শীতের স্বাদের রসভরি পিঠার রেসিপি
হ্যালো বন্ধুরা,
মিষ্টি অনুভূতিগুলো কিভাবে তিক্ততায় ভরে গিয়েছিলো, ইতোমধ্যে আপনারা সেটা জেনে গেছেন। তবে জানতে পারেন নাই মিষ্টি অনুভূতির তৈরীর রহস্যটা। আজ সেই রহস্যটা উন্মুক্ত করবো, হি হি হি। শীত মানেই একটু ভিন্ন আমেজ, শীত মানেই ভিন্ন কিছুর অনুভূতি, শীত মানেই মিষ্টি/ঝাল পিঠাপুলির স্বাদ। শীতের সকাল, ঠান্ডা ঠান্ডা অনুভূতি আর পিঠার মিষ্টি স্বাদ, অন্য রকম একটা ভালোলাগা কাজ করে। হয়তো আপনাদের ক্ষেত্রে ভিন্ন অনুভূতি কাজ করতে পারে, যদি অবিবাহিত কিংবা ব্যাচেরল থাকেন, হা হা হা।
তবে শীত মানেই পিঠা এইডা নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই, আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি হতে এ বিষয়ে একটি প্রতিযোগিতা চলমান রয়েছে অবশ্য। বউকে বললাম, নতুন টাইপের পিঠা বানাতে হবে, রেসিপি যেন সবার পছন্দ হয়। বউ সোজা উত্তর দেয়, একদম তাই আমিও অনেক দিন অন্য রকম কিছুর স্বাদ পাই না। ঠিক আছে তুমি শুরু করো আমি পাশে থাকবো। বুঝেন এইবার অবস্থা কতোটা মোড় নিয়ে আমায় ফাঁসায় গেলো। কি কইলাম আর বউ কি উত্তর দিলো, উল্টো আমি আটকে গেলাম চিপায়।
তবে পিঠার আইডিয়াটা বউ নিজেই দিয়েছে, এটাকে বলে রসভরি পিঠা কিন্তু সবাই সুজি দিয়ে এটা তৈরী করে। সুজি দিয়ে তৈরী করলে পিঠাটা অনেক সফট হয় এবং খেতে রস মালাই এর মতো লাগে। কিন্তু বেশী সময় রাখা যায় না, নাড়াচাড়া দিলে অনেক সময় ভেঙ্গে যায়। তাই আমরা বুদ্ধি করে সুজির পরিবর্তে চাউলের গুড়া ব্যবহার করেছি। তবে আপনাদের দাঁত যদি শক্তিশালী না থাকে তাহলে এই রিস্ক নিতে যাইয়েন না, না হলে আবার দাঁতের ডাক্তার এর কাছে যাওয়া লাগতে পারে। হি হি হি ।
কারণ চাউলের গুড়া দিয়ে এই পিঠা বানালে কিছুটা শক্ত হয় এবং রেখে যাওয়া যায়, যেটা আমি করেছি। চলুন তাহলে বক বক না করে রেসিপিটি দেখি, কোথা হতে শুরু আর কোথায় শেষ। শীতের রসভরি পিঠার রেসিপি-
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
- চাউলের গুড়া
- খেজুরের গুড়
- দুধ
- ডিম
- দারুচিনি
- এলাচ
- তেল।
প্রস্তুত প্রণালীঃ
প্রথমে একটি পাতিলে দুধ ঢেলে ভালোভাবে জ্বাল করে নেবো। তারপর সেগুলোকে নামিয়ে রাখবো।
এরপর পানি দিয়ে খেজুরের গুড় জ্বাল দিবো, তবে এর সাথে দারুচিনি এবং এলাচ দিবো। জ্বাল হয়ে গেলে চুলার আগুন ডিম/ কমিয়ে রাখবো।
এখন একটি বোল নিয়ে চারটি ডিম ভেঙ্গে ভালোভাবে ফেটে নিবো।
এরপর চালের গুড়া মিশিয়ে খামির করার চেষ্টা করবো।
এখন কিছু পরিমানে পানি মিশিয়ে খামিরকে পাতলা করে নিবো।
একটি প্যান বা কড়াই চুলায় দিয়ে তেল গরম করবো, তারপর সে তেলের মাঝে পাতলা খামির হতে একটু একটু করে তেলে ছাড়বো।
অনেকেই ফুলের শেপ দিয়ে ভাজার চেষ্টা করেন, আামি ফাঁকি দিয়ে ছোট গোল আকৃতির করার চেষ্টা করেছি। উল্টে-পাল্টে দিয়ে বাদামি কালার করে ভাজার চেষ্টা করেছি।
এখন পিঠাগুলোকে জ্বাল দেয়া খেজুরের গুড়ের মাঝে ঢেলে দিবো এবং একটি ঢাকনা দিয়ে আরো কিছু সময় জ্বাল দেয়ার চেষ্টা করবো।
এখন পিঠাগুলোকে নামিয়ে একটু ঠান্ডা করে নেবো এবং তারপর পূর্বে জ্বাল দিয়ে রাখা দুধগুলো ঢেলে দিবো।
তারপর এগুলোকে ৪-৬ ঘন্টা দুধে ভিজিয়ে রাখতে হবে। অনেকেই সারারাত ভিজিয়ে রাখেন তারপর সকালে স্বাদ উপভোগ করেন।
আচ্ছা তাহলে আপনারা সকাল হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করেন, আমি এই ফাঁকে স্বাদটা চেক করে নেই, হি হি হি। কেমন দেখলেন রাসভরি পিঠা, আমি খেয়ে সেই স্বাদ পেয়েছি, তবে একটু শক্ত ছিলো।
ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah
আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।
বলছি এতো রসে ভরা পিঠা দেখিয়ে কি ঠিক কাজ করলেন😁। বাড়িতে এখনো ঠিকভাবে পিঠা তৈরির কার্যক্রম শুরু হলো না। তবে এই পিঠাগুলোতে চাল দেওয়ার কারণে শক্ত ভাবটা থেকে যায়। দুধে যতক্ষণ ভিজিয়ে রাখা যাবে ততক্ষন ভালোভাবে খাওয়া যাবে। সব থেকে বেশি ভালো লাগে তোলার সাথে সাথে গরম গরম খাওয়া।
ইশ হাফিজ ভাই কত মজার মজার পিঠা দেখে তো জিভের জল সামলাতে পারছিনা। এইখানেই আমি নিরব কোন পিঠা বানাতে পারি না তাই আপনাদের সাথে কোন রেসিপি শেয়ার করতে পারছিনা, শুধু দেখছি আর জিভের জল ফেলছি। আপনার পিঠাগুলো দেখতে খুবই লোভনীয় হয়েছে। উপর দিয়ে দুধের সর গুলো দেয়াতে আরও বেশি আকর্ষণীয় লাগছে। খেতে না পারার কষ্টটা কি আর বলবো। মনে হচ্ছে খুবই মজা হয়েছে পিঠাটি দুধের ভিতরে ঢুবে রসে টইটুম্বুর হয়ে গেছে। কি আর করার শুধু দেখেই গেলাম।
না না না আপু এটা ঠিক হচ্ছে না, ভাইয়ের বাসায় চলে আসতে পারেন যখন তখন, পিঠা না হয় আবার বানাবো বোনের জন্য। সত্যি পিঠাগুলো অনেক স্বাদের হয়েছিলো।
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।অনেক খুশি হয়েছি।
ভাববার বিষয়। মাঝে মধ্যে যে কি থেকে কোথায় চলে যাই টের ই নাই, মাথায় ও আসেনা। 🙄
এতো টেনশন কিসের। শুভ ভাই আছে তো।আশা করি ফ্রি তে করিয়ে দিলেও দিতে পারে।
আপনার রসভরি পিঠা দেখেই খেতে ইচ্ছে করছে। আগে কখনো দেখিনি এই পিঠা।
অনেক খিদা লাগছে পিঠা গুলো পেলে ভালোই হতো, হাহাহা । পিঠা গুলো দেখি আসলে আমার অনেক পছন্দ হয়েছে মনে হচ্ছে খেতে অনেক মজা হবে। শীতের সময় এসব পিঠা খেতে ভালই লাগে ধন্যবাদ ভাই এত সুন্দর একটি পিঠার রেসিপি শেয়ার করার জন্য।
শুভ ভাইয়া আছে,দাতের ডাক্তারের চিন্তা করতে হবেনা😁😁
সকাল হয়ে গেছে ভাই,আরো কি অপেক্ষা করতে হবে?🤨
রসভরি পিঠা অনেক অসাধারণ একটি পিঠা। আমি অনেক আগে একবার এই রসভরি পিঠা বানিয়ে ছিলাম। কিন্তু ভাইয়া আপনার রসভরি পিঠা গুলো দেখেই আমার অনেক ভালো লাগলো। আপনি খুব সুন্দর লাগে প্রতিটা ধাপ আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। রসভরি পিঠা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
এই পিঠাগুলি কিছুটা দুধ গোকুল পিঠার মতো দেখতে লাগছে।তবে এটি খেতে বেশ মজাদার।অনেক সুন্দর হয়েছে ভাইয়া আপনার পিঠাটি।এছাড়া খেজুর রসের মধ্যে পিঠাগুলি ডুবালে সেই স্বাদের হবে।কিন্তু রস এখন বিলুপ্তির পথে।ধন্যবাদ ভাইয়া।
ভাই আমার কাছে রসভরি অনেক মজা খেতে। আমিতো মাঝেমধ্যেই আম্মু কাছে বাইনা করে বসি এই পিঠাটি বানানোর জন্য। এই পিঠাটি আম্মু খুব ভালো বানাতে পারে। যেন গালে দিলেই গলে যায়।
আর আমার একটা বদ অভ্যাস আছে পিঠা গুলোর খাওয়ার আগেই রস গুলো খেয়ে ফেলে।
রসভরি পিঠা আমার অচেনা একটি পিঠা। এবং এই প্রথম দেখলাম। পিঠা প্রথমে ভেজে নিয়ে তারপর রসে দেওয়া বেশ দারুণ ছিল। আমাদের দিকে এই রকম পিঠার চল নেই বলা যায়। ভালো ছিল পিঠা টা।
হাফিজ ভাই ফাইসা গেছে মাইনকা র চিপায়😂😂।
এ তো এক অনন্য পিঠা মনে হচ্ছে যা আগে দেখিনি। তবে আমিও আপনার সাথে একমত চালের গুঁড়া ব্যবহার করার সিদ্ধান্তটা অবশ্যই সুজির পরিবর্তে ভালো হয়েছে বলে মনে করি।