আবোল তাবোল জীবনের গল্প [ একাল-সেকাল ]

in আমার বাংলা ব্লগ2 days ago

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমি ভালো আছি তবে কতটা সময় ভালো থাকতে পারবো সেটা বলতে পারছি না। কারন অন্য রকম একটা ভয় কিংবা শংকা নিয়ে এই পোষ্টটি লিখতে বসেছি। কারণ হতে পারে এই পোষ্টটি শেষ পোষ্ট, আবার সাতদিন কিংবা দশদিনের জন্য অফলাইনে চলে যেতে পারি। আসলে আমরা যারা অনলাইনে কাজ করি, আধুনিক প্রযুক্তি সুবিধা নিয়ে বিশ্বের অন্য প্রন্তের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে কিছু ইনকাম করার চেষ্টা করছি, একটু সাবলম্বি হয়ে স্বচ্ছল থাকার চেষ্টা করছি তাদের হয়তো সেই সুযোগটা রহিত হতে পারে। আমার মতো হাজার হাজার ছাত্র-যুবক-চাকুরীজীবী এই অনলাইন ভিক্তিক নানা কিছুর উপর নির্ভরশীল হয়ে আছে, একটু বাড়তি ইনকাম করে পরিবার নিয়ে সুখে থাকার কিংবা নিজের প্রয়োজন মেটানোর চেষ্টা করছেন।

শুধু স্টিমিট নয় বরং এই রকম আরো অনেক সাইড রয়েছে সেখানে বর্তমান প্রজন্মের শিক্ষিত শ্রেণীর একটা বিড়াট অংশ প্রযুক্তির সুবিধা নিয়ে কাজ করছেন এবং জীবনের গতিশীলতা ধরে রাখার চেষ্টা করছেন। নিজেদের দক্ষতা এবং সৃজনশীলতা প্রকাশের মাধ্যমে নিজেদের অভাব দূর করার চেষ্টা করছেন। একটু চিন্তা করুন, আমাদের দেশের কত হাজার হাজার তরুণ এই ব্লকচেইন ভিক্তিক স্টিমিট দুনিয়ার সাথে সংযুক্ত আছে এবং তারা নিজেদের দক্ষতার প্রমান দিয়ে গতিশীল থাকার চেষ্টা করছেন। যখন পুনরায় নেট বন্ধ হয়ে যাবে, পুরো ব্লকচেইন দুনিয়া থেকে আমরা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবো, তখন তাদের কি গতি হবে? ইনকামের পথ নিদারুণভাবে বন্ধ হয়ে যাবে। প্রতিভা প্রকাশের সুযোগ আর থাকবে না, অভাব দূর করার পথ হারিয়ে যাবে, হারিয়ে যাবে জীবনের স্বপ্নগুলোও।

যাইহোক, মনের আবেগে কথাগুলো বললাম, বিষয়টি এখানেই থাকুক। হয়তো পরিস্থিতি আমাদের পাল্টে দিবে, হয়তো আমাদের সবটা মেনে নিয়ে নিশ্চুপ হয়ে যেতে হবে। একটা কথা শেয়ার করতে চাই, ছোট বেলার একটা ঘটনা। আমারা সংরক্ষিত এলাকায় থাকতাম, তার ঠিক পাশেই ছিলো ডিবি পুলিশের কোয়ার্টার, আমাদের বাসা হতে বড় জোড় একশ গজ সামনে ছিলো তাদের কোয়ার্টারগুলো। তাদেরই একজনের বাড়িতে বেশ বড় বড়ই গাছ ছিলো এবং সেগুলো যথেষ্ট মিষ্টিও ছিলো। তখন আমি সম্ভবত ক্লাস ফোর অথবা ফাইভে পড়ি। ছোট হলেও সেই সময় সকল স্মৃতি এখনো আমার স্পষ্ট মনে আছে। থাকতেই হবে, কারন আমি বেশ পোংটা টাইপের ছিলো হি হি হি। এখন অবশ্য ভালো হয়ে গেছি কারন বাড়িতে বউ আছে তো হা হা হা।

bird-8918121_1280.jpg

তো, একদিন কায়দা করে বড়ই গাছে ঢিল ছুড়েছিলাম, অবশ্য এটা আমার রুটিন মাফিক কাজ ছিলো বলা চলে। আসে পাশের সব বাড়িতেই কম বেশী আমার হামলা ছিলো, তবে অবশ্যই সেটা ভদ্রভাবে। কারন এলাকায় আমার একটা সুমান ছিলো, শুধু আমার না আমার বড় ভাইয়েরও। পুরো এলাকায় আমাদের দুই ভাইয়ের নাম কেউ বললেই হতো, যে কেউ আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসতো। তো সেদিন দূভার্গক্রমে আমি ধরা পড়ে গিয়েছিলাম। আমাকে ডাক দিলেন, আমি কিন্তু দৌড় না দিয়ে কাছে গেলাম, তারপর উনি বললেন কান ধরো, আমি সেটাও করলাম। তারপর বললেন আর কখনো গাছে ঢিল মারবে না, আমি জ্বী আচ্ছা বলে চলে এলাম। কিন্তু বড়ই খেতে না পারার রাগটা ঠিক পুশে রেখেছিলাম।

বড়ই গাছের পাশেই একটা চালকুমড়া গাছ ছিলো, সেটাও অনেক বড় ছিলো। পরের দিন কায়দা করে সেটাকে জবেহ করে দিলাম, প্রতিশোধ না নিয়ে কিভাবে থাকি? অবশ্য পরে তারা সেটাও বুঝতে পেরেছিলো কিন্তু আমাকে আর কিছুই বলেন নাই। পরবর্তীতে তাদের পরিবারের সাথে আমাদের বেশ ভালো খাতির হয়ে যায়। আমি যেটা বুঝাতে চেয়েছি সেটা হলো আগের দিনে ক্ষমতাবান ব্যক্তিরাও তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করতেনা, কিন্তু একটু চিন্তা করে দেখুন, যদি এই সময়ে ডিবি পুলিশের কারোর সাথে আমি এমনটা করতাম, তাহলে আমার কি অবস্থা হতো? আমরা সত্যি পরিবর্তন হয়ে গেছি তবে সেটা ভালোর দিকে না বরং খারাপের দিকে।

এই সপ্তাহের হ্যাংআউটে আমাদের কো-ফাউন্ডার খুব দামী একটা কথা বলেছিলেন, আধুনিক প্রযুক্তির যুগে এসে আমরা সভ্যতার দাবী করছি কিন্তু আমরা সভ্য হতে পারি নাই বরং সেই মধ্যযুগীও বর্বরতাকেও হার মানিয়ে ফেলছি, আমাদের মানসিকতা এবং কার্যকলাপের মাধ্যমে। আধুনিক যুগে এসেও আমরা সেই জঙ্গলে বসবাস করার মতো পরিবেশ তৈরী করে ফেলছি। পরিবর্তন আসুক আমাদের মানসিকতা, পরিবর্তন আসুক আমাদের সামাজিকতায়।

Image taken from Pixabay

ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah

break .png
Leader Banner-Final.pngbreak .png

আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।

break .png

Banner.png

Sort:  
 2 days ago 

আমরা নিজেকে সভ্য দাবি করলেও অনেক সময় সভ্য হয়ে উঠতে পারিনি এটা সত্যি। দারুন ছিল ছোট দাদার কথাগুলো। ছোট দাদা অল্প কথা বললেও সব সময় গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেন। তবে ভাইয়া আপনি যে ছোটবেলায় বেশ দুষ্ট ছিলেন এটা বুঝতে পারছি।

 2 days ago 

হা হা হা, আরে না আমি খুবই ভদ্র ছেলে ছিলাম।

 2 days ago 

আমরা প্রযুক্ত কেউ উন্নত হয়েছি দাদা। মানবিকতায় নয়। এ কথা অনস্বীকার্য।

আপনারা আবার থাকবেন না! না না এমনটা হবে না আশা করি। সব সুস্থ হোক। সমাজ মানুষের মন। এই বিচ্ছিন্নতা বেদনা দায়ক। আপনারা সাবধানে থাকবেন দাদা৷ অফ হয়ে গেলে একেবারেই খরাখরব পাওয়া যায় না৷ সেটা চিন্তায় ফেলে দেয়।

 yesterday 

সত্যি প্রযুক্তির ছোঁয়ায় আমরা এগিয়ে যাচ্ছি কিন্তু পিছিয়ে যাচ্ছি মানসিকতায়, যার কারণেই বিবর্ণ আজকের মানবতা! জানি না এই দুশ্চিন্তা কবে শেষ হবে!

 2 days ago 

আসলেই আমরা সভ্য হতে পারিনি। আমাদের মন-মানসিকতা একেবারেই নিকৃষ্ট। মোটকথা মন থেকে মায়া-মমতা একেবারেই উঠে গিয়েছে। তাইতো ক্ষমতা থাকলেই দুর্বলের প্রতি জুলুম করার চেষ্টা করি। আগের দিনের মানুষদের মন-মানসিকতার সাথে আমাদের মন-মানসিকতার পার্থক্য আকাশ পাতাল। আমাদের মন-মানসিকতার পরিবর্তন বড্ড জরুরী। যাইহোক পোস্টটি পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো ভাই। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 yesterday 

সভ্য হওয়ার চেষ্টাও করেনি কোন দিন, শুধুমাত্র চাকচিক্যে নিজেদের লেবাস পরিবর্তন করেছি। পরিবর্তন খুবই জরুরী এখন। ধন্যবাদ

Coin Marketplace

STEEM 0.14
TRX 0.12
JST 0.025
BTC 55214.91
ETH 2471.87
USDT 1.00
SBD 2.24