আবোল-তাবোল জীবনের গল্প [ আমরা এবং আমাদের স্বভাব ]

in আমার বাংলা ব্লগ4 months ago

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ্য আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি বেশ ভালো আছি এবং ভালো থাকার চেষ্টায় নিজেকে গতিশীল রাখার চেষ্টা করছি। যদিও সিজন এবং প্রকৃতির পরিবর্তন জনিত কারনে চারপাশের পরিচিত মানুষগুলো বেশ অসুস্থ্য এবং যার কারনে কম বেশী আমরা সবাই চিন্তিত আছি। এই সময়টা আমাদের জন্য মোটেও ভালো যাচ্ছে না, তারপর আবার সামনে রয়েছে রোজা। বুঝতেই পারছেন চিন্তার মাত্রার লেভেলটা হুট করে উর্ধ্বগামী হয়েগেছে। অবশ্য আমাদের চিন্তার আগেই দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতী অনেক আগেই শুরু হয়ে গেছে। এটা আমাদের জন্য একদমই স্বাভাবিক কিছু এখন। কারণ সেই ছোট বেলা হতেই এমনটা দেখে আসছি এবং ভবিষ্যতেও হয়তো এমনটাই দেখতে পারবো।

কারন আমাদের মাঝে পরিবর্তনের কোন লক্ষণ কিংবা আগ্রহ খুব একটা দেখি না। পুরো পৃথিবীতে মানুষ পরিবর্তন হওয়ার চেষ্টা করে, নিজেদের স্বভাব চরিত্রকে উন্নত করার চেষ্টা করে এবং একটা সময় পর তারা নিজের এবং চারপাশের পরিবেশের দারুণ পরিবর্তন আনতে সক্ষম হোন। কারন তারা নিজেদের এবং চারপাশের পরিবর্তনের ইচ্ছা করেন। নিজের এবং পরিবেশের উন্নতির স্বপ্ন দেখেন, যা ছিলো বা যা ভুল ছিলো সেগুলো হতে শিক্ষা নেন তারপর সেখান হতে ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসেন। এটাই কাংখিত বিষয় এবং এই বিষয়টি আমাদের সকলের মাঝে থাকা উচিত ছিলো। কিন্তু অনাকাংখিত হলেও সত্য আমাদের বাঙালিদের মাঝে এটা একদমই নেই। আমরা এগুলোকে ঐতিহ্য হিসেবে ধরে রাখার চেষ্টা করি।

man-7412527_1280.png

হ্যা, এই হিসেবে আপনি নিজেকে ধন্য দিতে পারেন, আপনার আমার দাদা-বাবা-চাচারা যে ভুলগুলো করেছেন ইচ্ছায় হোক কিংবা অনিচ্ছায় হোক, আমরা তাদের যোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে দারুণভাবে সেগুলোকে ধরে রাখার চেষ্টা করছি। এই হিসেবে বা দৃষ্টিকোন হতে আমাদের পুরস্কৃত করা উচিত হি হি হি। আমরা গর্ব করে ভালো বিষয়গুলো নিয়ে না বরং খারাপ বিষয়গুলোকে নিয়ে, এটা শুধুমাত্র যে আমাদের লেভেল হতে চলছে তা কিন্তু না বরং রাষ্ট্রের শীর্ষ পর্যায় হতেই চলছে। আমরা সবটা মেনে নিয়েছি কারন আমাদের নিজেদের অবস্থাও যে তাই। যাইহোক, আমরা অতীত ঐতিহ্য ধরে রাখার ক্ষেত্রে খুবই বিশ্বাসী এবং বিশ্বাস বলতে পারেন, চাই সেটা মন্দ হোক কিংবা ভালো হোক, এটা আমাদের অবশ্যই একটা গুন, হি হি হি।

আবোল তাবোল জীবনের গল্প নিয়ে আজকে কিছু লেখার ইচ্ছা করেছিলাম, আমরা ও আমাদের স্বভাব এটা দিতে চেয়েছিলাম আজকের লেখার টাইটেল। কিন্তু সকালে উঠে ডিসকর্ডে ঢুকেই মনটা খারাপ হয়ে গেলো, অনাকাংখিত আগুনের কারনে অনেকগুলো তাজা প্রাণের মৃত্যুর খবর শুনে। সবাই হয়তো সকালে উঠে পত্রিকা পড়েন কিন্তু আমি সকালে উঠেই আগে ডিসকর্ডে ঢুকি, নতুন কোন নোটিশ আছে কিনা সেটা দেখার জন্য। যা বলছিলাম, মৃত্যুর সংখ্যাটা দেখে হৃদয়ে একটা মোচড় দিয়ে উঠলো, এমন একটা জায়গায় এতোগুলো মানুষের মৃত্যু সত্যি অনাকাংখিত। হয়তো পুরোন ঢাকা হলে সেটা নিয়ে এতোটা আলোচনা হতো না, কারন সেখানে সেটা অনেকটাই স্বাভাবিক কিছু।

firefighters-115800_1280.jpg

আমি প্রায় দশ বছর বসবাস করেছিলাম পুরান ঢাকার নাজিরা বাজারের পাশে। বিশ্বাস করুন প্রতিদিন রাতে একটা আতংক নিয়ে ঘুমাতে যেতাম, আগুনের লেলিহান শিখা পরের দিনের সকালের আলো দেখার সুযোগ দিবে কিনা সেই সন্দেহ এবং সংশয় নিয়ে। অবশ্য দুই তিনবার বাড়ির সকল মালামাল রেখেই দৌড় দিয়েছিলাম। চারপাশে যখন শুনলাম আগুন আগুন আগুন সবাই বাসা হতে দ্রুত বের হয়ে আসুন। অনেকটা দিশেহারা হয়েই বউ-ছেলেকে নিয়ে কয়েকবার দৌড় দিয়েছিলাম। যদিও কোনবারই আগুন আমাদের বাসা পর্যন্ত আসতে পারে নাই, কিন্তু সেই ভয় কিংবা আতংকটা যতদিন ছিলাম আর দূর করতে পারি নাই। পুরান ঢাকা যারা থাকেন তারা হয়তো সেটাকে তাদের জন্য স্বাভাবিক কিছু হিসেবে মেনে নিয়েছেন।

কারন এতো কিছুর পরও পুরান ঢাকার পরিবেশ এখনো পরিবর্তন হয় নাই, স্থানীয় কিংবা রাষ্ট্রীয় কোন পর্যায় হতেই তেমনভাবে কখনোই উদ্যোগ নেয়া হয় নাই, যা হয়েছে বা শুনেছেন সবই শুধুমাত্র কাগুজে কলমে এবং মুখে মুখে। কিন্তু বেইলি রোডের গতকালের ঘটনা হয়তো সকলের হৃদয়ে কিছুটা হলেও নাড়া দিয়েছে, আমরা মৃতদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষকে সুন্দর পরিবেশ বজায় রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার আহবান জানাচ্ছি। সুন্দর পরিবেশে সবাই সুন্দর জীবন উপভোগ করার সুযোগ পাক, এই প্রত্যাশা নিয়ে শেষ করছি আজকের আবোল তাবোল জীবনের গল্প।

Image taken from Pixabay 1 2

ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah

break .png
Leader Banner-Final.pngbreak .png

আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।

break .png

Banner.png

Sort:  
 4 months ago 

দিন যত যাচ্ছে মানুষের জন্য জীবন মান খুবই কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এইতো কিছুদিন পর রমজান শুরু হবে দ্রব্যমূল্যের যে উর্ধ্ব গতি একশ্রেণীর মানুষের জন্য কঠিন মুহূর্তের দিন চলে আসছে । যার জন্য আমরা নিজেরাই দায়ী । জাতি হিসেবে আমরা এগিয়ে যাব কি আরো পিছিয়ে যাচ্ছি ।বাঙালির এই অলসতার স্বভাব নিজেদেরকে পিছনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। ভালো লাগলো আপনার আবোল তাবোল জীবনের গল্প।

Posted using SteemPro Mobile

 4 months ago 

আসলেই দাদা , আমরা বাঙালিরা আমাদের স্বভাব পরিবর্তন নিয়ে ভাবি না ৷ আমরা অনেক ক্ষেত্রে এখনো বাপ দাদার কুসংস্কার মেনে আসছি ৷ তবে যাই হোক , জীবন কিন্তু আসলেই ভীষণ কঠিন ৷ দিন দিন আরো বেশি কঠিন হয়ে দারাচ্ছে ৷ আগুনে পুড়ে এতো মানুষের প্রাণ যাওয়ার খবরটা আসলেই ভীষণ কষ্টদায়ক ছিলো ৷ আজকাল জীবনের যেনো কোনো মূল্য নেই ৷ যাই হোক পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো ৷ ধন্যবাদ দাদা শেয়ার করার জন্য ৷

Posted using SteemPro Mobile

Congratulations, your post has been upvoted by @dsc-r2cornell, which is the curating account for @R2cornell's Discord Community.

Manually curated by @jasonmunapasee

r2cornell_curation_banner.png

 4 months ago 

ভাই আমরা ঐতিহ্য ধরে রাখতে খুব পছন্দ করি। সেটা ভালো হোক কিংবা মন্দ, তাতে আমাদের কিছু যায় আসে না। আমাদের কিন্তু গুণ আছে ভাই 😂। আজকে বিকেলের পর বাজারে গিয়েই দেখতে পেলাম, রমজান মাস শুরু হওয়ার আগেই দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়তে শুরু করেছে। যাইহোক বেইলি রোডের এই নিউজটা ইউটিউবে দেখে বেশ মর্মাহত হয়েছি ভাই। পুরান ঢাকার পরিবেশ তো একেবারেই বাজে। সেখানে মানুষ আতঙ্ক নিয়েই বসবাস করে সবসময়। ঢাকা শহরে একের পর এক অগ্নিকাণ্ড ঘটেই চলেছে। যাইহোক সবার জন্য অনেক অনেক দোয়া রইল।

Posted using SteemPro Mobile

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 58613.96
ETH 3153.58
USDT 1.00
SBD 2.43