নাটক রিভিউঃ " পরস্পর "
24-05-2024
১০ জৈষ্ঠ , ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
🌼 আসসালামুআলাইকুম সবাইকে 🌼
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি আপনাটা সবাই ভালো ও সুস্থ্য আছেন। তো সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করে আজকে চলে এলাম আপনাদের মাঝে একটি নাটক শেয়ার করার জন্য। আসলে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে আমি চেষ্টা করে থাকি একটা নাটক আপনাদের সাথে শেয়ার করার। ফ্রি টাইমে নাটক দেখা হয়ে যায় আর সেটাই আপনাদের সাথে শেয়ার করে থাকি। আজকে যে নাটকটি শেয়ার করবো সেটির নাম হচ্ছে পরস্পর। আশা করছি নাটকটি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
নাম | পরস্পর। |
---|---|
পরিচালনা | সাজ্জাদ হোসেন বাপ্পী |
স্ক্রিপ্ট | আব্দুল্লাহ আল মামুন, রিফাত আদনান পাপন ও সাজ্জাদ হোসেন বাপ্পী। |
প্রযোজক | মোঃ মোস্তফা কামাল রাজ। |
অভিনয়ে | খাইরুল বাশার, তাসনিয়া ফারিন, শিরিন আলম, আশুক বোশাক, শম্পা নিশাম, তনুশ্রী তন্নী, সাইমন আহমেদ সমির সহ আরও অনেকে। |
আবহ সংগীত | তানজিল হাসান। |
দৈর্ঘ্য | ৪১ মিনিট ২৫ সেকেন্ড। |
মুক্তির তারিখ | ১৯ই মে , ২০২৪ ইং |
ধরন | সামাজিক । |
ভাষা | বাংলা |
চরিত্রেঃ
রকিবুলঃ
খাইরুল বাশার।রাজিয়াঃ
তাসনিয়া ফারিন।কাহিনী সারসংক্ষেপ
নাটকের শুরুতে দেখা যায়, রকিবুল ব্যবসার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে দোকানে। রকিবুলের বাবার রেখে যাওয়া শেষ সম্ভল ডিমের ব্যবসা। বাবা মারা যাওয়ার পর রকিবুলই ডিমের ব্যবসাটা চালাচ্ছে। সাথে তার বন্ধুও সাহায্য করছে। কিন্তু ব্যবসার কাজে এতো ব্যস্ত সময় কাটায় রকিবুল এদিকে যে তার বিয়ের বয়স চলে যাচ্ছে সে খেয়াল নেই! রকিবুলের মা পাত্রীর সন্ধান পেয়েছে। তারই গ্রামের পাশে এক মেয়ে। মেয়ে দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি ব্যবহারও ভালো। তাই রকিবুলকে নিয়ে দোকান থেকে সোজা চলে যায় মেয়ের বাড়িতে। মেয়ে পছন্দ হলে বিয়েট দিন তারিখ ঠিক করে ফেলবে। যে মেয়েকে রকিবুল দেখতে যাচ্ছে সে মেয়ের নাম রাজিয়া। সবেমাত্র স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে কলেজে পা দিয়েছে। রাজিয়ার ইচ্ছে পড়াশোনা করার।
রকিবুলের মা বলেছিল বিয়ের পরে বাড়িতে গিয়ে পড়ালেখা করতে পারবে। তাকে সেখানে নিয়ে ভালো একটা কলেজে ভর্তি করানো হবে। রাজিয়াও বিয়েতে রাজি হয়। তারপরে রাজিয়ার মা বাবা চেয়েছিল বিয়েটা কিছুদিন পরে হোক! কিন্তু রকিবুলের ব্যস্ততার জন্য বিয়েটা আর পরে হওয়ার সুযোগ নেই! আজই সে বিয়ে করে রাজিয়াকে ঘরে তুলে নিয়ে যাবে। রাজিয়ার মা বাবার আপত্তি ছিল না এতে! বউকে করে নিয়ে যায় রকিবুল। তবে বিয়ের পরে যেন সব ফ্যাকাশে হতে থাকে রাজিয়ার কাছে! রকিবুলের সকালের নাস্তায় ডিমের ভুনা না হলে চলে না। একদিন রাজিয়া মুরগীর মাংস রান্না করে ফেলে। আর সেটা দেখেই রকিবুলের মেজাজ গরম হয়ে যায়। সে কখনো সকাল সকাল ডিমের ভুনা ছাড়া অন্য কিছু খেয়ে দোকানে যায়নি। তারপরে রকিবুল রাজিয়াকে সাবধান করে দেয়। সে যেন আর কখনো সকালে ডিম ছাড়া অন্য কিছু রান্না না করে।
তার কিছুদিন পর রাজিয়া তার শ্বাশুড়ি কে বলে তাকে কলেজে ভর্তি করানোর জন্য। কিন্তু রকিবুলের মা চাই না রাজিয়া কলেজে যাক। তখন রাজিয়া উচ্চস্বরে কথা বলে শ্বাশুড়ির কথার জবাব দেয় এবং রকিবুল সেটা শুনে ফেলে! বিয়ের আগে কথা দিয়ে নিয়ে এসেছিল তাকে কলেজে ভর্তি করাবে। কিন্তু তাকে কলেজে কেন ভর্তি করায় না! কলেজে ইতোমধ্যে ক্লাসও শুরু হয়ে যায়। রকিবুলের মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। তখন রাজিয়াকে গালে ঠাস করে চড় মারে! । রাজিয়ার খুব মন খারাপ হয়। তারপর মন ভালো করার জন্য রাজিয়াকে নিয়ে ঘুরতে বের হয় রকিবুল। তারপরে কোনো কিছু হলেই রাজিয়ালে গালে ঠাস করে চড় মারে রকিবুল! আর মন ভালো করার জন্য ঘুরতে নিয়ে যায়। রকিবুলের এমন ব্যবহার রাজিয়া নিতে পারছিল। তাই সে বাবার বাড়িতে যেতে চাই! রকিবুল রাজিয়াকে বাবার বাড়িতো নিয়ে যায় এবং বাবার বাড় থেকে আসার সময় বাবার ফোনটা নিয়ে আসে রাজিয়া।
রাজিয়ার হাতে ফোন দেখে রকিবুলের আবারো মেজাজ গরম হয়ে যায়। সে আবারো রাজিয়াকে গালে চড় মারে! তার পরেরদিন! রকিবুল রাজিয়ার কাছে আসে ভাত দেয়ার জন্য ঠিল তখন রাজিয়া তর্ক করা শুরু করে দেয়। এমন সময় রকিবুল রাজিয়ার গালে চড় মারতে যায় আর তখনই রাজিয়া রকিবুলের হাত ধরে ফেলে! রকিবুলকে মুখে দেয় একটা ঘুষি রাজিয়া। তারপর গলায় টিপে ধরে আর তখনই রকিবুলের মা চলে আসে! আর রাজিয়ার এমন ব্যবহার দেখে খুবই রেগে যায়। রাজিয়াকে তালাক দিতে বলে রকিবুল। কিন্তু রকিবুল তার ভুল বুঝতে পারে। কারণ সেও রাজিয়াকে প্রতিনিয়ত আঘাত করেছিল। যার জন্য রাজিয়াও তাকে মেরেছে। রাজিয়া মূলত ফোনে কেরাতে শিখে প্র্যাকটিা করেছিল আর সেটাই প্রয়োগ করে রকিবুলের উপর! তারপর থেকে রকিবুল রাজিয়াকে কিছু বলতেও ভয় পায়। রাজিয়া যা বলে তাতেই সম্মতি দেয় রকিবুল! তারপর কি হয়েছিল জানতে হলে নাটকটি দেখতে হবে।
ব্যক্তিগত মতামত
ব্যক্তিগত ভাবে নাটকটি আমার কাছে ভালোই লেগেছে। নাটকটিতে বেশ কিছু দিক স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে! এক, বিয়ের পরে মেয়েরা চাইলেই তার সব শখ আহ্লাদ পূরণ করতে পারে না। এমনকি পড়ালেখা করতেও দেয় না। দুই, নারীর ক্ষমতায়ন বিষয়টা ফুটে উঠেছে! গ্রামে এমন অনেক বিয়েই হয়। বিয়ের পরে দেখা যায় মেয়েরা স্বামীর হাতে প্রতিনিয়ত শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়। মুখ বুঝে সব সহ্য করে যায়। তবে নাটকটিতে রাজিয়া দেখিয়েছে কিভাবে প্রতিরোধ করতে হয় নির্যাতনের! পরিচালক সাহেব বর্তমান সময়ের জন্য দারুণ একটি নাটক তৈরি করেছেন। খাইরুল বাশারের অভিনয় আমার কাছে সবসময় ভালো লাগে। তাসনিয়া ফারিন দারুণ অভিনয় করেছে নাটকটিতে।
ব্যক্তিগত রেটিং
৯/১০
নাটকটির লিংক
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। সম্প্রতি আমি ইলেকট্রিক্যাল থেকে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেছি। এখন বিএসসি এর জন্য প্রিপারেশন নিচ্ছি। পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত দু বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। যাক,
নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
নাটকটি দেখেছি বেশ মজার ছিল। তবে মজার সাথে সাথে বেশ সুন্দর করে একটি শিক্ষনীয় বিষয় আমাদের কে বুঝিয়েছেন পরিচালক। এখন কিন্তু মেয়েরা আর অবলা নয়। তাই সব মেয়েদের কে আন্ডার স্টিমিট করা যাবে না। আপনি বেশ সুন্দর করে নাটকটির রিভিউ শেয়ার করেছেন। ধন্যবাদ এত সুন্দর করে নাটকটির রিভিউ শেয়ার করার জন্য।
আপনাকেও ধন্যবাদ আপু 🌸
twitter share
অনেক সুন্দর একটি নাটক রিভিউ করেছেন ভাইয়া, নাটকটা বেশ দারুন ছিল। আমি নাটক রিভিউ জাতীয় পোস্টগুলো বেশি পছন্দ করে থাকি কারণ একটা নাটক সম্পর্কে খুব সুন্দর ধারণা পাওয়া যায় রিভিউ এর মধ্যে।
জি আপু, রিভিউয়ের মাধ্যমে একটা ধারণা পাওয়া যায় আসলে নাটকটা সম্পর্কে।
বাহ চমৎকার একটি নাটক রিভিউ দিলেন আপনি। নাটক দেখে নিলেন সেই সুন্দর নাটকটি আপনি আমাদের সাথে রিভিউ শেয়ার করলেন। নাটক রিভিউ গুলো দেখতে বেশ ভালো লাগে। যদিও সময় পায় না নাটক গুলো দেখার। যখন রিভিউর মাধ্যমে দেখতে পাই ভীষণ ভালো লাগে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে পরস্পর নাটকটি রিভিউ শেয়ার করলেন।
সময় করে একদিন দেখতে পারেন আপু। ভালো লাগবে।
অনেক সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। নাটকের রিভিউটি পরে আমার খুবই ভালো লেগেছে। আসলে এরকম নাটক গুলো দেখতে আমি খুবই পছন্দ করি। তাই আগামীতে সময় পেলে অবশ্যই নাটকটি দেখে নিবো।
সময় করে দেখতে পারেন, ভালো লাগবে আশা করি। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে 🌸
পরস্পর নাটকটি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। রাজিয়া তার স্বামীর হাতে মার খেতে খেতে একসময় অসহ্য হয়ে গিয়েছিল। আছে মোবাইল দেখে ক্যারাটিয়া শিখে একদিন তার স্বামীকে উচিত শিক্ষা দেয়। ধন্যবাদ ভাইয়া এরকম সুন্দর একটি নাটক আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
হাহাহা, কেরাতে শিখে স্বামীকেই দিল মার! 😁 আপনাকে ধন্যবাদ আপু
এই নাটকটি আমি যখন দেখছিলাম তখন সত্যি অনেক ভালো লেগেছিল। যদিও এই নাটকের মত দেখতে আমি অন্য একটি নাটক দেখেছিলাম। সেটা ছিল একটি ইন্ডিয়ান মুভির সিন। যাইহোক আসলে অনেক সময় মেয়েরা চাইলেও অনেক কিছু করতে পারেনা। দারুন ভাবে আপনি এই নাটক রিভিউ শেয়ার করেছেন এজন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
জি আপু, নাটকটি আমার কাছেও ভালো লেগেছিল। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে 🌸
ইদানিং বাংলা নাটক গুলোর কাহিনী প্রায় একই হয়। ঐ প্রেম ভালোবাসা সংসার রাগ অভিমান এর বাইরে এরা বের হতে পারে না। তবে এই নাটকে ডিমের একটা পার্ট আছে যেটা একটু হাস্যকর। ডিমের ঐ কাহিনী টা আলাদা করে তুলেছে নাটক টা। ফেসবুকে বেশ কিছু ক্লিপ দেখেছি নাটক টার। দারুণ রিভিউ করেছেন নাটক টার। ধন্যবাদ আমাদের সাথে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।
নাটকের কাহিনী আসলে সব একই রকম হয়ে যায় আসলে। তবে বেশ কিছু দিক ভালো ছিল নাটকটিতে। আপনাকে ধন্যবাদ ভাই।
এই নাটকটি আমি দেখেছিলাম। নাটকটি কিন্তু একেবারে ভিন্ন ধরনের ছিল। একজন মেয়ে তার স্বপ্ন পূরণ করার চেষ্টা করেছে আর শেষে বেশ ভালোভাবেই প্রতিবাদ করেছে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি ভাইয়া এই নাটক রিভিউ সুন্দর করে উপস্থাপন করার জন্য।
আপনাকেও ধন্যবাদ ভাইয়া 🌸
আপনি বেশ চমৎকার একটি নাটকের রিভিউ আমাদের মাঝে উপস্থাপন করছেন।আপনার শেয়ার করা নাটকটি এখনো দেখা হয়নি। তবে নাটকের রিভিউ পড়ে খুবই ভালো লাগলো। সময় করে নাটকটি দেখে নেওয়ার চেষ্টা করবো। আপনাকে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।
আপনাকেও ধন্যবাদ ভাই