১ম পর্বঃ এক তরফা ভালোবাসা
05-09-2022
২১ ভাদ্র ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি ভালো আছেন সবাই। যাক আজকে চলে এলাম আপনাদের সাথে গল্প শেয়ার করার। গল্পটি কয়েকটি পার্টে সাজিয়েছি। ধীরে ধীরে বাকি পর্বগুলোও শেয়ার করবো। আশা করি আপনাদের কাছ ভালোই লাগবে।
রূপার বাড়ির কাছেই উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল। এবার রূপা নবম শ্রেণীতে পা দিয়েছে। পড়াশোনায় রূপা খুব ভালো। জেসসিতে এ+ পেয়েছে। নবম শ্রেণীতে সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা করে। কিন্তু মিডটার্ম পরীক্ষার পর রূপা টেক্সটাইল এ চলে আসে। ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়ুক রূপা তার মা বাবা চাই। এজন্য রূপাকে টেক্সটাইল স্কুল এন্ড কলেজে ভর্তি করাবে। মাধ্যমিল স্কুল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে আসে রূপা। মাকে নিয়ে সকালেই চলে যায় স্কুলে। গিয়ে হতাশ হয় রূপা। কারণ ভর্তির সময় শেষ। রূপার চোখ থেকে জলজল করে পানি ঝরছে। ঐ স্কুল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে এসেছে এখন রূপা এই স্কুলে ভর্তি হতে না পারলে পড়ালেখা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়বে। রূপার কান্না যেন কোনোভাবেই থামছে। দূর থেকে একটি ছেলে রূপার অঝোরে কান্না দেখছে। ছেলেটির নাম রাফি। টেক্সটাইল স্কুলেই পড়াশোনা করে। রূপার কান্না দেখেই রাফির মনে একরমকম অনুভূতির সৃষ্টি হয়। আর যেটা হয়তো ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।
রূপার সাথে তার মা এসেছে। কিছুতেই কান্না থামানো যাচ্ছে না রূপার। রাফি সাহস নিয়ে এগিয়ে যায় রূপার কাছে। সাথে থাকা তার মাকে সালাম দেয় রাফি। আন্টি হিসেবেই সম্বোধন করে রূপার মাকে। ভর্তি করাতে এসেছে রূপাকে, এসে এক মহাবিপদ এ পড়ে গেছে। রাফি এ স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে পড়াশোনা করছে। ছাত্র হিসেবেও রাফি মেধাবী। স্কুলের স্যারদের সাথে ভালো সম্পর্ক রয়েছে রাফির। রাফি তখন ডিপার্টমেন্ট এর ইন্সট্রাক্টর শাকিল স্যারের সাথে কথা বলার পরামর্শ দেয়। শাকিল স্যার ভর্তি সংক্রান্ত ব্যাপারে সাহায্য করতে পারবে। রূপার মা তখন শাকিল স্যারের সাথে কথা বলে। শাকিল স্যার রূপার রিচাল্ট দেখে খুশি হয়। স্যার সুপারিশ করবে রূপার ব্যাপারে রূপার মাকে আশ্বাস দেয়। রূপার কান্না যেন থামলো।
পরদিন স্কুলে এসে ভর্তি হয় রূপা। রাফি সেদিনের রূপার কান্না দেখে মায়ায় পরে যায়। ক্লাসে রূপা যখন আসে তখন রাফি গিয়ে রূপার সাথে কথা বলে। রূপা ছেলেদের সাথে তেমন কথা বলে না। রাফি ধীরে ধীরে কথা বলে পরিচিত হতে থাকে। একটা পর্যায়ে ভালো একটা বন্ধুত্ব তৈরি হয়। শুরুতে রাফি রূপাকে তুমি বলে ডাকতো। এতে অবশ্য রাফির ভালোই লাগতো। কারণ রাফি প্রথম দেখাতেই রূপাকে ভালো লেগে যায়। ক্লাসের ফাকেঁ ফাকে রূপার সাথে কথা হয় রাফির। ডিপার্টমেন্ট এর বিষয়গুলো স্যারদের কাছে প্রাইভেট পড়তে হয়। পরীক্ষায় নাম্বারও ভালো পাওয়া যায়। স্কুলের শাকিল স্যার ফিজিক্স আর কেমিস্ট্রি পড়াতো। স্যারের কাছে অনেকেই প্রাইভেট পড়তো। রূপা আর রাফি সিদ্ধান্ত নেয় তারা দুজনও শাকিল স্যারের কাছে প্রাইভেট পড়বে। স্কুল শেষে শাকিল স্যারের প্রাইভেট। বিকাল ৪টা থেকে ৬ টা পর্যন্ত। স্কুল শেষ করে রাফি আর রূপা হেটেঁ হেটেঁ শাকিল স্যারের প্রাইভেট এ চলে যায়।
মাঝে মাঝে যখন স্কুল বন্ধ থাকতো তখন রাফি আগেই জানিয়ে দিতো কখন আসবে প্রাইভেটে। রূপার জন্য আগেই দাড়িঁয়ে থাকতো রাফি। রূপাকে নিয়ে তারপর হেটেঁ হেটেঁ প্রাইভেটে যেত। হাটঁতে হাটঁতে অনেক কথায় হতো। রূপার চকলেট খুব প্রিয় ছিল। রাফি মাঝে মাঝে রূপার ব্যাগে চকলেট রেখে দিত। রূপা অবশ্য জানতো যে রাফি ছাড়া কেউ তার ব্যাগে চকলেট রাখবেনা। রূপা রাফিকে খুব ভালো বন্ধু ভাবে নেয়। এজন্য রূপা রাফিকে বলে তুমি না বলে তুই করে ডাকতে। রূপার কাছে তুই করে কথা বলাটাই আপন মনে হয়। রাফি অবশ্য তেমন কিছু মনে করেনি। রূপা যখন বলেছে তুই করে বলতে এজন্য সে তুই করেই ডাকে। তাদের বন্ধুত্ব যেন আরও গভীর হতে থাকে। রাফি সবসময় রূপার কথা ভাবে। রাফির ভালো লাগার কথা রূপাকে কখনো বলেনি। তাদের বন্ধুত্বের ছয়মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও। রাফি সিদ্ধান্ত নেয় রূপাকে সে প্রপোজ করবে। কিন্তু তার মন বারবার বাধাঁ দিতে থাকে। তার ভালো লাগার কথা বললে রূপা যদি কিছু মনে করে? রাফি ভাবতে থাকে।
রাফিদের বাড়ির কাছেই বিল ছিল। এখন যেহেতু বর্ষাকাল তাই বিলে প্রচুর শাপলা ফুল পাওয়া যাবে। বিলের মাঝে অনেক শাপলা ফুল ফুটে আছে। বিলের এক পাশে দাড়ঁ করানো সালাম কাকার নৌকা। সালাম কাকা এই নৌকা দিয়ে মাছ ধরে বিল থেকে। নৌকা খালি পেয়ে রাফি চলে যায় বিলের মাঝে। অনেক শাপলা ফুল সেখান থেকে সংগ্রহ করে। রাফি মনে মনে ভাবতে থাকে রূপাকে দিলে হয়তো অনেক খুশি হবে। মেয়েরা ফুল খুব পছন্দ করে। রূপা পদ্ম আর কদম ফুল অনেক পছন্দ করতো। রাফি কদম ফুল হাতে নিয়ে আগেই চলে যায় স্কুলে। আজ রূপা আসলে তাকে শাপলা ফুল দিয়ে প্রপোজ করবে। ক্লাসে ব্যাগ রেখে রাফি বারান্দায় দাড়িঁয়ে আছে। দূর থেকে দেখতে পায় রূপা স্কুলে আসছে। আজ রূপাকে তার মনের সব কথা বলেই ফেলবে রাফি।
চলবে....
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
Link
আহা শেষ মূহুর্তে এসে থেমে গেলেন। রাফি কী বলতে পারবে রুপাকে না অপেক্ষার প্রহর আরও দীর্ঘ হবে। যাইহোক অপেক্ষায় থাকলাম পরবর্তী পর্বের জন্য ভাই।।
খুব শীঘ্রই দ্বিতীয় পর্ব আসবে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ
গল্পটি প্রথমে পড়তে খুব ভালো লাগলো। শেষটি কি হবে। কদম ফুল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। পরে কি হবে অপেক্ষায় আছি। সুন্দর করে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। অনেক অনেক শুভকামনা রইলো।
আপনাকেও ধন্যবাদ আপু গল্পটি পড়ার জন্য। খুব শীঘ্রই দ্বিতীয় পর্ব আসছে 😍