আমরা পাল্টালে-পাল্টাবে সব কিছু -সবুজ প্রকৃতির গল্প
শুভ বিকেল বন্ধুরা,
আমরা প্রায় সময় একটা কথা বলি, চলো পাল্টে যাই-চলো নিজেকে পাল্টাই। নিজেকে দিয়ে শুরুর কথাটা প্রথমেই বলি কারন আমরা জানি আমি নিজেকে যতক্ষন না পরিবর্তন করতে পারবো, ততক্ষন অন্যদের পরিবর্তনের কথা বলে কোন লাভ হবে না। সুতরাং নিজের পরিবর্তনটা বেশী জরুরী এই ক্ষেত্রে। আর আমি যখন পাল্টে যাবো, নির্দিষ্ট বিষয়ে নিজের অবস্থান নিশ্চিত করতে পারবো, তখন এর প্রভাবটি সহজেই অন্যকে প্রভাবিত করবে। আর এই কারনেই বলা হয় আগে নিজেকে পাল্টে দাও।
বিষয়টি আমরা শুধুমাত্র শ্লোগান তৈরী জন্যই বলছি কারন অন্তত এটা পরিস্কার হয়ে গেছে যে, আমরা কেউ নিজেদের পরিবর্তন চাই না এবং অন্যদেরকেও পরিবর্তন করতে চাই না। আসলে আমরা অবস্থান পরিবর্তন করতে আগ্রহী না কোনভাবেই। এটা আমাদের জন্য খুবই দুঃখজনক একটি বিষয়। কারন আমরা অবস্থান ধরে আকড়ে থাকতে চাই এবং সেখানে বসেই সব কিছুর পরিবর্তন প্রত্যাশা করি, যার কারনে কোনটাই আমাদের জন্য সম্ভবপর হয়ে উঠে না এবং কোনদিনও হয়ে উঠবে না।
কারন আপনি যদি কোন কিছুকে স্থানান্তরিত করতে চান তাহলে দুটি বিষয়ের অবস্থান সুনিশ্চিত করতে হবে সবার আগে, আর তা হলো যাদের স্থানান্তরিত করতে চান তাদের সঠিক অবস্থান নির্ণয় করা। দেখুন আপনি যদি এক বোতল হতে তেল বা পানি অন্য একটি বোতলে ঢালতে চান, তাহলে দুটো বোতলের অবস্থান সঠিক পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে, একটি বোতলের মুখ অন্যটির সাথে সামান্তরালভাবে ধরে তারপর চেষ্টা করলে এক বোতলের তেল বা পানি অন্য বোতলে স্থানান্তরিত হবে, অন্যত্থায় তেল বা পানি নষ্ট হবে কিন্তু কোন কাজ হবে না নিশ্চিতভাবে। যদি এই বিষয়টি বুঝতে পারেন, তাহলে উপরের কথাগুলো সহজেই আপনি উপলব্ধি করতে পারবেন। অন্যত্থায় লেখাপড়ে ভালো লাগবে কিন্তু ফলাফলই সেই শূণ্যই থেকে যাবে।
যাইহোক, শুরুটা অন্যভাবে আরম্ভ করেছি আজ, কিন্তু শেষটা কাংখিতভাবে শেষ করতে চাই প্রকৃতির সজীব কিছু অনুভূতির মাধ্যমে। আমার এখনো স্পষ্ট মনে আছে, ছোট বেলায় স্কুল ছুটির পর গ্রামের বাড়ীতে বেড়াতে যেতাম, তখন নানা এক প্রকার জোর করে বাহিরে নিয়ে যেতেন বেশী সময় ঘরে থাকতে দিতেন না। কারন তিনি চাইতেন সময়টা যেন প্রকৃতির সাথে উপভোগ করি, সারাদিন বাড়ীতে থেকে অসল সময় যেন ব্যয় না করি। সত্যি আমিও তখন মামাদের সাথে ছুটে যেতাম, নদীতে, ফসলি জমির মাঝে, আখ খেত, পাট খেত, ফুটবল খেলার মাঠ, আর মেলার কথাতো নতুনভাবে বলার প্রয়োজন নেই। কারন তখন এটা ছিলো সবচেয়ে আকর্ষনীয় বিষয়।
![]() | ![]() |
---|
কিন্তু মূল বিষয়টি ছিলো প্রকৃতি এবং তার সজীবতা। তখন ততোটা বুঝতাম না কিন্তু ভালো লাগতো প্রকৃতির মাঝে সময় ব্যয় করার বিষয়টি। এখন বুঝতে পারছি সেই সময়গুলোর প্রয়োজনীয়তা। দেখুন করোনার সময় আমরা যারা সারাদিন বাড়ীতে বন্দি থাকতে বাধ্য হয়েছিলাম, তারা খুব সহজেই উপলব্ধি করেছি বিষয়টি আমাদের জন্য কতোটা কষ্টকর এবং বোরিং ছিলো। আবার উল্টোটা চিন্তা করুন, যারা গ্রামীন পরিবেশে ছিলো এবং প্রকৃতির মাঝে সময় ব্যয় করার সুযোগ পেয়েছিলেন, তাদের মানসিক অবস্থা কতটা ভালো ছিলো। পার্থক্যটা অনুভব করতে পারলেই বিষয়টি আপনার নিকট পরিস্কার হয়ে যাবে। এখন অবশ্য সেই শৈশবের সেই দিনগুলোর মাঝে ফিরে যেতে পারবো না কিন্তু স্মৃতিগুলো কল্পনা করে কিছুটা সময় উপভোগ করতে পারবো।
এখন কেউ প্রকৃতির মাঝে যাওয়ার ব্যাপারে তাড়া দেয় না, কিন্তু নিজের আগ্রহে ছুটে যাই এবং যতটা সম্ভব উপভোগ করার চেষ্টা করি। সত্যি বলতে মানসিক প্রশান্তির একটা বিষয় রয়েছে, যেটা আমি প্রকৃতির মাঝে থেকেই উপলব্ধি করতে পারি। যান্ত্রিক জীবনের মানসিক চাপ দূর করার জন্য এবং নিজেকে সতেজ রাখার জন্য প্রকৃতির সান্নিধ্য এখন আমি নিজেই খুঁজে নেই, কারন বিষয়টির গুরুত্ব এখন আমি বেশ উপলব্ধি করতে পারি। এই কারনেই বললাম, আগে নিজের উপলব্ধিকে ঠিক করতে হবে তারপর বাকি সব সহজ হয়ে যাবে। নিজেকে আগে পাল্টাতে চেষ্টা করুন, বাকিরা পাল্টে যেতে বাধ্য হবে।
W3W Code: https://what3words.com/manifests.hothouse.tarnished
Device: Redmi 9, Xiaomi
ধন্যবাদ সবাইকে।
আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।
100 SP | 250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP |
জ্বী ভাই আমরা কখনো নিজেরা পাল্টাতে চাই না। সবসময় প্রত্যাশা করি অন্য কেউ পাল্টালে আমরা পাল্টাবো। কিন্তু বাস্তব সত্য হচ্ছে আমরা যখন পাল্টে যাব তখন আমাদের দেখা দেখি অনেকেই পাল্টাবে। কিন্তু পাল্টে যাওয়ার জন্য আমাদের এত সময় কই? আমরা এই বিষয়ে কখনো সময় দিতে চাইনা এটাই বাস্তবতা! ধন্যবাদ ভাই
আসলে করোনা, লকডাউন ইত্যাদির অনেক ক্ষতিকর দিক থাকলেও একটি ভাল দিক হচ্ছে প্রকৃতি কিছুটা হলেও আমাদের মাধ্যমে প্রকৃতির যেই ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে তা একটু হলেও কাটিয়ে উটঠে পেরেছে। আমরা নিজেদের পরিবর্তন করতে পারলে প্রকৃতিও নিজে নিজেই পালটে যাবে।
নিজের পরিবর্তন হতে চাই না তবে অন্যকে পরিবর্তন করতে চায় এমন লোকের অভাব নেই। আমি ব্যতিক্রম নই। তবে সেগুলোকে বদলানোর আপ্রাণ চেষ্টা করছি।
শহুরে ব্যস্ত জীবনে হয়তো মানুষের কাছে সময় নেই, সময় থাকলেও যেতে চায় না। এটার আশু প্রয়োজন।
সেটাই, আমাদের সঠিক প্রচেষ্টাই পারে সঠিক দিকে নিয়ে যেতে। ধন্যবাদ
দৈনন্দিন জীবনের এই প্রতিদিনকার দালানকোঠা ছেড়ে যখন প্রকৃতির সান্নিধ্য পাওয়া যায় তখন তা হয় অন্যরকম একটা প্রাপ্তি।আমিও আগে ব্যাপারটা উপলব্ধি করতে পারতাম না তবে এখন পারি। শেষের ছবির রাস্তাটা দেখে চোখ জুড়িয়ে গেলো।কোনো এক বিকেলে এই নির্জন শান্ত রাস্তায় হেটে বুক ভরে নিশ্বাস নেওয়ার সোভাগ্য হলে ভালোই লাগবে।সুন্দর কন্সেপ্ট নিয়ে লিখছেন ভাইয়া।
জায়গাটা সত্যি অনেক সুন্দর ছিলো, পথটি ধরে অনেক দূর চলে গিয়েছিলাম হাঁটতে হাঁটতে, শেষে ছেলে বলে তার নাকি পা ব্যাথা হয়েগেছে, তাই আবার ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছি।
বাচ্চাগুলা এমন ই করে হাটতে বের হলে।😂
যদিও আমিও সেইম কাজ করি। 😶
আমাদের অবশ্যই উচিত নিজেকে পরিবর্তন করা এবং তারপরে অন্যকে পরিবর্তনের কথা বলা, তবে আপনার সাথে আমি সহমত, আমরা নিজেদের জায়গা থেকে কেউ পরিবর্তিত কিংবা এক ধাপ নতে চায়না।
পরিবর্তন তো দূরের কথা
তবে তার আগে নিজের অবস্থান হতে বের হয়ে আসতে হবে, অন্যত্থায় তা সম্ভব না। ধন্যবাদ
আপনি একটা ভালো বিষয় নিয়ে পোষ্ট করেছেন ভাইয়া,আসলেই আমরা পাল্টে গেলে আমাদের চারিপাশের পরিবেশ পাল্টে যাবে। আর এই পাল্টে যাওয়ার জন্যে দরকার সঠিক মন মানসিকতা। সঠিক মন মানসিকতা না থাকলে আমরা কখনোই পাল্টাতে পারবো না।
হ্যা, আমরা ভালো না তাই আমাদের চারপাশের পরিবেশও ভালো হচ্ছে না। ধন্যবাদ বুঝতে পারার জন্য।
You are welcome vhai
বাংলাদেশকে প্রকৃতির সুরম্য লিলানিকেতন বললে ভুল হবে না। আপনার প্রকৃতির ছবি গুলিতে সেই গুলো ফুটে উঠেছে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে
খুব সুন্দর ভাবে আপনি বর্তমান সময়ের বাস্তবতা তুলে ধরেছেন।সত্যিই আমরা নিজেরাই প্রকৃতির সৌন্দর্য হারিয়ে ফেলেছি।যখন ছোট ছিলাম তখন প্রকৃতির সাথে সময় কাটাতাম কিন্তু তখন উপভোগ করার বুদ্ধি আমাদের ছিল না।এখন আমাদের পরিপূর্ণ সময় হয়েছে প্রকৃতি উপভোগ করার কিন্তু আমরা প্রকৃতি সম্পর্কে একটু ভেবেও দেখি না। শুধু দোষ দেই পরিবেশের।
কথাটা একদম লজিক্যাল কথা ভাই।পোস্টটি সত্যিই খুব সুন্দর হয়েছে।আপনার জন্য অনেক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইলো ভাই।😍
বাহ ভালো তো,,
আমিও আজকে প্রকৃতি নিয়ে লিখতেছি।
ভালো তো ভালো না, হি হি হি
অনেকদিন পর এরকম প্রকৃতির ছবি দেখে অনেক ভালো লাগছে। আমার নানির বাড়ি রাস্তার কথা মনে পড়ে গেল। অনেকদিন থেকে সেখানে যাওয়া হয়না। অনেক সুন্দর ভাবে উপস্থাপনা করেছেন আপনি প্রকৃতির রূপ।