়া কিছু সাইকেল দেখলাম। দূরন্ত আর ফনিক্স এর মধ্যে কিছু গিয়ার ছাড়া সাইকেল দেখলাম। এ সাইকেলগুলোর দাম ১০ হাজার বা তার নিচে ছিল। ফাইনালি একটা ফনিক্স গিয়ার ছাড়া সাইকেল দেখে ফুফুর পছন্দ হলো।
কিন্তু দোকানদার দাম চাইলো ১১ হাজার টাকা। আমার ফুফু এ দামে নিতে নারাজ। এজন্য প্রথমে আট হাজার বললো দোকানদারকে। দোকানদার এ দামে বিক্রি করবেও না। অবশেষে ৯ হাজার টাকা দিয়ে সাইকেল কিনতে সক্ষম হয়েছি। তো সাইকেল কিনার পর একটা থালা আর সাইকেলের একটি বেল লাগিয়ে দেয়। তারপর আমার সাথে ঘটলো আরেক কাহিনী। আমাকে আমার ফুফু বললো সাইকেল চালিয়ে বাড়িতে যেতে! আমি শুনে তো রীতিমত অবাক হয়ে যায়। আর দোকানদারও ফুফুর সঙ্গে সাঁই দিয়ে বললো আমি যেন সাইকেল চালিয়ে যায়।
তো কি আর করা!! কিশোরগঞ্জ থেকে নান্দাইল প্রায় ২১ কিলোমিটার রাস্তা সাইকেল দিয়ে পাড়ি দিতে হবে। ধীরে ধীরে সাইকেল চালিয়ে আসতে থাকলাম। আর শরীরের স্টেমিনা যেন কমতেই ছিল। কিশোরগঞ্জ থাকাকালীন সময়ে সাইকেল চালিয়েই কলেজে যাওয়া আস করা হতো কিন্তু এতে দূর পর্যন্ত সাইকেল চালিয়ে যায়নি কখনো। তাই রাস্তার মাঝে মাঝে বিশ্রাম করে চালিয়ে যেতে থাকলাম। শীতের দিনে আমার শরীর থেকে একদম ঘাম বের হয়ে গেল! তবে নতুন সাইকেল ছিল এজন্য চালাতে মোটামুটি সহজ হচ্ছিল। প্রায় ২ ঘন্টা সাইকেল চালিয়ে বাড়িতে আসলাম। এটা হয়তো আমার জীবনে রেকর্ডও হয়ে থাকবে। এতে দূর পর্যন্ত সাইকেল চালিয়ে আসা।
ডিভাইস | oppo A12 |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @haideremtiaz |
তো যায়হোক ধন্যবাদ সবাইকে আমার পোস্টটি পড়ার জন্য। আপনাদের সাথে যদি এমন হয়ে থাকে কখনো তাহলো কমেন্ট করে জানাবেন। সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের বিদায় নিলাম।
ধন্যবাদ
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
twitter share link
সাইকেলটি দারুণ হয়েছে ভাইয়া👌।তবে আপনাকে যে 21 কিলোমিটার পথ এই সাইকেল করে পাড়ি দিতে হলো এটি জেনে খারাপ লাগলো।আমি তো ভাবছিলাম আপনার জন্য সাইকেল কিনবেন, ধন্যবাদ আপনাকে।ভালো থাকবেন।
জ্বি দিদি! নতুন এক্সপেরিয়েন্স হয়েছে ২১ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছি সাইকেল দিয়ে । ধন্যবাদ আপনাকে দিদি
ভাই খুবই কষ্ট হয়েছে ২১ কিলোমিটার পথ সাইকেল দিয়ে আসতে । ধন্যবাদ আপনাকে ❤️
ওয়াও সাইকেলটা দেখতে খুব সুন্দর লাগছে তো তবে আপনি 21 কিলোমিটার পথ সাইকেলে করে দিয়েছেন এটা খুবই কষ্টকর একটি বিষয় আবার মজাও আছে এর মধ্যে যেহেতু নতুন সাইকেল একটু দ্রুত যাওয়া যায় গরমের সময় হলে আরো বেশি উপভোগ করতেন সাইকেল চালানোটা ধন্যবাদ আপনাকে আপনার সাইকেল কেনা এক্সপেরিয়েন্স শেয়ার করার জন্য
ভাই একদম শরীর ঘেমে গিয়েছিল । শীতের মধ্যে মনে হচ্ছিল গরম লেগেছে । কারণ ২১ কিলোমিটার পথ প্রায় আমার জীবনের প্রথম এত দূর সাইকেল দিয়ে আসলাম । ধন্যবাদ আপনাকে ❤️
ভাই আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ❤️
আপনার পোস্ট পড়ে খুবেই ভালো লাগলো ভাইয়া। সাইকেল কিনা টা দারুন হয়েছে ভাইয়া। ২১ কিলোমিটার অতিক্রম করে সাইকেল নিয়ে আসছেন৷ এই ব্যাপার টা আমার কাছে খুবেই ভালো লাগেছে। শুভকামনা রইল ভাইয়া আপনার জন্য।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই সুন্দর মন্তব্য করার জন্য ❤️