"দূরবীণ" নাটক রিভিউ
14-07-2022
৩০ আষাঢ় ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি আপনারা সবাই ভালো আছেন। রোদের তীব্রতা কয়েকদিন প্রখর। সন্ধ্যার আগে বাহিরে যাওয়ায় যায় না। যায়হোক, চলে এলাম একটি নাটক রিভিউ শেয়ার করার জন্য। নাটকের নাম হচ্ছে দূরবীণ। নাটকটি পরিচালনা করেছিলেন ভিকি জাহেদ।
নাটকের কিছু তথ্য
নাম | দূরবীণ । |
---|---|
রচনা ও পরিচালনা | ভিকি জাহেদ । |
প্রযোজক | তাহসিন এন রাকিব । |
অভিনয়ে | তাহসান খান, নাদিয়া , তৌফিক আহমেদ ,সোহান বাবু , মন্সুর মুস্তাফিজ , এহতেশাম আহমেদ সহ আরও অনেকে । |
দৈর্ঘ্য | ৩২ মিনিট ৩৮ সেকেন্ড । |
আবহ সংগীত | তাহসান খান |
মুক্তির তারিখ | ১৬ই মার্চ , ২০১৭ ইং |
ধরন | কাল্পনিক , রোমান্টিক। |
ভাষা | বাংলা। |
দেশ | বাংলাদেশ |
চরিত্রেঃ
রাশেদঃ তাহসান খান
নিতুঃ সালহা খানম নাদিয়া
কাহিনী সারসংক্ষেপ
নাটকের শুরুতে দেখা যায় অঞ্জন দাস ঘুমে স্বপ্ন দেখছে রাশেদ আর নিতুকে নিয়ে। অঞ্জন দাস এখন বয়সের ভারে অনেকটা ক্লান্ত। কিন্তু তার অতীত তাকে এখনও ভাবায়। আয়নার সামনে দাড়িঁয়ে অঞ্জন দাস ভাবতে থাকে।
একটু পিছনে ফিরে তাকানো যাক। অঞ্জন দাস ছিল রাশেদের একমাত্র বন্ধু। যেখানেই রাশেদ যেত অঞ্জনকে নিয়ে যেত। রাশেদ একজন হিন্দু মেয়েকে ভালোবাসতো। নাম তার নিতু। রাশেদ মুসলমান ঘরের সন্তান হওয়া সত্ত্বেও নিতু রাশেদকে প্রচন্ড ভালোবাসত। আর তাদের ভালোবাসার খবর ভালোকরে জানতো অঞ্জন দাস। নিতুর বাবা এলাকার ক্ষমতাধর একজন লোক। নির্বাচনী প্রচারণার খোজঁ খবর নেয়ার জন্য রাশেদ আর অঞ্জন মাঝে মাঝেই বাসায় আসে। বাসায় এসে নিতুর সাথেও দেখা হয়ে যায়। নিতু বাসায় যা রান্না করতো তা রাশেদের জন্য আগেই আলাদা করে রেখে দিতো। রাশেদের বাবা ছিলেন মহল্লার ভালো একজন শিক্ষক। মহল্লার সবাই রাশেদের বাবাকে শ্রদ্ধা করতো। কিন্তু হঠাৎ একটি এক্সিডেন্ট এ রাশেদের মাবাবা সহ মারা যায়। তখন থেকে রাশেদ তার চাচার কাছে থাকে। তার চাচা ইব্রাহীম খাঁ মহল্লার একসময়কার মাস্তান ছিল। সময়ের পরিবর্তনে তার চাচা এখন এসব খুনখারাপি ছেড়ে দিয়েছে। রাশেদকে খুব আদর করে। মা-বাবার অভাব বোধ কখনো করতেই দেয়নি তার চাচা। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য পাস করে বেরিয়েছে রাশেদ। কয়েকটি চাকরির ইন্টার্ভিউ দিয়েছে। কিছুদিন পর চট্রগ্রাম এ একটি ইন্টার্ভিউ আছে রাশেদের। তাদের ভার্সিটি এর স্যার রেফারেন্স করেছে। রাশেদের চাকরিটা বোধহয় হয়ে যাবে এবার। রাশেদের চাচা রাশেদকে বলে জীবনে এমন কোনো কাজ না করার জন্য যাতে মান-সম্মান ক্ষুণ্ণ হয়। রাশেদ কিছুটা সন্দেহ করে এমনটা বলে অঞ্জনকে।
বেশকিছু দিন পর রাশেদ নিতুদের মহল্লায় বন্ধুদের সাথে ক্যারাম খেলতেছিল। ঠিক সেসময় পাড়ার এক বন্ধু রাশেদকে বলে নিতুর সাথে যেন বাড়াবাড়ি না করে। কারণ মুসলমান ছেলে হয়ে হিন্দু মেয়ের সাথে কিসের মেলামেশা? তখন ছেলেরা রাশেদের গায়ে হাত দেয় আর এতেই ঝামেলা আরও বেধে যায়। রাশেদকে হুমকি দেয় যেন নিতুর সাথে আর কখনো না দেখে। তখন অবশ্য রাশেদের বন্ধু অঞ্জন চলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এদিকে রাশেদের ইন্টার্ভিউ চলে এসেছে। শেষবারের মতো কথা বলে নিতুর সাথে। নিতুর কাছ দোয়া চাই যেন তাদের জন্য দোয়া করে। আর চাকরিটা হয়ে গেলে নিতুকে বিয়ে করে ফেলবে। এটা বলেই রাশেদ চলে যায় চট্রগ্রাম এ। এরই মাঝে নিতু চিঠি লিখে রাশেদকে।
রাশেদও তখন চিঠির উত্তরে বলে যে তার চাকরিটা নাকি হয়ে গেছে। আর অঞ্জন এদিকে তার মনে ক্ষোভ জন্মাতে তাকে। রাশেদের লেখা শেষ চিঠি পালিয়ে বিয়ে করার প্লেন করেছে। কাঠমেইলের এখানে দাড়িঁয়ে থাকবে রাশেদ কিন্তু অঞ্জন আর চিঠিটা দেয়নি নিতুকে। রাশেদ যখন অপেক্ষা করতে থাকে নিতুর জন্য ঠিক সেসময় মহল্লার কিছু ছেলে এসে রাশেদকে গুলি করে হত্যা করে । আর রাশেদের চাচা মনে করে নিতু রাশেদের সাথে প্রতারণা করেছে। রাশেদের সাথে পালানোর কথা ছিল কিন্তু সে যায়নি। এজন্য রাশেদের চাচা গিয়ে নিতুকে খুন করে। ঠিক তখনই অঞ্জন কান্না করতে থাকে। তার ভুলের কারনে নিতু আর রাশেদকে জীবন দিতে হলো। অঞ্জন দাস এখনও নিজেকে ক্ষমা করতে পারেনি। সেদিনের চিঠিটা নিতুর কাছে পৌঁছে দিলে হয়তো তারা বেচেঁ যেত। আর এভাবেই নাটকের সমাপ্তি ঘটে।
শিক্ষনীয় দিক
আসলে ভালোবাসা ধর্ম-বর্ণ, জাতপাত দেখে হয়না। ভালোবাসা হয় দুটি মনের। দুটি মন যখন একত্রে মিশে যায় তখনই ভালোবাসা হয়। রাশেদ আর নিতুর মধ্যে ঠিক এমনটাই হয়েছিল। কিন্তু কথায় থাকেনা, ভালোবাসার মাঝে তৃতীয় কোনো ব্যক্তি প্রবেশ করলে ছিড় ধরে। আসলে অঞ্জন দাসের কারণে ফাইনালি নিতুর আর রাশেদের মিল হয়নি। আমাদের উচিত কারো ভালোবাসা দেখলে কখনো নেগেটিভ কমেন্ট না করে উৎসাহ দেয়া। আজীবন যে মানুষটির সাথে সুখে থাকবে তার হতে সাহায্য করা।
ব্যক্তিগত মতামত
আমার দেখা মাস্টারপিস একটি নাটক বলা যায় এটি। ভিকি জাহেদ পরিচালিত সবগুলো নাটক অসাধারণ হয়। নাটকে তাহসান আর নাদিয়া অসাধারণ অভিনয় করেছে। রাশেদের চরিত্রে তাহসানকে বেশ মানিয়েছে আর নিতুর চরিত্রে নাদিয়াকে। শেষটার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না আসলে। না দেখলে আপনারাও বুঝতে পারবেন না। সবমিলিয়ে নাটকটি অসাধারণ হয়েছে।
ব্যক্তিগত রেটিং
নাটকটির লিংক
আশা করি নাটকটি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে। নাটকটি দেখে না থাকলে লিংকে প্রবেশ করে দেখতে পারেন। সবাইকে ধন্যবাদ নাটকের রিভিউটি পড়ার জন্য। সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মতো এখানেই শেষ করছি।
10% beneficiary for @shyfox❤️
ধন্যবাদ
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
অনেক চমৎকার একটি নাটকের রিভিউ আজকে আপনি আমাদের সাথে তুলে ধরেছেন, আসলে বেশ চমৎকার একটি নাটক যদিও দেখা হয়নি। তবে আপনার রিভিউ এর মাধ্যমে বুঝতে পারলাম ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া মন্তব্যের জন্য।
খুবই চমৎকার একটি নাটক রিভিউ আপনি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন তাহাসানের নাটক আমার কাছে খুবই ভালো লাগে বিশেষ করে তার গানও আমার অনেক বেশি পছন্দের। সংক্ষিপ্ত আকারে নাটকের বিষয়বস্তু আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ।
আপনাকেও ধন্যবাদ ভাই চমৎকার একটি মন্তব্য করার জন্য।
তাহসান এর অভিনীত নাটকগুলো আগে আমি প্রচুর পরিমাণে দেখতাম কিন্তু এখন আর তাহসানের নাটক গুলো দেখতে ইচ্ছা হয় না। আজকে আপনি আমাদের মাঝে খুবই সুন্দর ভাবে তাহসান এর অভিনীত দূরবীন নাটকটির রিভিউ শেয়ার করেছেন ভাইয়া। আসলে ভালোবাসা এমনই একটি জিনিস যে কোন ধর্মের মানুষের মধ্যেই হয়ে যেতে পারে।
তাহসানের নাটকগুলো ভালোই তো হয়, দেখতে পারেন। আশা করি উপভোগ করতে পারবেন। আপনার জন্য শুভকামনা রইল